ক্ষুদ্রঋণ সম্পর্কে আমার কিছু (একজন অর্থনীতিবিদ হিসাবে) চিন্তা-ভাবনা-২

ক্ষুদ্রঋণ সম্পর্কে আমার আগের লেখাটি পড়ে , আমার এক বন্ধু যিনি কিনা অর্থনীতি এর ছাত্র নন,(নঈম(৮৭-৯৩) ভাই নন, আমার এক ফেসবুক এর বন্ধু, নঈম(৮৭-৯৩) ভাইও(বড় ভাই) জিজ্ঞেশ করেছিলেন) তিনি জানতে চাইলেন যে ‘Pareto improvement’ ব্যাপারটা আসলে কি? অর্থনীতির সংজ্ঞাতে, কারো কোন ক্ষতি না করে যদি সমাজে কারো লাভ হয় তবে তাকে ‘Pareto Improvement’ বলে। ধরুন সমাজে কোন ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম নেই।এখন সমাজে যদি এমন একজন ব্যক্তিও পাওয়া যায় (গরিব লোকজন) যিনি কিনা এই সেবা পেতে ইচ্ছুক, এবং তিনি যেই দাম দিয়ে এই সেবা পেতে ইচ্ছুক তার সমান বা তার কম দাম দিয়ে এই সেবা পান, (অর্থাত , তার ভোক্তার উ৸বৃত্ত রয়েছে) , তাহলে ক্ষুদ্রঋণ সেবা আসাতে (Market Orientation) , তার ভোক্তার উ৸বৃত্ত আসবে এবং এটা সমাজের জন্যে লাভজনক এবং একেই ‘ Pareto Improvement’ বলা হয়। আবার যারা এই সেবা প্রদান করছেন তারাও যদি এই সেবা প্রদান করে লাভবান হন তাকেও ‘Pareto Improvement’ বলা হয়। ‘Pareto Improvement’ খালি সমাজের লাভ হলো কিনা তাই বলে, সমাজে ধনী গরিব এর বৈষম্য বাড়লো কিনা তা বলে না। খালি বলে সমাজের উন্নতি বা লাভ হলো কিনা।গরিব দের যেহেতু হারানোর কিছুই নেই, কাজেই যেকোনো সেবা/সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের লাভ/উন্নতি হয়েছে বলে ধরে নেয়া হয়। এখানে একটা প্রশ্ন আসতে পারে, তা হল কিন্তু পেপার পত্রিকায়তো প্রায়ই দেখা যায় গরিব দের ক্ষতি হচ্ছে, ( ইদানিং একটা খবর পড়লাম যে ঋণ আদায় এর জন্য নাকি গ্রাহক দের সন্তান কে হরণ করা হয়েছে) কারো ক্ষতি না করে ‘Pareto improvement’ এর যুক্তিটা ঠিক বুঝলাম না। আগেই বলেছি ‘Pareto Improvement’ খালি সমাজের লাভের কথা বলে এখানে আয় বন্টন (Income Distribution) এর মাধ্যমে দারিদ্র দূরীকরনের কিছুই বলে না। তাহলে ‘Pareto Improvement’ এর মাধ্যমে দারিদ্র কমানোর যুক্তি টা কেন বললাম? এটা ব্যখ্যা করার জন্য আমাকে আগে দারিদ্রের সংজ্ঞা তে যেতে হবে। ধরে নেই, যারাই ক্ষুদ্রঋন নিবেন তারাই গরিব।

তার আগেই বলে নেই, যেটা তে আমার আগের লেখা তেও বলেছি, আমার কাছে ক্ষুদ্রঋন দারিদ্র দুর/মুক্তি করবে তা হলো একটা ‘Marketing Gimmick’। ক্ষুদ্রঋন হয়ত দারিদ্র কমাতে পারবে কিন্তু দূর করতে পারবে না। এই জিনিষ গুলো বোঝার জন্য আমেরিকার ২০০৮ সনের ‘Housing Financial Crisis’ অথবা ‘Sub Prime’ ধারনা থেকে বুঝতে পারবো। ‘প্রাইম হলো তারাই যারা খুব সহজে ঋন শোধ করতে পারে এবং যাদের জন্য ব্যাঙ্কের ও খুব লাভ হয়। সাধারনত এই ‘Prime’ দের মার্কেট টা ছোট হয়। ক্ষুদ্রঋন এর বেলায় প্রথম যখন ড. মুহাম্মদ ইউনুস যাদের ঋন প্রদান করলেন তারা আগে থেকেই ‘entrepreneur’ ছিলেন, এবং গ্রাম্য মহাজন দের কারনে দারিদ্র থেকে বের হয়ে আসতে পারছিলেন না। তাই ড. মুহাম্মদ ইউনুস ভাবলেন দেখিত এদের ঋন দিয়ে কি হয়? যখন এদের ঋন দেয়ার পর দেখা গেল এরা দারিদ্র থেকে বের হয়ে আসছে তখন তিনি ধরে নিলেন সকল গরিব রাই এভাবে দারিদ্র থেকে বের হয়ে আসতে পারবে। এরা যে গরিব দের মধ্যে ‘Prime’ সেটা তিনি বুঝতে পারেনি বলেই আমার ধারনা। কাজেই সে থেকেই দারিদ্র দূরীকরণের লক্ষ্য নিয়েই আমাদের দেশে খুব সহজে ঋন বিতরন হচ্ছে আর ব্যাঙের ছাতার মতন ক্ষুদ্রঋন সংস্থা গড়ে উঠছে, কারন এটা একটা ব্যাবসা আর এটা লাভজনক। আমার ধারনা দারিদ্র দূরীকরণের লক্ষ্য নিয়েই এই ‘Sub Prime’ গরিব দের ঋন দেয়া হচ্ছে দেখেই আজকে ক্ষুদ্র ঋন এর এই অবস্থা।আর এই গরিব লোকজন রাও এই ঋন নিয়ে পরছে বিপাকে।‘ Prime’ আর ‘Sub Prime’ এর ব্যাপার তা আরেকটু বুঝতে হলে কোন ধরনের গরিব রা কোন কাজে এই ঋন ব্যবহার করে তা আমদের বুঝতে হবেঃ

