ফুটবল এবং আমি…

এহসান ভাই এর বর্ষসেরা ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ব্লগ এ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে গিয়ে ব্যালট পেপার এ কাজী সালাউদ্দিন এর নাম দেখে খুবই পুলকিত হলাম। সেই সাথে শৈশবের অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গেলো। কাজী সালাউদ্দিন ছিলো আমার chieldhood hero. না, তার খেলা দেখার সৌভাগ্য আমার হয়নি, কিন্তু আবাহনীর ফ্যান হবার কারনে সে আমার হিরোতে পরিণত হয়। ঠিক যেমন পেলে ব্রাজিলের সমর্থকদের কাছে greatest footballer of all time( হয়ত তার কোন খেলা না দেখেই!!!)। এটা সে সময়ের কথা যখন আবাহনী বা মোহামেডানের খেলার দিন প্রায় প্রতিটি বাড়ীর ছাদে আকাশী-কমলা কিংবা সাদা-কালো পতাকা উড়ত। আড্ডার প্রধান বিষয় হয়ে উঠত আসলাম vs সাব্বির, মুন্না vs কায়সার হামিদ, মহসিন vs কানন, জনি vs রুমি কিংবা সার্গেই vs রহিমভ, কখনবা কায়সার হামিদের ঝাকড়া চুল, আসলামের টাক মাথা আর রুমির কাধ পর্যন্ত নামানো চুল। আমরা ছড়া কাটতাম
প্রেমলাল পাকির আলি
গোল দেয় হালি হালি।”

“ঈলিশ মাছের তিরিশ কাটা বোয়াল মাছের দাড়ি
মোহামেডান ভিখখা করে আবাহনীর বাড়ি।”

আমি নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান মনে করি এসব কিছু উপভোগ করার সুযোগ আমার হয়েছিল, মনে হয় আমরাই শেষ প্রজন্ম যারা আমাদের ফুটবলের সোনালী দিন দেখেছিলাম। এখন যখন টিভিতে আর্সেনাল-ম্যান ইউ, বার্সা-রিয়াল ম্যাচ দেখি তখন সেইসব দিনগুলো খুব মিস করি। এবার যখন কাজী সালাউদ্দিন, সালাম মুর্শিদিরা নির্বাচিত হয়ে নতুন করে ফুটবল জাগরনের কথা বলল তখন থেকেই আবার আশাবাদি হয়ে উঠলাম। চ্যানেল আই এর কল্যানে বি-লীগের আবাহনী vs মোহামেডান ও দেখলাম কিছুদিন আগে। ২-২ এ ড্র হওয়া সেই ম্যাচ এ পুরোনো দিনের সেই উত্তেজনার অনেকটাই উপস্থিত ছিল। আমার মনে হচ্ছে আমার স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। আবার জমবে মেলা…

৩,১৬১ বার দেখা হয়েছে

৩০ টি মন্তব্য : “ফুটবল এবং আমি…”

  1. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    কাজী সালাউদ্দিন নির্বাচিত হবার পর কিছুটা চুপসে গিয়েছিলো অন্যান্য বাফুফে মেম্বারদের সাথে বিভিন্ন মতানৈক্যে আমাদের ফুটবলের অধোগামিতার কোনো পরিবর্তনের হঠাৎই ডানা মেলা আশাটা। তবে সিটিসেলের মতো টেলকো একাউন্টের সাথে বি লিগ নিয়ে মোটামুটি সম্মানজনক অর্থের (সম্ভবতঃ ২৫ কোটি টাকার, নিশ্চিত নই) একটা চুক্তি করে ফেলাটা উনার একটা বড় অর্জনই বলতে হবে। দেখা যাক, কাজী সালাউদ্দিন দের মতোন আমাদের আইডলরা যদি ক্রিকেট বাণিজ্যের সাথে পেরে উঠতে না পারা অবহেলিত ফুটবলটাকে একটা পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারেন সেটা অবশ্যই তাদের খেলোয়াড়ি জীবনের চেয়েও বড় সাফল্য হয়ে থাকবে নিঃসন্দেহে।
    আজাদ, লেখাটা নস্টালজিক করে দিলো ভাই :clap: :clap:


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
  2. সাব্বির (৯৫-০১)
    “ঈলিশ মাছের তিরিশ কাটা বোয়াল মাছের দাড়ি
    মোহামেডান ভিখখা করে আবাহনীর বাড়ি।”

    :grr: x-( x-( :grr: 😡 😡
    এই কথা জীবনে শুনি নাই আগে তবে এইটা শুনছি প্রচুর

    “ঈলিশ মাছের তিরিশ কাটা বোয়াল মাছের দাড়ি
    আবাহনীর ভিখখা করে মোহামেডান বাড়ি।”

    :awesome: :awesome: :awesome:

    জবাব দিন
    • রহমান (৯২-৯৮)

      আব জিগস্‌ (আবার জিংগায়)?

      ফুটবলে মোহামেডান-আবাহনী, আজেন্টিনা-ব্রাজিল, আর ক্রিকেটে ভারত-পাকিস্তান (যদিও আমি এই দুই দেশের কোনটারই সাপোর্টার না) এই বিষয়গুলা আসলে "এন্ডলেস ডিবেট"

      সাপোর্টার তো কোন দিকেই কম না 😉 । তাই এই খানেও না জইমা যাইব কই???

      জবাব দিন
  3. আহ্সান (৮৮-৯৪)

    ইসসসস...। সেই দিনগুলা...।
    স্কুলে থাকতে কত্ত মারামারিই না হইতো এইগুলা নিয়া...।
    খেলা শুরু হবার আগে থেকেই রাস্তা পুরা ফাঁকা হইয়া যাইত...।
    তবে এইটা ঠিক, যে যত যাই বলুক,
    মোহামেডানের জয়গান আজীবন চলুক। 😉

    জবাব দিন
  4. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    ফুটবল! যেটা আমার পা থেকে সবাই কেড়ে নেয়!! কলেজ থেকে বের হওয়ার আগে একদিন এফসিসির তিন নম্বর মাঠে ২১তম ব্যাচের পেশাদার (যারা আইসিসিএসএম ও হাউস টিমের সদস্য) বনাম অপেশাদার (আমার মতো আনাড়ি, খেলতে গেলে যাকে কোনো দল নিত না) খেলা হয়েছিল। কে জিতেছিল মনে নেই। খালি মনে আছে পেশাদারদের গোলপোস্টের প্রায় ২০ গজ বাইরে থেকে দূর্দান্ত একটা গোল দিয়েছিলাম!!! ওটা ছিল বিষ্ময়ের চেয়ে বড় বিষ্ময়। এখনো বন্ধুরা সেই গল্প মনে রেখেছে।

    সিসিবিতে ব্লগানোর সমস্যা এইটাই। বারবার ইন দ্য ইয়ার নাইনটিন সিক্সটি নাইন চলে আসে। নস্টালজিয়া............................

    আর মাঠে গিয়ে খেলা দেখা? মারামারি কইরা টিকেট কাটা, খেলা শুরুর ৫-৬ ঘণ্টা আগে স্টেডিয়ামে ঢুকে জায়গা দখল, ফাউল বা পেনালটি না দিলে দলিল খানের (রেফারি) গুষ্টি উদ্ধার কিনা করছি। কই গেল দিনগুলা? স্টেডিয়ামের চারপাশে কয়েক স্তরের পুলিশ পাহারা, হারু পার্টির ভাংচুর-তান্ডব, সমর্থকের মৃত্যু- সবই হয়েছে মোহামেডান-আবাহনী খেলার দিন।


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
  5. বন্য (৯৯-০৫)

    আমার মনে আছে আগে মোহামেডান আবাহনী খেলার সময় পেনাল্টি হলে আমাদের বাসার সবাই মোহামেডানের গোলকিপার পনিরকে ঠেকানোর জন্য চা-কোক অফার কর্তাম... :awesome: :awesome:

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।