এক
আমার আশেপাশে দেশী দোকানপাট কিছুই নেই কিন্তু ভারতীয় সব আছে। সুরে সুরে ইংরেজী বলা গুজরাটি, তামিল আর কর্ণাটকের লোকজন আছে চারপাশে প্রচুর। বিশাল আকারের প্যাটেল প্লাজায় কী নেই তাই ভাবি! বারোয়ারী মুদি দোকান থেকে শুরু করে রেস্তোরাঁ, চটকদার শাড়ীর দোকান, স্বর্ণকার অথবা টিউটোরিয়াল সবই আছে।
আজ তারার জন্য লিচু কিনতে চেরিয়ানে গেছি সকালবেলায়। চেরিয়ান সুপার মার্কেটটি আকারে বেশ বড়সড়, এতে সজনে ডাটা থেকে শুরু করে ফ্রোজেন ডালপুরি, লাড্ডু, ক্যানের কাঁঠাল, চাল-ডাল, মুখী কচু, তিলের নাড়ু সবই আছে। চাইলে গরম গরম সমুসা, ফুচকা, জিলিপি আর ভেলপুরিও মেলে তান্দুরি মুরগীর সাথে।
দোকানের ভেতরে ঢুকতে না ঢুকতেই শাড়ী পরা একজন নমস্কার জানিয়ে বলল, দিদি আমরা এখানে ছোট্ট একটা ‘হেলথ অ্যান্ড বিউটি’ আইল খুলেছি গেল সপ্তাহে, এই নাও কুপন, দ্যাখো না তোমার পছন্দের কিছু পাও কিনা! আমি বেশ চমৎকৃত হই মেয়েটির সাজ পোশাক আর কথার চাতুর্যে! ছুটির দিনের অবকাশে কাউন্টারের ছেলে গুলোও দেখি আজ দই এর ফোঁটা পরে কাজ করছে, মুগ্ধ তো হবারই কথা! সেই মুগ্ধতার রেশ ধরে আমি আদা রশুনের গন্ধ ভুলে প্রথমেই হেলথ এন্ড বিউটি’র দিকে পা বাড়াই!
কত কী যে আছে সেখানে, মেহেদীর টিউব, সুগন্ধি মতিচুর সাবান, আয়ুর্বেদিক বাম, কদুর তেল, সতী লক্ষী সিঁদুর, কেয়োকারপিন অয়েল, শশার ফেসপ্যাক এমনকি লাল আলতাও! আমি এটা নেড়ে দেখি তো ওটার সুরভি পরখ করি খানিক, সহসাই চোখ পরলো ইয়ার্ডলি পাউডারে। আহ! কত্তদিন পর! ইয়ার্ডলি মানেই দুই ঝুঁটিওয়ালা আমাদের তিনবোনের শৈশব্! গোলাপের তীব্র সুবাস আর আমার মায়ের আনমনে গুনগুন!
মাত্র ছয় ডলারে এক কৌটো হারানো ছেলেবেলা কিনে আজ আমার দিনের শুরু হয়েছে!
দুই
ছোটবেলায় আমাদের শহরে ‘ঢাকা লিটন’ নামের একটি কনফেকশনারী ছিল। ডাউনটাউন ময়মনসিংহের এই দোকানের নাম কেনো ঢাকা লিটন হলো আমার জানা নেই। ঢাকা লিটনের বাটার বন, হট প্যাটিস, কেক আর ক্রিম রোল ছিল খুব ভাল খেতে। নানান রকম কুকিজ আর ক্র্যাকারের পাশাপাশি অনেক রকমের টোষ্ট বিস্কুট পাওয়া যেতো বড় টিনের কৌটোয়। চিনি টোষ্ট, গুড়া টোষ্ট, বাটার টোষ্ট, ঝাল টোষ্ট আরো কত রংবাহারী নাম ছিল তাদের। আমার ফোকলা দাঁতে চিনি টোষ্ট উচ্চারণে যথেষ্ট সমস্যা ছিল, আমি বলতাম, চিনিটুশ!
