রূপার নানীজান সালেহা খাতুন উনিশ থেকে বিশ বলতে পারতেন না, বলতেন উনিশ থেকে বিনিশ! এই নিয়ে বাড়ীর বছুইরা কামলারা পর্যন্ত হাসাহাসি করে আড়ালে আবডালে। কিন্তু ঐ পর্যন্তই! তার সামনে চোপা খুলবে এমন সাহস ছনকান্দা গ্রামে কারোরই নাই। নানীজান পান থেকে চূণ খসা বুঝাতে গেলেই বলছেন উনিশ থেকে বিনিশ!
শারীরিক উচ্চতায় খানিক ঘাটতি থাকলেও রূপার নানা জমির মুনশীকে রীতিমত সুপুরুষ বলা চলে। দুধ মাখন খাওয়া চকচকা শরীর তার। চেহারার বনেদিয়ানা আর মিতভাষীতার কারণে গ্রামে তার সুনাম আছে। কথিত আছে অতি রূপবতী প্রথমা স্ত্রীর মৃত্যুর পর জীবনের প্রতি নানাজানের খানিক বৈরাগ্য দেখা দেয়। সংসার উচ্ছন্নে যাবার আগেই তাই মায়ের পছন্দে শিকারীকান্দা গ্রামের শিক্ষক আতাউল গণীর বড় মেয়ে সালেহা খাতুনকে বিবাহ করেন নানা। নানীজান উচ্চতায় নানার থেকে এক বিঘৎ লম্বা। তার গায়ের রঙ এতো ময়লা না হলেও পৃথিবীর কোন ক্ষতি বৃদ্ধি হতো না। ঈষৎ সমতল নাসা আর জোড়া ভুরুর সালেহা খাতুন কথা কম বলেন, কাজ করেন ঝড়ের গতিতে। তিনি সংসারে আসবার কিছুদিনের মাঝেই বুঝে গেলেন তার স্বামীরত্নটি এখনো মৃত স্ত্রীর কথা স্মরণ করে চোখের জলে বালিশ ভেজান আর বাপের রেখে যাওয়া জমিজমা বর্গা চাষে লাগিয়ে গায়ে হাওয়া লাগিয়ে বেড়ান।
মুনশী বাড়ীতে নানাজানের ঘরটিকে দালানঘর বলে সবাই। বাড়ীর সম্মুখ ভাগে সুপারীর বাগান আর পাকা মসজিদ, যদিও জুম্মাবার ছাড়া এই মসজিদে লোক সমাগম হয় না বললেই চলে। একটু হেঁটে সামনে গেলে বাঁশঝাড়ের পাশে পারিবারিক গোরস্থান। বাড়ীর পেছনে আড়ার পাশে মেয়েদের জন্য আলাদা পুকুরঘাট আছে। সবুজ শ্যাওলা ভাসা সেই পুকুরে শরীক ঘরের বৌ ঝিরা গোসল করতে আসে শেষ দুপুরে। পরস্পরের গা মাজতে মাজতে কুট কচালীও চলে খানিক। সালেহা খাতুন পুকুরে দাপাদাপি করেন না কখনো। মরেনের মা টিপকলের পানি তুলে দিলে সেই পানিতে গোসল সারেন তিনি।
নানার বিশাল আয়তনের দালান ঘরে কারুকার্যখচিত একটা পালঙ্ক ছিল, তাতে একসাথে অন্তত ছয়জন মানুষ ঘুমাতে পারে। ছিল একখানা আয়নাওয়ালা ড্রেসিং টেবিল, মেহগনী কাঠের গোটা দুয়েক আলমারি আর ইয়া বড় একটা লোহার সিন্দুক। দালানে নানা একাই থাকতেন হাত পা ছড়িয়ে। বাড়ীর দাসী বান্দীদের দালান ঘরে যাওয়া নিষেধ, আবার কচি কাঁচারাও দালানমুখো হয়না সহজে। মুনশী বাড়ীতে আরো তিনটে টিনের ঘর ছিল। উত্তরের কোঠা, দক্ষিণের কোঠা আর মধ্যের কোঠা নামে পরিচিত এই ঘর গুলিতে নানীজান রূপার শৈশবউত্তীর্ণ মা খালাদের নিয়ে ঘুমাতেন।
বাড়ীর বাইরে লাল মেঝের দু’খানা ঘর নিয়ে বৈঠকখানা ছিল জমির মুনশীর। বাড়ীর মালিকের জন্য একখানা হাতলওয়ালা চেয়ার পাতা ছিল বারান্দায়, বাকী সবার জন্য ছিল ভাগের বেঞ্চি, আর তাতেও স্থান সংকুলান না হলে লাল মেঝেতে বসে পড়তো লোকজন। মুনশী বাড়ীর এই বৈঠকখানাকে গ্রামের লোকেরা বলতো বাইডেগ ঘর। বাইডেগ ঘরে এলাকার লোকজনের বিচার সালিশ বসতো বিকালে। বাড়ীর মেয়েদের বৈঠকখানায় যাওয়া বারণ ছিল। ঘন্টায় ঘন্টায় বাইডেগ ঘরে পান আর তামুক সরবরাহ করা হতো অন্দরমহল থেকে।
নানার জন্য সরটা, ঘিটা, আর মাছের মুড়োটা আলাদা করে উঠিয়ে রাখতেন সালেহা খাতুন। কচি মুরগীর সুরুয়া আর চিকন চালের ভাত ছাড়া তার চলে না। শেষ পাতে দুধ কলা আর গুড়ের সন্দেশ সারা বছর জমির মুনশীর জন্য বরাদ্দ থাকতো। সংসারের সাতে পাঁচে তিনি নাই, নিজের খাওয়া টুকু আয়েশ করে খেতে পারলে বাকীরা কে কি করছে বা খাচ্ছে তা নিয়ে জমির মুনশীর কোন মাথা ব্যাথা নাই।
সালেহা খাতুন বিরান জমিতে ধান চাষের বদলে পুকুর কাটিয়ে সেখানে মাছ চাষের ব্যবস্থা করলেন। রাতে মাছ চোরেরা জাল ফেলে মাছ ধরে নিয়ে যায় বলে তিনি স্বামীর কাছে একটি বন্দুক কেনার জন্য বায়না ধরেন একদিন। জমির মুনশী জগতের সব ঝুট ঝামেলা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে চলেন তাই বন্দুক কেনার প্রস্তাবে তিনি খানিক ভীত হয়ে পড়লেন।
মাছ চুর ধরনের লাইগ্গ্যা বন্দুক লাগবো ক্যা, মাজুর মা? দুলাইল্লারে পাহারাত বসাই, চুর ধইরা লইয়া আইবো তিন দিনের মইদ্দে!
সালেহা খাতুন তার সিদ্ধান্তে অটল রইলেন। তিনি জানেন মাছই কেবল চুরি হয় না সংসারের, গাছের সুপারী, নারিকেল আর উগারের ধান পর্যন্ত চুরি হয়ে যাচ্ছে আজকাল। ঘরে একটা বন্দুক থাকলে বুকে সাহস থাকে। অস্ত্রের ব্যাবহার নয়, লোকের মনে ভীতি সঞ্চারটাই আসল কথা। যে সংসারে স্ত্রীকে স্বামীর ভূমিকা পালন করতে হয় সেই সংসারে স্ত্রীর আবদারই যে আদেশ তা বুঝতে দেরী হয়না জমির মুনশীর। অতএব মুনশী বাড়ীতে বন্দুক কেনা হলো ঘটা করে। সালেহা খাতুন নিজে ঘোমটায় মুখ ঢেকে একজন শিকারীর কাছ থেকে বন্দুক চালনা শিখে নিলেন। তারপর সকালের নিস্তব্ধতায় একদিন ফাঁকা গুলি করে গ্রামের সবাইকে জানিয়ে দেয়া হলো যে মুনশী বাড়ীতে বন্দুক আছে একটা। অস্ত্রের ভয়ে কিনা জানি না তবে মাছ চুরি বন্ধ হয়ে গেলো। উগারতলায় আর চোখ রাখতে হয়না আগের মত। জনশ্রুতি আছে যে, একবার মুনশী বাড়ীতে ডাকাত পরলে সালেহা খাতুন বন্দুক হাতে পেছনের দরজা দিয়ে এক ডাকাত কে ধাওয়া করে গুলি করে তার পা উড়িয়ে দিয়েছিলেন।
একে একে পাঁচ কন্যার জন্মের পরও যখন সালেহা খাতুন পুত্রের মুখ দেখাতে পারলেন না তখন তিনি নিজেই জমির মুনশীকে আবার বিবাহে প্ররোচিত করতে থাকেন। জমির মুনশী তার স্ত্রীরত্নটিকে যথার্থ ভাল না বাসলেও তাকে সমীহ করে চলেন, কিন্তু পুনর্বিবাহের আলোচনায় তিনি রীতিমত ভেটো প্রয়োগ করে বসলেন। জীবনে ঐ একবারই জমির মুনশী নিজের সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছিলেন! বুকের ওপর থেকে পাহাড় নেমে গেল নানীজানের। এখন আবার তিনি সংসারে মন দিতে পারবেন!
সালেহা খাতুনের পঞ্চ কন্যা বাবার গায়ের রঙ আর মায়ের গুণ নিয়ে এই ধরাধামে এসেছে। পড়াশোনায় তাদের মন না থাকলেও সংসারের গলি ঘুপচি তারা ভাল করেই চিনে নিয়েছে মায়ের থেকে। কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার জ্বালা সইতে হয় নাই জমির মুনশী কে বেশীদিন। বড় মেয়েকে গ্রামের সম্ভ্রান্ত গৃহস্থ ঘরে বিয়ে দিলেও বাকীদের শহরে শিক্ষিত ছেলেদের কাছে বিয়ে দিয়েছেন খরচাপাতি করে।
রূপার মা লুতফুন নাহার সালেহা খাতুনের কনিষ্ঠা কন্যা। একহারা গড়ন, দুধে আলতা গায়ের রঙ তার, চোখে মুখে বুদ্ধির দ্যুতি! আদরের ছোট মেয়েটি বাবা মায়ের চোখের মণি। নিজেদের পুত্র সন্তান নাই, বাকী সব কন্যাদের বিবাহের পর ঘর বাড়ী খালি খালি লাগে। অনাথ একটি ছেলের সন্ধান পাওয়া গেলে লুতফুন নাহারকে বিবাহ দিয়ে ঘরজামাই রাখবেন বলে মনঃস্থির করেছেন সালেহা খাতুন। বড় মেয়ের শ্বশুরবাড়ী নান্দাইলের দিকে এই রকম একটি ছেলের খোঁজ পাওয়া গেলে জমির মুনশী নিজে তাকে নিমন্ত্রণ জানান তার বাড়ী ঘুরে যাবার জন্য। শাহাবুদ্দিন নামের শ্যামলা মুখচোরা ছেলেটি নিরেট অপদার্থ না হলেও তার অলসতা সর্বজনবিদিত ছিল। শাহাবুদ্দিনের কপাল খুলল বলে এইবার! সে ঘর জামাই হতে রাজী হলে শুভ কাজে আর বিলম্ব করলেন না সালেহা খাতুন!
রূপার তখন দুই বছর বয়স। শুন্য বাড়ী দাপিয়ে বেড়ায় একাই নানার কোলে চড়ে। সারা জীবনে জমির মুনশী কাজ পেয়েছেন অবশেষে। নাতনীর সাথে আবদারে আহ্লাদে তার আনন্দে দিন কাটে। বড় হয়ে গল্প শুনেছে রূপা একদিন বাবা তার মাকে বাজারের দোকানঘর দুটো নিজের নামে লিখে দিতে বললে মা আপত্তি করেন খুব। এই নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শাহাবুদ্দিন তার মায়ের চুলের মুঠি ধরে দেয়ালে ঠুকতে থাকলে মাথা ফেটে যায় লুতফুন নাহারের। ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হলে মা দৌড়ে উত্তরের কোঠা থেকে বের হয়ে দালান ঘরে আশ্রয় নেয়। লুতফুন নাহার কাউকে কিছুই বলে নাই, মাকে তো নয়ই। সালেহা খাতুনের সংসারে উনিশ থেকে বিনিশের জন্য আলাদা আলাদা তরিকা মজুদ থাকলেও তিনি খানিক বিচলিত হয়ে পরেন এই ঘটনায়। যদিও তার মুখ দেখে মনের অবস্থা বুঝবার মত ক্ষমতা কারোর ছিল না। সন্ধ্যা নেমে এলে সালেহা খাতুন বহুদিন পর জাজিমের নীচে রাখা বন্দুকটা বের করেন। অনেকদিনের অব্যাবহারে ধূলা জমেছে বন্দুকের নলে। রংচটা তেনায় খানিকটা মবিল নিয়ে বন্দুকের দুটো নল নতুন তামার পয়সার মত চকচকে করে ফেলেন নিজে। শুক্কুরবারে মসজিদে সিন্নি আছিল, পালের দুইটা খাশী জবাই করা হয়েছিল এই উপলক্ষে। সেই খাশীর গোস্ত, কই মাছের দোপেঁয়াজা, সোনা মুগ ডাল আর সরু চালের ভাত দিয়ে বিছানায় দস্তরখানা বিছিয়ে খাবারের ব্যাবস্থা করেন তিনি। সাদা জাম বাটিতে সর ওঠা দুধ আর পিরিচে দুইখানা গুড়ের সন্দেশ সাজিয়ে দেন। সবশেষে জামাইমিয়া কে মৃদু স্বরে ডাকেন, বাবা শাহাবুদ্দিন, আইজকা আমার ঘরে খাইতে আসেন!
যেমন নাম তেমনই সুনদর গলপ।অনেক বলিষ্ঠ লেখা।একটু না,অনেক বেশি মন ছুয়ে যাওয়া ঘটনা।আমি অনেক মজা পেয়েছি পরে। :boss: :boss:
As if kissed and blessed by Hemingway... Exceptional description.... Difference between fact and fiction quite marginal.... Wonderful symbiosis of fantasy & reality... Hat off Sabina apu ...
মানুষ এমনতয়, একবার পাইবার পর
নিতান্তই মাটির মনে হয় তার সোনার মোহর.........
লুকোবার জন্য ইউরোপে চলে আসবো কিনা ভাবছি। লাজুক লতা হয়ে আছি তোমার লেখা পড়ে। 😛
পড়বার জন্য লাড্ডু পাওনা রইল, রুনা! 🙂 (সম্পাদিত)
হেমিংওয়ের কথা শুনে কোথায় পালাবো তাই ভাবছি! 😛
তাঁর একটি লেখা নিয়ে ছোট একটা অনু ব্লগ লিখছি আমি। অপেক্ষা করো, আসিতেছে! B-)
"As if kissed and blessed by Hemingway..." আর "Difference between fact and fiction quite marginal.... Wonderful symbiosis of fantasy & reality...- একদম ঠিক কথা। গল্পটা পড়ে আমারও মনে হয়েছে, ফ্যাক্টস এর সাথে ফার্স্ট হ্যান্ড পরিচয় না থাকলে এরকম ফিকশন লেখা যেতনা।
আমার লেখার নাম এসেছে ইউরোপ থেকে... আর প্রশংসা বরাবরই এশিয়া থেকে আসে! 😛 আমি আম্রিকায় বসে কেবল একটু লিখি এই যা... 😀
পড়বার জন্য এত্তগুলা ধন্যবাদ, লুবনা! 🙂 (সম্পাদিত)
Most welcome...... New comforter is on its way .... Hihihi =))
মানুষ এমনতয়, একবার পাইবার পর
নিতান্তই মাটির মনে হয় তার সোনার মোহর.........