১) ‘entrepreneur class’ এর গরিব, এরা উদ্যোক্তা, গ্রাম্য মহাজন দের কারনে দারিদ্র থেকে বের হয়ে আসতে পারছেন না। এরা কোন উদ্যোগ (Venture) এ বিনিয়োগ করেন/ করতে চান কিন্তু ঋন এর অভাবে দারিদ্রতা থেকে বের হয়ে আসতে পারছেন না। এদেরকেই আমি ‘Prime’ ক্যাটাগরির গরিব বলব।

২) ‘ Consumer class’ এর গরিব, এরা উদ্যোক্তা নন। তবে বছরের কোন সময়ে এদের কিছু টাকা পয়সার দরকার হয় কোন কিছু ভোগের জন্য, যেই সময়ে তারা ঋন না পেলে তাদের সঞ্ছয় বা সম্পত্তি (Asset) বিক্রি করে ফেলতে হয়, এবং আরো গরিব এ পরিনিত হয়ে যান।

৩) ‘ Extreme class’ এর গরিব, ঋন নিয়ে এদের সবটাই ভোগে ব্যবহৃত হয়।সাধারনত এনারা ঋন শোধ করতে খুবি খারাপ পর্যায় চলে যান, কারন এনারা উদ্যোক্তা নন।

এই ভাগ গুলো বর্জনশীল সেট (Mutually Exclusive set) নয়, তাই আমি প্রথম ভাগ আর দ্বিতীয় ভাগ কে আমি বলব ‘প্রাইম গ্রুপ’ আর দ্বিতীয় আর তৃতীয় ভাগ কে বলব ‘সাব প্রাইম গ্রুপ’। এখানে ‘প্রাইম’ গ্রুপ’ এর দারিদ্র থেকে বের হয়ে আসার সম্ভাবনা বেশি।

এখন প্রশ্ন হল কিভাবে এদের চিহ্নিত করা হবে। এখানেই ব্যাঙ্কিং জগতে জামানত এর কথা টা আসে।কেন ব্যাঙ্কিং জগতে জামানত এর প্রয়োজন হয়? আগেই বলেছিলাম, যাতে ঋণগ্রহীতা স্বেচ্ছায় যেই কাজের কথা বলে ঋণ গ্রহন করেছেন শেই কাজেই ১০০ ভাগ ব্যয় করেন। যদি না করেন , তবে অর্থনীতি এর ভাষায় একে বলা হয় ‘ Moral Hazard’। যেহেতু ঋন গ্রহিতা কি কাজে ঋন ব্যবহার করছেন , তা সরাসরি পর্যবেক্ষনের উপায় নেই (Hidden Action) এই জামানত ধরে রেখে ঋন প্রদান এর ক্ষেত্রে একধরনের ‘Screening’ করা হয়, যাতে, ঋন গ্রাহক যেই কাজে ঋন নিয়েছেন, ব্যাংক চায় যে সেই কাজে সে ঋন ব্যবহৃত হয়। সোজা কথায় ব্যাঙ্কের যেই Incentive আর ঋন গ্রহিতার যে ‘Incentive ‘ তা যেন Compatible হয়। প্রোফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস এই ক্ষুদ্রঋনের ক্ষেত্রে জামানতের বিকল্প হিসাবে “Group based lending”, আর “peer pressure” এবং “Closed client based interaction” প্রবর্তন করেন যাকিনা একইরকম “Incentive compatibility constraint” হিসাবে কাজ করবে। কিন্তু প্রোফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস এই ক্ষুদ্রঋন কে যেভাবে ‘Social business’ হিসাবে দেখেছেন, অনেক ক্ষুদ্রঋন সংস্থা এর কাছেই তা ‘ Just Business’ কারন ‘সাব প্রাইম’ দের কাছ থেকেও লাভ করা (Profit) যায়। কাজেই ‘সাব প্রাইম’ গরিব দের বেহাল অবস্থা।এখানে ক্ষুদ্রঋন সংস্থা গুলোর কাছে ‘Profit maximization’ ই প্রধান লক্ষ্য।শক্ত হাতে “Incentive compatibility constraint” ধরে রাখার জন্যে সংস্থা গুলো অনেক সময় নির্মম কাজ করতে দিধা করেনা কারন এইটাই মার্কেট এর ব্যাপার।

