নিউরনে আলাপনঃ আট

: জানো, থেকে থেকে ঘুম ভেঙ্গে যায়। তোমার কথা মনে হয়।
: একজন শিখিয়েছিলে সেই কতদিন আগে – আমি তোমাকে মনে করলে, তোমারও আমায় মনে পড়ে।
: সত্যি?
: তা তো বুঝিনা, তোমার জীবনে আমায় ঘুম-হরা হয়েই কাটাতে হবে এটা বুঝলাম।
অথচ কেউ ঘুম-ভাঙ্গানিয়া হবার শখ পুষেছিল ভেতরে ভেতরে!
: ইস! এমনিতেও আমার অনেকদিন হল ভাল ঘুম হয় না। সিডেটিভ নিচ্ছিলাম।
ঘুম বোধ হয় ছেড়ে গেছে আমাকে। অনেক শ্রান্তি হলে ঘুমাতে মন চায়, কিন্তু ঘুম আসে না।
: আর তার মধ্যে আমি তোমায় অমন ক’রে ভাবতে বসে গেলে তোমার সিডেটিভের ডোজ বাড়তেই থাকবে।
: তবুও তুমি আমার কথা ভেবো। আমার ঘুম তাতে উড়ে যায়, যাক!
এ পৃথিবীতে কত আশ্চর্য ঘটনা ঘটে। আমাদের সম্পর্কটাও খুব আশ্চর্য ব্যাপার! কী নাম এই সম্পর্কের?
: আজ সকালে যখন পথে নামলাম, তখনই বৃষ্টি – মনটা ভালো হয়ে গেলো।
সকাল সকাল তোমার দেখা পেলাম। কিন্তু আমার কপাল! ভাল করে ধরতে না ধরতেই বৃষ্টিটা শেষ। ভাবছিলাম এত কৃপণ তুমি!
বৃষ্টির বেশে দেখা দাও, তাতেও কিপ্টেমি কর?
: হুম, বড্ড কিপ্টে।
: একদিন বলবে কী সম্পরক, আমাদের? শুধু গভীর আর গোপন – ওগুলো তো বিশেষণ, আমি নামটা জানতে চাই, বিশেষ্য! বুঝলেন, টিচার?
: এত বছরে শুধু ওইটুকুই জেনেছি, তাতেই তুষ্ট,
আর জানার সাধ নেই, এখন শুধু তোমাকে দেখার সাধ, তোমার আর যা অবশিষ্ট!
: যাহ, ভেতরে ভেতরে কবিরা কিন্তু ভারি দুষ্টু!
: কবির কি রক্ত-মাংস থাকতে নেই?
: শোনো, আমাদের সম্পর্কের নামটা আমার জানা চাই … আচ্ছা, একটা কবিতা শোনাবে, তোমার?
: বাসে চেপে পুরনো দিনের কথা ভাবা, কিংবা স্বপ্নের জাল বোনা,
জানি ভালোবাসার কাছে তার ফেরা হয়নি, কিংবা ফেরা গেলনা,
জানতো সে এমনই হবে, ফেরার পথটাই বুঝিবা চেনা ছিলনা,
অনেক দূরে সমুদ্রের এপাড়ে কাঁদে একজনা, ওপাড়ে সেই চিরচেনা!

সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৫
টরন্টো, কানাডা।

১টি মন্তব্য “নিউরনে আলাপনঃ আট”

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।