বর্তমান সরকার তাদের মেয়াদের প্রথম সংসদীয় অধিবেশনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার জন্য একটি অধ্যাদেশ অনুমোদিত হয়। এর ফলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার একটি ইতিবাচক মানসিকতা এই সরকারের মধ্যে পরিলক্ষিত হয়। কূটনীতি পারায় নতুন করে গুঞ্জন শুরু হয়। অনেক দেশের রাষ্ট্রদূত এবং বেসরকারী সংগঠন ও এজেন্সি গুলো নানাভাবে সরকারকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেয়। এর বিপরীত ধারার কুটনীতিও পাখা মেলতে শুরু করে। বিশেষতঃ সাউদি আরব ও পাকিস্তান বন্ধু বলয়ে নতুন করে কূটনৈতিক তাতপরতা শুরু হয়ে যায়। আমি ঠিক এখন জানিনা তাদের কূটনৈতিক তৎপরতা কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। তবে কূটনৈতিক তৎপরতা যে আমরা আমাদের বিরোধীদের থেকে অনেক পিছিয়ে পরেছি এটা সহজেই অনুমেয়। বর্তমানে কিছু ঘটনা আমাদেরকে আরো বেশী সতর্ক হওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়। ১৯ শে ফেব্রুয়ারি জারদারির বিশেষ দূত বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করেন। একজন দূত তখনই কোনো রাষ্টের প্রধানের সাথে দেখা করতে পারে যখন উক্ত রাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর অনুমতি দেয়। এবং দুই দেশের সাথে আলোচ্যসূচী নিয়ে মতবিনিময় হয়। এরপর আলোচ্যসূচী নির্ধারণ করা হয়। অর্থাৎ বাংলাদেশ পররাষ্ট্র দফতর সব জানত। কিন্তু হঠাৎ করে জারদারীর বিশেষ দূতকে এত গুরুত্ব দেওয়ার কারণ বুঝতে পারছিনা। পাকিস্তান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ কখনই ছিল না। হঠাৎ করে কেন পাকিস্তান এত বেশী গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেল যে একজন প্রতিনিধির সাথে সরকার প্রধানের দেখা করতে হলো। বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রালয় হতে পাকিস্তানকে জানাতে পারত যে বিশেষ দূতের সাথে বাংলাদেশের সরকারের অন্যান্য প্রতিনিধির সাথে দেখা এবং আলোচনা হতে পারবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সাথে যুদ্ধাপরাধী বিচার সম্পর্কিত আলোচনা করার জন্য জারদারি উপযুক্ত ব্যক্তি। এই বিশেষ বিষয়ে আলোচনা করার জন্য দুই দেশের সরকার প্রধানের আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বৈঠক হতে পারে। কিন্তু এর পূর্বে দুই দেশের বিশেষজ্ঞ কমিটির আলোচনা এবং খসড়া প্রস্তুত করতে পারে। কিন্তু এভাবে ঝটিকা সফরের কি কারণ হতে পারে ? আর এরকম ঝটিকা সফরকে সরকারের প্রশ্রয় দেওয়ার কি থাকতে পারে?
প্রধানমন্ত্রীর প্রথম বিদেশ সফর ছিল সউদি আরব। কখন! তারিখটা বেশী গুরুত্বপূর্ণ। যেদিন আইন মন্ত্রনালয় তদন্ত কমিটি ও প্রসিকিউশন সেল গঠন করার দিন। তার দেশ ত্যাগের কারণে আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন প্রধানমন্ত্রীর দেশ পত্যাবর্তনের পর তদন্ত কমিটি ও প্রসিকিউশন সেল ঘোষণা করা হবে। সেই দিন এখনও আসেনি। একজন সরকার প্রধানের সাথে আরেক দেশের সরকার প্রধানের সাক্ষাৎ বিশেষতঃ আলোচ্যসুচী নিয়ে মতবিনিময় করতে হলে প্রস্তুতির জন্য মাসাধিক সময় প্রয়োজন হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সৌদি আরব সফর হঠাৎ ঝটিকার ন্যায় প্রস্তুত হয়ে গেল এটা আমার মনে কিছুটা সন্দেহের সৃষ্টি করেছে। সৌদি আরবের বাদশাহ হঠাৎ করে কেন বাংলাদেশের প্রতি দয়াশীল হলেন যে প্রধানমন্ত্রীকে ব্ল্যাঙ্ক চেক দিয়ে দিলেন। আলোচনা ব্যতীত সৌদি বাদশাহ প্রধানমন্ত্রীর সকল চাহিদা মেনে নিলেন। আমি এই সফলতা পুর্বেই অনুমান করতে পেরেছিলাম, এবং প ক ক এর এক ছোটো ভাইকে আমার সন্দেহের কথাও বলেছিলাম। পররাষ্ট্রনীতিতে পাকিস্থান এবং সৌদি আরব অনেকটাই মাসতুতো ও পিসতুতো ভাই। পাকিস্তানের বিশেষ দূত বাংলাদেশ হতে স্বদেশে ফেরত যাওয়ার পরেই সউদি বাদশাহ্ প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানালেন। এরকম অদ্ভুত মিল co-incident হলে ভালো। যদি এসব পরিকল্পনামাফিক হয় তবে আমাদের সামনে আরও বহু ষড়যন্ত্র উতপেতে বসে আছে। সবে মাত্র শুরু। দিন গত হওয়ার সাথে সাথে ষড়যন্ত্রের গতিপ্রকৃত পরিবর্তন ও ভয়াবহতা বৃদ্ধি পাবে।