এখন অর্থনীতি এর ‘Trade off’ এর ব্যাপার গুলো এখানে চলে আসে। এখন আমরা কি এই ‘সাব প্রাইম’ গরিব দের কে ঋন এর সুবিধা দিব নাকি দিব না, কারন এদের ঋন দিয়েও এদের গরিবি হালত এর পরিবর্তন হবে না, কিন্তু সমাজে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বাড়বে। এখন যদি আমরা এই গরিব দের ঋন দেয়া বন্ধ করতে চাই , সেটাই যদি পলিসি লেভেল এর প্রশ্ন হয়, তাহলে তা বেশ কয়েক ভাবে করা যায়। এক , গরিব দের ক্রেডিট রেটিং করা, যাতে ‘প্রাইম’ আর ‘সাব প্রাইম’ গরিব দের আলাদা ভাবে চিহ্নিত করা যায়। যেহেতু “Group based lending”, আর “peer pressure” এবং “Closed client based interaction” এর মাধ্যমে তথ্য পাওয়াই যাচ্ছে “Incentive compatibility constraint” রক্ষা করার জন্য এটা সম্ভব বলেই আমি মনে করি।আর এই কাজ টা যাতে ক্ষুদ্রঋন সংস্থা গুলো করে সে জন্যে সরকারের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে Regulation দরকার। সরকার এই কাজ গুলো করতে পারে ১) যদি ক্ষুদ্রঋন সংস্থা গুলো কে ট্যাক্স প্রদান করতে হয় ২) সুদের হার কমানো (এখন সুদের হার কম না বেশি এই বিতর্ক কিন্তু আমি যাচ্ছি না, যেই লেভেল এর সুদের হারই থাকুক না কেন তা কমানো, তা হলে ক্ষুদ্রঋন সংস্থা গুলোর লাভ কমবে এবং তারা ঋন প্রদান এ আরও যত্নশীল হবে, তখন , শুধুই ‘প্রাইম’ দের ঋন প্রদান করবে।)

এখন আমার সেই আগের প্রশ্নের উত্তরে ফিরে আসি,( মনে হয় ভুলেই গিয়েছেন) ‘ Pareto Improvement’ এর সাথে দারিদ্র কমানোর সম্পর্ক কি? যদি, শুধুই ‘প্রাইম’ দের ঋন দেয়া হয় এই ‘ Pareto Improvement’ তাই হবে দারিদ্র কমানোর সাথে গুরুত্তপূর্ন সম্পর্ক, তা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, কারন এক্ষেত্রে দারিদ্র কমবে ( Poverty reduction) , দারিদ্র দূর ( Poverty Elimination) হবে না।

যেহেতু ক্ষুদ্র ঋন একটা ‘টুল’ সেই ‘টুল’ আবিস্কার এর জন্য আমি প্রোফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস কে সাধুবাদ জানাই। কিভাবে সেটা ব্যবহৃত হবে তা এখন অন্য প্রশ্ন। ধৈর্য সহকারে লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ ।

১,৫২৬ বার দেখা হয়েছে

১৩ টি মন্তব্য : “ক্ষুদ্রঋণ সম্পর্কে আমার কিছু (একজন অর্থনীতিবিদ হিসাবে) চিন্তা-ভাবনা-২”

  1. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    রুবাইয়াত,

    মনোযোগ দিয়ে পড়ছি তোমার লিখাটা, দুই পর্বই। এতোদিন পর্যন্ত কোন একজন অর্থনীতির দিক থেকে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে আলাপ করবে এই আশায় বসে ছিলাম। কারণ, বেশ কয়েকজন অর্থনীতিবিদ কোন তথ্য+তত্ত্ব ছাড়াই শুধু কথার মারপ্যাচ আর ক্রেডেনশিয়াল দিয়ে তাদের বক্তব্য বিশ্বাস করতে বলেছিলেন, যেমন ডঃ রেহমান সোবহান। যাই হোক, তোমার কাছ থেকে নতুন কিছু শোনা/জানার আশায় আলোচনায় বসলাম। আশা করি তুমি যথার্থ তত্ত্ব এবং/অথবা তথ্য দিয়েই তোমার মতামত জানাবে। -

    (১) তুমি বলেছো "‘Pareto Improvement’ খালি সমাজের লাভের কথা বলে এখানে আয় বন্টন (Income Distribution) এর মাধ্যমে দারিদ্র দূরীকরনের কিছুই বলে না"। আমার প্রশ্ন হলো, ডঃ ইউনুস কি বলেন- দারিদ্র্য কমানো, নাকি দূর করা? আমার যতদূর মনে পড়ে, নোবেল পুরস্কার গ্রহনের সময়কার বক্তৃতা থেকে শুরু করে সব জায়গায়ই তিনি দারিদ্র্য দূর করার কথাই বলেন। এক্ষেত্রে তুমি কি বলো? তিনি কেন দারিদ্র্য "কমানো"র কথা বলেন না?

