স্মৃতি

প্রিয়তম,

কি লিখি তোমায়? তোমার প্রতি, কোনো ক্ষোভ নেই আমার, নেই কোনো অভিযোগ। এটাই কি ভালবাসার পক্ষপাতিত্ব? হবে হয়তো! ভালবাসার নামে ভিখিরি হয়েছি আমি। ক্যালেন্ডারের জানিয়ে দেয়া বয়সের পার্থক্যকে অমান্য করে, সমাজের ভ্রুকুটিকে উপেক্ষা করে, আমি ঝাঁপ দিয়েছিলাম কাঞ্চনজঙ্ঘার শৃঙ্গ থেকে মদন সাগরে। বলাবাহুল্য,প্যরাস্যুট ছাড়াই। ভুলটা বুঝলাম ঠিক মাঝ পথে এসে। অতি দুঃখেও হঠাৎ হাসি পেল তখন।
হঠাৎব্যাঙের ছাতার মতো গজানো একটি সমাজ আছে তোমার,আছে পরিজন,এমনকি দু’চারটি পুরনো প্রেম থাকাও আশ্চর্যজনক কিছু নয়! তোমার কাঁধে শত প্রেমিকাদের স্বাদ আহ্লাদ মেটানো থেকে শুরু করে কতো জনের কতো সহস্র স্বপ্ন পূরণের সুকঠিন দায়িত্ব। সে দায়িত্ব ছেড়ে আমার কথা ভাবা! কখনই নয়। এর চাইতে বিশ্বসংসার তন্ন তন্ন করে ১০৮টি নীলপদ্ম খুঁজে আনা তোমার কাছে ছেলেখেলা, কিংবা একটি ডকইয়ার্ডকে পাঁপড় ভাজার মত কুড়মুড় করে খেয়ে ফেলা! অথবা বাঘের গলায় মালা!
কিন্তু জানো, “ভালোবাসাটা” আমার প্রাণের সম্পত্তি। কাকে দেব,কতটুকু দেব,কখন দেব,কিভাবে দেব,সেই অমোঘ সিদ্ধান্তও আমার। সমাজ;পরিজন; সব ভুলেছি “ভালবাসার” নামে,আর তুমি ভুলেছ আমাকে। তবু,সেই তোমাকেই দিয়েছি আমার সব, বিনা দ্বিধায়, অতি সহজে। ভুল করেছি? হয়তো তাই, কে জানে! আমার এই ক্ষুদ্র জীবনে আরও কতো শত ভুল আমি করেছি, লেখাজোখা নেই তার কনো। একটি ভুলের কমবেশিতে তেমন কনো ক্ষতি বৃদ্ধির সম্ভাবনা না থাকারই কথা। সব কিছু জেনে বুঝেও কেন মনে হাহাকার? কেনো ইচ্ছে করে হাতের পাঁচিল দিয়ে,তোমায় জড়িয়ে থাকি সকাল থেকে রাত? কম্পিত হাতে, বক্ষচু্যত জাগ্রত হৃদয়টি তুলে দেখি, সেখানে এখনো তোমারই নাম লেখা আছে পরম মমতাময়,অসীম ভালবাসায়।
কোনো ক্ষোভ নেই আর,সত্যি। নেই হাহাকার, নেই অভিযোগ,নেই কোনো দীর্ঘশ্বাস। ভালবাসার কাঁচগোলকটি পড়ে গিয়ে ভেঙ্গে যাবার আগেই তোমাকে দিয়ে দিলাম। তোমার ঘরের শোভাই না হয় সে বৃদ্ধি করল বাকি জীবন। আজ আর অভিসম্পাত নয়,আমি বর দিনু দেব, তুমি সুখী হবে,ভুলে যাবে সর্ব গ্লানি বিপুল গৌরবে।

বিদায়ী,
স্মৃতি

৭৫০ বার দেখা হয়েছে

৬ টি মন্তব্য : “স্মৃতি”

  1. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    "আমি ঝাঁপ দিয়েছিলাম কাঞ্চনজঙ্ঘার শৃঙ্গ থেকে মদন সাগরে" - বোঝা যাচ্ছে এই বর্ননার পাত্র-পাত্রী সম্পর্কটা অনেকদুরই টেনে নিয়ে গিয়েছিল।
    আর তা সম্ভব হলো কারন “ভালোবাসাটা” ছিল তাঁদের একজনের "প্রাণের সম্পত্তি"।
    কিন্তু অন্যজনের জন্য কি ছিল তা?
    আর যাই থাক, "একটি সমাজ ... পরিজন... দু’চারটি পুরনো প্রেম..." যার আছে, তার জন্য এই ভালবাসাটা অন্য যাই হোক না কেন, প্রাণের সম্পত্তি কিন্তু ছিল না। কখনোই।
    আর যা হবার, তাই তো মনেহয় হয়েছে, ব্রেক আপ। আর এর কারন হলো "সিরিয়াস মিস ম্যাচ এব ইনিশিও......"
    খুব বিরল কোন ঘটনা না।
    তবে এ থেকে লেসন নিতে পারলে, ঠিক আছে।


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।