ব্রাউন থ্রেশার ডাকা মাদারস ডে’র সকাল। আগের রাতে সুপ্তি কল করে বলেছে ও কি আসতে পারে আমাদের একটুখানি দেখতে? আমি বললাম, এই না রাতে ফিরলে ডালাস থেকে, এখনই আবার এতো দূর থেকে ড্রাইভ করে আসবে ‘একটুখানি’ দেখতে? আমার কন্ঠের সংশয় টের পেয়ে ও বলল, তোমাদের ওদিকে প্যাটেল ব্রাদার্সে যাবো বাজার করতে, তাই ভাবলাম একটু দেখা করে যাই মা-মেয়ের সাথে!
অতিথি নারায়ণ বলে কথা তাই বারণ করতে পারিনা মুখের ওপর। কাঁচুমাচু করে বলি, দুপুরে নেমন্তন্ন রয়েছে আপার বাড়ি। ঘণ্টা দেড়েক ড্রাইভ করে দুপুর একটার মাঝে পৌঁছুতে হবে আমাদের। একটু অপ্রতিভ হলেও সুপ্তি বলে, মোটে দশ মিনিট থাকবো তোমার বাড়ি, এরপর না হয় দিদির বাড়ি যেও তার আদর খেতে। ইচ্ছে করলে বলতে পারতাম, চলে এসো বন্ধু, তোমাকে নিয়েই আজ আপার বাড়ি যাবো লাঞ্চে। এরকম তো কতই হয়েছে এক বন্ধুকে নিয়ে বিনা নোটিশে উপস্থিত হয়েছি অপর বন্ধুর বাড়ি। বিদেশ বিভূঁইয়ে কেউ কারো বাড়ি এলে সবাই খুশি হন। সাত পাঁচ ভেবে আমার বলা হয়না কিছু।
দশটা বাজতে না বাজতে সুপ্তির কালো রঙা কনভারটিবল থামে বাড়ির পেছনে। ওপরতলা থেকে দেখতে পাই আমার বন্ধুটি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে নামছেন গাড়ি থেকে। কী হলো, কী হলো বলে আমি আর তারা ছুট লাগাই পারকিং লটের দিকে। জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেলো তিনি পায়ে ব্যথা পেয়েছেন দু’দিন আগে ডালাসে। এক ঘণ্টা ড্রাইভ করে তারপর এই খোঁড়াতে খোঁড়াতে এত দূর থেকে আসার কারণ বুঝতে পারি এবার। এক হাতে একখানা গিফট ব্যাগ ধরা ওর, অন্য হাতে তারার জন্য আমেরিকান কুকিজের একখানা বাকসো। ট্র্যাঙ্কে দেখি লাল, হলুদ আর পিচ রঙা একটি গোলাপের তোড়াও শুয়ে রয়েছে পাতায় জড়াজড়ি করে। সুপ্তি তার স্বভাবসুলভ একটা হাসি দিয়ে বলল, হ্যাপি মাদারস ডে, গ্রাউচি মাম্মা!
জন্মদিন থেকে শুরু করে কোন দিবস টিবস পালন করা হয়না আমার। আমি যাঁদের ভালবাসি তাঁদের নিয়তই ভালবাসি তাই আলাদা করে কিছু উদযাপন করা হয়না। নিজের জন্মদিনে মাকে গিফট পাঠাই নিয়ম করে, আর আমার আমেরিকান কন্যারত্ন যাবতীয় উৎসবই পালন করে কবিতা লিখে অথবা নিজের হাতে বানানো বিডসের জুয়েলারি উপহার দিয়ে। জন্মদিন বা অপরাপর উৎসবের তথাগত আনুষ্ঠানিকতা পালন না করলেও ভালমন্দ খাবার দাবারের আয়োজন করি বাড়িতে। দুটো চারটে ফোনকল আসে প্রিয়জনদের থেকে অথবা হঠাৎ বৃষ্টির মত উপহারও মেলে কারো থেকে কদাচিত। আজ বোধকরি তেমনি একটি হঠাৎ বৃষ্টির সকাল।
গিফট হাতে পেয়েই খুলে দেখার নিয়ম এখানে। সুপ্তি বলল, কি আছে বলো দিকিনি? আমি বললাম, একখানা টিউনিক আর হলমার্কের কার্ড হতে পারে, অথবা তুলতুলে একটা খরগোশ ছানা বা কফি মগের সাথে উপরি পাওনা ক্যারিবু কফির প্যাক, নাকি শারলট পেন্সের ‘মেনি স্মল ফায়ার’ নিয়ে এলে পড়ে শুনাবে বলে? আমার কল্পনার দৌড় দেখে সুপ্তি হাসে খিলখিলিয়ে!
