এখনো ঘোর কাটাতে পারছিনা। দুইদিন হয়ে গেলো।প্রিয় ব্রাজিল দল এর এমন করুন পরাজয় দেখতে হবে ভাবি নি। ভেবেছিলাম স্বাগতিক ব্রাজিলের হাতেই উঠবে কাপ, নতুন এক গল্প হবে।সাফল্যের গল্প। ষষ্ঠ কাপের গল্প।
সেই ২৩-২৯ মিনিট এখনো চোখে ভাসছে। দুই ভাই খেলা দেখছিলাম। এক মিনিট পর পর গোল হয়, ছোট ভাইকে জিজ্ঞেস করি গোল না আগের রিপ্লে। মনের গহীন কোণে আশা হয়তো রিপ্লে। ছোট ভাই নিশ্চিত করে না গোলই ছিলো। প্রিয় রোনাল্ডোর রেকর্ড যে ভেঙ্গে গেছে তার জন্য খারাপ লাগছিলো না, ব্রাজিল এভাবে হারছে তার জন্য বেশি খারাপ লাগছিলো। বাংলাদেশের খেলার সময় যেভাবে শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করি, সেভাবে অপেক্ষায় ছিলাম কোন মিরাকল এর আশায়। (নিজের দেশের সাথে তুলনা করি নি, শুধু মনের অবস্থাটা বুঝানোর জন্য)
খেলা শেষে ফেসবুক ভেসে যাচ্ছে আর্জেন্টাইন সাপোর্টারদের খোঁচাময় স্ট্যাটাসে, বিভিন্ন কৌতুকময় ছবিতে। কোথাও কমেন্ট দেই না, নিজেও কিছু লিখি না ফেসবুকে। ভয় হয়, কিছু লিখলেই হয়তো কেউ ছুটে আসবে কমেন্ট দিতে, পচানোর জন্য। তাই ভাবলাম ব্লগে লিখি। এখানে কেউ এসে খোঁচা মারবেনা, নিজের মন খারাপের কথা বলে কিছুটা হালকা হতে পারবো।
ক্যাডেট কলেজ ব্লগের সাথে এই বিশ্বকাপ এর আগ মুহূর্ত থেকে যোগ দিলাম। বিশ্বকাপ প্রায় শেষের পথে। পুরাটা মাস ব্লগের সাথে ছিলাম। বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে নিজে লেখা দিলাম, বড় ভাই-ছোটভাই দের অসাধারণ কিছু লেখা পড়লাম, অনেক পুরান ইতিহাস জানলাম। “প্রেডিকশন গেম” টা খুব এনজয় করলাম। প্রতিদিন অফিসে ঢুকে প্রথম কাজ ছিলো পিসিটা ছেড়ে প্রেডিকশন করে নেয়া, আর ফলাফল দেখা। দ্বিতীয় রাউন্ড পর্যন্ত ১০-১১র দিকে ছিলাম। দ্বিতীয় রাউন্ড এর মাঝামাঝি সময় থেকে কিভাবে যেন দুই নাম্বারে চলে আসি, কিছুদিন যৌথভাবে প্রথমও ছিলাম। আর দুইটা খেলা বাকি। হয়তো শেষে আবারো ৫-৬ এর দিকে চলে যাবো, কিন্তু সত্যি অনেক এনজয় করেছি। এর পিছনে যেসব ভাইরা কাজ করেছেন তাদের অসংখ্য ধন্যবাদ।
আর দুইদিন বাকি, এরপর এই বিশ্বকাপও শেষ, আবারো কোন একদিন ২০১৪ এর বিশ্বকাপ নিয়ে স্মৃতিচারণ হবে, আবারো নতুন কোন বিশ্বকাপে নতুন ইতিহাসের আশায় আমরা বুক বাঁধবো। “the Greatest show on the earth”- আবারো পৃথিবীকে জাগিয়ে তুলবে, পৃষ্ঠার এপিঠ-ওপিঠে হাসি-কান্না পাশাপাশি চলবে। ততদিন অপেক্ষায় থাকি।
আমারো মন খারাপ. কমলা কবে পারবে?