:tuski: :tuski:
ধুলো জমা বন্দুকের নল পরিষ্কারের ব্যাপারটা অসাধারন লাগছে কিন্তু পরের দৃশ্যটা চিন্তা করতে হচ্ছে। ছোটবেলায় নাটকে এরকমটা হলে মেজাজ খারাপ হত। যাই হোক অসাধারন গল্প। গান হল, কবিতা হল, গল্প হল এবার একটা ছড়া হোক। :clap: :clap: :clap:
ছোট গল্পের সংজ্ঞা টা কি ভুলে গেছো, জিয়া?? 😛 ঐ যে "হইয়াও হইলো না শেষ??"
একটা গল্পের সমাপ্তি কত ভাবেই না হতে পারে! পাঠকদের কল্পনা শক্তির ওপর লেখকের আস্থা অসীম! 😛
অসাধারন।
সবচেয়ে মজা পেলাম উনিশ বিনিশের উল্লেখ শেষটায় আবার দেখে।
জাত লেখকদের এই সিক্রেট রেসিপিটা আমি চেটেপুটে খাই। এই যে তাঁদের টোটালি ইররেলিভেন্ট একটা কথা কোথাও ছেড়ে যাওয়া, আর শেষ গিয়ে মূল গল্পে সেটা জুড়ে দিয়ে পাঠক কে বোকা বানানো।
তবে মধুর সে বোকা বনা।
যাদু দেখে বোকা বনে যে আনন্দ হয়, সেইরকম।
এইরমকম লিখা বিনা পয়সায় পড়াটা অন্যয় হয়ে যাচ্ছে। অপেক্ষায় আছি কবে কোন প্রকাশকের চোখে এই গল্প পড়ে। অন লাইন পত্রিকায় গেলে কেমন হয়?
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
উনিশ থেকে বিনিশ যখন প্রথম শুনলাম, হেসেছিলাম খুব! তখনই মনে হয়েছিল একটা লেখাতে এটা বলতেই হবে সবাইকে! কায়দা মত বসিয়ে দিলাম অবশেষে!
ক্যাডেট কলেজে খুব লিখতাম, জানেন! শাজাহান আলী স্যার আর রোকেয়া ম্যাডাম ছিলেন আমাদের বাংলার শিক্ষক! দুজনের প্রশ্রয়ে যা মনে আসতো তা'ই লিখতাম। বন্ধুদের চানাচুরের বিনিময়ে সেইসব লেখা শুনাতাম গভীর আবেগে। মুকুর নামে একটা ম্যাগাজিন বের হতো। স্বনামে অথবা বেনামে কত যে লিখেছি মুকুরে কী বলবো! তারপর হাজার বছর কেটেছে, একটা শব্দও বের হয় নাই আমার থেকে! এতোদিন পর আমার বন্ধু লুবনা জোরজারি করে ব্লগে নিয়ে এলো দেশ থেকে! এই হলো আমার লেখার কাহানী!
আপনার প্রশংসা শুনে খানিক ফ্লাটারড, ব্লাশ টাশও করছি, ভাইয়া! ভাবছিলাম, আপনারাই না আবার লেখা পড়বার জন্য চানাচুর দাবী করেন!
:boss: :boss: :boss:
খান + দান = খান্দান
শেষমেশ আপনিও আমার বংশ নিয়ে টানাটানি শুরু করলেন আপু! :(( :(( :((
গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।
:gulli2: :gulli:
বিশ্বের সংক্ষিপ্ততম ওয়েস্টার্ন থ্রিলার -
"শাহাবুদ্দিন গলা খাঁকারি দিয়ে সালেহা খাতুনের ঘরের চৌকাঠে পা রাখলেন!"
গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।
ফাটাফাটি, মুজিব! ইম্প্রেসড!! 🙂
:goragori: :goragori: :tuski:
গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।
আমি ক্যাডেট কলেজ এর ছাত্র না। তাই ব্লগ এর
নাম তা দেখে মনে হইছিলো, আমি তো সিভিল
এলাকার ছাত্র। আমি আর কি করবো এখানে।
কিন্তু ব্লগ এর লেখা গুলা পরে মনে হল না, এমন
একটা ব্লগ তৈরীর জন্য সব ব্লগার
কে একতা করে বিশেষ ধন্যবাদ দেয়া উচিৎ। সবার
জন্য রইলো শুভ কামনা
আপনার জন্যও শুভ কামনা রইল আমাদের ক্যাডেট পরিবারের পক্ষ থেকে!
ইংরেজী বাতচিতে খুব ভয়াবহ কিছু উপলব্ধি করতে পারলে প্রফেসর বা সিনিয়ার কারো সামনে থাকলে বলে উঠি, "oh shoot" আর পরিচিত, বন্ধু মহলের আড্ডার মাঝে থাকলে বলে উঠি oh crap. কি বলা উচিৎ বুঝতে পারছি না কিন্তু দুপুরের খাবার খেতে খেতে শেষ লাইনে এসে ঠেকার পরে শাহাবুদ্দিনের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এরকম অনুভূতি হয়েছে। গল্পের মাঝে ঢুকে পড়তে আমি খুব মজা পাই। হুটহাট ঢুকেও পড়তে পারি। কি যে চমৎকার লিখেছেন আপা। বলে বোঝাতে পারছি না। এরকম খানদানি ছিলেন না তবে চরিত্র ও বাড়িঘরের বর্ণনায় অবস্থাপন্ন পাট ব্যবসায়ীর স্ত্রী হিসেবে আমার নানা-নানীকে কিছুটা হলেও খুঁজে পাচ্ছি। 😀
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
শুট আর ক্রাপ এর পার্থক্য ঐ উনিশ আর বিনিশ! 😛
এই গল্পের মূল চরিত্রের সাথে আমার স্বজনদের কিছু মিল আছে। রূপ উছলে না পরলেও আমার নানুর কী যে পারসোনালিটি ছিল!! বাড়ীর বর্ণনাও আমার নানুর বাড়ীর!
তোমার প্রশংসা শুনে এই ঝুম বৃষ্টির বিকেলে মনটাই ভাল হয়ে গেলো! 🙂
পুরো ইস্টকোস্ট এবং উত্তরাঞ্চল জুড়ে বৃষ্টি হচ্ছে নাকি আপা? শীতের আগমনী বৃষ্টি। জমে যাচ্ছি! 🙁
ছোটবেলার নানুবাড়ীটা খুব মিস করি। সামনে বড় পুকুর। পুকুরের কোনায় ঢাউস সাইজের কড়ই গাছ। বৃটিশ আমলের বিশাল টিনের চালের ডাকবাঙলো, পিছে পাটের গুদাম (ততদিনে পরিত্যক্ত)। এখন পুকুর ভরাট হয়ে গিয়েছে। কেটে ফেলা হয়েছে কড়ই গাছ। পাটগুলাম তো সেই কবেই নেই। সামনে পিছে এখন শুধু ইট-রড-বালু-সিমেন্টের রঙমঞ্চ। 🙁 শুধু আগের মত আছে প্রিয় মেঘনা। 🙂
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
শীতের আগমনী বৃষ্টি! চমৎকার বলেছো! 🙂
আমাদের এখানে আটান্ন ডিগ্রী চলছে, এসি বা হিটিং কোনটারই দরকার পরছে না। খুব আরামদায়ক আবহাওয়া। রাতে হালকা কম্ফোরটার জড়িয়ে ঘুমাতে বেশ লাগে। শীত আসতে এখনো দেরী আছে খানিক।
গত বছর দেশে গেলে আমার নানুর বাড়ী বেড়াতে গেলাম। সেই দালানঘর অথবা কোঠা ঘর গুলো... শুন্য, হাহাকার, কোথাও কেউ নেই! 🙁
আমরা উত্তর কোণের মেঘ। আমাদের বাতাস এমনেই ঠান্ডা! ৪০ ডিগ্রীতে বসে আছে সেই কবে থেকে! এরপর হুটহাট ঢালু রাস্তা বেয়ে দশের ঘরে চলে যাবে। মাঝে খেয়াল খুশি মত শূণ্যের ওপারে! :((
থাকে না আপা। সময়ের সাথে পরিবর্তনগুলো বড় আঘাত করে মনে। মাঝে মাঝে মনে করার চেষ্টা করি আজ থেকে ১৫ বছর আগে নানাবাড়ি কেমন ছিল। সেটা ভেবে এত ভাল লাগে! 😕
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
তোমরা যদি উত্তর কোণের মেঘ হও, আমরা দখিনা বাতাস! 😛
আমাদের এখানকার আবহাওয়া সত্যি চমৎকার! দেশ দেশ ভাবটা প্রকট এখানে! আমি খুব এঞ্জয় করি! 🙂
মার্কিন মুল্লুকে ঘাঁটি গাড়ার ইচ্ছা হলে আমার থেকে একটু দক্ষিণের কোন একটা রাজ্যে মানে ইস্ট কোস্টের কোন রাজ্যে কিংবা পশ্চিমে কলোরাডোর দিকে যাব চিন্তা করেছি! 😛
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
🙂 🙂
ভদ্র মহিলা (থুক্কু) উনাকে মহিলা না বলে আপু বলাই ভাল, উনার রুপ আর হরেক রকম গুনে আমি সব সময় এমনিতেই মুগ্ধ। এটা আর এমন নতুন কিছু না আমার জন্য, কিন্তু ভাল লাগে, প্রতিবার একটা কিছু করে যখন আমাকে কল দিয়ে বা মেসেজ দিয়ে বলেন এইটা শুনত বা পড়ত। আমার ভাগ্য ভাল কোনবারই আমাকে আশাহত হতে হয় নাই। এই লেখাটা পড়ার আগেই আরেকটা মেসেজ পেইয়ে গেছি 🙂 আপু আপনার প্রতি শুভ কামনা রইল।
প্রথমে ভাবলাম, যাক বাঁচোয়া একজন এডমায়রার পাওয়া গেলো অবশেষে সিসিবিতে! 😀 তোমার ছবি দেখে চিনতেই পারি নাই, জানো! এরপর দেখি আরে, এতো আমার ঘরের ছেলে! 🙂 কষ্ট করে যে আমার গান শোন আর লেখা পড় তুমি... এটা ভেবে আমার মায়াই লাগছে! 😛
অনেক অনেক ধন্যবাদ, আমার বাড়ী ঘুরে যাবার জন্য! 🙂
ক্যাডেট কলেজ ব্লগ তাই তখনকার পুরান ছবি দিলাম। আপু গিনিপিগ হওয়াটা একটুত ভয়েরই ব্যাপার (প্রথম প্রথম হত আর কি :P) কিন্তু আপনি যেভাবে সাফল্লের সাথে আপনার নানাভিদ প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে চলছেন, এখন আর তাই ভয় পাই না, জানি এটা আপনারই কাজ তাই আশাহত করবেন না। আর আপনার বাড়ি ঘুরে যাওয়ার কথা বলছেন, ওটাত এই প্রবাস জীবনে আমার জন্য চরম সৌভাজ্ঞের ছিল, আর সেদিন যা খাইয়েছিলেন না তা লিখলে আরেকটা ব্লগ হয়ে যাবে। তাইত সব সময় শুধু সুযোগ খুঁজি আবার কবে যাব। ইনশাল্লাহ চলে আসব একদিন।
😀 😀
আবার চলে আসো। অনেকদিন ভাল মন্দ খাওয়া হয়না, ভাইয়া! থ্যাংকসগিভিং ডে আছে সামনে, এলে জানাও!
তা একখান ব্লগ না হয় লিখেই ফেললে সেই ঐতিহাসিক খানাপিনা নিয়ে। আমরাও খানিক 'পাঠং সিকি ভোজনং' করি!
"পাঠং সিকি ভোজনং" 😀
আফজাল একজন দারুণ ফটোগ্রাফার। কত যে চমৎকার সব ছবি তুলে বেড়ায় এই ছেলেটা! লেখালেখির হাতও দারুণ! আশা করি ও এবার আমাদের জন্য এট লিস্ট ছবি ব্লগ লিখবে। 🙂
"আমার লেখার নাম এসেছে ইউরোপ থেকে... আর প্রশংসা বরাবরই এশিয়া থেকে আসে! 😛 আমি আম্রিকায় বসে কেবল একটু লিখি এই যা... :hatsoff:
🙂
আপু, তুমি তো সিসিবি-তে ঝড় লাগিয়ে দিয়েছো, দেখতে পাচ্ছি।
সিসিবি-তে লিখা দেয়ার পক্ষের যুক্তি হলো, লিখাটি এক ঝাক উৎসাহী ও কোয়ালিটি পাঠকের চোখে পড়া, তাঁদের মন্তব্য শুনতে পাওয়া।
আর বিপক্ষের যুক্তি হলো পাঠকের সংখ্যাল্পতা। "এত কষ্টের এক একটা সৃষ্টি, গুটি কয়েক মানুষই কেবল দেখছে" - এই ভাবনাটা লেখকের জন্য নিরুৎসাহ ব্যাঞ্জক হবার যুক্তিযুক্ত কারন আছে।
তারপরেও তুমি কোয়ালিটি-কে কোয়ান্টিটির ওপরে প্রাধান্য দিয়েছো, এই জন্য "তোমাকে অভিবাদিন..." আপু।
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
আপনার ঝড়ের খবরে শীতই লেগে যাচ্ছে .. এমনিতে আজ খানিক ঠাণ্ডা পরেছে শহরে! গাড়ি থেকে নামতেই দমকা হাওয়ার ঝাপটা লাগলো চোখে মুখে! মোকাব্বির কাল ঠান্ডার গল্প বলেছিল, আজ তারই খানিক ছোঁয়া পাওয়া গেল! কফি হাতে অবশেষে সিসিবির দুয়ারে এখন! 🙂
আমি একজন সদ্যোজাত লেখক, ভাইয়া! 🙂 নিজের আনন্দে লিখি বলতে পারেন। সিসিবিতে হয়তো ফেসবুকের মত লোকজন ঢালাও কমেন্ট করেন না, কিন্তু আমি জানি, এখানে বোদ্ধা পাঠক কম নয়।
আপনার প্রশংসায় সত্যি বিগলিত হয়ে আছি! অনেক ধন্যবাদ, পড়বার জন্য! :hatsoff:
আজকে ২০১৪-২০১৫ মৌসুমের প্রথম তুষারপাত ছিল আপা! সকালে গুটিগুটি সাদার মাঝে ভার্সিটি হেঁটে আসতে আসতে ভাবছিলাম, আহ! এতদিনে আমার ঋতু এলো। মানুষজন পাগল বলে তাই বেশী ভালবাসা দেখাই না! 😛
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
এখনই স্নো? ওহ নো! 😛
পেঁজা তুলার মত স্নো দেখতে আমারো খুব ভাল লাগে, জানো! কিন্তু দিনের পর দিন এই স্নোর মাঝে থাকলে বিষণ্ণতায় পেয়ে বসে খুব।
আমাদের এখানে এক বছর পরপর তুষার পরে, আর যদি কোন মতে তিন ইঞ্চ তুষারপাত হয় তবে তো এখানে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা হয়! 😛
আপা গতকাল রাতেই তুষারপাত শুরু হবার পর ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম আজকে রাতে ২-৩ ইঞ্চি বরফ জমার সম্ভাবনা। এলাকার তুলনায় সারা রাতে মাত্র ২ ইঞ্চি আমাদের জন্য খুবই ধীরগতির। কিন্তু অনেক রাজ্যের জন্য জরুরী অবস্থা ঘোষণা করার জন্য যথেষ্ট! 😛 😛
গত বছরে অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত মোট তুষারপাত হয়েছে ২০৮ ইঞ্চির মত। আমরা হলাম সেই পাগল এলাকা গুলোর একটি যারা উইন্টার কার্নিভাল পালন করে। বরফের স্কাল্পচার, শূণ্যের নীচে তাপমাত্রায় ওপেন এয়ার ডিজে পার্টি, বরফের তৈরী বিলিয়ার্ড টেবিলে বিলিয়ার্ড খেলা ইত্যাদি সহ নানান রকমের পাগলামি। আমাদের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ গতবছর থেকে স্কাল্পচার বানানোতে যোগ দেয়া শুরু করেছে। সেই দলে আমিও ছিলাম! এইযে এখানে পাবেন খবর! 😛 😛 😛
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
আমাদের উত্তরের পাহাড়ে আধা ইঞ্চ তুষারপাতের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে! 😛 তাইতো বলি, এতো ঠাণ্ডা কেন আজ!