    (২) তুমি গরীবদেরকে তিন ভাগে বিভক্ত করেছো উদ্যোক্তা, ভোক্তা আর চরম দরিদ্র, যা'র মধ্যে প্রথম দুই ভাগকে বলেছো "prime" যারা ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে দারিদ্র্য থেকে বের হয়ে আসতে পারে। ভোক্তা-শ্রেণীর ( তোমার উল্লিখিত ২য় ভাগ) গরীব কিভাবে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে তা' শোধ করে দারিদ্র্য থেকে বের হয়ে আসবে, আরেকটু বিস্তারিত জানালে বুঝতে সুবিধা হতো। প্রথম ভাগ দারিদ্র্য থেকে বের হয়ে আসা এবং তৃতীয় ভাগের নিঃস্ব হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আমার দ্বিমত নেই। আরেকটা কথা, এ'ই ২য় ভাগ, তথা ভোক্তাশ্রেণীর সংখ্যা অন্য দুই শ্রেণীর তুলনায় কি পরিমাণ বলে তুমি জানো বা মনে করো?


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
  2. রুবাইয়াত (৯৫-০১)

    @হুসাইনঃ গ্রামীন ব্যাঙ্কের মালিকানা সরকারের হলেও যেহেতু পরিচালনা পরষদ রয়েছে, আমার ধারনা তারাই সুদের হার নির্ধারন করেন।এছারা বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক এর অধিনে 'Microcredit Regulatory Authority' (MRA) আছে তারাও সুদের হারের বাপারে পলিসি করে থাকতে পারেন যেটা সুধু গ্রামীন নয় সকল ক্ষুদ্রঋন সংস্থা এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
    @মাহমুদ ভাইঃ আপনার প্রশ্নের উত্তর ক্রমান্নয়ে দেয়ার চেষ্টা করছিঃ
    ১) ক্রেডিট দেয়ার ব্যপারে অর্থনীতির তত্ত্ব গুলো অনেক Strict। কারন অর্থনীতি real world কে বোঝার জন্য বিভিন্ন মডেল এর মাধ্যমে অনেক সরল করে ফেলে। কারন real world এ অনেক সমস্যা হতে পারে। ডঃ ইউনুস এই সব তত্ত্ব এর বালাই না করে just দেখতে চেয়েছিলেন যে গরিব দের ক্রেডিট দেয়া যায় কিনা।এই জন্যেই কিন্তু তিনি অর্থনীতিতে নোবেল পান নি।কারন তার তেমন একাডেমিক কাজ নেই।এমন কি যেই ক্ষুদ্রঋন তিনি আবিস্কার করলেন তার উপরেও না।তিনি যা করেছেন তা হল real world এর একটা Practical কাজ। তাই তিনি অর্থনীতিতে নোবেল পান নি। কিন্তু যে কাজটি তিনি বিশ্ববাসী কে দেখালেন, তাহল অনেক লোক ক্ষুদ্রঋন নিচ্ছে এবং বলা হল এর মাধ্যমে দারিদ্র দূর হয়।তাই তিনি শান্তি তে নোবেল পেলেন। নোবেল পাওয়ার সময় তিনি দারিদ্র দুর হওয়ার কথাই বলেছিলেন, এবং তিনি সেটা earnestly বিশ্বাস করেছিলেন বলেও আমি মনে করি। যেখানে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জিমি কারটার বা বারাক অবামাও শান্তিতে নোবেল পান, ড. ইউনুসও নোবেল শান্তিতে পেতেই পারেন বলে আমার ধারনা, কাজটা তিনি খুব ছোটও করেন নি, দারিদ্র দূর না হোক, কমানর একটা টুল ত আবিস্কার করলেন।
    ২) যেকন নতুন জিনিষ আবিস্কার এর পর তার অনেক সমস্যা থাকতে পারে।বিশেষত যখন ড. ইউনুস অর্থনীতির তত্ত্ব গুলোর কনো বালাই না করে একধরনের Experiment হিসাবে কাজটা শুরু করেছিলেন। আমার এই analysis পুরাই আমার নিজের। যদিও 'Pareto improvement' এর ধারনা গুলো বেসিক Microeconomics এর Technique, গরীব দের এইভাবে কেউ (বা কোন অর্থনীতিবিদ) ভাগ করেছে বলে আমার জানা নেই। আমি এই ধারনা টা পেয়েছি ২০০৮ সালের আমেরিকার এর Housing financial crisis হওয়ার পর। এখান থেকে ক্ষুদ্রঋন এর খুব বিপজ্জনক একটা রুপ দেখা দিতে পারে (Just like American financial crisis, সেটা সম্পরকে একটু পরে আমি বলছি, যদিও, তা শুধুই আমার ধারনা।) এই গরিব দের ভাগ গুলো তে কয়জন গরিব পরে তা আমার জানা নেই।কিভাবে জানা যেতে পারে, তা নিয়ে চিন্তা করতে হবে। যেই ৩ ভাগে ভাগ করলাম, তা হলো কিভাবে গরিব রা ক্ষুদ্রঋন কে ব্যবহার করে।আরও ভাগ থাকতে পারে।এটা খুবি ইনফরমাল লেখা, একাডেমিক লেখা নয়। একি গ্রাহক, একিসাথে ‘entrepreneur class’ এবং ‘ Consumer class’ হতে পারে। Main ভাগ টা হল প্রাইম এবং সাব প্রাইম। খুবি গরিব লোকজনদের Consumer হওয়ার একটা উধাহরন আমি দিতে পারি।PKSF এ একটা Project আছে নাম হল Prime ( এই প্রাইম আমার ভাগ করা প্রাইম না, just project এর নাম)। এইএইএইএই এই
    এই প্রজেক্ট নর্থ বেঙ্গলের মংগা আক্রান্ত এলাকায় মংগা এর সময় তে মংগা আক্রান্ত গরিব লোকদের ঋন দিয়ে থাকে, যাতে গরিব লোকজন অই সময় খেয়ে বাচতে পারে।যেহেতু মংগা এর সময় তে কোন কাজ নেই অই সময় তারা ঋন নিয়ে খাবে, যখন আবার কাজ পাবে, তখন কাজ করে ঋন শোধ করবে। এই ধরনের গরিব লোক দের দারিদ্র কখনই দুর হবে না কিন্তু, গবেশনায় দেখা গিয়েছে, যারা আগে একবেলা খেত এর ফলে তারা এখন খাচ্ছে দুই বেলা এবং যারা দুই বেলা খেত এখন খাচ্ছে তিন বেলা। এরা হল both consumer class and extreme class
    এর উদাহরন।
    এবার American Financial Crisis এর মতন আমাদের দেশেও Microcredit Financial Crisis কিভাবে হতে পারে তা এক্তু বলে শেষ করছি (যা অতি ভয়ঙ্কর) ঃ যেহেতু ব্যাঙ এর ছাতার মতন ক্ষুদ্রঋন সংস্থা গড়ে উঠছে, আর ঋন বিতরন হচ্ছে, এখন দেশে যদি বড় ধরনের কয়েকটা Consecutive natural disaster হয়, তাহলে পুরো দেশে বেশির ভাগ গরিব লোকজন Group wise ঋন শোধ করতে ব্যর্থ হবেন for an extended period of time, সে ক্ষেত্রে এই সব ক্ষুদ্রঋন সংস্থা গুলো bankrupt হয়ে যাবে, এবং দেশ ভয়ঙ্কর crisis এ পড়বে, কারন জিডিপি তে এ সমস্ত অর্থনৈতিক কর্মকান্ড কম নয়।এটা Just একটা সঙ্কা, যদিও সঙ্কাটি অমুলক হতে পারে, কিন্তু দেশের অর্থনিতিবিদ দের এই নিয়ে কিছু বলতে শুনি না।
    @জিহাদঃ হা, তোমাকে চিন্তে পেরেছি। তোমার কিছু লেখাও CCB তে পরেছি। চমতকার লেখা।
    সকল কে ধন্যবাদ।

