কয়েক দিন আগে শ্রীমঙ্গল ঘুরতে গিয়েছিলাম। এর সাথে মৌলভীবাজার এর বেশ কয়েকটি ট্যুরিস্ট স্পটে ঘুরার সুযোগ হয়েছে। আজকে আমি সেই সব যায়গার যাওয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করবো।
যদি কেউ দু’দিনের একটি শর্ট ট্যুর দিতে চান, এবং আপনি ইতিমধ্যে সিলেট এবং এর আশেপাশেও ভ্রমণ করে ফেলেছেন; চিন্তা করবেন না, আপনার মতো ভ্রমণকারীদের জন্য আরো অনেক ঘুরবার জায়গা অপেক্ষা করছে।
ইউটিউবে আমার ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন
তার আগে আমি নিচে আমার ঘুরতে যাওয়া যায়গা গুলোর সংক্ষিপ্ত তালিকা
১। লাওয়াছড়া প্রাকৃতিক বন ( সাতরঙা চা খেতে ভুলবেন না, খুব ভালো না লাগলেও লাইফ টাইম স্মৃতি )
২। মাধব কুন্ড জলপ্রপাত ও ইকোপার্ক
৩। শ্রীমঙ্গল
৪। ডানকান ব্রাদার্স চা এস্টেট
৫। শ্রীমঙ্গলে পশু আশ্রয়স্থল
৭। রাবার গার্ডেন
৭। হোটেল গ্র্যান্ড সুলতান
৮। মৌলভীবাজার জেলা
কীভাবে যাবেন?
ঢাকা থেকে সিলেট ৪ টি আন্তঃনগর ট্রেন রয়েছে। শুধু ইন্টারনেটে রেলওয়ে roaster চেক করুন এবং একটি টিকেট বুকিং দিন। যদি আপনি দিনের বেলায় ভ্রমণ করেন, তবে শ্রীমঙ্গল ও লাওয়াছড়ার কাছাকাছি ঘুমিয়ে ট্রেনের জারনির বেস্ট পার্ট টুকু মিস করবেন না। আপনার মনে হবে ট্রেনটি পাহাড়ের মধ্য দিয়ে একটি সাপের মতো একেবেকে চলছে, দুইপাশে সবুজ চা বাগান , কিংবা রাবার গার্ডেন। কিন্তু মনে রাখবেন, এত সুন্দর দৃশ্য দেখতে গিয়ে ভুলেও ক্যামেরা বা মোবাইল নিয়ে হাত জানালা দিয়ে বাইরে নিবেন না; অনেক সময় ছিন্তাইকারিরা দূর থেকে চাকু বা দা ছোড়ে মারে। সন্ধ্যা বা ভোরে এই সমস্যা টা বেশি হয়।
আপনি বাস থেকেও ভ্রমণ করতে পারেন; এটি শ্রীমঙ্গলে পৌঁছানোর জন্য ৫ ঘন্টার মত লাগে।
চট্টগ্রাম থেকেও আপনি সরাসরি ট্রেইন বা বাস পাবেন। রাস্তার ভাল অবস্থার জন্য জার্নি আপনার খুব বেশি খারাপ লাগবে না।
কোথায় থাকবেন?
আমি সরকারি কাজে গিয়েছিলাম বলে থাকার যায়গা সম্পর্কে ভাল আইডিয়া নেই। তবে শ্রীমঙ্গল বেশ কয়েকটি পর্যটন মোটেল আছে। ইন্টারনেটে চেক করে নিতে পারেন।
খাদ্য (আমার জন্য ভ্রমণের সময় এটাও গুরুত্বপূর্ণ)
লাঞ্চ: সাতকড়া রেস্টুরেন্ট -শ্রীমঙ্গলেই পাবেন
ডিনার: পানসি রেস্টুরেন্ট -মৌলভীবাজার, স্বল্প দামে এত সুস্বাদু খাবার ; অতুলনীয় । হরেক রকমের ভরতা আছে, রুটি বা নান না খেয়ে ভাত খেলেই বুদ্ধিমানের কাজ করবেন।
আপনার জন্য ঘুরতে যাওয়ার সিকুএন্সঃ
যদি শ্রীমঙ্গল থাকেন তবে আমি মনে করি সকালেই চা বাগান ( ফিনলে চা এস্ট্যাট টা নামকরা ) দেখে চলে আসতে পারেন, আরো দেখতে পারেন – শ্রীমঙ্গলে পশু আশ্রয়স্থল, চা গবেষনা কেন্দ্র আর রাবার বাগান। এরপর লাওয়াছড়া বনে। এর আগে বলে রাখি , এই রাস্তা গুলোতে সি এন জি অটো রিক্সা চলে, আপনি এদের সাথে দামা দামি করে ভাড়া করে নিতে পারেন বা মাইক্রো ভাড়া করতে পারেন।
লাওয়াছড়া ঘুরতেই প্রায় ৩-৪ ঘণ্টা সময় লাগবে। বিকেল বেলায় ঘন জঙ্গলে আপনার মনে হবে অন্ধকারে হারিয়ে গেছেন। প্রকৃতির খুব কাছে চলে যাবেন।
এর পরদিন পর মাধব কুন্ড জলপ্রপাত আর লেক টা দেখে আসতে পারেন। লাউয়াছড়া থেকে প্রাই ৬০ কিমি দূরে। বর্ষার মৌসুমে ঝর্ণা প্রায় ভড়া যৌবনা থাকে, শীতে শুষ্ক। মাধবকুণ্ড যাওয়ার পথেই পড়ে হাকালুকি হাওর। আবারো একই কথা, বর্ষায় এর সবচেয়ে আকর্ষণীয় রূপ দেখতে পাবেন। আমি সময়ের অভানে হাওরে যেতে পারি নাই।
রাতে মৌলভিবাজার গেলে পানসি তে খেয়ে নিতে পারেন। সিলেটের পানসি এর মত ভালো না হলেও বেশ ভালই বলা চলে।
এরপর সেখান থেকেই ঢাকার বাসে করে ব্যাক করতে পারেন। সফল ট্যুর।
যেসব জিনিষ আপনি বাড়িতে আনতে পারেন:
১। আসল চা, বিশুদ্ধ এবং সত্যিই অসাধারণ স্বাদের
আমি গুপ্ত চা ঘর, (রেল স্টেশনের পাশেই) থেকে ১ প্যাক কিনেছি, দাম ৪৫০ টাকা প্রতি কেজি। ৬০০ টাকা কেজি একটা আছে, আমি নেই নাই।
২। আরও কিছু জিনিস যা আপনি পছন্দ করতে পারেন, সাতকড়া (বড় লেবু)
সামগ্রিকভাবে এটি একটি সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে একটি অসাধারন ভ্রমণ ছিল।
বর্ষা ঋতুতে গেলে আরও জায়গা দেখা যেতে পারতো। তার পরেও, আমি বলব, আপনার এই বসন্তেও একবার আনারস বাগান বা রাবার বাগান দেখার জন্য ঘুরে যাওয়া উচিত।
যদি আপনার কোনও প্রশ্ন থাকে, তবে দয়া করে মন্তব্য বিভাগে আমাকে বলুন
অনেক সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছিস দোস্ত। কিপ আপ অ্যান্ড অল দ্য বেস্ট 😀
ধন্যবাদ দোস্ত... B-)
আরো অনেক কিছু লেখার প্ল্যান আছে। এখানে একদম নতুন আমি 🙂