আমাদের বাড়ির সবাই চা-খোর। দুধের শিশু বোতল ছেড়ে এ বাড়িতে চা পান করতে শেখে। দিনের মাঝে এরা কতবার যে চা পান করবেন তার কোন হিসেব নিকেশ নেই।
মাথা ব্যাথা? কড়া এক কাপ চা খাও
দাঁত ব্যাথা? লবঙ্গ দিয়ে লাল চা ইজ আ মাস্ট
গলা ব্যাথা? আদা চা নইলে চলবে কেন?
শীত পরেছে? মালাই চা!
ঘুম পেয়েছে? চা গরম
ঘুম পাচ্ছেনা? চা খাইনি যে বিকেলে
বিকেলে জলখাবারে চায়ের সাথে অন্যরা কলিজা সিঙ্গারা, চটপটি অথবা মুড়ি চানাচুর খেতো। শীতকালে গুড়ের পায়েস হতো অথবা কদাচিৎ মুগ পাকন পিঠা। অন্যকিছু না থাকলে ‘এলোকেশী চালনা কাটা’ পিঠা ভাজতেন মামনি। আমার তালপাতার মত শরীরে চোখ দুটিই কেবল চোখে পরতো, বলা বাহুল্য মুখে রুচতো না অনেক কিছুই। মৃতপ্রায় ব্রহ্মপুত্রের অনতিদূরে বড় মসজিদের পেছনে টিনের চালায় বসে প্যাড়া বানাতেন হরি কারিগর। দিন শেষে সেই প্যাড়া বাড়ি এলে আমি পিড়াপিড়ি ছাড়াই খেতে বসতাম হাসিহাসি মুখে।
প্যাড়া ছাড়াও আমি চিনিটুশ খেতে ভালবাসতাম খুব। সবাই যখন এটা ওটা খাচ্ছে চায়ের সাথে, আমি এদিক ওদিক চকিতে তাকিয়ে একটার পর একটা চিনিটুশ খেয়ে যেতাম। আকারে ছোট মুচমুচে টোষ্টগুলো ঘি অথবা ডালডায় ভাজা ছিল, তার ওপরে থাকতো চিনির ঘন প্রলেপ। চায়ে ডুবিয়ে সেটি খেতে ছিল প্রায় অমৃত সমান। শহরতলী থেকে সকালবেলা বশির গোয়ালা গরুর দুধ দিয়ে যেতো কাঁসার কলসে ভরে, কলাপাতায় মুখ ঢেকে। সেই দুধ আমার দু’চোখের বিষ ছিল, আমি ভালবাসতাম কৌটোর ডানো। আধ কাপ পাউডার দুধে দুই চামচ চিনি মিশিয়ে। চিনিটুশ আর চিনি মাখা গুঁড়ো দুধ এই দুই এর চক্করে কেটেছে আমার শৈশব!
এখানে উইকেন্ড এলেই মিলি আপা কল করে আমাদের মা-মেয়ের কুশল সংবাদ নেবেন ফুলের পরিচর্যা করতে করতে। শনিবার বিকেল হতে না হতে আপা বললেন, আমি তোমার বাড়ির কাছেই। চা খাবো সবাই মিলে। আপার কল পেয়ে আমি ঘরের পিজে ছেড়ে একখানা ক্যাপ্রি পরতে ছুট লাগাই। খুব দ্রুততায় সাজ পোশাক করতে গিয়ে থেবড়ে গেলো চোখের কাজল, গ্লসের শিশি উলটে রইল মেঝের ওপর।
মিলি আপা আমার শহরে আসবার পর বৃষ্টি শেষে হামেশাই রংধনুতে কবিতা লেখে ধূসর আকাশ। এখন এই শহরে একটি মেয়েও চোখের জলে বুক ভিজিয়ে ঘুমোতে যায় না! অথবা পৃথিবীর তাবৎ দুঃখী মানুষ গুলো এখন জেনে গেছে যে তাদের দীর্ঘশ্বাসে বাতাস ভারী হবার আগেই তার প্রেমহীন হাত ছুঁয়ে থাকবে একটি উষ্ণ করতল!