    জবাব দিন
    • নঈম (৮৭-৯৩)

      তোমার বক্তব্য অনুসারে ড: মুহাম্মদ ইউনুস ডান পথের এক্সপেরিমেন্ট করেছেন (ক্ষুদ্র ঋণ কমানোর গবেষণা, দারুদ্র দূরীকরণ নয়-কমানো) আর বাম পথের বিবরণী (দারিদ্র দূরীকরণ) অন্যদের গিলাচ্ছেন?! 😮
      সকল গন্ডগোল কি এখানেই? :dreamy:

      জবাব দিন
  3. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    রুবাইয়াত,

    অনেক ধন্যবাদ তোমার গোছানো উত্তরের জন্য। তোমার গরীবদেরকে তিনভাগে বিভক্ত করার ধারণাটা চমৎকার লেগেছে। তোমার আরেকটা চিন্তা বেশ ইন্টারেষ্টিং। বলেছোঃ

    দেশে যদি বড় ধরনের কয়েকটা Consecutive natural disaster হয়, তাহলে পুরো দেশে বেশির ভাগ গরিব লোকজন Group wise ঋন শোধ করতে ব্যর্থ হবেন for an extended period of time, সে ক্ষেত্রে এই সব ক্ষুদ্রঋন সংস্থা গুলো bankrupt হয়ে যাবে, এবং দেশ ভয়ঙ্কর crisis এ পড়বে, কারন জিডিপি তে এ সমস্ত অর্থনৈতিক কর্মকান্ড কম নয়।এটা Just একটা সঙ্কা, যদিও সঙ্কাটি অমুলক হতে পারে, কিন্তু দেশের অর্থনিতিবিদ দের এই নিয়ে কিছু বলতে শুনি না

    তোমার শংকাটি মোটেও অমূলক নয়। ২০০৭-এর (নাকি ২০০৬?) নভেম্বরের 'সিডর-পরবর্তী' অবস্থা এটাই প্রমাণ করে, বিশেষ করে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে।

    তবে কিছু বিষয়ে দ্বিমত আছে।

    নোবেল পাওয়ার সময় তিনি দারিদ্র দুর হওয়ার কথাই বলেছিলেন, এবং তিনি সেটা earnestly বিশ্বাস করেছিলেন বলেও আমি মনে করি। যেখানে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জিমি কারটার বা বারাক অবামাও শান্তিতে নোবেল পান, ড. ইউনুসও নোবেল শান্তিতে পেতেই পারেন বলে আমার ধারনা, কাজটা তিনি খুব ছোটও করেন নি, দারিদ্র দূর না হোক, কমানর একটা টুল ত আবিস্কার করলেন

    তিনি এখনো এই বিশ্বাস থেকে সড়ে আসেননি, এবং কোথাও এই দাবী করেননি যে, ক্ষুদ্রঋণ দারিদ্র্য "দূর না করলেও কমায়"। কাজেই, তুমি তা'কে যে জন্য যে ক্রেডিট দিতে চাইছো, সেটা ক্ষুদ্রঋণের বাস্তবতার ভিত্তিতে নয়, বরং তার প্রতি তোমার ব্যক্তিগত 'মুগ্ধতা/সম্মানবোধ/শ্রদ্ধা/ইত্যাদি'র ভিত্তিতে (আমার এই অনুমান তুমি ভুল প্রমাণ করলে খুব খুশি হবো)।

    অর্থনীতির তত্ত্ব আর বাস্তবতা নিয়ে তোমার বক্তব্য রীতিমত হতাশাজনক, বিশেষ করে তুমি অর্থনীতির একটা গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে আছো এই বিষয় মাথায় রাখলে। বলেছো "তিনি যা করেছেন তা হল real world এর একটা Practical কাজ"। তারমানে কি তুমি বলতে চাইছো অর্থনীতির তত্ত্বগুলো real world এর practical কাজ সংশ্লিষ্ট নয়?! এবং এটাও ত ঠিক যে, তিনি ক্ষুদ্রঋণকে নিয়ে মাত্র ২/১ বার এক্সপেরিমেণ্ট করেননি, সুদীর্ঘকাল ওতোপ্রতোভাবে লেগে আছেন এর সাথ। ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে তিন দশক কাজ করার পরেও বিশ্বের একটা স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ডক্টরেট ডিগ্রীধারী একজন যদি তারই নিজের উদ্ভাবিত+পরিচালিত ক্ষুদ্রঋণের একটা একাডেমিক মডেল দিতে না পারেন, তাহলে তার ডিগ্রী অথবা ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে সন্দেহ হয় বৈকি। যেহেতু তিনি সন্দেহাতীত ভাবেই ডক্টরেট ডিগ্রীটা শেষ করেছেন, তাই আমার সন্দেহটা ঐ ক্ষুদ্রঋণ নিয়েই। এবং, আমি এটাও অনুমান করি যে, তিনি খুব ভালো করে জানেন ক্ষুদ্রঋণ আসলে কি করছে, কিন্তু বক্তৃতায় বানানো গল্প বলেন। ক্ষুদ্রঋণের সুফল বর্ণনা করতে গিয়ে দেশে-দেশে ক্ষুদ্রঋণের প্রসার, নিজের ডিগ্রী আর পুরস্কারের উপর নির্ভর করেন, নিজের দাবীর পক্ষে কোন তথ্য না দিয়ে। আর তিনি যে জেনেশুনেই ক্রমাগত মিথ্যা বলেন, তা'র কয়েকটা উদাহরণ হলো সুদের হার, গ্রামীনের মালিকানা, গভার্নিং বডি, ইত্যাদি নিয়ে তার দাবীগুলো।

    আর জিমি কার্টার বা ওবামার উদাহরণ দিয়ে যা' বোঝাতে চাইলে, সেটা খুব খেলো যুক্তি হলো। খোঁজ নিয়ে দেখ, মানবতার জন্য চরম ভিলেন বেশ কিছু বান্দাও নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন! (সম্পাদিত)


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
  4. রুবাইয়াত (৯৫-০১)

    @নঈম ভাইঃ হাহা 🙂 , তা বলিনি অবশ্য।
    @মাহমুদ ভাইঃ আমি বলি নি অর্থনীতি এর ত্তত্ব গুলো real world এর Practical কাজের সাথে সম্পৃক্ত নয়। তবে অর্থনীতি Rocket Science ও নয়। যদিও , গত ৬০/৭০ বছরে এই সাস্ত্র অনেক Scientific হয়েছে, যে এখন একে almost science বলা চলে। কিন্তু এই development মাত্র ৬০/৭০ বছরে,সাস্ত্র হিসেবে এখন অনেক নতুন। যেহেতু Human Behavior নিয়ে কাজ হয়, তাই অনেক কিছুই এখন পর্যন্ত pure science এর মতন সাদা-কালো দাগে ফেলা যায় না, কিছু জিনিস আছে যা কিনা ধুসর।আবার অনেক কিছু আজকাল অর্থনীতি তে সাদা-কালো দাগে ফেলা যায়ও, কিন্তু সেটা ক্ষুদ্রঋন এর ক্ষেত্রে না।কারন unfortunately, ক্ষুদ্রঋন নিয়ে আজ পর্যন্ত কোন Noticeable একাডেমিক পেপার (আমার জানামতে) নেই।কেন নেই, তা ঠিক বলতে পারব না , হয়ত, ক্ষুদ্রঋন একান্তই আমাদের মতন একটি উন্নয়নশীল দেশের ব্যাপার, বড় বড় জারনাল এ উন্নত দেশ এর relevant রিসার্চই হয়। যেমন Insurance এর উপর তত্ব আগে তেমন ছিল না, কিন্তু Insurance practitioner যারা, তারা তো অনেক আগে থেকেই এই ইন্সুরান্স এর ব্যাবসা করে আসছিলেন, পরে Insurance এর উপর অনেক দারুন দারুন তত্ব আবিস্কার হয়েছে।

    আমার জানামতে যেই জ্ঞান , এবং সেই logic দিয়েই আমি ডঃ ইউনুস কে শ্রদ্ধা/ সম্মান করি তা আপনি ঠিকি ধরেছেন, কিন্তু এই ব্যাপার গুলো Subjective, আর একটা মানুষ সম্পর্কে বিভিন্নজনের বিভিন্ন মতামত থাকতেই পারে, কিন্তু আমার উদ্দেশ্য ডঃ ইউনুস কে নিয়ে এ লিখা নয়।আমার উদ্দেশ্য ছিল নিজে জিনিসটা একটু বোঝা, সেখেত্রে মানুষ জনের মতামত জানা যেটা আমার জন্যে গুরুত্বপূর্ণ। আর দিত্বীয়ত, ক্ষুদ্রঋন আসলে কি, এবং কি কাজ করছে , তা অর্থনীতি এর দৃষ্টিকোন থেকে আমি কি ভাবি তা মানুষ কে জানানো, আর যাতে মানুশজনও একটা Better perspective পায়। কারন ডঃ ইউনুস ভাল না খারাপ এই নিয়ে তর্ক-বির্তক করে কোনই লাভ হবে না, কারন তিনি নোবেল পেয়ে গেছেন, যখন তিনি মারা যাবেন, তখন প্রথম আলো হয়ত হুমায়ুন আহমেদ এর মতন তার জন্য সুন্দর সুন্দর এপিটাফ দিবে, আর সারা দেশের মানুষ কাদবে ( কথার কথা, কিন্তু এটা হওয়ার অনেক Possibility আসে, চাইলে বাজি ধরতে পারেন 😀 ।) কাজেই interesting নাহলেও আমি ডঃ ইউনুস কে নিয়ে লিখতে চাইনি, চেয়েছি ক্ষুদ্রঋন সমন্ধে কিছু idea দিতে।
    জিমি কার্টার আর বারাক ওবামার যুক্তি তা খেলো তা মানছি।(Just কথার কথা হিসেবে উদাহরন টা দিয়েছিলাম আরকি।)
    সবাই যারা আমার লেখা পরেছেন এবং কষ্ট করে মন্তব্য করেছেন, তাদের সবাই কে ধন্যবাদ।সাহস করে কিছু লিখলাম, সাহস বাড়লে হয়ত আর কিছু লিখব।

    জবাব দিন
  5. গুলশান (১৯৯৯-২০০৫)

    ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক আলোচনায় আমি বরাবরই আগ্রহী। যদি অংশগ্রহণ নাও করি, দর্শক হিসেবে দেখার চেষ্টা করি। আমি যা বুঝি তা মাহমুদ ভাইয়ের কথার সাথে মিলে যায়। মাহমুদ ভাই সিসিবিতে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে বেশ লেখালেখি করেছেন আগে। সেগুলো পড়েছেন কিনা জানি না। সেখানে অনেক আলোচনা করা আছে। আর আজকেই একটা লেখা পড়লাম ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে। যদিও সেটা একটু খোঁচা দেওয়া, প্রাসঙ্গিক মনে করে শেয়ার করছি-
    http://www.nirmaaan.com/blog/mohammed-munim/7058

    জবাব দিন
  6. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    ইউনুস মিয়ারে নিয়া নতুন ঠেলা।
    পুরাটাই হয়তো অপ্রাসঙ্গিক নয়।
    লেখাটা সংগৃহীত এক বড় ভাইয়ের ওয়াল থেকে।
    আমেরিকার উড্রো উইলসন সেন্টারের সিনিয়র গবেষক (এবং বাংলাদেশে যুুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন এমব্যাসাডর) উইলিয়াম বি. মাইলাম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে ড. ইউনুসের পক্ষ নিয়ে একটি লেখা লিখেছেন। লিখতেই পারেন। কিন্তু সেখানে তিনি লিখেছেন - ইউরোপ-আমেরিকার সরকারগুলোর উচিত হবে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এবং দাতা সংস্থাগুলোর মাধ্যমে যে সব অনুদান বাংলাদেশে যাচ্ছে, তা বন্ধের হুমকি দেয়া এবং সে অনুযায়ী সক্রিয় হওয়া। এখানে দেখুন:
    http://on.wsj.com/MXKRMG