আমাদের আরও সাবধান হতে হবে। সরকারের মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে যে কোনো সিদ্ধান্ত এবং যুদ্ধাপরাধী বিচার সম্পর্কিত যে কোনো স্বিদ্ধান্তে খুব বেশী খুশি হওয়ার কারণ নাই। আইনের বিষয় খুব জটিল। সরকারের একটি ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত ভুল পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পাল্টে দিতে পারে। রাজাকাররা আইনের চোখে নিরপরাধ প্রমাণিত হয়ে নৈতিক সমর্থনের জন্য মাঠে নামবে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে তখন আর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবনা। তখন তারা এখন হতেও অধিক বুক ফুলিয়ে সংসদে বসবে। এমনকি তখন হয়ত রাজাকারদের রাজাকার বললে দেশদ্রহীতার শাস্তি পেতে হবে। তাই আমাদের উচিত সরকারের প্রতি পদক্ষেপ সতর্কতার সাথে বিশ্লেষণ করা। আর সরকারের সাথে মুসলিম বিশ্ব ও অন্যান্য দেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক সতর্কতার সাথে বিশ্লেষণ করতে হবে। বিশেষ করে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে নেতিবাচক ভূমিকা রাখা দেশসমুহের কার্যকলাপের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। কারণ আমরা যেমন শত্রু বিনাশে প্রতিজ্ঞা করেছি শত্রুরাও তেমনি আমাদের ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। দাবা খেলার মত নিজের পরিকল্পনায় মেতে না থেকে প্রতিপক্ষের পরিকল্পনা বুঝতে হবে। কেননা তারাও খেলার একটি অংশ।
দেখা যাক কি হয়......??? 😀
আজকেও প্রথম.........।। সারাদিন বাইরে ছিলাম, এটাই আমার দিনের প্রথম কমেন্ট......... 😀 😀 😀
লেখাটা বেশ ভাল লাগলো। অনেক কিছু চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছিস। এই রাজাকাররা যতদিন এই দেশে টিকে থাকবে আমাদের অস্তিত্ব ততই হুমকির মুখে পড়তে থাকবে। এদের স্বমূলে ধংস করতে হবে। আমাদেরকে একতাবদ্ধ থাকতে হবে।
আমার মনে হয় আমাদের জাতি হিসাবে আমরা একটা ক্রান্তিকালীন সময় পার করছি। মনে হচ্ছে বাইরের কোন শক্তি তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ছকে বাধা খেলার মত আমাদের দেশটা নিয়ে খেলছে। ২৫ ফেব্রুয়ারীর ঘটনা আমাদের সীমান্ত প্রতিরক্ষাকে ভেঙ্গে দিয়েছে এবং এক ঢিলে দুই পাখি মারার মত সেনাবাহিনীর মেরুদন্ড ভেঙ্গে ফেলেছে। যাতে করে আগামী ২০ বছরে আমরা আর মাথা তুলে না দাড়াতে পারি। দেশের সাবেক দুই গোয়েন্দা প্রধান কে নিয়ে যে খেলা শুরু হয়েছে তা এইদেশের স্বার্বভৌমত্ব নষ্ট করার সুদূরপ্রসারি দুরভিসন্ধি ছাড়া আরকি হতে পারে??
হতাশাজনক অবস্হা
তোমার লেখাটা খুব চমৎকার হলেও পড়ে একটু হতাশা বোধ করছি। যখন ছোট ছিলাম, ১০-১২ বছর বয়েসে, তখন ভাবতাম আর ১০-১৫ বছরের মধ্যেই জামাত সমর্থন করে এমন বেঈমান আর অশিক্ষিত বুড়া-হাবড়াগুলা মরে যাবে ইনশাল্লাহ (প্রাকৃতিক মৃত্যু), তখন আর জামাতের বেইল থাকবে না। মাঝখানে কোন এক নির্বাচনে যখন তারা সদম্ভে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে ৩ কি ৫ আসনে জিতলো, তখন মনে হচ্ছিলো মনে হয় অপেক্ষা থিওরীতে কাজ হচ্ছে। এর পরে তো আবার যেই কে সেই হয়ে গেলো।
আসলে আমরা দুধ কলা দিয়ে সাপ পুষেছি বললে কম বলা হয়ে যাচ্ছে। বলতে হবে, দুধ কলা খাওয়াচ্ছি এবং নিজর ঘরে গর্ত খুড়ে তাদের থাকার ব্যবস্থাও করে দিচ্ছি যেনো আমাদের কামড় বসাতে তাদের তেমন কষ্ট না করতে হয়।
মইনুল ভাই,আমার বয়েসি কত মানুষ যে রাজাকারী চেতনায় বিশ্বাস করে তা না দেখলে বিশ্বাস করবেন না-ফেসবুকে একটু ঘাটাঘাটি করলেই গ্রুপগুলাতে দেখতে পাবেন।কিন্তু এই াদার োতের দল এই নির্বাচনে ভালই সাইজ হইসে বলা যায়।
ঠিক মত বিচার না হলে আফটার ইফেক্ট মারাত্নক হতে পারে।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
একমত... :thumbup: :thumbup: :thumbup: