জুনিয়র অবস্থায় কলেজ হাসপাতাল ছিল আমার কাছে বেহেশতের মত । আহ ! কি শান্তি । কোন পিটি নাই,নিয়মের কড়াকড়ি নাই । সিনিয়রদের ব্যবহারটাও কেমন যেন ভাল হয়ে যায় । ভর্তি হতে পারলে তো আর কথাই নাই , না হলেও কোন সমস্যা নাই । গেলেই অন্তত রেস্ট মিলত তিন দিন । তবে ভর্তি হবার প্রতি আমার একটা বিশেষ দুর্বলতা ছিল সেটা অস্বীকার করা অন্যায় হয়ে যাবে । একদিকে আরাম আর অন্যদিকে বাসায় এক্সাম খারাপের এক্সকিউজ দিলে আব্বা একটু কনসিডার করতেন । কাজেই সিক রিপোর্ট খাতায় ঘন ঘন নাম লিখাতে থাকলাম । বিনা অসুখে ঘন ঘন দেখা হবার সুবাদে মেডিক্যাল অফিসার ও কেন জানি একটু বুঝে গেলেন আমার চাওয়া । তাই বানানো অসুখের উপসর্গ শুনে প্রেসক্রিপসন লিখে আস্তে করে জিজ্ঞেস করতেন আর কোন সমস্যা ? লাজুক মুখে চাওয়ার আগেই তিন দিন রেস্ট লিখে দিতেন স্যার । সে তিনটা দিন মনে হয় উড়ে চলে যেত । কোনরকমে আর কয়েকটা দিন পার করে আবার সেই পুরানা কাহিনী……
অবশ্য শুরুটা ছিল জ্বর দিয়ে , কিন্তু তার পর তো আর অসুখ হয়না । আর হাসপাতাল যেন খালি হাতছানি দিয়ে ডাকে । পেটে ব্যথা আর না ফোলা হাটু ব্যাথা নিয়ে যেতে যেতে নিজের কাছেই লজ্জা লাগায় নতুন কিছু আইডিয়া বের করে ফেললাম । যেমন স্টিলের স্কেল দিয়ে ঘষে হাটুর চামড়া ছিলা , বড় লাল পিপড়া হাতে ধরে রেখে তার কামড় খেয়ে হাত ফুলানো ইত্যাদি ইত্যাদি । তবে এই প্রজেক্ট দিয়া বেশীদিন ভর্তি থাকা কিংবা রেস্ট মেলেনা । নতুন প্রজেক্ট রাতে ভেজা স্যান্ডো গেঞ্জী পড়ে ঘুমানো অবশ্য কাংক্ষিত সাফল্য এনে দিতে পারলনা । তাই আমার দিন কাটতে লাগল হাত-পা ভাংগা পার্টি , জন্ডীস কিংবা আপেন্ডিসাইটিস রোগিদের হিংসা করে । ভাবতাম আমার কেন এরকম বড় অসুখ হয়না !!!!!! কারণ এধরনের অসুখে আবার ছুটি দিয়া অনেক সময় বাসায় পাঠিয়ে দেয়া হত । তখন সাধারণ বিজ্ঞান বই তে কিছু কমন অসুখের লক্ষন দেয়া ছিল । অই চ্যাপ্টারটা ঘন ঘন পড়তাম আর মিলিয়ে দেখতাম কোন উপসর্গটা আমার দেখা দিল । চোখের সামনে এই চ্যাপ্টার খোলা রেখে অনেক বড় স্বপ্ন দেখতাম……………………..CMH কিংবা SICK LEAVE !!!!এখন ভাবলেই হাসি পায় ।
সেভেন কিংবা এইটের সে স্বপ্ন সত্যি হয়ে ধরা দিয়েছিল বড় অসময়ে । ICC ক্রিকেটের প্র্যাকটিস শুরু হয়েছে , ক্লাশ ইলেভেন এর মাস্তিভরা সময় । এস এস সি তে প্রচেষ্টার চেয়ে অনেক ভাল রেজাল্ট করে তখন পুরা হাওয়ায় ভাসছি আর সাথে ফারস্ট ইয়ার ড্যাম কেয়ার ভাব । ইলেভেন এর ইয়ার ফাইনাল চলছে । আগের দিন দেয়া হায়ার ম্যাথ এক্সামে শিউর ফেল করব । পরের এক্সামে পাস করার চান্স ও অনেক কম । তাই মনের আনন্দে অপশনাল গেমস করতে গিয়ে কিভাবে যেন হাত ভেঙ্গে ফেললাম ।পরের দিন আবার প্যারেন্টস ডে , তাই কলেজ থেকে জানাল প্যারেন্টস ডে এর পর আমাকে CMH এ পাঠান হবে । প্লাস্টার না করা ভাংগা হাত নিয়া অনেক কষ্টে আম্মার চোখ ফাকি দিলাম । তার পর আমাকে পাঠানো হল সাভার সিএম এইচ । মাইনর অপারেশন করে সিক লিভ দিয়ে কলেজে পাঠাল । তবে সিক লিভ টা আমাকে আর দেয় নি । উলটা কলেজ হাস্পাতালে থেকে শখ মিটে গেল । অনেক দিন ভুগে তার পর ছাড়া পেলাম ।
