কাছের মানুষেরা বলে আমার চোখে সমস্যা আছে, কাঁদলে আমার চোখ থেকে নাকি পানি পড়ে না। এ নিয়ে নিজে বেশ কয়েকবার বেশ বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছি। এমন অনেক সময় হয়েছে যখন হাজার চেষ্টা করেও চোখ থেকে এক ফোঁটা পানি বের হয়নি, যদিও কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছিল। আজ অবশ্য হয়েছে উল্টোটা, গত ৮ ঘন্টা যাবত একটু পরপরই চোখ ভিজে উঠছে। ফেসবুকে এক একটা ছবি, এক একটা স্ট্যাটাস, ইউটিউবের ভিডিও, বিভিন্ন ব্লগ বারবার চোখ ভিজিয়ে দিচ্ছে, আর মনে হচ্ছে, ইশ! কত কিছুই না হতে পারতো।
শেষ বার খেলার কারনে হাপুস নয়নে কেঁদেছিলাম ২০০১ সালের আইসিসি ফুটবলে। সেমিফাইনালে ফৌজদারহাট যখন স্বাগতিক হবার সকল সুযোগ গ্রহন করে আমাদের হারিয়ে দিল তারপর। তবে সে কান্না ছিল অন্যরকম কষ্টের, স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনার সাথে মিশে ছিল রাগ, ক্ষোভ, বঞ্চনা, আরো অনেক কিছু। কিন্তু আজকের কান্নায় সেসব নেই, নিখাদ দুঃখ। এই এশিয়া কাপ থেকে আমাদের প্রাপ্তি অনেক, এতদিনে আমরা সত্যিকারের ‘টিম’ এ পরিনত হয়েছি, কেউ এখন থেকে আর আমাদেরকে আর মুখের উপর অর্ডিনারি বলতে পারবে না এসব বুঝিয়েও মনকে মানাতে পারছি না, ইস, আর মাত্র দুটি রান।
এই টুর্নামেন্টে আমাদের অন্যতম পাওয়া একজন বা দুজনের উপর থেকে নির্ভরশীলতা থেকে বেরিয়ে আসা। দু একজন বাদে দলের প্রায় সবাই ই প্রতিটি ম্যাচে ভূমিকা রেখেছে। তামিম, সাকিব, নাসির, রিয়াদ, মুশফিক বেশি লাইম লাইটে আসলেও ভারতের সাথে জহুরুল, শ্রীলংকার সাথে নাজমুল, ফাইনালে রাজ্জাকও ম্যাচ জয়ী ভূমিকা রেখেছে। তবে খেলোয়াড় হিসেবে আমার কাছে সবচেয়ে বড় পাওয়া মনে হয়েছে সেই পুরনো মাশরাফিকে ফিরে পেয়ে, শুধু বল হাতে নয়, ব্যাট হাতেও ফাইনালে ম্যাচ প্রায় বের করে নিয়ে এসেছিল পাগলা। তবে অবাক লেগেছে কোচ স্টুয়ার্ট ল এর আড়ালে চলে যাওয়া। এর আগে যত কোচ এসেছে তারা সব সময়ই সবচেয়ে বেশি লাইম লাইট পেত, কিন্তু স্টুয়ার্ট ল কে দেখলাম এর ব্যতিক্রম, আমার কাছে জিনিষটা ভালই লেগেছে। তবে বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাতে হবে আকরাম খানকে, টুর্নামেন্ট শুরু আগে তার দৃঢ় অবস্থানের জন্য, যার ফলে তামিমের দলে ফেরা।
এখন স্বপ্ন দেখি এখান থেকে আমরা শুধু সামনের দিকেই এগিয়ে যাব, যে টিম স্পিরিট আর আত্মবিশ্বাস আমাদের ক্রিকেটারদের মাঝে দেখেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমরা ধীরে ধীরে আমরা আরো বড় লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে যাব, পুরন করবো আকাশ ছোঁয়া কোন স্বপ্ন। সেদিনও হয়ত আমাদের চোখ ভিজে যাবে, তবে সেটা হবে আনন্দের অশ্রু।
যদি লক্ষ্য থাকে অটুট,
বিশ্বাস হৃদয়ে,
হবেই হবেই দেখা,
দেখা হবে বিজয়ে…
বাংলাদেশ দু দুটো ম্যাচ জিতে গেলেও অনেক কষ্টে তা নিয়ে সিসিবিতে পোস্ট দেয়ার লোভ সামলেছি, কারন এ সকল ক্ষেত্রে আমি বরবারই কুফা। ভেবেছিলাম একবারে ফাইনাল জিতেই পোস্ট দিব, সেই জেতা আর হলো না। কষ্ট চাপা দিতে ব্লগ লেখা শুরু করে দিলাম, শেষ পর্যন্ত লেখাটা কিছু হলো না, আবজাব প্যাচাল ছাড়া। আসলে এখন পর্যন্ত কষ্ট কাটিয়ে উঠতে পারিনি। 🙁
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
এত চেঁচামেচির ঢাকা শহর কাল হঠাৎ যেন বোবা হয়ে গিয়েছিল... ঝাপসা চোখে আমরা দেখছিলাম আমাদের ক্যাপ্টেনের অঝোর কান্না... (হয়ত) এশিয়া কাপ জেতা হয়নি,কিন্তু, বদলে গেছে বাংলাদেশ... আমরা এখন সত্যিকারের বাঘ। আমরা আসছি... বিশ্বজয় করতে
আহসান ভাই, এই লাইনগুলোর মাঝে আমার মনের আবস্থা পুরোপুরি উঠে এসেছে । তবে আক্ষেপ থাকলেও মনে জোর আছে। দেখা বিজয়েই হবে ইনশাল্লাহ।
তানভীর আহমেদ
:thumbup: :teacup:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
টিম বাংলাদেশ... ::salute:: ::salute::
ভাই আপনার মতো আমারও একই অবস্থা । ফেসবুকের বিভিন্ন পোস্ট,ছবি আর ইউটিউব এর ভিডিও দেখে আমারও চোখে একটু একটু পর পর জল আসছে ।