আপা এসেই হইচই করে তার ঝোলা থেকে যে বস্তুটি বের করলেন তাতে বাংলায় লেখা রয়েছে বেবী টোষ্ট। আমি চুলো জ্বেলে চায়ের জল বসিয়েছি ততোক্ষণে। তারা কাপ আর সসার গুলো টিস্যুতে মুছে রাখছে লক্ষী মেয়ের মত। সবুজ সাদার প্যাকেটখানা খুলতেই যে জিনিসটি বেরিয়ে এলো তা দেখেই আমি চেঁচিয়ে উঠি, চি-নি-টুশশশ!
এরপরের গল্প খুব সংক্ষিপ্ত। এদিক ওদিক চকিতে তাকিয়ে ধুমায়িত চায়ে চিনিটুশ ডুবিয়ে দিই লোকলজ্জার মাথা খেয়ে! যেনবা অডিসিউস খুঁজে পেয়েছে তার হারানো পেনেলোপেকে, দু’চোখ বুজে অন্তহীন তৃষ্ণা আর মুগ্ধতায় কুটুশ কামড় দিই চিনিটুশে! পিঁপড়া কাঁদিয়া যায় পাতে!
"কত কী যে আছে সেখানে, মেহেদীর টিউব, ..."
অ্যামেরিকান-ইন্ডিয়ান কোনো দোকানে ঢুকলে প্রসাধনী আইলে প্রথমেই যেটা চোখে পড়ে সেটা হলো ভল্যিউমে রাখা সারি সারি প্যারাস্যুট নারিকেল তৈল। আমার মনে আছে বছর আটেক আগে একটি ইন্ডিয়ান বডি-সপে কয়েকমাস ছিলাম চাকুরি খুঁজতে। গোটা-চারেক ইন্ডিয়ান রুমমেট ছিলো আমার সাথে একই উদ্দেশ্যে। যে জিনিসটা আমাকে অবাক করেছিলো সেটা হলো ওদের সবার সাথে একটা করে বড়-ছোট কিংবা মাঝারী সাইজের সবুজাভ-নীল রঙের প্লাস্টিকের বাহারী বোতলে অনেকটা খেজুর গাছের আদলে নারিকেল গাছের ছবি। তো ওই সুপার মার্কেটে প্যারাস্যুট তৈল নাই?
ইয়ার্ডলি কেনার আগে সত্যি কথা বলতে কি ভারতীয় দোকান থেকে প্রসাধন সামগ্রী কখনোই কেনা হয়নি। দাদারা তেল দিতে অথবা তেল মাখাতে ভালবাসেন জানি তাই ঘরে ঘরে অথবা জনে জনে প্যারসুট থাকা অসম্ভব কিছু নয়! (সম্পাদিত)
পুরো লিখায় চিনিটুশের কুড়মুড় শব্দ শুনলাম যেন।
আর পড়তে পড়তে আমিও আমার শৈশব থেকে এক চক্কোর ঘুরে এলাম।
১০০ নং আগা মসিহ লেনের সেই বাসা থেকে যার পাশের ১০১ নং ছিল আবু সাদক সাহেবের নিউ বুলবুল বিস্কুট এন্ড ব্রেড ফ্যাক্ট্রি।
ওখানে গেলেই বিনে পয়সায় খাওয়া যেত রাজ্যের বিস্কিট, পাউরুটি, আর টোস্ট...
হ্যা চিনিটুশও, তবে আমরা ওটাকে অন্য কিছু বলতাম।
কি বলতাম, ভাল মতে নাই...
হয়তো বা মিষ্টি টোস্ট বা ওরকম কিছু একটা হবে...
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
পারভেজ ভাই, আগামসি লেনে একটা দোকানে " ঘোড়ার ডিম নামে একটা মিষ্টি জাতীয় বস্তু পাওয়া যেত একসময়।
নিজে কানা পথ চেনে না
পরকে ডাকে বার বার
এইটা তো জানতাম না!!
সেভেন্টি ফাইভের পর ওখান থেকে বেরিয়ে গেছি। তারপর হয়ে থাকলে জানাও সম্ভব না...
আর তাঁর আগে তো পড়তাম ক্লাস ফাইভে। জানাও খুব সহজ না...