তোমাদের উইন্টার কার্নিভালের ছবি দেখেই আমি জমে যাচ্ছি! ২০৮ ইঞ্চে আমাদের কাছে স্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই নয়। কয়েক বছর আগে বড়দিনের ছুটিতে কানাডায় গিয়েছিলাম। মাইনাস চল্লিশে টরেন্টোতে পা রেখেছিলাম... কী ভয়াবহ! (সম্পাদিত)
আমাদের এলাকা যেহেতু আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে দিয়েছে দক্ষিণের পথ পাড়ি দিতে আর কয়টা দিন। আপনাদের এই এসে গেলো বলে!
কানাডার আলবার্টায় গত মাস থেকেই বরফ পড়া শুরু হয়েছে। চিন্তা করতেই আমারো অসুস্থ লাগছে। 🙁
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
সেন্ট্রাল হিটিং চালু করে ওপর তলায় এলাম অবশেষে, জানো! বাইরে শো শো হাওয়া বইছে। বিরক্তিকর শীত বোধকরি শুরুই হয়ে গেলো! 🙁
আপা আপনার লেখার ফ্যান হয়ে যাচ্ছি ধীরে ধীরে, খুব সুন্দর গদ্য আপনার। 🙂 :clap:
চাঁদ ও আকাশের মতো আমরাও মিশে গিয়েছিলাম সবুজ গহীন অরণ্যে।
আমার লেখাটি পড়বার জন্য এত্তোগুলা থ্যাংকস, হামীম! 🙂
আমি তোমার লেখার ভক্ত অলরেডি! 😀
খানদানি লেখা! বেশি আর কী বলি।
নূপুর নামটা এতো ছন্দময় যে আমার খালি ডাকতেই মন চায়! 😛 অবশেষে নূপুরের ঝুমঝুম শোনা গেলো সিসিবিতে! :boss: অনেক ধন্যবাদ, পড়বার জন্য!
ব্যস্ততার কারনে দুদিন দেরি করে ফেললাম লেখাটা পড়তে, দূর্দান্ত হয়েছে :hatsoff:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
:awesome: :awesome: :awesome:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
:hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:
অনেক ধন্যবাদ, আকাশ! তোমার ভাল লেগেছে জেনে বিগলিত হয়ে আছিরে! 🙂
খান্দানী লেখা 😀
"সদ্যজাত লেখক" এর পাকা হাতের লেখা। পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল, দেশের কোন একজন প্রথিতযশা গল্পকারের গল্প পড়ছি। খুব নিখুঁত বর্ণনা আর সূক্ষ্ম ডিটেলস এর ব্যবহার চমৎকার। ঠিকমত বাতাস পেলে আর মনের সায় থাকলে লেখার ইচ্ছেঘুড়িটা অনেক আকাশ অতিক্রম করবে।
উপরে একটা মন্তব্য দেখলাম, "As if kissed and blessed by Hemingway..." আর "Difference between fact and fiction quite marginal.... Wonderful symbiosis of fantasy & reality...- একদম ঠিক কথা। গল্পটা পড়ে আমারও মনে হয়েছে, ফ্যাক্টস এর সাথে ফার্স্ট হ্যান্ড পরিচয় না থাকলে এরকম ফিকশন লেখা যেতনা।
আপনি আমায় বড় বেশী ভালবাসেন তাই সম্ভাবনা দেখতে পান কত কিছুতে। আমি অতি সামান্য মানুষ আর ততোধিক সামান্য আমার লেখালেখির পরিধি অথবা বিচরণ। খান্দানের ঘটনার সাথে বাস্তব জীবনে দেখা কোন গল্প অথবা ঘটনার সাযুজ্য নেই; আমার পরিচয় আছে বরং সালেহা খাতুনদের মত কিছু অসাধারণ ব্যক্তিত্বের সাথে। আমার নানুর বাড়ির বণর্ময় রূপটির সাথে গল্পে বণর্িত বাড়িটির মিল আছে বৈকি।
বই এর শেলফের নীচে অযত্নে পড়ে থাকা ধূলোমলিন পুরনো লেখাটি খুঁজে পেতে কেউ আগ্রহের সাথে পড়ছেন এবং জানাচ্ছেন তাঁর ভাবনাগুলো, একজন সদ্যোজাত লেখকের জন্য এর চাইতে সম্মাননা আর কী হতে পারে!
