আমি আমার আগের লেখাতেই বলেছিলাম ক্যাডেট থাকা অবস্থায় বাইরের মেয়েদের সাথে আমাদের চিন্তাধারার অনেক পার্থক্য ছিল। কলেজের নিয়মকানুন আর ব্যস্ততার জন্যই হয়তোবা নিয়ম ভাঙার বিষয়গুলো আমাদের অনেক বেশি আকৃষ্ট করত।
আমরা যখন ক্লাস টেন এ পড়ি, কোন এক ছুটিতে আমার কাজিনদের একজন ইটালি থেকে এসেছে। সঙ্গে এসেছে তার ছোট বেবিটা। আমাদের সব কাজিনদের গেট টুগেদার হচ্ছে বড়খালার বাসায়। ওখানে আমাদের একজন আরেকজনকে পঁচানোর উপায় ছিল ‘কুদ্দুস’ বলা। আমার ইটালিয়ান কাজিনের বেবি মেয়েটাও কুদ্দুস বলা শিখে গিয়েছিল এবং তার এই ‘কুড্ডুস’ বলাটা খুব হিট হয়েছিল আমাদের মাঝে। এই শব্দটা আমরা গাধা/বোকা/খ্যাত্ অর্থে ব্যবহার করতাম।
আমি যখন ছুটিশেষে কলেজে ফিরে গেলাম তখন দোন ক্লাস একঘেয়ে লাগল বা কেউ একটা জোক করছে সেটা বোরিং হলেই আমি এই শব্দটা বলে উঠতাম। এবার পুরা বি ফর্মে এই শব্দটা হিট হয়ে গেল, এবং যাকে তাকে কুদ্দুস বলাটা ক্লাসমেটদের মাঝে মহামারি আকার ধারণ করল। ব্যাপারটা কতটা ছোঁয়াচে হয়ে গেল সেটা একটা উদাহরণ দিলেই বোঝা যাবে – কোনো এক ছুটিতে ময়মনসিং-এ আমাদের ক্লাসমেটরা এক রিকশাতে তিন জন করে প্রাইভেট পড়তে যাচ্ছিল, একটা বয়েজ স্কুলের সামনে দিয়ে ওদের রিকশা যখন যাচ্ছিল ছেলেরা কেবলই ওদের রিকশার দিকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে কিছু একটা বলতে যাবে, তখন ওরাই উল্টা কমেন্ট করে দিয়েছে “চুপ থাক্, কুদ্দুস” বলে! ছেলেগুলি এতই অবাক হয়েছে যে মেয়েরা উল্টা তাদের অপমানকর কমেন্ট করেছে দেখে তারা আর কিছুই বলতে পারেনি।
প্রতিবার ছুটিতে এসে MABS এ (ঢাকায়) আমাদের ক্লাসমেটদের প্রায় ২০ জন কোচিং করত ক্যাডেট ব্যাচে। একদিন ক্লাস হচ্ছেনা এমন সময় ওরা সবাই বেঞ্চের উপর গোল হয়ে বসে জম্পেশ আড্ডা দিচ্ছে দরজাটা চাপিয়ে দিয়ে রেখে। এমন সময় ২ জন ভাইয়া ভুল করে নিজেদের ক্লাসরুম মনে করে ক্লাস টেনের রুমে ঢুকে পড়েছেন। এতগুলি মেয়েকে একসাথে দেখে উনারা বুঝতে পারলেন যে তাঁরা ভুল রুমে ঢুকেছেন, তাই উনারা ফিরে যাচ্ছিলেন; কিন্তু MGCCরা এবার তাদের চিরচারিত স্বভাববশত চিৎকার করে উঠেছেঃ “কুদ্দুস!!” … এখানে উল্লেখ্য- ওরা কেউই বুঝতে পারেনি যে, ঐ দুইজন ভাইয়া ক্যাডেট ছিলেন (সিলেটের, নাম বললাম না, তারা ২ জনই এখন আর্মিতে)। তো যাই হোক, ভাইয়ারা চলে গেছেন কিন্তু একটু পরেই আবার ফিরে এলেন। এবং ঢুকেই বলে উঠলেনঃ “Stand up, cadets”… উনাদের voiceটা এতই কমান্ডিং আর জোরালো ছিল যে আমাদের প্রায় ২০ জন সবাই উঠে দাঁড়িয়েছে। এবার ভাইয়ারা শাউট করে ইংলিশে বকা দেওয়া শুরু করলেন। আমাদের ক্লাসমেটগুলি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেছে, ভুলেই গেছে তারা কলেজের বাইরে এবং MGCCএর কোন সিনিয়র তাদের সাথে শাউট করছেনা। তারা সবাই দাঁড়িয়ে মাথা নিচু করে ২ জন SCCএর ক্লাস টুয়েল্ভ-এর কাছে বকা খাচ্ছে। বকা খাওয়া শেষে তারা সবাই কোরাস করে ভাইয়াদের ‘সরি’ ও বলে এসেছে।