😀 😀 😀
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
🙂 🙂 🙂 🙂
ঘোড়ার ডিম নামের মিষ্টান্ন! ভাবলাম একটু এডুকেট করি নিজেকে। সবজান্তা গুগলকে তলব করা হলো৷ প্রথমেই এলো সত্যজিত রায়ের তোড়ায় বাঁধা ঘোড়ার ডিমের প্রসংগ। লুইস ক্যারোলের জ্যাবার ওকির (ননসেন্স পোয়েম) ভাবানুষঙ্গ নিয়েই রচিত হয়েছিল সত্যজিতের মজার সব ছড়া। জানতে পারলাম ঘোড়ার ডিম নামের একখানা টিভি সিরিজের কথাও। তোমার ঘোড়ার ডিম কেবল বোধকরি বিলুপ্ত হয়েছে কালের স্রোতে, দাদা!
(সম্পাদিত)
চিনিটুশের কুড়মুড়ের কথা বলাতে মেলায় পাওয়া চিনির হাতি ঘোড়ার কথা মনে পরে গেল আমার, ভাইয়া। চৈত্র সংক্রান্তির মেলা হতো আমাদের শহরে, জানো। বাবার হাত ধরে আমরা মেলায় যেতাম আগুনঝরা বিকেলবেলায়। চিনির হাতি ঘোড়ার সাথে সাথে ডুগডুগি, ঘুরান্তি পাখা, মাটির পুতুল আরো কত কী যে কিনে দিতেন বাবা!
এগুলো পেতে আজকাল আর মেলায় যাওয়া লাগে না, জানো?
চৈত্র সংক্রান্তির বেশ কদিন আগে থেকে শুরু করে প্রায় পুরো বৈশাখ ধরেই সুপার সপ গুলোতে পাওয়া যায় ওগুলো।
আমি পেলেই, গৃহযুদ্ধের সম্ভবনা উপেক্ষা করে, নিয়ে আসি এক বাক্সো।
পুষ্টিবিদ স্ত্রীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আমি আর আমার কনিষ্ঠা কন্যা তা সাবাড় করি দীর্ঘদিন ধরে...
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
পুরো বৈশাখ জুড়ে চিনির ঘোড়া, হাতি আর মিঠাই, মিছরি? দেশ কত বদলে গেছে তাই ভাবি, জানো। হাওয়াই মিঠাইত্তয়ালার সরগোলে মুখর হতো চুপচাপ দুপুর। সেই একই হাওয়াই মিঠাই আমাদের এখানে কটন ক্যান্ডি নামে পরিচিত। কাঁচের বাকসে গরম প্যাটিস নিয়ে এসে হাঁক দিতেন হট প্যাটিসওয়ালা। মাটির পুতুল পাওয়া যেত মেলায়। শোলার ঘরে ঘোমটা ঢাকা বৌ আর বাঁশের বাঁশিও!
😀 😀 😀 😀
কেয়া বাত, কেয়া বাত!
একটানে কতগুলো জায়গা আর কতগুলো মুহূর্ত, বছর, যুগ ছুঁয়ে গেছো তা কি নিজেও বুঝতে পেরেছ?
তোমার লেখাগুলো যেন হাতের কারুকাজ করা রুমাল ---কলেবরে আরেকটু বড় হলে নকশি কাঁথা হয়ে উঠবে ওরা। কবে পাবো তাদের?
হায়! লিখতে লিখতে কত যুগের কথা বলে ফেলেছি আনমনে! আগে একাকী কথা বলতাম জানো, এখন সিসিবিতে বলি এই যা।
যাও পাখি বলো তারে টাইপ রুমাল নিয়েই আপাতত খুশী থাকো, কবি! নকশীকাঁথার ঠাসবুনান আমাকে দিয়ে হবে না। আমি বড় অস্থিরচিত্ত মানুষগো, বড়সড় পরিসরে লিখবার মত যোগ্যতা আর পেশেন্স দুটোরই অভাব আমার আছেযে!
তোমার এই কেয়া বাতখানি কাঠফাটা রোদে দিনমান ঘুরাঘুরি শেষে ব্লুবেরি-পমেগ্রানেট স্মুদির মতই প্রশান্তিদায়ক! :boss: (সম্পাদিত)
রংধনুর মতো মিলি আপা ওই সবুজ সাদা প্যাকেটখানা না আনলে আমাদের শোনা হতো না সুর করে ইংরেজী বলা ওই আউটলেটের মানুষ আর পণ্যের এতো কথা।
ছয় ডলারে শৈশব কেনা। চায়ের পারিবারিক উপাখ্যান। হরি কারিগরের প্যারা। গোয়ালার সেই কলাপাতা মোড়ানো খাটি দুধ ফেলে ডানো চিনিতে শৈশব ডোবা।
আর চিনিটুশশশ ! আহা !
অনবদ্য !
🙂 🙂 🙂 🙂
আমার চিনিটুশে মগ্ন শৈশবের গল্প পড়বার জন্য অনেক ধন্যবাদ, ভাইয়া! কী চমৎকার করেই না কথা বলেন, আপনি!
দারুণ লাগলো আপা.........
🙂 🙂 🙂 🙂
অনেক ধন্যবাদ, সাদাত!
ময়মনসিংহ শহর, নদীর পাড় ............ কত স্মৃতি, কত ভালোলাগা ... কৃষ্ণা কেবিন এর কথাও মনে এলো।
চিনিটুশ ... :thumbup: :thumbup: :thumbup: :thumbup: :thumbup:
নিজে কানা পথ চেনে না
পরকে ডাকে বার বার
🙂 🙂 🙂 🙂
কৃষ্না কেবিনের ছানার পোলাউর সুবাস পাওয়া গেল তোমার এই লেখার সুর ধরে, দাদা। তাজা ছানা কেটে জিভে জল আনা এই মিষ্টান্নটি বানাতো ওরা। ছানার পোলাউ আর খাইনি কোথাও। পরে দয়াময় নামের একটি দোকান হলো, একচেটিয়া ব্যবসা করে ওরা। ভুবনভোলা মালাইকারী বানান তারা, লোকজন লাইন ধরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে মিষ্টান্ন কেনে এখানে।
ধন্যবাদ, দাদা!
ভারী সুন্দর লেখা। পড়তে পড়তে আমারো বেশ ঘোরা হল সবার সাথে।
অই দোকান গুলোতে গ্লুকোজ বিস্কুট, বল সাবান, শীল পাটা, বটি, মায় পাখি মার্কা নীল ও দেখেছি। মানুষের চাহিদা সত্যি বিচিত্র।
দাদাদের সাথে ক্লাস ঘরে বা অপিস কামরায় গেলেই সুগন্ধি তেলের ব্যাবহার বোঝা যায়। তবে সুবাস টা সবসময় সু মনে হয় না।
কর্পরেটায়নের আগে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় নামকরা বেকারীর নিজস্বতা ছিল। এই যেমন আজিম পুরে সাগর সম্ভার।
🙂 🙂 🙂 🙂
দোকানে চটে মোড়া ইয়া বড় বটি দেখে আমি রীতিমত ভড়কে গিয়েছিলাম প্রথমে। শিল নোড়ার পাশাপাশি পান ছেঁচা হামানদিস্তাও মেলে চাইলে। আমার একজন বন্ধু দা বটিতে কাটাকুটিতে খুব সচ্ছন্দ। আস্ত মাছ তিনি পরম আনন্দে কাটেন। একদিন স্কাইপে তার কারিগরি দেখে খানিক আতঙ্কিত হয়েছিলাম যদিত্ত!
অনেক ধন্যবাদ, ভাইয়া!
আপু শৈশবের এত সুন্দর বর্ণনা কেবল বিখ্যাত লেখকদেরই লিখতে দেখেছি। শৈশবের এত কিছু তোমার ভিতরে কিভাবে বেঁচে আছে, তারই বর্ণনা দেখলাম। তুমি হলা আগাগোড়া ভালোবাসার মানুষ। বড় কিছুর প্রত্যাশা রইল। আমাদের অনুপ্রেরনা সবসময় তোমার জন্য। :clap: :clap:
🙂 🙂 🙂 🙂
তুমি বড় বেশী ভালবাসো, জিয়া, তাই বোধকরি সামান্যের মাঝে অসামান্য কিছু খুঁজে পাও! আমার এলোমেলো ভাবনাগুলো তোমাদের ভালবাসায় মুখর হচ্ছে নিয়তই!