খান্দান গল্পটি পড়লাম আজ। মনেহলো বিখ্যাত কোন একজন লেখকের গল্প পড়ছি। এতো জীবন্ত বর্ণনা, চরিত্রচিত্রণে মুন্সীয়ানা আর যেটি না বললেই নয় সেটা হল টানটান গল্পের গতি। অসাধারণ বললেও কম বলা হবে, প্রিয় আপুমণি। আপনার লেখার মত এই পোস্টের কমেন্টও ভাল লাগলো পড়তে। এখন লেখালেখিকে আরো সিরিয়াসভাবে বিবেচনা করা উচিত আপনার। আপনি আমার প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিচ্ছেন প্রতিদিন।
🙂 🙂 🙂 🙂
তোমার মন্তব্য পেয়ে হঠাৎ করেই আমি কি হনুরে টাইপের অনুভূতি চলে আসে, ইশরাত। মাটির পৃথিবীতে নেমে আসতে বেশী সময় লাগেনা যদিত্ত তবুত্ত এবং নিজেকে নীলাম্বরী ব্লু জে মনেহলো।
এতটুকু একটা মানুষ তুমি কিন্তু তোমার ব্যাপক পাঠাভ্যাসের কথা জানতে পেরে খুবই ঈর্ষান্বিত বোধকরি।
সিসিবিতে চমৎকার সব লেখা আছে। তুমি এদিক ওদিক একটু বেড়িয়ে যেতে পার মাঝেমধ্যে। অনেক ধন্যবাদ আপু তোমার সদয় মন্তব্যের জন্য।
ফেইসবুক এর ‘ক্যাডেট কলেজ ক্লাব লিটারেরী সোসাইটি’ এর পাতায় আজ প্রকাশিত এ গল্পটা আবারও পড়লাম।
এ শতকের শুরুতে আমি বেশ কিছুদিন বৃহত্তর ময়মনসিংহ এলাকায় কাজ করেছি। ‘ছনকান্দা’, ‘শিকারীকান্দা’ নামগুলোকে তো বাস্তব বলেই মনে হয়। গল্পের বর্ণনা খুব নিখুঁত আর সূক্ষ্ম ডিটেলস এর ব্যবহার চমৎকার হয়েছে। যেমনঃ
‘সালেহা খাতুন পুকুরে দাপাদাপি করেন না কখনো। মরেনের মা ‘টিউকলের’ পানি তুলে দিলে সেই পানিতে গোসল সারেন তিনি’ – এটা সালেহা খাতুনের ব্যক্তিত্বের সাথে খুবই সামঞ্জস্যপূর্ণ।
‘জমির মুনশী জগতের সব ঝুটঝামেলা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে চলেন, তাই বন্দুক কেনার প্রস্তাবে তিনি খানিক চিন্তিত হয়ে পড়লেন’ - এটাও জমির মুনশী’র ব্যক্তিত্বের সাথে চমৎকার মানিয়ে গেছে।
‘যে সংসার স্ত্রীর তর্জনী নির্দেশে চলে, সেই সংসারে স্ত্রীর আবদারই যে আদেশ তা বুঝতে দেরী হয়না জমির মুনশীর’ – বলার অপেক্ষা রাখে না, এ পর্যবেক্ষণটি যথার্থ; কারণ, জমির মুনশী সম্পর্কে লেখক আগেই বলেছেন, ‘সংসারের সাতে পাঁচে তিনি নাই, নিজের খাওয়া টুকু আয়েশ করে খেতে পারলে বাকীরা কে কি করছে বা খাচ্ছে তা নিয়ে জমির মুনশীর কোন মাথা ব্যাথা নাই’। এমন গা ছাড়া, আয়েশি মানুষের কাছে স্ত্রীর আব্দার তো নির্দেশ হবারই কথা।
সর্বোপরি, সালেহা খাতুনের বন্দুকের নল পরিষ্কার করে চকচক করে রাখার বর্ণনাটা শ্বাসরুদ্ধকর হয়েছে, এবং তার পর পরই সালেহা খাতুন স্বয়ং কর্তৃক “আইজকা আমার ঘরে খাইতে আসেন” - এই বলে জামাই শাহাবুদ্দিন কে নিজ ঘরে আপ্যায়নের আমন্ত্রণ জানানোটাও গল্পের সম্ভাব্য পরিণতির প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছে। এমন একটা রোমাঞ্চকর পরিস্থিতিতে গল্পের যবনিকা টেনে দিয়ে লেখক মুন্সীয়ানার স্বাক্ষর রেখেছেন।