ষ্টেশন থেকে একটা টাটা-সুমো নিয়ে চলে এলাম দার্জিলিং চৌরাস্তায়। আসার পথটা এতো উঁচু-নিচু আর সরু সেটা দেখলে রীতিমতো ভয় লাগে। গাড়ি প্রতিটা বাঁক নেয়ার সময় মনে হচ্ছিলো এই বুঝি খাদে পড়ে যাবে। রাস্তাটা বিপজ্জনক বলেই একটু পর পরই সবার জন্যে সতর্কবাণী ছিলো দেখেশুনে গাড়ি চালাতে। একটা সতর্কবানী আমার এখনো মনে আছে- donate your blood in blood bank, not in the road। চৌরাস্তায় এসে পছন্দসই একটা হোটেল খুঁজে বের করে ফেললাম সবাই মিলে। দার্জিলিংয়ের বেশির ভাগ হোটেলের নিয়ম হচ্ছে এদের রুম ভাড়ার সঙ্গে এক জনের ৫ বেলা খাবার ইঙ্কলুড। আমরা যে হোটেলে ছিলাম তার প্রতিটার রুম ভাড়া ছিলো ১২০ রুপি। তার মানে ১২০ রুপিতে হোটেল রুম আর পাঁচ বেলা খাবার, বেশ সস্তাই মনে হলো।

ট্রেন থেকে নেমে জলপাইগুড়িতে প্রথম পা।
সকালের চা’টা দিয়ে গেলো রুমে আসার কিছুক্ষণ পরই। ওটা শেষ করে আমরা বেড়িয়ে পড়লাম দার্জিলিং দেখতে। হাটতে হাটতে চৌরাস্তার একেবারে শেষ মাথায় চলে এলাম। জায়গাটা কয়েক হাজার ফিট উঁচু। কামরুল সবাইকে জানালো ঠিক এই জায়গাটাতে শুটিং হয়েছিলো সত্যজিতের ‘কাঞ্চনজংগা’র। সিনেমাতে যেমন দেখায় এখনো নাকি ঠিক এ রকমই আছে। অবিকল। সেখানেই পরিচয় হলো চারজন কোরিয়ানের সাথে। তিনটা ছেলে একটা মেয়ে। ওরাও আমাদের মতো ট্যুরিস্ট। বেড়াতে এসেছে ভারতে। আমাদের বয়সী। ছেলে তিনটা আমাদের মতোই গতরাতের ট্রেনে কলকাতা থেকে এসেছে। মেয়েটা এসেছিলো তার দিন দু’য়েক আগে, একা। তাদেরও এখানে এসেই পরিচয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই আলাপ জমে গেলো। ওদের ইংরেজি আমাদের মতোই । দুই দেশের সংস্কৃতির মিল-অমিল নিয়ে জম্পেশ আড্ডা চললো চায়ের সাথে। খাতির হয়ে গেলো এবং সেই সুত্রে রাতে তাদের হোটেলে মদ্যপানের নিমন্ত্রণ।

দেখলে বুঝা যায় না, কিন্তু এই বাঁকগুলি আসলেই ভয়ঙ্কর।
তাপমাত্রা শুন্যের কিছু নীচে। আমরা সবাই এতেই জড়োসড়ো হয়ে পড়লাম। জাকারিয়ার নাক দিয়ে পানি পড়তে শুরু করলো। কামরুল মাফলার না নিয়েই চলে এসেছিলো, মাফলার গলায় দিলে নাকি ওরে নান্দাইলের ইউনুসের মতো লাগে। এখন এই শীতে এর ওর কাছে মাফলার চেয়ে বেড়াচ্ছে। কিন্তু কেউ দিচ্ছে না। যাকেই বলে, ‘দোস্ত, তোর মাফলারটা একটু দে’ সেই বলে, ‘যা কিনে নিয়ে আয়’। কিন্তু কিনতে যেতে ওর আলসেমি। যেই কানটুপিটা ছিলো সেটা দিয়েই কষ্ট-মষ্ট করে কাটিয়ে দেয়ার প্ল্যান করলো। বিকেলটা জাকারিয়া , মিশেল আর কামরুল ঘুমিয়ে কাটালো। আর আমাদের বাকিদের কাটলো দার্জিলিংয়ের মার্কেটগুলিতে টুকটাক ঘুরাঘুরি করে। কাশ্মিরী শাল, দার্জিলিংয়ের চা আর শো-পিস কেনা হলো কিছু। দেখে অবাক হলাম এতো ছোট একটা শহরে ট্যুরিস্টদের জন্যে প্রায় সব রকম সুযোগ সুবিধা আছে। মাল্টি-ন্যাসনাল ব্যাঙ্কের শাখা, সাইবার ক্যাফে, ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, নাইট ক্লাব, বার আর বিশাল বড় এক সিনেপ্লেক্স।

চৌরাস্তায় উঠার পথে
রাতে কোরিয়ানগুলির হোটেলে গিয়ে দেখি হুলস্থুল কান্ড। ব্যাটারা ২৪ বোতল বিয়ার এনে রেখেছে । হইহই করে বোতল খোলা হল। আব্দুল্লাহ শুরু থেকেই নাক চ্যাপ্টা কোরিয়ান মেয়েটার দিকে কু-নজর দিয়ে আসছিলো। এক বোতল বিয়ার খেয়ে দেখি ও সেই মেয়েটার পাশে গিয়ে বসলো। তারপর দুইজন হেসে হেসে গল্প করা শুরু করলো।