সময় অনেক কিছু বদলে দেয় । বাংলালিংকের ভাষায় “সেই দিন কি আর আছে নাকি??দিন বদলায়ে গেছে না???” আজ আর সিএম এইচ কে স্বপ্ন মনে হয়না । কাছের বন্ধুগুলিকে ছেড়ে কখনও সিএম এইচ ভর্তি হওয়াটাকে মনে হয় স্বর্গ থেকে বিদায়……………………।।
লেখা আরও বড় কর রে নমরুদ x-(
আমার কি সমস্ত কিছুই হলো ভুল
ভুল কথা, ভুল সম্মোধন
ভুল পথ, ভুল বাড়ি, ভুল ঘোরাফেরা
সারাটা জীবন ভুল চিঠি লেখা হলো শুধু,
ভুল দরজায় হলো ব্যর্থ করাঘাত
আমার কেবল হলো সমস্ত জীবন শুধু ভুল বই পড়া ।
জ্বি ভাই.............................. 😀
তয় বাংলায় টাইপটা কেডা কইরা দিব????? 😛
অনেক ভালো বলেছেন ভাই। পড়ে ভালো লাগলো। আমারও এমনই হতো। সত্যি, জীবনটা তে কেমন জানি স্বর্গীয় ভাব ছিলো। মনে পড়ে............ শুধু...... ধন্যবাদ। :(( 😀 :((
ভালো থাকা অনেক সহজ।
বড় সুখের জীবন ছিল।হায়রে.....................
:dreamy:
একবার মাম্পস হয়ে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ছিলাম টানা ১২ দিন। অন্যান্য বারে হসপিটালাইজড হয়ে মজা পেলেও, মাম্পসের সময়টা মোটেও ভাল কাটেনি।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
একবার জ্বর আনার জন্য ভিজা আন্ডি পরে ঘুমাইলাম টানা তিনদিন, কিন্তু জ্বর আর আসেনা! :no: :no: 😡 😡
\"why does the weasel go pop? does it matter?
if life is enjoyable, does it have to make sense?\"
=)) =)) =)) =)) =))
হাসপাতালের সাথে আমারো বেশ ভাল সম্পর্ক ছিল। এর মাঝে হাত ভেঙ্গেই ছিল দুই বার, দুবারই গোলকিপিং করতে গিয়ে। সময় খারাপ কাটে নাই
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
আহসান স্যার আমার এক হাত ভাংগাতেই সারা জীবনের শখ মিটে গেছে...।।আপনি দুইবার কেমনে সামাল দিছেন???
:boss:
সুন্দর হয়েছে ভাইয়া।আমার ও কলেজের কথা মনে পরে গেলো।জুনিয়র থাকতে এমন একটা টার্ম ছিলো না যে আমি জ্বর নিয়ে কলেজ হাসপাতালে এ্যাডমিট হই নাই।আর ইলেভেন এ CMH এ admit ছিলাম।
কিছুদিন আগেও CMH এ admit ছিলাম,তখন ও পুরা কলেজ এর feelings হচ্ছিলো।
ধন্যবাদ ভাইয়া পুরানো কথা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য। 🙂 🙂
আমার আর এখন সিএমএইচ ভাল লাগেনা।
সব মকরা... :)) :))
কলেজে একবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম তাও কেবল ৪/৫দিন। প্যারেড শিখানোর সময় যখন দৌড়ের উপর একাডেমি গার্ডেন চক্কর দিতে হত। তখন ফারদিলের ধাক্কা খেয়ে পড়ে গিয়েছিলাম। কেবল মাত্র হাটু ছিলে গিয়েছিল। যারা ফারদিল কে চিনেন তারা বলতে পারবেন, আমি কি বাচাঁটা যে বেচেঁছিলাম।
যাইহোক, তারপর আর কোনদিন হাসপাতালে ভর্তি হতে পারি নাই, আফসোস।
উনাকে দেখতে মঞ্চায়! 😛 (কপিরাইটঃ মাস্ফুদা)
\"why does the weasel go pop? does it matter?
if life is enjoyable, does it have to make sense?\"
ইসস ভাই আপনি দুনিয়ার মাটিতে স্বর্গের সুখ মিস করছেন...... 😛 :))
"কাছের বন্ধুগুলিকে ছেড়ে কখনও সিএম এইচ ভর্তি হওয়াটাকে মনে হয় স্বর্গ থেকে বিদায়……………………"
খাটি কথা............ভাল লাগল পড়ে ভাই।
🙂 🙂
"মরনের বীথিকায় জীবনের উচ্ছ্বাস,
জীবনের যাতনায় মৃত্যুর মাধুরী"