অনেক ধন্যবাদ।
দু’চোখ বুজে অন্তহীন তৃষ্ণা আর মুগ্ধতায় কুটুশ কামড় দিই চিনিটুশে! পিঁপড়া কাঁদিয়া যায় পাতে!
রবীন্দ্রনাথের যুগে চিনিটুশ ছিলো কিনা জানিনা থাকলেও তিনি পিপড়া কাঁদাতে পারতেন বলে মনে হয়না। এগুলো শুধু সাবিনার দ্বারাই সম্ভব
যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান
🙂 🙂 🙂 🙂
তোমার প্রশংসার রংধনুতে নিজেই লাল, নীল, হলদেটে হয়ে যাচ্ছি, ভাইয়া! মন্তব্য লেখাকেও তুমি শিল্পের পযর্ায়ে নিয়ে গেছো!
বিনম্র শ্রদ্ধা!
আপা কি নোভা কোম্পানীর চিনি মাখা টোস্টের কথা বলছেন? ঐ কালপ্রিট গত দুই মাসে আমাদের জামাই-বউ এর ওজন কয়েক পাউন্ড করে বাড়ানোর জন্য দায়ী! ছাড়তে পারছি না :((
তো এই 'নোভা' কোম্পানী যে তোর বিশেষ প্রিয় হবে সে কথা তো বলাই বাহুল্য। 😛 😛 😛
🙂 🙂 🙂 🙂
একখানি সুগন্ধি গল্পের আভাস পাচ্ছি যেন নোভা ব্র্যান্ডের অন্তরালে, নূপুর! ছবিতা হয়ে যাক একখানা, প্লিজ! কে লিখবে ঠিকঠাক করে নাও নিজেরাই, নয়তো আমিতো রইলাম! (সম্পাদিত)
যে দুইদিন চিনিটুশ ছিল বাড়ি অন্য কিছু খাওয়া হয়নি আমাদের। তারাকে বলি, ব্রেকফাস্টে কি খাবে, বাবা? চিনিটুশ উইথ বানানা। দুপুরে? কি আবার, চিনিটুশ উইথ চিনিটুশ! ডিনারে কি খাবে জিজ্ঞাসা করতেই তারা বললো, হোয়াই বদার আস্কিং মি, মা? আমি ভাবছিলাম চিনির সাথে আরো কিছু মেশায় নাকি ওরা? কী যে নেশা লাগলো!
কোন ব্র্যান্ড দেখিনি। ভাগ্যিস আমাদের এদিকে পাওয়া যায়না!
না, দোকানের ডিসপ্লে না, আমার নিজের স্টক 🙂
🙂 🙂 🙂 🙂
ফটোগ্রাফারদের ব্যাপার স্যাপারই আলাদা। ফটো খিচা ছাড়া তারা বোঝেনই না কিছু।
হাইস্কুল সুইটহাটর্ কে হঠাত জনারন্যে খুঁজে পেলে কেমন লাগবে আমি এখন খুব বুঝতে পারছি হে! চিনিটুশের শোক ভুলেছি অনেক কষ্টে। আর মনে করিয়ে দিওনা, ভাইয়া!
হা হা হা কি করব বলেন? কথা আছেনা... a picture is worth blah blah blah 😛
😀 😀 😀 😀
অসাধারণ দিনলিপি!
ছোট ছোট ঘটনার মধুর স্মৃতিচারণ, অপূর্ব শৈল্পিক লেখনীর ছোঁয়া দিয়ে। এমন লেখা পড়তে খুব ভালো লাগে।
অনেক দিন আগে, সম্ভবতঃ ১৯৭৪-৭৫ সালে কিছুদিনের জন্য ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলাম। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সূতিয়াখালী রোডে একটা ছাপরায় সকাল বিকেল চা ও দুধের মালাই পাওয়া যেতো। সেই মালাই মাত্র একদিনই খেয়েছিলাম, কিন্তু স্বাদটুকু আজও মুখে লেগে আছে, বোধহয় আজীবন থাকবে।
সত্যিই, জীবনের স্মৃতি, কিছুই যায় না ভোলা!