চিয়ার্স

নাকচ্যাপ্টা মেয়েটার পাশে আব্দুল্লাহ
ওদিকে আব্দুল্লাহ দেখি প্যাঁচার মতো মুখ করে নাক চ্যাপ্টা মেয়েটার পাশ থেকে সরে এসে আমাদের পাশে এসে বসলো। কেন , সেই কারন শুনে আমি হাসতে হাসতে শেষ। মেয়েটা নাকি ও’কে জিজ্ঞেস করেছিলো who is your best friend? উত্তরে আব্দুল্লাহ আজিজের নাম বলে দাঁড়িয়ে থাকা আজিজকে দেখিয়ে দিলো। এটা শুনে মেয়েটা নাকি বলে, are you gay? যাই হোক আড্ডা শেষ হলো একটা স্প্যানিশ গান দিয়ে। ‘ডেস্প্যারাডো’ ছবির শুরুর গানটা আমার পুরোটা মুখস্ত ছিলো। আমি সেটা শুরু করলাম, দেখি আমরা এবং ওরাও সেই গানটা কিছু কিছু জানে। সবাই মিলে একসাথে সেই গান গেয়ে ‘বাই’ গুড নাইট’ বলে আমরা ঢুলতে ঢুলতে ফিরে এলাম আমাদের হোটেলে।
(নূপুরদা রাগ না করলে আরেকবার সবাইরে জিগাই, চলবে? )
B-)
দোস্ত, তোর মাফলারটা একটু দে’ সেই বলে, ‘যা কিনে নিয়ে আয়’এই সেই মাফ্লার যা নিয়া উকিল আদালত হইছিল? 😕
আই আই আই ও... আই আই আই ও...
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
আপ্নেরাবার্কিহৈল??? 😮
আরে এইটা ডেসপারেডোর গানটা...
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
এই শব্দটা তো আমার চেনা 😉
আই আই আই,আই আই আম অ,
আই মি মরে মাজ্যো মি মোরা সং
http://www.youtube.com/watch?v=GhKJ9ig7I1c
লিঙ্ক টা তোমার জন্য
কোরিয়ানদের গল্প শুনলাম সেদিন কামরুল ভাইয়ের কাছ থেকে। সুব্রত ভাই চলুক ...
😕
:clap: :clap:
ভাই দারুন লিখছেন :clap: :clap:
থ্যঙ্কু...
অসাধারন :boss: :boss:
ধন্যবাদ
চলুক............।।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
অবস্যই
মরি আমি ধড়ফড়াইয়া রে.........এইডার ইংরেজী কি করছিলা ভাইডি??? 🙁 🙁 😉 😉
I Die by Jumping...Jumping!!! =)) =)) =)) :)) :)) :)) 😀 😀 😀
অতীব উত্তম হইতাছে..., চালাইয়া যাও।
Are u gay?-হতাশ হইওনা..., বাইরের ওদের কাছে এইডা অফার-এর আগের কমন কথা
[কপিরাইটঃ সিসিবি(যা ফ্রে)) :)) :grr: 😛
অফটপিকঃ বিশাল সিনেপ্লেক্সটা বোধহয় নতুন, আমরা যখন গিয়েছিলাম...ইন দ্যা ইয়ার......
তখন কিন্তু ছিলো না:-?
Proud to be an ex-cadet..... once a cadet, always a cadet
কোলে কি ভাইস্তা নাকি?জুলহাস ভাই
হ, তোগো ভাইস্তা...
Proud to be an ex-cadet..... once a cadet, always a cadet
বস্, রাহুল দ্রাবিড় আবার ধরা খাইছে দেখছেনতো 😀 হাইয়েস্ট রান করার পর দলরে ফলোওনে ফালাইছে বেচারা 😀
ব্যানটা তুইলা লন বেচারার উপ্রে থেইকা 😉
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
আগে তোমরা আমার ব্যানডা তুলো!!! 😉 😉
ভাইস্তারে পাঠাইয়া দিয়েন।ট্রেনিং দিয়া দিমুনে।
ভাই রে, পারলে অই বেডা তার বাপ, চাচা, এবং তাদের দুই ব্যাচের সব ক্যাডেটগুলার ট্রেনিং দিয়া দেয়!! :(( :((
তারপরেও তুমি পাঙ্গা খাইতে চাইলে আমি না করি কেমনে! :grr: :grr:
হা হা হা।
ব্যাপক মজা পাইলাম।
:clap: :clap: :clap:
:clap: :clap: :clap:
ধন্যবাদ,নুপুরদা
=)) :khekz:
চলবে মানে, না চললে তো আমরাই অচল হয়ে পড়বো।
চলুক !! চলুক !!
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
:tuski:
:teacup:
ভাই আপনি চরম ভ্রমন কাহিনী লেখক। আমি আপনের পাঙ্খা পুরা পাঙ্খা :boss: :boss:
দারুন হচ্ছে... চালাও...
খুব মজা করে লিখা :clap:
সাবাশ সুব্রত :boss:
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
থ্যাঙ্কু
ভালোই চলতেছে লিখাটা।
খুব ভালো লাগলো
বাহ! পাক্কা একবছর পর এই লেখায় আবার কমেন্ট পড়লো। 😀
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।