উপহারের ধবল সাদা গিফটের বাকসো হাতে আমার মুখে রা আর সরে না! কামড়ে খাওয়া আপেলের ছবি দেখেই বুঝতে পারি ঘটনা সামান্য নয়। ইতস্তত করে বলি, এতো দামী গিফট আমায় কেউ কখনো দেয়নি, সুপ্তি। আমার গা মোড়ামুড়ি দেখে ও বলল, তুমি ব্লগে লেখালেখি করতে ভালবাসো, তাই মাদারস ডে তে আইপ্যাড মিনি ছাড়া অন্য কিছুই মাথায় আসেনি তোমাকে দেবো বলে। এবার শুয়ে, বসে, ডাক্তারের অফিসে, গ্রোসারির লাইনে দাঁড়িয়ে অথবা পার্কের কোণে বসে লিখতে পারবে মনের সুখে।
আমার কিছু ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের মত সুপ্তিও আমার ব্লগ পড়েন আমি জানি। আবোলতাবোল এইসব বিচ্ছিন্ন ভাবনা গুলো যে কারো ভাল লাগতে পারে ভাবিনি কখনোই। একখানা ভেজি অমলেট, গারলিক ব্রেড আর কমলার জুস খাইয়ে অতিথি আপ্যায়ন করি ঝটিতি। বাঙালী বাড়ির নেমন্তন্নে শাড়ি না পরলেই নয় তাই তৈরি হতে ছুট লাগাই ওপরতলায়। এরপরের ক’টি দিন কুমির ছানার গল্পের মত ঘুরেফিরে ‘কাটা কাটা কাটা’ বলার মত আমার সব গল্পই ফুরোতে লাগল আইপ্যাড মিনিকে নিয়ে।
মা দিবসের রাতে ছোটবেলার বন্ধু সুনন্দাকে উইশ করবার জন্য কল করলাম গ্রিসে। একটি কুকুর ছানা আর দুটি বেড়াল নিয়ে সুনন্দা ঘোষালের সংসার। পুজো সেরে তিনি তখন ক্রিমের পাহাড়ে চিরিওস আর মধু ছড়িয়ে আয়েশ করে খেতে বসেছেন সবে। ঝিল্লি আর মিল্লি মিয়াও মিয়াও করছে মায়ের পাশে বসে। বিবি একটু দূরে বসে টিভি দেখছে অশেষ মনোযোগের সাথে। আমার গল্প যথারীতি কুমির ছানার দিকে যাচ্ছে আমি বুঝতে পারছি। অবশেষে চুইয়ি ওটমিল কুকি খেতে খেতে তাকে আইপ্যাড মিনির গল্প বলি। তারার উপহার দেয়া পুতির ব্রেসলেট আর মাতৃবন্দনার কবিতার কথাও বাদ যায় না!
সুনন্দা বরাবরের মত চুপচাপ শুনে যায় আমার যাবতীয় বাকোয়াজ! আমি থামলে এক ঢোঁক টেকিলা খেয়ে খুব ধীরে ছয় ফিট তিনের হ্যাজেল চোখো এক জোসেফের দেয়া উপহার জুরিখের বাড়ির গল্প বলতে শুরু করলেন তার স্বভাবজাত নিঃস্পৃহ কন্ঠে। মিনমিন করে আমি বলি, টেকিলা কি অলরেডি টকটকাচ্ছে নাকিগো মাথায়, সুনন্দা? ও বলল, টেকিলাকে আমি টক করাই, টেকিলা আমায় নয় বন্ধু! নিচতলায় লিভিং রুমে তখন গান বাজছে সুখের কথা বলোনা আর বুঝেছি সুখ কেবল ফাঁকি। আমি কল্পনায় দেখতে পাই ওপরে জুরিখের মেঘে ঢাকা ধুসর আকাশ, সবুজ লতাগুল্মে ঘেরা টেরাসের এক কোণে কানে হেডফোন এঁটে মৃদু দুলছেন সুনন্দা ঘোষাল। পাশের টিপয়ে রক্তিম সাংরিয়ার পাশে একখানা টল নেক কাঁচের গেলাস আর কিছু বরফের টুকরো। পুরো বাড়িতে পিনপতন নিরবতা! কোথাও কেউ নেই!
বন্ধুর দেয়া আইপ্যাডের কারণেই এই ক’দিন আমার কিছুই লেখালেখি হয়নি। আট ডলারে নেটফ্লিক্সে সারা মাস ইচ্ছেমত মুভি দেখার সুযোগ থাকলেও ঘরে বসে মুভি দেখতে ভাল লাগে না আমার। কানাডা থেকে বন্ধু পার্থ কৌশিক গাঙ্গুলির ‘শব্দ’ পাঠিয়েছিলেন, সেটিই দেখলাম রাত জেগে। খুঁজে পেতে মিরাক্কেল দেখলাম, গান শুনলাম, চোখে কাজল এঁকে ফেইস টাইমে আড্ডা দিলাম পাপড়ি আপার সাথে আর মাঝেমধ্যেই তারা আর ফ্লাফির সাথে সেলফি তুললাম।
আগে তবুও লেখালেখি কিছু হতো মাঝেমধ্যে, সুপ্তির কল্যাণে এবার সেটিও চিতেয় উঠলো বলে!
অসাধারন কিছু মানুষের গল্প পড়লাম। ''এবার শুয়ে, বসে, ডাক্তারের অফিসে, গ্রোসারির লাইনে দাঁড়িয়ে অথবা পার্কের কোণে বসে লিখতে পারবে মনের সুখে।'' উপহার দাতার চিন্তার প্রশংসা করতে হয়। অনেক সুন্দর হোক এই লেখার প্রত্যেকটা চরিত্রের জীবন। আমার শুভকামনা রইল। :clap: :clap:
🙂 🙂 🙂 🙂
এখনো আইপ্যাডে রিদমিক অথবা বাংলা নোটে লিখতে অভ্যস্ত হয়ে উঠিনি। সুপ্তি জানতে চান কি লিখছি বসে। আমি বলি, লেখালেখি সব চুলোয় গেছে, ফ্লাফির ভিডিও করি আর গান শুনি শুয়ে শুয়ে!
🙂 🙂 🙂 🙂
এখনো আইপ্যাডে রিদমিক অথবা বাংলা নোটে লিখতে অভ্যস্ত হয়ে উঠিনি। সুপ্তি জানতে চান কি লিখছি বসে। আমি বলি, লেখালেখি সব চুলোয় গেছে, ফ্লাফির ভিডিও করি আর গান শুনি শুয়ে শুয়ে!
খুব ভাল লাগলো।
মনটা হঠাৎ করেই খুব ভাল হয়ে উঠলো...... (সম্পাদিত)
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
🙂 🙂 🙂 🙂
আমার সাদামাটা দিনলিপি পড়তে বসে তোমার মন ভাল হয়ে উঠেছে জেনে আমার নিজেরই মন ভাল হয়ে গেল, ভাইয়া!
পারভেজ ভাই একদম ঠিক কথাটি বলেছেন।
সারাদিন শেষ এমন একটি দিনলিপি পড়লে যে কারও মন ভাল হয়ে যেতে বাধ্য! 😀
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
দিনমান বোধকরি সিসিবির কথা ভাবি, জুনা! তাই ইচ্ছে হলেই লিখতে বসে যাই টুকরো গল্প গুলো। সোশ্যাল মিডিয়াতে সোচ্চার কন্ঠ নই, ফেসবুক অথবা টুইটারে মৃতপ্রায় মানুষ আমি। সিসিবি আমার নিজের বাড়ি, তাই আমার আটপৌরে গল্পের ঝুলি নিয়ে তোমাদের কাছেই আসা!
কেমন যেনো ঘোর লেগে যাচ্ছে গল্পের আমেজে। এই গল্প বলার মাঝে ডাল-পালার অপূর্ব বিস্তারে উঠে আসে বাড়তি কিছু আংগিক, দৃশ্যপট, ডাইমেনশন।
এই ব্যাপারটা বরাবরই লেখায় এনে দিচ্ছে অন্য রকম স্বাদ। এখানেও তা উপভোগ করলাম।
বারো রকমের মানুষের সাথে আমি মেলামেশা করি, ভাইয়া। জাতপাতের ধার ধারিনা। সাদা কালো অথবা স্ল্যান্টেড চোখের মানুষটির সাথেও গল্প জুড়ে দিই অনায়াসে পথেঘাটে। তাই আমার গল্পের শেষ নেই।
আমার এইসব তুচ্ছ গল্প গুলো যে আপনার মত গুণীজনরা পড়ছেন তাতেই আমি ধন্য! :hatsoff:
লাইফ ইজ রিয়েলি রিয়েলি গুড - লালবরণ হার্ট থেকে যখন মা-কে আরেক মায়ের দেয়া উপহার ঝিকিয়ে উঠছে।
আর তোমার বন্ধুভাগ্য -- আ হা। তারা আস্ত আপেল না দিয়ে আধখাওয়া আপেল দ্যায়। মানে হয়! 😛 😛
সবশেষের ছবিতে তিনজন খুঁজতে গিয়ে ফ্লাফি শিরোমণিকে দেখে তবে হিসেব মিললো।
যাক, এবারে আর রাইটিং প্যাড-ট্যাড না -- সরাসরি আইপ্যাডে লেখালেখি! :clap: :clap:
তোমার দিনলিপি মানে রেডিওতে রোববার সকালের খুশি খুশি এফএম, নয়তো মঙ্গলবারের কান্ট্রি মিউজিক চ্যানেল।
জিও!
এটোকাঁটা অথবা কামড়ে খাওয়া আপেল ছাড়া সত্যি আমার কপালে আর কীবা জোটে, বলো! কাগজ কলম এবার বুঝি মিউজিয়ামে পাঠিয়ে দেবার সময় হলো৷ একখানা গান শুনলে মনে হয় তোমাদের সাথে নিয়েই শুনি।
এফএম রেডিওর উল্লেখে কত গান আর কবিতা মনে পরে গেল! 🙂
মাদার্স ডে'র আগের রাতে ছোট কণ্যা বলল, মামমামের জন্যে কী কিনেছো? বললাম তোমার মাদার তুমি কেনো, আমাকে বল কেন? সে বলল, কেনো ফাদার্স ডে তে তুমি যেসব পাও সে গুলো তো মামমামই কিনে দেয়। পরদিন সে তাদের দাদিকে ফোন করে, আমাকে বললো তুমি হ্যাপি মাদার্স ডে বল। আমি বললাম আমার বলার দরকার নেই।
মেয়ে বলল, বাবা আমরাও কী তোমার মত কিপটা হয়ে যাবো?
যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান
হুমম, ভাইয়া! আমরা কিপটে আছি খুবই। বলতে পারিনা কিছুই। অথবা মুখ ফুটে কেন বলতেই হবে সব!
আমার ক্লসেটে বাবার শাটর্ ঝুলে থাকে, পাশেই মায়ের আটপৌরে একখানা শাড়িও, যেন তারা বাইরে গেছেন ফিরবেন এখনই!
"আমার ক্লসেটে বাবার শাটর্ ঝুলে থাকে, পাশেই মায়ের আটপৌরে একখানা শাড়িও, যেন তারা বাইরে গেছেন ফিরবেন এখনই" - ভেরী ভেরী প্যাশোনেট ফীলিংস! টাচড!
:boss: :boss: :boss: :boss:
ট্যাব, প্যাডে রিদমিকে বাঙলায় ব্লগ লিখে মন ভরে না আপা! সোজা বাঙলায় হাত নিশপিশ করে পুরোদস্তুর কীবোর্ডের ছোঁয়া পাবার আশায়!
প্রতিবছর মাদার্স ডে এলে এই নিয়ে কিছু আসলে বলার পাই না। অস্বস্তি লাগে। ফ্যামিলি-ওয়ার-ভেটেরান মা এইসবের ধার ধারেন না। বোঝাতে চেষ্টা করেছিলাম বছর দুয়েক। হেসে উড়িয়ে দিয়েছেন। এর চেয়ে সকালের আধা ঘন্টার অবসরে মা-ছেলের কফি হাতে পারিবারিক কূটনৈতিক আলোচনা ঢের ভালো।
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
ভাবছিলাম আমিই বুঝি একমাত্র মানুষ যে আইপ্যাডে লিখতে গলদঘর্ম হয়ে যাচ্ছে! অভ্রতে বড় বেশী সচ্ছন্দ তাই রিদমিকে জুত খুঁজে পাচ্ছি না এখনো। ছোটখাট একখানা কীবোর্ড এতে সংযোজন করা যেতে পারে, কিন্তু অভ্রের অভাব মেটাই কি করে!
তোমাদের মাতা পুত্রের কফি হাতে কূটনীতির গল্প শুনে মন ভরে গেলরে! জগত জুড়ে সব মায়েরা তো অমনই চান। পাশে এসে বসবে পুত্রটি, প্রশারের ঔষধ ঠিকমতো খেয়েছতো অথবা আজ খিচুড়ি নইলে চলবে না, মা! আমরা লাভ ইউ বলা জেনারেশন নই, তাই কত কায়দা করে বুঝিয়ে দিতে হয় কত ভালবাসি!
তারা যখন স্কুল থেকে টেক্সট পাঠিয়ে বলে, হোয়াট ইজ ফুলকো লুচি, মা? আমি উত্তরে কিছু না লিখে অল পারপাস ফ্লাওয়ার খুঁজে বের করে ময়ান দিতে শুরু করি। সাথে একটু বিফ না হলে চলবে কি করে ভাবতে ভাবতে ফ্রিজারের দিকে এগোতে থাকি। টেক্সট ব্যাক পাঠানোর সময় কোথায় অতো!
সব কথা বলে দিলেন! :party:
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
😀 😀 😀 😀
একটা অয়ারলেস কীবোর্ড কিনে ফেলেন!
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
"আবোলতাবোল এইসব বিচ্ছিন্ন ভাবনা গুলো যে কারো ভাল লাগতে পারে ভাবিনি কখনোই।" - সত্যি কথা বলতে কি, তোমার ব্লগ গুলো যখন পড়ি, আমার তখন মনে হয় যে সিসিবি'র আমরা সবাই কোথাও সেমি সার্কলে এক জোট হয়ে বসে আছি, আর সামনে মাঝখানে বসে তুমি তোমার গল্পগুলো আমাদের পড়ে শোনাচ্ছো। আমরা মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনে যাচ্ছি। সাধারণ কথাবার্তাও যে কত অসাধারণভাবে পাঠকের কাছে বা শ্রোতার কাছে নিবেদন করা যেতে পারে, তা তোমার লেখা পড়ে শেখা যায়।
আমার বাংলা ভোকাবুলারী সমৃদ্ধ হলো, নতুন একটা সুন্দর শব্দের সাথে পরিচিত হ'লাম - 'ঝটিতি'।
"সাদা কালো অথবা স্ল্যান্টেড চোখের মানুষটির সাথেও গল্প জুড়ে দিই অনায়াসে পথেঘাটে। তাই আমার গল্পের শেষ নেই।" - তা কি আর ঘটা করে বলতে হবে? তোমার লেখাগুলো পড়লে তো এমনিতেই তা বেশ বুঝা যায়। আর "স্ল্যান্টেড চোখের মানুষ" কথাটার উল্লেখে জাত পাত আর বর্ণ বৈসা্দৃশ্য ছাড়াও এক নতুন রিপালসিভ ফ্যাক্টর এর সন্ধান পেলাম।
পাঠকের মন্তব্যগুলোতে তুমি যে কত একান্ত নিষ্ঠার সাথে মনযোগ দাও তা তোমার উত্তরগুলো পড়লে বেশ বুঝা যায়। প্রতিটি ডায়ালগ থেকেই যেন নতুন একটা ব্লগ শুরু করা যাবে, এমনটি মনে হয়। এ ধরণের উদাহরণ উপরেই বেশ কয়েকটা আছে।
বলা বাহুল্য, এ লেখাটি আমি খুবই উপভোগ করেছি।
আমেরিকার প্রি-স্কুল গুলোতে সাকর্েল টাইম বলে একটি ব্যাপার আছে, ভাইয়া। সাকর্েল টাইম শুরু হতেই বাচ্চারা গোল হয়ে মেঝেতে বসে, সামনে মাস্টারমশাই। তারপর এই ক্ষুদে মানুষগুলো তাদের নানান রকমের ভাবনা বা আইডিয়ার কথা বলে। কখনো গান, কখনো কবিতা, আবহাওয়ার সংবাদ, গেম অথবা নানান এক্টিভিটিতে কাটে এই সময়টা। সিসিবির সব বিদগ্ধ ব্লগারদের সামনে বসে সাকর্েল টাইমের কথা ভাবতে গিয়ে আমি অবশ্য শিউরে উঠছি মনে মনে!
রাতে খাবার টেবিলে বাবা আমাদের কথা শুনতেন মনযোগের সাথে। ক্লাসে কি হলো, কে ঝুটি টেনে দিল অথবা চয়নিকার কোন ছড়াটি মুখস্ত করেছি মাত্রই বলতাম তখন। কোরান পড়াতে এসে হুজুর নারকোল শলার কাঠি দিয়ে মেরে হাতে ব্লিস্টার বানিয়ে দিয়েছিলেন। বাবাকে এটি বলতেই পরদিন হুজুর ফায়ারড হলেন। বুকনী ঝাড়ার শুরুটা বাড়িতেই হয়েছিল বুঝতে পারি এখন।
ব্লগের এই আড্ডাটা উপভোগ করছি খুব, ভাইয়া। আপনার মন্তব্য পড়ে বরাবরের মতো সম্মানিত বোধ করছি।
"সাকর্েল টাইম"? সাকর্েল বানানটা ইংরেজীতে কী রকম?
গুড মনর্িং, ভাইয়া!
Circle time....গোল হয়ে বসে সবাই গল্প করে। আপনার এই যে জানতে চাওয়া অকপটে, সেটি আমায় মুগ্ধ করে খুবই। আপনার দিনটি আনন্দময় হোক!
ওহ, Circle time? বুঝলাম তো এবার!
সেই ছোট্ট শিশুকাল থেকেই আমি খুবই inquisitive ছিলাম বলে বড়রা আমায় জানাতো। তারা গত হলেও, আমার স্বভাব তো বদলায় নি।
::salute:: ::salute:: ::salute:: ::salute::
Madam Sabina, your whole essay could be easily titled “A Tale Of Two Cities” or more precisely, “A Tale of Two Friends”. You see madam Sabina, your interesting and colorful garland of bold comparative contrasts reminded me of Charles Dickens’s famous novel, “A Tale of Two Cities”. Dickens starts out his novel with, “It was the best of times, it was the worst of times, it was the age of wisdom, it was the age of foolishness, it was the epoch of belief, it was the epoch of incredulity, it was the season of light, it was the season of darkness, it was the spring of hope, it was the winter of despair.”
You have compared your two friends, one living in Atlanta and the other living in Greece. I imagine, Athens or Santorini. One celebrating Mother’s Day with a thoughtful gift. The other drinking Tequila, and, instead of being happy for your gift, immediately starts talking about the the apartment in the Swiss Alps, that was “gifted” to her by her lover. One friend going out of her way to seek human contact, to meet her friend and to bring her gifts. The other, alone, drinking hard liquor, and spending time with animals. Happiness and sadness. Wisdom and foolishness. Hope and despair. Dickens also wrote, “A day wasted on others is not wasted on one's self.” . In your short writing, I see one friend spending her time with you, and the other, wasting her time on herself.
I am glad you got to celebrate Mother’s Day in style. It is not just about celebrating mothers. It is about celebrating life. It brings much happiness. If the way we live and celebrate is a message to the world, we need to be inspiring. I enjoy your love for writing. You make the small things beautiful and full of meaning. You inspire me to write.
Oh, and about that Tequila…I LOVE Tequila. But Tequila does not love me!
I liked the summary that is embedded in this sentence:
"one friend spending her time with you, and the other, wasting her time on herself"
Simply loved it...
:clap: :clap: :clap:
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
Thank you Mr. Pervez. While Ms. Sabina wrote her blog in a matter of fact way, I could not help but notice the sheer rude aspect of the story. The blatant one-upmanship by one the subjects of the story irked me somewhat.
But then again, that was the contrast between the two personalities.
Your crystal clear understanding of the writer's mind, incisive insight and eloquent appreciation adds to the beauty of the original writing, manifold, Mr. Pappu! Your comments are worthy pieces of gem to adorn the glittering garland that Ms. Sabina strings with her miscellany of wandering thoughts.
Mr. Ahsan, thank you for taking the time to read my comment. It means a lot to me. You are poet, scholar, and a gentleman. And I for one, appreciate your feedback.
আলোর পাশেই যেমন অন্ধকার থাকে, অথবা সকরুণ চোখের পাশেই যেমন খলবলে হাসি ঠিক তেমনি আমাদের চারপাশের কন্ট্রাস্ট গুলো আমার চোখে পরে নিয়তিই। আমার এই দিনলিপিটি তেমনি এক কম্পেয়ার এন্ড কন্ট্রাস্টের গল্প! Michael Straczynski once wrote, There's a rule of writing: if everything is funny, nothing is funny; if everything is sad, nothing is sad. You want that contrast!
আমার মত অভাজন যে কাওকে লেখালেখিতে উৎসাহিত করতে পারে সেটি ভাবতে ভাল লাগছে। ভাল থাকবেন।
শুনো, পারুল বোনরা কখনো অভাজন হয় না।
বুঝছো?
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
সাত ভাইয়ের একটি বোন হয়ে যে ভালবাসা আমি পাই তোমাদের সবার থেকে তাতে এ জীবন ধন্য বললেও কম বলা হয়।
:boss: :boss:
মিস্টার পাপ্পু'র মন্তব্যটা পড়ার পর এ লেখাটা পুনরায় আদ্যোপান্ত পড়লাম। অবাক হ'লাম দেখে যে কত কিছুই, কত সব ছোট্ট কিন্তু নিখুঁত বর্ণনা আমার চোখ এড়িয়ে গিয়েছিলো। উদাহরণ দিতে গেলে কলেবর বৃদ্ধি পাবে, তবে এক কথায় বলবো, তোমার ডেসক্রিপ্টিভ পারদর্শিতা অসাধারণ!
"সুখের কথা বলোনা আর বুঝেছি সুখ কেবল ফাঁকি" - এ গান চয়নটাও গল্প বলিয়ের মুন্সীয়ানার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
অথবা অন্যভাবে বলতে গেলে,
এরা সুখের লাগি চাহে প্রেম, প্রেম মেলেনা
শুধু সুখ চলে যায়।
:thumbup:
ধন্য হোক তোমার লিখালিখি, ধন্য হও তুমি।