১৬, শ্যামাচরণ রায় রোডে আমার এক অন্যতম শ্রেষ্ঠ বন্ধুর বাসা ছিলো। ৭৪ এ একবার বেশ বন্যা হয়েছিলো। ব্রহ্মপুত্র তখন টইটম্বুর ছিলো। সে সময় সেই বন্ধুর সাথে একবার দেখা করতে গিয়েছিলাম। নদের তীর ধরে হাঁটাহাঁটি করে একটা পুরো বিকেল রাবীন্দ্রিক আলোচনায় নিমগ্ন হয়ে কাটিয়েছিলাম। তোমার এ লেখা আমাকে সে মধুর স্মৃতি মনে করিয়ে দিল।
পরে কর্মোপলক্ষে প্রায় তিন বছর ময়মনসিংহে ছিলাম। সে সময়টাও আমার খুব ভালো কেটেছিলো। তোমার এ লেখা পড়ে সে সময়টার কথাও বেশ মনে পড়লো।
ভালো লেগেছেঃ
'সুরে সুরে ইংরেজী বলা গুজরাটি'
'ছুটির দিনের অবকাশে কাউন্টারের ছেলে গুলোও দেখি আজ দই এর ফোঁটা পরে কাজ করছে'
'মাত্র ছয় ডলারে এক কৌটো হারানো ছেলেবেলা কিনে আজ আমার দিনের শুরু হয়েছে!' (একাই একশ')
'দুধের শিশু বোতল ছেড়ে এ বাড়িতে চা পান করতে শেখে'
'পৃথিবীর তাবৎ দুঃখী মানুষ গুলো এখন জেনে গেছে যে তাদের দীর্ঘশ্বাসে বাতাস ভারী হবার আগেই তার প্রেমহীন হাত ছুঁয়ে থাকবে একটি উষ্ণ করতল!' (অন্যত্র একটি লেখায় তোমার মন্তব্যে এই 'উষ্ণ করতল' কথাটা বেশ শৈল্পিকভাবে এসেছিলো, এবং ভালো লেগেছিলো),
'যেনবা অডিসিউস খুঁজে পেয়েছে তার হারানো পেনেলোপেকে', আর....
'পিঁপড়া কাঁদিয়া যায় পাতে!' (এর চেয়ে সংক্ষিপ্ত ও শৈল্পিক উপায়ে লেখাটি শেষ করতে পারার মত লেখক খুব বেশী নেই)।
:hatsoff: :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:
আপনার লেখা মন্তব্যের জবাবে আরো একটি নতুন ব্লগ লিখতে মন চাইছে, ভাইয়া। আপনার মন্তব্য বরাবরের মত সম্মানিত করে আমায়। 🙂
আমাদের ময়মনসিংহের মালাইকারী অথবা মালাই চা দুটোরই লা জওয়াব। সবুজ চা পান করতে করতে যখন মরচে ধরে যায় জিভে, তখন মালাই চা বানাই বছরান্তে। কে না জানে ভাইয়া, One cannot think well, love well, sleep well, if one has not dined well~ Virginia Wolf, A Room of One's Own
দারুন লাগলো আপু :hatsoff:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
🙂 🙂 🙂 🙂
অনেক ধন্যবাদ, আকাশ! বহুদিন দেখা নেই তোমার। আশা করি ভাল আছো নক্ষত্রখচিত পৃথিবীতে!
:clap:
সাহেদ (৬০৫) ১২ তম ব্যাচ পিসিসি
🙂 🙂 🙂 🙂
তুই এতোদিনে পড়তে এলি সিসিবিতে, সাহেদ! তাও আবার তালিয়া বাজিয়ে উচ্ছসিত! মাঝেসাঝে আমাদের পাড়ায় ঢু দিয়ে যাস সময় পেলে।