এবার ছুটি শেষে তারা যখন কলেজে ফিরল তাদের এই কাহিনী আমাদের ক্লাসের সবার মুখে মুখে। আমরা যারা ওখানে ছিলাম না তারা বলতে শুরু করলাম – “তোরা কেন কমেন্ট করতে গেলি?” ওদের উত্তরঃ “আমরা কি জানতাম নাকি উনারা ক্যাডেট ছিলেন?” “আচ্ছা ঠিক আছে, তাই বলে মাথা নিচু করে বকা খেলি কেন?” এবার একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করতে লাগল- “কে যে প্রথমে দাঁড়াল!” এ বলে আমি না ও প্রথমে দাঁড়িয়েছে, ও বলে না ভুল কথা সে প্রথমে। এরকম চলল কিছুক্ষণ। এবার তারা খুব ইতস্তত করতে লাগল – আমরা কি আগে কখনো সিনিয়র ভাই-এর কাছে বকা খেয়েছি নাকি? উনারা ২ জন এত জোরে শাউট করেছে যে আমরা স্বভাববশত দাঁড়িয়ে মাথা নীচু করে ফেলেছি। আমরা ওদের অবস্থা দেখে বললাম, “থাক, বাদ দে, দোষ তো তোদেরই ছিল, সিভিল ছেলেরা কমেন্ট শুনে কিছু বলতে পারেনি বলে ক্যাডেটরাতো আর চুপ করে থাকবে না।“
পরের টার্মে ছুটি শেষে যখন আমরা কলেজে ফিরেছি, আমাদের ময়মনসিংহের একজন ক্লাসমেটের বড়ভাই সিলেটে তখন প্রেসেন্ট 12। যে দু’জন ভাইয়া আমাদের বকা দিয়েছিলেন তারা কলেজে গিয়ে বলেছে – তারা নিজেরাই আশা করেননি যে MGCCএর জুনিয়ররা এভাবে কলেজের বাইরে এসেও মাথা নীচু করে সাবধান হয়ে দাঁড়িয়ে তাদের বকা খাবে। আমাদের বিনয়ে তারা খুব অবাক হয়েছেন, সাথে প্রশংসাও করেছেন।
এবার আমাদের সেই বকা খাওয়া পার্টির একটু যেন অস্বস্তি কমলো। আমাদের গুণধর, বিনয়ী ফ্রেন্ডগুলি বলতে লাগলঃ “হ্যা, আমরা তো বিনয়ের পরিচয় দিয়েছি, সিনিয়রদের সম্মান দেখিয়েছি। তাইনা বল?“ ওদের কথা শুনে শুধু মৃদু হেসে গেলাম আর মনে মনে বললাম- “তাই বলে ইউনিফর্ম ছাড়া সাবধান হয়ে মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে অন্য কলেজের ক্যাডেটদের কাছে কলেজের বাইরে বকা খাওয়াটা… বিনয়টা একটু বেশিই হয়ে গেল না??” মুখে অবশ্য বললাম, না তোরা ভালই করেছিস। MGCCরা বরাবরই সিনিয়রদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, সেটা মেয়ে ক্যাডেট ছেলে ক্যাডেট নির্বিশেষে!
🙂
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
আমি প্রথম, কারণ আহসান ভাই রবিন বাই, কেউই দাবি করেন নাই। :grr: :grr: :grr:
ওই তুই কি ১ম না আমি? তুই কিন্তু দাবি করস নাই। =))
বস, বোল্ড আউটে আবার আপিল করা লাগে নাকি 😛
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
~x(
:)) :)) =))
=)) =))
:khekz: :khekz:
faltooooooooooooo :grr: :grr: :grr: :grr: :grr:
দিতি 😀
দ্বিতিয় হবে :((
বানান ভুল করসো - "দ্বিতীয়" 😉
দিতি ক্যান, তার চেয়ে মিলি আফা কত্তো সোন্দর 😡 😡 😡 :dreamy: :dreamy: :dreamy: :dreamy:
অনেক ছোট বেলায় দিতি আপার কি সব নাকি প্রকাশ পাইছিল শুনছিলাম...
