রাত প্রায় ১টা বাজে। ক্যাম্পের দোতলায় বসে জোরে জোরে গান শুনছি। বেশ লাগছে।
আবার একটু ভয়েও আছি, হঠা্ত কেউ এসে বলে বসবে, মাথা কি নষ্ট হইছে নাকি?? এত রাতে এত জোরে জোরে কেউ গান শোনে??
ভাল লাগছিল না। আশেপাশের সবই চুপচাপ। নিরব, শান্ত। বোঝার উপায়ই নেই, সারাদিন এখানে খালি দৌড়াদৌড়ি চলে। জোরে জোরে গান শোনার পরও চারপাশে শুন্যতা।
মনে হচ্ছে সারাদিন মনে হয় এর ভিতরেই ছিলাম।
সামনে বেশ বড়শড় একটা লেক। পানির কোন প্রান নেই। তারও মনে হয় নিরবতায় পাইছে। লেকের উপর অপর পাশের শহরের আলোর প্রতিচ্ছবি।
পানির কপালে কয়েকটা টিপ এর মত দেখাচ্ছে। লাল, নীল, সবুজ অনেক ধরনের আলো। আলোগুলোও ক্লান্ত। আমার কাছে আসতে আসতে ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে।
সামনে সারাদিন জ্বলে থাকা ল্যাম্পপোস্ট। একটা লাইট জ্বলেই আছে। তার সাথেরটা জ্বলছে আর নিভছে। মনে হচ্ছে অনেক ব্যস্ত, যাই যাই একটা ভাব।
ল্যাম্পের আলোয় কয়েকটা পোকা। খুবই সাধারন একটা দৃশ্য্ কিন্তু এই নিস্তব্ধতার মাঝে শুধূ ওরাই জীবন্ত। বাকি সবারই মন খারাপ আর চুপচাপ।
অস্থির কিন্তু চুপ।
ল্যাম্পের পাশের নারকেল গাছটাও শান্ত। কোন পাতায় নড়ছে না। কিন্তু কয়েকটা পাতা বেশ জ্বলজ্বল করছে। সোনালি রঙের মতো। নারকেল পাতার ফাক
দিয়ে উকি দিচ্ছে এক ফালি জাহাজ। এত দুর থেকে খুব একটা স্পষ্ট না তারপরও বোঝা যাচ্ছে কিছু ব্যস্ত পায়চারি। আলোগুলো শুধু জ্বলছে আর নিভছে।
ইস, এখন একটু সীসা খাইতে পারলে বেশ হতো। সীসার ধোয়াগুলো আমার খুব ভাল লাগে। ঘন আর ভারির মিশ্রন। ধোয়া ছাড়লে সামনের সবকিছু ১-২
সেকেন্ডের জন্য ঘোলা হয়ে যায়। দারুন একটা অনুভুতি। ধোয়ার ভিতর বসবাস। কলেজে থাকলে এই সময় নির্ঘাত একটা কবিতা লিখে ফেলতাম। এখন আর পারি না।
কলেজ কিন্তু আমাকে কিছু সময়ের জন্য হলেও ভাবুক বানাতে পেরেছিল। বাইরে এসে সব উবে গেছে। কবিতা, গল্প এখন আর ডাকে না।
কলেজের সব কিছু তাই এখন অনেক বেশি মিস করি। আমার জীবনের একটা মাত্র সময় যেটা আবার ফিরে পেতে ইচ্ছে হয়।
ক্লাস টুয়েল্ভে থাকতে মাঝে মাঝে রাতে এমন সময় হাটতে বের হতাম একাই। শান্ত ঐ সময় দেখে কে বলবে এখানে সারাদিন এখানে কি হয়। ক্যাডেটদের চিল্লাপাল্লা,
দৌড়াদৌড়ি, কিছু ফ্রন্টরোল, কিছু কমান্ড, আরোও কত কি। রাতের কলেজের সাথে কোন মিলই নেই। চেনা পরিচিত সব জায়গা তখন অপরিচিত হয়ে যেত।
বাহ, ভাব তো বেশ ভালোই আসতেছে। বাইরে হাটতে বের হতাম কেন জানেন, কারন পোলাপাইন আমার জ্বালায় সব দরজা বন্ধ করে রাখতো।
যেন আমি ডিসটার্ব করতে না পারি। একদিন এমন হাটতে হাটতে আমি আর শাহরিয়ার বাস্কেটবল কোর্টে যেয়ে শুয়ে থাকলাম। কত কথা দুজনের ভিতর।
কার প্রথম প্রেম কিভাবে হলো। প্রথম দেখা, প্রথম কথা ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রেমের গল্প ছিল বলে এখনো মনে আছে। একা একা থাকলে রাতের বেলায় এইসব স্মৃতি খালি মাথা চাড়া দেয়।
যাই গা। চিন্তা করছিলাম, কেউ জ্বালাতন সহ্য না করতে পেরে এসে বলবে, তারপর যাব। কিন্তু তা আর হলো না। সব নাক ডেকে ঘুম দিছে। অপেক্ষা করে লাভ নাই। সবাইরে গুড নাইট।
প্রথম
... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!
আমারও খুব ইচ্ছে হয়। 🙁
... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!
ভাল লাগা জানিয়ে গেলাম! 🙂 :teacup:
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
ধন্যবাদ দিয়ে দিলাম।
The Bond Cadet
ভাল্লাগসে ভাই। আপনি ভালো লিখেন। 🙂
বানান ভুল চোখে পড়লো কিছু। একবার লিখে কষ্ট করে একটু রিভাইজ দিয়েন 😛 আর ফরম্যাটিং এর জন্য অনেক গ্যাপ পড়সে লাইনগুলাতে। আপনি কি মাইক্রোসফট ওয়ার্ড থেকে পেস্ট করছেন?
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
ধন্যবাদ। পরবর্তিতে মাথায় রাখবো।
না, আমি সরাসরি এখানেই লিখি।
The Bond Cadet
কলেজের কবিতাগুলোই না হয় দাও এখানে!
নস্টালজিক লেখা।
বউকে বলছি ভাই। পুরানো ডায়রিগুলা খুজে বের করতে। পাইলে, এই সুযোগ কি আর ছাড়ি।
The Bond Cadet
দোতলার গোলঘরের লোকেশনটা আসলেই দারুন, এখন কেমন সময় কাটাচ্ছিস জানি না, তবে দেশে আসলে ওই দেশের অনেক কিছুই মিস করবি। আসার সময় একটা শিশা নিয়ে আসতে ভুলিস না।
লেখা ভাল লাগছে, লেখতে থাক নিয়মিত :thumbup:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
:tuski:
একটানে পড়লাম লেখা, চলুক ভাই চলুক
চাঁদ ও আকাশের মতো আমরাও মিশে গিয়েছিলাম সবুজ গহীন অরণ্যে।
চলবে চলবে....
The Bond Cadet
বেশ ভাল লাগলো শাহীন :clap: :clap:
চালিয়ে যাও
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
ধন্যবাদ ভাই। আশা করি।
The Bond Cadet