অভ্র বিজয় লেআউট ব্যবহার করেছে এই মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে একটি পোস্ট

অভ্র নিয়ে মোস্তফা জব্বার কথা বলেছে জন্যে আল্টিমেটলি অনেক ভাল হয়েছে। এখন মানুষজন বিজয় নামক ভয়াবহ সফটওয়ারটি’র সম্পর্কে জানতে পারবে ও সেটি থেকে দূরে থাকবে।এবং একইসাথে জানতে পারবে ইন্টারনেটে বাংলা প্রসারের পিছনে কোন সফটওয়ারটির অবদান সবচেয়ে বেশী।

আমি দুপুরে একবার এই ব্লগে এসেছিলাম, তখন ফয়েজ ভাইয়ার লেখাটি দেখে আমি টেকি/নন-টেকি সবাইকে বিষয়টি সম্পর্কে জানানোর জন্যে একটা ব্লগ লিখেছি সচলায়তনে। আপনারা পড়তে পারেন:
অভ্রকে পাইরেটেড বলার কারণ বিশ্লেষণ ও একটি দাবী

এখন এখানে আমি ওখানকারই আমার করা একটা কমেন্ট ব্যাখ্যা করব। মোস্তফা জব্বার প্রশ্ন তুলেছেন “যেহেতু অভ্রতে বিজয় লেআউট ইনক্লুড করা হয়েছে” সুতরাং এটি কপিরাইট অ্যাক্ট ভেঙ্গেছে

তাহলে আমাদের প্রশ্ন হল:
■ কিবোর্ড লেআউট পেটেন্ট করা যেতে পারে ????
■ কতগুলি পেটেন্ট হতে পারে ??
■ কিসের বেসিসে পেটেন্ট হতে পারে ???
■ ব্যাকগ্রাউন্ড সাপোর্ট কতটুকুন প্রয়োজন একটি পেটেন্ট পেতে গেলে ??
■ এখন পর্যন্ত কতগুলি পেটেন্ট করা হয়েছে ???

উত্তরগুলি হল:
■ হ্যা, করা যেতে পারে
■ যতগুলি কম্বিনেশন সম্ভব প্রতিটার পেটেন্ট সম্ভব যদি না সেই লেআউটটি পাবলিক ডোমেইনের জিনিস হয়ে থাকে। পাবলিক ডোমেইন অর্থ যেটি এত বেশী বহুল প্রচলিত যে সরকার কর্তৃক সেটিকে সবার জন্যে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে, কেউই সেটার মালিক নয়। উদাহরণ: ইংরেজী কিবোর্ডের লেআউট (QWERTY লেআউট যাকে বলে)
■ পেটেন্টের কোন বেসিস নাই, যেইভাবে খুশী করা যেতে পারে যদি পেটেন্ট অথরিটিকে “সন্তুষ্ট” করা যেতে পারে
■ ব্যাকগ্রাউন্ড সাপোর্টে ম্যাথমেটিক্যালি ও স্ট্যাটিসটিক্যালি প্রুফ দেখালে ভাল তবে সেটি ম্যান্ডেটরী নয়
■ অনেক। এবং চলছেই।

তাহলে কি অভ্রতে ব্যবহৃত ইউনিজয় লেআউটটি কি বিজয় লেআউটের পেটেন্ট ভেঙ্গেছে ?? দেখা যাক:

ইউনিজয় ও বিজয়ে সাদৃশ্য থাকলেও এখানে অন্ততঃপক্ষে একটি কি পজিশনে ভ্যারিয়েশন রয়েছে। ফলে এরা সম্পূর্ণ আলাদা কিবোর্ড।
সহজ করে বলি, ১১ এবং ১O১ কি একি লাগছে আপনার কাছে ??? সংখ্যা দু’টি অলমোস্ট একই যদি আমরা শুণ্যটাকে বাদ দেই। কিন্তু আপনারাই বলুন, এই দুটি সংখ্যা কি এক ??? লেআউটও সংখ্যার মতই একটা ব্যাপার তাই একটা জিনিস আলাদা তো পুরাই আলাদা।
বিজয়ের পেটেন্ট শুধুমাত্র একটি ফিক্সড লেআউটের জন্যে।এবং পেটেন্টটি আলাদা আলাদা করে অক্ষরের অবস্থান সম্পর্কে বলবে না। সম্মিলিতভাবে কি সেটাই হল ফ্যাক্টর এখানে।
আমি ওদের পেটেন্টের ডিটেইলস না দেখে আর কিছু বলতে পারবো না তবে এটুকুন বলতে পারি ওখানে g বাটনে হসন্ত ছাড়া আর কোন লেআউটে ব্যবহৃত হতে পারবে না এই ব্যাপারটি নেই। যদি থাকে তাহলে ওই পেটেন্টকে ইনভ্যালিড ধরতে হবে কারণ ম্যাথমেটিক্যাল ও স্ট্যাটিসটিক্যালি প্রুভড যে বাংলায় যুক্তাক্ষরের সংখ্যা যেহেতু খুব বেশী এবং যুক্তাক্ষর টাইপ করতে হয় হসন্ত চেপে (অভ্র ব্যবহারকারীরা এটা টের পান না কারণ অভ্র ব্যাকগ্রাউন্ডে এটা করে দেয়, ফোনেটিক অথবা রোকেয়া ইউজাররা এটা টের জানেন) সুতরাং হসন্তকে f এর জায়গায় দেয়াই সবচেয়ে যুক্তিসংগত যাতে টাইপিং স্পিড+কি স্ট্রোক উভয়ই কম লাগে।

ফলে আমরা দেখতে পারছি অভ্র ইউনিজয় নামের নতুন একটি লেআউট ওদের সফটওয়ারে ব্যবহার করেছে, মোটেও বিজয় লেআউট ব্যবহার করেনি।
এছাড়া কোন বর্ণে কি হবে এটার কোন পেটেন্ট হতে পারেনা সুতরাং জব্বার কাগু’র কোন দাবীই টিকে না।

জব্বার কাগু’র মিথ্যাচার বন্ধ হোক, ****-টা নির্বাচন কমিশনকে নিজের সফট বেঁচতে পারেনাই দেখে পাগল হয়ে গেছে। জুতাপেটা করা দরকার ওটাকে।

৪,৩১১ বার দেখা হয়েছে

৪০ টি মন্তব্য : “অভ্র বিজয় লেআউট ব্যবহার করেছে এই মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে একটি পোস্ট”

  1. টুম্পা (অতিথি)

    সিউল, সচলের পোস্টটা পড়লাম। ধন্যবাদ এতো সহজবোধ্য করে ব্যাখ্যা করার জন্য।
    অভ্র এবং এর ক্রিয়েটর দের অনেক ধন্যবাদ, আমাকে মাতৃভাষায় লেখার স্বাচ্ছন্দ্য টুকু দেয়ার জন্য।

    জবাব দিন
  2. ইফতেখার (৯৫-০১)

    অভ্র আর বিজয়ের সমঝোতা যে হয়েছে তা তো এখন পুরোনো খবর ... সে ঘটনাগুলো নিয়ে একটা পোস্ট দেখলাম তাই ভাবলাম সেটাও এখানে থাকা উচিৎ।

    আমাদের প্রযুক্তির টপিক।

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।