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
:shy: :shy: I have them….
না বললেও মনে হয় হইত... তোর উপর সবার আস্থা আছে...
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
:just: :khekz: :khekz: :just: :khekz: :khekz:
apni na tern out holen?
:pira: :khekz:
যাক আন্দালিব রে প্রথম থেইকা হটানো গেছে, এতেই আমি খুশি।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
খেলুম না! খেলুম না!! :thumbdown:
ফয়েজ ভাইয়ের ঈর্ষামূলক মন্তব্যের জন্যে ব্যাঞ্চাই! ;;;
এইরকমের ঘটনা তো এই প্রথম শুনলাম। বাহ বাহ বিনয়ের জন্য তোমাদের :boss:
সহমত।
হুম :pira:
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
:khekz: :khekz: =)) =))
Life is Mad.
সায়েদ ভাইর ব্যাঞ্চাই। কোন লেখা দেয় না।
শুধু ব্যান চাই না। দেশে আসার পর দুইবার লাঞ্চ খাওয়াবেন লেখা না দেয়ার জন্য
টুস্কির্জন্যেমন্টাঞ্চান্করে 🙁 🙁 🙁
ঐ.. :-B
মজা পাইলাম । থ্যাংকু :clap:
ছোটরা "দ" কে "ড" বলে এবং এটা সবসময়ই হাসির একটা ব্যাপার..... নিজের অভিজ্ঞতা মনে পড়তিছে.... বলদ - > বলড
বাহ্! কি মজার! 🙂 🙂 :clap: :clap:
সাব্বাস ক্যাডেট :khekz: :khekz: :khekz:
হুম...MABS এর ঘটনাটা আগেই শুনছিলাম...বাট তোমার কাছ থেকে শুনে ভাল হইল...আগে মনে হয় একটু কাহীনিটা ডালপালা গজাইছিল...এখন বুঝলাম আসল ব্যাপার...
বাই দা ওয়ে...কুদ্দুস আল্লাহ এর ৯৯ টি আস্মাউল-হুস্নার মদ্ধে একটি...so we should be careful in maintaining the sanctity of the name...
:thumbup: :thumbup:
আরে শাহেদ কবে আইলি? ব্যাট্টা... লং টাইম!! :hug:
আমিও নাইন টেন দুইবছর ম্যাবসে কোচিং করতাম। বড়োই সুখের সেই সব দিন গুলো! :dreamy:
তোমাদের তো কলেজে থাকা অবস্থায় ছুটির ঘটনা, আর আমি তো পাসআউট করার ৫ বছর পরেও সিসিসি এর এক ভাইয়ার কাছে টানা ২০ মিনিট ঝাড়ি খায়া কান লাল কইরা দাঁড়ায়া ছিলাম :(( ...
বসে অবশ্য মাস্তান B-) !...ক্যাডেট-ননক্যাডেট কাউরেই ছাড়েনা 🙁
"আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"
=))
:)) :))
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
😡 😡 মাস্তানির ব্যাঞ্চাই!
বস তো।
নতুন পেশা
মাস্তানি
ঘটনাটা কি ???
সিসিসি'র সব্বাই কি ......... 😛
:frontroll: :frontroll:
ক্যাডেটরা জেন্টল বুঝলাম। কিন্তু আমার একটা কথা আছে।
এইটা জোড়ালো+কমান্ডিং ভয়েসে না বলে যদি "জেন্টলি" মানে স্বাভাবিক স্বরে কইতো, তাইলে ঘটনা কি হতো? ;;;
(ডিসক্লেইমারঃ এটা একটা নিরীহ জিজ্ঞাসা 😛 )
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
কি আবার হইত, ছেমড়িগুলা পায়া বসত!!!
এই ডায়লগ আমারো বহুত শোনা লাগসে :bash:
:pira: :pira: :pira:
"Never think that you’re not supposed to be there. Cause you wouldn’t be there if you wasn’t supposed to be there."
- A Concerto Is a Conversation
ক্যাডেট সারাজীবনই ক্যাডেট। বাইরে থাকলেই কি আর কলেজে থাকলেই কি। তবে এখনকার কথা আর বলতে পারব না
:grr:
:boss: :boss: :boss: 😛 😛 😛 😛 😛 এখােনর সবই আপনার েলখা?
ভাল লাগলো