সকালবেলা নিজের ভাঙ্গা গাড়ি হাঁকিয়ে বাজারে যাচ্ছিলাম। এক জায়গায় দেখলাম আইল্যান্ডের উপর এক পাগলিনী ঘুমিয়ে আছে। ঘুমের ঘোরে ডান হাতখানি ঝুলে আছে শূন্যে, রাস্তার সীমানায়। বেখেয়াল হলে আমার আমার গাড়ি ভেঙ্গে নিয়ে যেতে পারত তার বেসামাল হাত। উচিত ছিল গাড়ি থামিয়ে তার হাতখানি নিরাপদ করে দেওয়া,আমি থামিনি। হাজার হোক, মেয়েমানুষ তো, পাছে লোকে কিছু বলে। মনে আশা, হয়ত কোন দয়াবান/ দয়াবতী তার হাতখানি ঠিক করে দিয়েছেন। অথবা ঘুমের ঘোরে সে নিজেই নিজেকে ঠিক করে নিয়েছে।
সামনে এগোই, রাস্তায় এক ভদ্রলোকের গাড়ি নষ্ট হয়ে গেছে। বোঝা যাচ্ছে উনি গাড়ির নাড়ি-নক্ষত্র কিছু জানেন না। রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে অসহায়ভাবে এদিক-ওদিক তাকাচ্ছেন। থেমে জিজ্ঞেস করতে পারতাম যে কোন সাহায্য করতে পারি কিনা। আমি থামিনি, আমার ব্যস্ত নাগরিক জীবনে এতো সময় কোথায়? প্রার্থনা করেছি যেন কোন সহৃদয় ব্যক্তি তাকে সাহায্য করেন।
আবার এগোলাম, এক ট্রাফিক কনস্টেবল এক বৃদ্ধকে হাত ধরে রাস্তা পার করে দিলেন, আমি লজ্জা পেলাম। একটু পরে বাইক নিয়ে এক ভদ্রলোক পিছলে পড়ে গেলেন। ২/৩ জন মানুষ দৌড়ে গিয়ে তাকে টেনে তুললেন, আমি আবার লজ্জা পেলাম।
আরেকটু এগোতে ঝমঝম বৃষ্টি শুরু হল। এক তরুনীকে দেখলাম, গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে বৃষ্টি দেখছে। দেখে মনে হল তার মন ভীষণ খারাপ। হতে পারে বৃষ্টিতে ভিজতে না পারার দুঃখ, হতে পারে আরও অনেক কিছুই।
শেষমেশ বাজার এসে গেল, মুটেদের দৌড়াদৌড়ি, হাঁকাহাঁকি, গাড়ি পার্ক এর ঝামেলা শেষ। চলো হে ব্যস্ত মানুষ, এবার শুরু করা যাক………………
কামিনী রায় আমাদের মনের কথা জানতেন। তিনি লিখেছিলেন পাছে লোকে কিছু বলে
যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান
চলো হে ব্যস্ত মানুষ...
আমি আগেই বলেছিলাম, লিখে যা। যা মনে আসে লিখে যা। অনেক শান্তি পাবি। পাচ্ছিস? (সম্পাদিত)
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
টুকরো ছবিগুলো দেখে ফেলে আসা ঢাকার কথা মনে পড়ে গেল।
ভালো লাগলো।
কি অবস্থা, সাদাত?
মেলা দিন পরে তোমার প্রোফাইল এ গিয়ে দেখলাম।
খুব ভালো লাগল তোমাকে সিসিবি'তে দেখে। লিখতে থাকো হাত খুলে.........
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
সিনিয়র ভাইদের কাছ থেকে উৎসাহ পেয়ে অনেক ভালো লাগছে, আহমদ ভাই, মাহমুদ ভাই, নূপুর ভাই, সাইদুল ভাই সবাইকে অশেষ ধন্যবাদ.........:)
বিরাট কোন মহাকাব্যিক বিষয় না, নিত্য দিনের এসব ছোট ছোট ব্যাপার ও সেগুলোর ভেতরের উপলব্ধিই আধুনিক সাহিত্যের লক্ষ্য। কাজেই- চালিয়ে যাও জোর কদমে।
🙂 🙂
নাগরিক জীবনের খন্ডচিত্র এবং তারই প্রেক্ষিতে বিচ্ছিন্ন ভাবনা... আরো লেখা দেখতে চাই ব্লগে তোমার!
হ্যাপি ব্লগিং, ভাইয়া!
চমতকার একটা অণু ফিচার ... কিংবা স্যাটায়ার ...
ভালো । এমন লেখা আরো পেলে আরো ভালো ।
🙂
একদম চোখের সামনে দেখতে পেলাম দৃশ্যগুলো। চিন্তাগুলি যেন আমারই।
ব্যস্ত নাগরিক জীবন এমনই । এটাতে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়াই নিয়ম । ভালো লেগেছে ভাই ।
ফেবুতে এই লেখাই দেখেছিলাম কী!
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
অসাধারণ ,সত্যিই অসাধারণ !
সবাইকে আবারো অশেষ ধন্যবাদ। কাজী সাদিক ভাই, আপনার এই মন্তব্য পড়ে আমার মনে হচ্ছে, লেখাটা সার্থক। লেখার চেষ্টা করব সাবিনা আপা, ব্যস্ত জীবন, সময় মেলাই ভার। এই লেখাটাই দেখেছিলেন রাজীব ভাই।
এরকম আমারও হয়, হয়েছে বহুবার।
চলো হে ব্যস্ত মানুষ, শুরু হোক এবার,
অনুকাব্যের উপসংহার, হয়েছে চমৎকার।
অনেক ধন্যবাদ ভাই.........
ভাল লেগেছে।
আমার নিজের কথা বলেই মনে হয়েছে।
তুচ্ছ আটপৌরে বিষয়গুলোও অসাধারন হয়ে উঠলো বর্ননার গুনে।
খুবই ভাল ব্লগিং.......
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
উৎসাহ দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই............