দোলাচলে

 বিশাল বিশাল দু’টো গামলায় লুচির পাহাড় জমে উঠেছে। চপলাদি দ্রুত হাতে লুচি বেলে দিচ্ছে আর মা দু’ ঘন্টা যাবত অম্লান বদনে লুচি ভেজে যাচ্ছেন। দু’ লিটার তেলের বোতল লুচি ভাজতেই খালি। রান্নাঘরে উঁকি দিয়ে সূচনা বলে, ‘ মা! তুমি পাগল হলে নাকি!এত লুচি কে খাবে !’

‘ গরম গরম লুচি একবার খাওয়া শুরু করলে কখন শেষ হয়ে যাবে টেরও পাবি না ! তোর বাবা একাই তো ত্রিশ-চল্লিশটা সাবাড় করবে !’

‘তোমাদের কোন নিয়ম-কানুনের বালাই নেই! বাবা হার্টের রোগী।আর তোমরা তাকে যা খুশি খেতে দাও।’

‘ না দিলে  কেমন বাচ্চা ছেলের মত অভিমান করে দেখিস না! আচ্ছা, শোন, তুই থালা সাজা তো। তোর কাকাদের বাড়ি লুচি পাঠাব।’

‘ আবার পাঠানোর কি দরকার। বাড়িতে আসলে খেতে দিও!’

‘ভাল স্বার্থপর হয়েছিস তো! আমি হচ্ছি বড় বৌ। আমার দায়িত্ব আছে না ! যা, খাশীর মাংসটা ফ্রীজ থেকে বের করে গরম কর। লাবড়া গরমই আছে। মাংস, লাবড়া আর লুচি দিয়ে প্লেট সাজা।’

সূচনা প্লেট সাজাতে লেগে যায়। লুচি-মাংসের গন্ধে বাবা এসে হাজির। গামলা থেকে একটা গরম লুচি তুলে ফুঁ দিয়ে ঠাণ্ডা করতে করতে সূচনাকে বলেন, ‘কি রে! তোকে যে সালোয়ার-কামিজটা কিনে দিলাম সেটা পরলি না তো!’

‘ নতুন সালোয়ার-কামিজ পরে প্লেট সাজাব, বাবা ? কখন কি জামায় লেগে যায়!’

‘ আরে যা, তুই  ড্রেসটা পরে আয় ! তোর মা প্লেট সাজাবে।’

মা এবার বলে ওঠেন, ‘ হুম, মেয়েরা একটু কাজ-কর্ম করলে বাপের আর সহ্য হয় না!’

‘আহা! রাগো কেন নীরু! তুমি হচ্ছ সাক্ষাৎ দুর্গা! দশভূজা! তোমার কাউকে লাগে নাকি!’

সূচনা বাবার দেয়া সালোয়ার-কামিজটা বের করে। মাস ছয়েক পর সে বাড়ি এসেছে। গতবারের পূজায় সে ছিল শ্বশুর বাড়িতে- ঈদ উদযাপনে। পূজার দু’দিন পরই কোরবাণী ঈদ। তাই আর বাড়ি আসা হয়নি। এবার সোহানের সাথে একপ্রকার ঝগড়া করেই সে বাড়ি এসেছে। সোহান রেগেমেগে বলেছিল, ‘ তুমি তো এখন মুসলমান। এখন কেন পূজায় বাড়ি যাওয়া ? অন্য সময় যেও। আব্বা-আম্মা শুনলে কি ভাববে ? আর পূজায় যে যাচ্ছ , তোমার আত্মীয়-স্বজনের সামনে তো ঠাকুরকে প্রণাম না করে  পারবে না!খুব মজা করে প্রসাদও খাবে! দুই নৌকায় পা দিয়ে কেন চলা ?’

সোহানের কোন যুক্তিই সূচনাকে টলাতে পারেনি। আর তাছাড়া ঠাকুরদার সম্পত্তির ভাগ-বাঁটোয়ারা হবে এবার। এ সময় ও বাড়ি না থাকলে ওকে নিয়ে যে কানা-ঘুঁষা চলছে , সেটাকে সত্যি বলে ধরে নেবে সবাই। ও যে মুসলমান হয়ে গেছে,মুসলমান ছেলেকে বিয়ে করেছে – এ ব্যাপারে সবাই নিশ্চিত হওয়ার আগে ভালয় ভালয় হয়ে যাক ভাগাভাগি। নইলে বাবাকে যদি বঞ্চিত হতে হয় ! বাবা আর তিন কাকা মিলে এই চারতলা বাড়িটা বানিয়েছিল।  একেক তলায় একেক ভাই। সম্পত্তিটা হাতে আসলে নিজেদের অংশটা কাকাদের কাছে বেচে দিয়ে ব্যবসার অজুহাত দেখিয়ে অন্য কোন এলাকায় চলে যাবেন বাবা-মা। এখানে থাকার উপায় কি! সূচনার ঘটনাটা সবাই জেনে ফেললে ভাইদের কটূক্তির চোটে বেঁচে থাকাই দায় হয়ে পড়বে!

সূচনা হলুদ সালোয়ার-কামিজ পড়ে আয়নার সামনে দাঁড়ায়। এটা তার খুব একটা পছন্দ হয়নি। ঢাকার ফ্যাশন হাউস থেকে জামা-কাপড় কেনা যার অভ্যাস, মফস্বলের সালোয়ার-কামিজ তার পছন্দ হবে কেন! বাবা সেদিন জোর করে তাকে মার্কেটে নিয়ে গিয়েছিলেন, নিজ হাতে কিছু কিনে দেবেন বলে। কিন্তু দোকানের পর দোকান ঘুরে তার যখন কিছুই পছন্দ হচ্ছিল না, তখন বাবা বলেছিলেন, ‘আমরা তো তোর পর হয়ে গেছি। আমাদের কাছ থেকে তুই তো আর কিছু নিবি না।’ বাবার ভুল ভাঙাতে সামনে থাকে সালোয়ার-কামিজগুলোর মধ্য থেকে তড়িঘড়ি করে একটা বের করে ও বলে, ‘দেখ তো বাবা, এটা আমাকে কেমন মানাবে ? ডিজাইনটা কিন্তু খুব সুন্দর।’

হলুদ জামা পরে সূচনা ডাইনিংয়ে এসে দাঁড়ায়। বাবা আর ছোট বোন লোপা তখন গোগ্রাসে লুচি গিলছে। সূচনাও বসে পড়ল।

‘জ্যোতি কোথায় ?’

‘ও তো গোপালকে সাথে নিয়ে তোর কাকাদের বাড়ি লুচি দিতে গেছে।’ মা বলেন।

‘ও কে রেখে আমরা খেয়ে নেব ?’

‘কাকাদের বাড়ি থেকে ও খালিমুখে ফিরবে নাকি ? আর এখনো যে লুচি আছে, তাতে ওর মত দশটা জ্যোতির পেট ভরে যাবে।’

প্রথমে ভরপেট লুচি-মাংস-লাবড়া, তারপর মুখ মিষ্টি করতে নারকেলের নাড়ু। ছোটভাই জ্যোতি ততক্ষণে এসে পড়েছে।

‘আমাকে রেখে সবাই খাচ্ছে!’ ঝড়ের বেগে  বেরিয়ে যায় জ্যোতি। মান ভাঙাতে সূচনা ওর পিছু নেয়। দশ বছর বয়সী নাদুস-নুদুস ভাইটাকে পাঁজাকোলা করে নিয়ে আসে।

 

অষ্টমীর সন্ধ্যাবেলা।মণ্ডপে এসেছে সবাই। মা’র লালপেড়ে সাদা শাড়িটা পরেছে সূচনা। পূজার সময় ও কোন একটা অজুহাত দেখিয়ে সরে পড়তে চাইল। কিন্তু মা হাত টেনে ধরলেন। দ্বিধা-দ্বন্দ-ভয় আর অস্থিরতায় কাটল পূজার সময়টা।পূজা শেষে প্রসাদ বিতরণের অংশটা সূচনার ছোটবেলা থাকেই খুব প্রিয়।বরাবরের মত প্রসাদ নেয়ার সময় ও জ্যোতি আর লোপার সাথে কাড়াকাড়ি করাটাও বাদ দিল না। হাত ভরে উঠল কদমা-বাতাসা-নকুলদানা আর নানারকম ফলে। আরতির সময় ঢাঁক-শঙ্খ আর উলুর তালে সূচনা নিজেও যেন একটা ছন্দ হয়ে উঠল। হঠাৎ শ্বশুরবাড়িতে ওর ঈদ উদযাপনের কথা মনে পড়ল। পূজার উৎসবমুখরতার পাশে ঈদকে কেমন যেন ম্লান মনে হয় ওর কাছে। মণ্ডপের চারদিকে সব পরিচিত মানুষজন। কেউ কেউ এগিয়ে আসছেন। বাবার সাথে কথা বলছেন। হঠাৎ সৌমেন কাকার একটা কথায় সূচনার কান আটকে গেল। সৌমেন কাকা বাবাকে বলছেন,

‘ কি খবর মনীষ দা! ইন্ডিয়া নাকি চলে যাচ্ছেন ?’

‘এখনো কিছু ঠিক-ঠাক হয়নি। দেখি কি হয়!’

বাবা-মা ইন্ডিয়া চলে যাবেন! কিন্তু সে তো এর বিন্দু-বিসর্গও জানে না ! সূচনা মাকে একদিকে টেনে নিয়ে গিয়ে বলল, ‘ মা, তোমরা ইন্ডিয়া চলে যাচ্ছ! আমাকে তো কিছুই বল নি!’

‘ এখনও কিছু পাকাপাকি হয়নি রে! তোর মামারা পীড়াপীড়ি করছে।  ভোটার আইডি কার্ড, রেশন কার্ড সবকিছু নাকি যোগাড়  করে দিতে পারবে।’

‘ মামাদের কথায় তোমরা নাচো নাকি ! এখানকার দোকান-পাট, জমিজমা সব বেচে রিফিউজির মত ইন্ডিয়া চলে যাবে! এখানে বাবার একটা সুনাম আছে না! ওখানে গিয়ে তোমরা সেই সম্মান পাবে ?’

‘সেইজন্যেই তো ইন্ডিয়া যেতে চাই। তুই যদি জাতে না ফিরিস তোর বাবার সম্মান এখানে থাকবে ? এখানে থাকলে তোর বোনের ভাল বিয়ে দিতে পারব ? ওপারে গেলে তাও তোর ব্যাপারটা ধামা-চাপা দিতে পারব। আর এই মুসলমানের দেশে তোর ছোটবোনকে নিয়ে ভরসা আছে ? সেও যদি তোর মত কোন মুসলমান ছেলের গলায় ঝুলে পড়ে?’

সূচনা মা’র মুখের দিকে তাকাতে পারে না। অন্যদিকে তাকিয়ে থাকে। অপরাধবোধ তাকে পুড়িয়ে যায় ক্রমাগত। কিন্তু এখন তার কি করার আছে। সে মুসলমান হয়েছে, এফিডেফিট করে নাম বদলেছে, কোরান পড়া শিখছে দু’ মাস ধরে। তার ফেরার সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে।

সূচনা দ্রুতপায়ে মণ্ডপ থেকে পালাতে থাকে। কখন আবার কার সাথে দেখা হয়!

‘সূচনা!’ পেছন থেকে রজত দা’র কণ্ঠ শোনা যায়। না শোনার ভাণ কর সূচনা জোর কদমে হাটতে থাকে।

‘এই সূচনা!’ এবার আর এড়াতে পারে না সে।

‘বাহ্ !সাদা শাড়ি লাল পাড়ে তোমাকে তো খুব সুন্দর দেখাচ্ছে। একেবারে প্রতিমা-প্রতিমা!’

সূচনা ভদ্রতার হাসি হাসে।

‘ একটা কথা শুনলাম… কিছু মনে করো না, তুমি নাকি সূচনা রাণী পাল থেকে সূচনা জামান হয়ে গেছ!’

সূচনা গলা চড়িয়ে বলে, ‘ কার কাছ থেকে কি ভুল-ভাল শুনেছেন, সেটা আবার আমাকে শোনাচ্ছেন! এসব ডাঁহা মিথ্যা কথা! দয়া করে এসব আলতু-ফালতু কথা পাঁচকান করে বেড়াবেন না!’  রজত দা’কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সূচনা হাটা শুরু করে।

 

দশমীর সকাল বেলা। মন্দির প্রাঙ্গণে লাল পেড়ে সাদা শাড়ির ছড়াছড়ি। শুরু হল সিঁদুর খেলা। অপরিচয়ের ব্যবধান ঘুঁচিয়ে সব বিবাহিত নারীই একে অন্যকে সিঁদুরে মাখামাখি করছে। সূচনার মাঝবয়সী মা যেন কিশোরী হয়ে উঠেছেন। নিজের অজান্তেই সূচনার বুক থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে যায়। ছোটবেলায়  সে শুধু অপেক্ষা করত, কবে তার বিয়ে হবে, কবে সে সিঁদুর খেলার অধিকার পাবে। বিয়ে সে করেছে ঠিকই। কিন্তু বিয়ের সাথে সাথে সিঁদুর খেলা তার জন্য নিষিদ্ধ হয়ে গেছে।

দশমীতে বাবার বাড়ি ছেড়ে চলে গেলেন দেবী দুর্গা। আর দশমীর দু’দিন পর সূচনার বাবার বাড়ি ছাড়ার পালা। সূচনা কচ্ছপের মাংস খেতে খুব পছন্দ করে। মেয়ে চলে যাবে, তাই বাবা কচ্ছপ কিনে এনেছেন। দুপুরে কচ্ছপের মাংস দিয়ে ভাত খেয়ে ওর মনটা চনমনে হয়ে ওঠে। খাওয়া শেষ তিন ভাই-বোন লুডো নিয়ে বসে। খেলা যখন জমজমাট হয়ে উঠেছে, তখন সোহানের ফোন। কথায় কথায় সোহান জিজ্ঞেস করে, ‘দুপুরে কি দিয়ে খেলে?’

সূচনার মুখ ফসকে বেরিয়ে যায়, ‘কচ্ছপের মাংস।’

‘কচ্ছপ! কচ্ছপ খাওয়া যে হারাম, সেটা তুমি জান না ? তুমি কি এখনো নিজেকে হিন্দু মনে

কর ?’

‘অত রাগ দেখিয়ো না! তোমার জন্য আর কত স্যাক্রিফাইস করব আমি!’

‘ আমিও কম স্যাক্রিফাইস করিনি! বিয়ের পর একটা ছেলে যে জামাই-আদর পায়, সেটা আমার কপালে জুটেছে ? ’

‘আমার সাথে নিজেকে তুলনা করো না।তোমার জন্য আমি মুসলমান হয়েছি, এফিডেফিট করে নাম পাল্টেছি! এ জন্য কতজনের কাছে কত খোঁটা খেয়েছি। নাম বদলানোর জন্য দুই সেমিস্টার আমার রেজাল্ট মিসিং ছিল। এসএসসি-এইচএসসির সার্টিফিকেটে নাম পাল্টাতে আমি কম দৌড়াদৌড়ি করেছি ? সব ছেড়ে আমি তোমার কাছে এসেছি।এরপরও যদি তুমি আমার সাথে এমন কর, তাহলে গলায় দড়ি দিয়ে মরা ছাড়া আমার কোন উপায় নেই।’

সূচনা ফোন বন্ধ করে কাঁথায় নিজেকে ঢেকে লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদতে থাকে। হয়ত লোপা মাকে বলেছিল, অথবা মা নিজেই বুঝেছিলেন ব্যাপারটা। কাঁথার ওপর দিয়ে সূচনার পিঠে হাত রেখে বলেন, ‘ এখনো সময় আছে।তুই চলে আয় , মা! ভাল পাত্র দেখে আমরা তোর বিয়ে দেব। আমাদের কথাও একটু ভাব মা!’

মমতাময়ী মা’র প্রতিটা কথা চাবুকের মত সূচনাকে আঘাত করে। অনেকক্ষণ কেঁদে কেঁদে কিছুটা হালকা হয়। সন্ধ্যার অন্ধকারে বারান্দায় বসে থাকে চুপচাপ।

‘দিদি!’ পাশে এসে বসে লোপা।

‘লোপা রে!’

‘কি দিদি!’

‘আচ্ছা, আমার যখন বাচ্চা হবে, তোরা আমার পাশে থাকবি না ?’

লোপা চুপ করে থাকে। সূচনা স্বগতোক্তির মত বলে,

‘ কিভাবে আর আমার পাশে থাকবি! চারপাশের মানুষ যখন জেনে যাবে, তখন লোকলজ্জার ভয়ে আমার সাথে আর সম্পর্কই রাখবি না। হয়ত তখন দেশেই থাকবি না তোরা, ইন্ডিয়া চলে যাবি।’

‘ তোর শাশুড়ি-ননদ তো থাকবে।’

‘ তোদের কাছে আমি যেমন আহ্লাদ করি, ওদের কাছে করতে পারব ?’ লোপা কিছু বলে না। পরিপূর্ণ নীরবতা আর অন্ধকারে মিশে যায় দু’ বোন।

 

সকাল ৯ টায় সূচনার ট্রেন। ঘুম ভাঙার পর থেকে জ্যোতি ওর পিছে পিছে ঘুরছিল।

‘বড়দি, এবারের ভাইফোঁটায় তুই আসবি না ?’

‘ দেখি রে…।’

‘গত দুই বছরে একবারও তুই কিন্তু আমাকে ফোঁটা দিসনি!’

সূচনা জ্যোতির গাল টিপে বলে, ‘ এবার ঠিকই আসব!’

মা সূচনাকে শোবার ঘরে ডেকে নেন। আলমারী থেকে এক তাড়া নোট বের করে ওর হাতে দেন।

‘টাকা কেন মা ? টাকা লাগবে না।’

‘ সোহান তো এখনো তেমন ভাল কোন চাকরি পায়নি।তুই যে চলিস কিভাবে! ছোটবেলা থেকে আদরে আদরে মানুষ তুই।’

খাটের নিচ থেকে নাড়ু ভর্তি একটা বয়াম বের করে বলেন,

‘ এটা নিয়ে যা। সোহানকে তো কখনো কিছু খাওয়াতে পারব না। ওকে নাড়ু দিস।’

সূচনা মনে মনে বলে, সোহান তোমার নাড়ু খাবে না মা। ও ভাববে কোন জাদু-টোনা করার জন্য তুমি নাড়ু খাওয়াচ্ছ ।

স্টেশনে যাওয়ার পথটুকুতে বাবার সাথে সূচনার কোন কথা হয় না। স্টেশনে পৌঁছেও দু’জন চুপচাপ।অস্বস্তিকর এক নীরবতা। সূচনার বলতে ইচ্ছে করে, ‘বাবা, তুমি রোজ সকালে দু’টো করে ডিম খেয়ো না তো! খাশীর মাংস খেয়ো না এত বেশি। সকাল-বিকাল হাটাহাটি করো।’ কিন্তু বলা হয় না।ছোটবেলার মত  বাবাকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করে।কিন্তু তাও হয়ে ওঠে না। ট্রেন চলে আসলে শুধু ‘আসি বাবা’ বলে ও ট্রেনে উঠে পড়ে। পেছনে ফিরে তাকায় না।কিছুই যখন বলা হয় না, করা হয়না , তখন শুধু শুধু চোখের পানি দেখিয়ে কি লাভ! কি লাভই বা ওই বয়স্ক মানুষটার ছলছল চোখের সাক্ষী হয়ে ?

 

 

 

 

 

১২ টি মন্তব্য : “দোলাচলে”

  1. মোকাব্বির (৯৮-০৪)

    আগেই পড়েছি। তাই প্রথম হওয়ার চেষ্টা করলাম না! B-) যাক এটা সিসিবিতে দিলে অবশেষে! 😀


    \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
    অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।