    মাইলাম লিখেছেন, গ্রামীন ব্যাংকের এবং লক্ষ লক্ষ দরিদ্র্য মানুষের ভবিষ্যত কি হবে সে বিষয়ে গভীর আশংকা থেকেই নাকি তিনি লিখতে বাধ্য হয়েছেন। আমরা জানি, এমন আশংকায় মাইলাম সাহেব এর আগেও ভুগেছেন, এবং তখনও হাতে কলম তুলে নিতে দ্বিধা করেননি। অতীতে মাইলাম সাহেবের সেই আশংকার বিষয়বস্তু ছিল "পাকিস্তান", শর্মিলা বসুকে সক্রিয়-সমব্যাথি হিসেবে সাথে নিয়ে। তখনও এমনই গভীর আশংকায় উদ্বেল হয়েছিলেন যে নিতান্ত বাধ্য হয়েই দু'জনে মিলে একসাথে ওকালতি করেছিলেন পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে। মাইলাম-শর্মিলার যুক্তি ছিল - আমেরিকার উচিত হবে পাকিস্তান সরকারের কাছে F-16 বিমান বিক্রি করা, এবং তা নাকি আমেরিকার নিজের ভালোর জন্যই করা উচিত হবে। কারণ হল (মাইলাম-শর্মিলার ভাষায়) - পাকিস্তান হল একটি 'স্থিতিশীল ইসলামী গণতন্ত্র' যা নাকি পুরো মুসলিম বিশ্বের জন্যই একদিন একটি 'মডেল' হয়ে উঠবে! এখানে দেখুন: http://bit.ly/RhqBab । "অসাধারণ" যুক্তিজ্ঞান-মাত্রাজ্ঞান মাইলাম-শর্মিলাদের, মানতেই হচ্ছে!

    শর্মিলাকে সাথে নিয়ে পাকিস্তানের পক্ষে দালালি করেই কিন্তু মাইলাম সাহেব ক্ষান্ত হননি। এর পর তিনি উঠে পড়ে লেগেছিলেন আমেরিকায় শর্মিলা বসুকে এবং তার নতুন অপ-গবেষণা The Dead Reckoning বইটিকে প্রোমোট করতে। এরই অংশ হিসেবে গত বছর মার্চ মাসে উড্রো উইলসন সেন্টারে নিজের প্রভাব খাটিয়ে শর্মিলা আর তার বইয়ের ওপর অনুষ্ঠান আয়োজন করেন। এটাই হল সেই উড্রো উইলসন সেন্টার যেটার সিনিয়র গবেষক মাইলাম নিজে। এখানে দেখুন: http://bit.ly/PdFLuh

    আমার প্রশ্ন – হঠাত এমব্যাসাডর মাইলাম এর মতো মার্কামারা লোক ড. ইউনুসকে নিয়ে এতো উতলা এবং তৎপর হয়ে গেলেন কেন? উপযাজক হয়ে সকল আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং দাতা সংস্থাগুলোর কাছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লবিইং করা ছাড়া উনার কি আর কোনো জরুরী কাজ নেই এখন? এখানে ঠিক কি হচ্ছে কেউ কি জানেন? ড. ইউনুস কি জানেন উনার হয়ে মুখে ফেনা তুলে ফেলছেন যে সব 'বন্ধুরা' তাদের কেউ কেউ আসলে কি জিনিস?


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  7. রুবাইয়াত (৯৫-০১)

    @গুলশানঃ লেখাটা আমি পরেছি।ভালো লেখা, যদিও সব বিষয়ে সহমত নই। ভাবছি ' Credit Card' নিয়ে ভবিষ্যতে একটা লেখা দিবো, যাতে প্রবাসী যারা রয়েছেন তারা উপকৃত হতে পারেন।
    @রাজিব ভাইঃ Friends of Grameen বলে একটা Network আছে খুব সম্ভবত, যা ডঃ ইউনুস এর সাপোর্ট এর জন্য তৈরী হয়েছে , যখন আওয়ামীলীগ এর সাথে তার সমস্যা হয়।এই Network এ হয়ত মাইলাম সাহেব থাকতে পারেন।যেহেতু এট একটা Network, এবং এমন অনেক Network থাকতে পারে, ডঃ ইউনুস সবাই কে ব্যক্তিগত ভাবে চিনবেন বলে মনে হয় না। কিন্তু Network এর মাধ্যমে যোগাযোগ থাকতে পারে। আর এধরনের International ব্যাপার আমার ধারনা ব্যক্তিগত পরিচয়ের থেকে অনেকটাই diplomatic গোত্রীয় হয়ে থাকে।

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।