গৌতম বুদ্ধ জন্মকেই দুঃখ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। এর কারণ বুঝি- মৃত্যু যদি দুঃখময় হয় তাহলে জন্মকেও দুঃখময় হতে হবে। নিজের জন্মকে দুঃখময় মনে করি কিনা সেটা জানি না, কিন্তু জীবন যে দুঃখময় এতে কোন সন্দেহ নেই। সকল ধরণের সামাজিকতা আমার কাছে দুঃখময় মনে হয়, কারণ সমাজে মিথ্যার জয়জয়কার। সমাজে কেবলই মিথ্যার বাহার যার সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছে প্রতিষ্ঠিত ধর্মগুলো- ইসলাম, খ্রিস্ট, ইহুদি, হিন্দু ব্লা ব্লা ব্লা…
প্রথম যখন দর্শনপাঠ শুরু করি তখন কিছুতেই মাথায় ঢুকতো না এতো সৌন্দর্য্য ও নির্মলতা থাকতে মানুষ কেন ধর্মে বুঁদ হয়ে থাকে, দর্শন ছেড়ে চোখে লাল কাপড় বেঁধে কেন ধর্মগুরুদের পিছে দৌঁড়ায়। মাহমুদ ভাইয়ের কয়েকটা ব্লগ পড়ে বুঝেছি। জ্ঞান এবং ক্ষমতার মধ্যে সম্পর্কটা প্রথম মাহমুদ ভাইয়ের লেখার বদৌলতেই বুঝেছিলাম, এজন্য উনার প্রতি কৃতজ্ঞতা। এখন জানি, সমাজে জনপ্রিয় যে জ্ঞান বা উপলব্ধি সেটা পুরোপুরি নির্ভর করে প্রভাব খাটানোর উপর। শুধু ধর্ম নয়, যে কোনকিছুর মাধ্যমেই এমন প্রভাব খাটানো সম্ভব। আসলে মানুষের মূল উদ্দেশ্যই অন্যের উপর প্রভাব বিস্তার, জ্ঞান নামক জিনিসটা আবিষ্কার করতে পারার পর মানুষ এটাকেও কাজে লাগিয়েছে প্রভাব বিস্তারের জন্য। এটা কখনও শুভ হতে পারে না, কারণ কারও উপর প্রভাব খাটানোর মাধ্যমে তাকে কোনকিছু বিশ্বাস করানো মূলগতভাবেই একটা বাজে কাজ, যুক্তিবিদ্যার ভাষায় যেটাকে ফ্যালাসি বা কুযুক্তি বলা হয়। যুক্তি দিয়ে যখন হচ্ছে না তখন মানুষ প্রভাব খাটায়।
খুব ভাল একটা উদাহরণ পেয়েছি এডওয়ার্ড সাইদ এর লেখা “কাভারিং ইসলাম” বইটাতে। ইরানে ইসলামী বিপ্লবের সময় যুবকেরা যখন তেহরানস্থ মার্কিন দূতাবাস দখল করে তখনই পশ্চিমা বিশ্বে ইসলাম বিদ্বেষ সবচেয়ে চাঙ্গা হয়ে উঠে, দুঃখের বিষয় ছিল সেই বিদ্বেষ ছড়ানো হয়েছে পুরোপুরি প্রভাব নামক শক্তিটি খাটিয়ে। নিউ ইয়র্ক টাইমস এর মত পত্রিকা প্রথমে মুক্ত আলোচনার ব্যবস্থা করলেও পরে যখন বুঝতে পারে জনতাকে বুঝ দেয়ার জন্য এর চেয়ে ভাল উপায় আছে তখন মুক্তালোচনা ছেড়ে দেয়। প্রভাব ব্যবহার শুরু করে। তখন যুক্তি নয় বরং কে যুক্তিটি দিচ্ছে সেটাই মুখ্য হয়ে উঠে, আর কোন যুক্তিটি মানুষকে সবচেয়ে বেশি আবেগী ও বিপ্লবী করে তুলতে পারছে সেটাই হয়ে উঠে যুক্তিবিচারের চাবিকাঠি। যার ফলে পশ্চিম-ইসলাম সংঘাতের মাধ্যমে ধর্মের প্রভাব তো কমেইনি উল্টো দুই জায়গাতেই ধর্মীয় গোঁড়ামি বেড়ে গেছে বলে আমার মনে হয়।
ধর্মের যুগ শেষ হয়ে আসছে, পুরনোটা আঁকড়ে নয় বরং পুরান থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাওয়াটাই যখন প্রতিপাদ্য তখন দর্শনচর্চার কাছে ফিরে আসার বিকল্প নেই। পাঠ্যপুস্তক থেকে ধর্ম সরিয়ে আমি দর্শন অন্তর্ভুক্তির দাবি জানাই। আমার দাবীর হয়ত আপাত কোন মূল্য নেই, তারপরও জানিয়ে যাব। তাছাড়া পাঠ্যপুস্তকে ধর্মের বদলে দর্শন আসলে সেটাও প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমেই হবে, দর্শনের বিকাশ নয় হয়তোবা কর্তৃত্বশালীদেরকে দর্শনের দিকে ঝোঁকাতে পারলেই কেবল এটা সম্ভব; এসব বাজে লাগে, কিন্তু মেনে নিতে হয়।
যাহোক, অভিসন্ধি বুঝি না, বুঝি- দর্শন শব্দের ইংরেজি হচ্ছে Philosophy যার অর্থ প্রজ্ঞার প্রতি ভালবাসা। এই ভালবাসা থেকেই দর্শনপাঠ নামে সিরিজটা শুরু করলাম। প্রথম পর্বে অনেক আগে উইকিপিডিয়াতে লেখা এপিকুরোস এর জীবনী তুলে দিলাম। বাংলা উইকিতে অনেক আগে লিখেছিলাম এটা।
এপিকুরোস (Έπίκουρος)
এপিকুরোস (গ্রিক ভাষায়: Έπίκουρος; পাশ্চাত্যে এপিকিউরাস নামে পরিচিত) (খ্রিস্টপূর্ব ৩৪১ – খ্রিস্টপূর্ব ২৭০) প্রাচীন গ্রিসের বিখ্যাত দার্শনিক ও এপিকুরোসবাদ নামে পরিচিত দার্শনিক ধারার জনক। তার প্রায় ৩০০টি রচনার মধ্যে বর্তমানে মাত্র গুটিকতক অবশিষ্ট আছে। তাই, এপিকুরোস সম্বন্ধে আমরা যা জানি তার অধিকাংশই পরবর্তী দার্শনিকদের লেখা ও ভাষ্যকারদের ভাষ্য থেকে।
এপিকুরোসের মতে, সুখ-শান্তিই মানব জীবনের পরম লক্ষ্য এবং এটাই পরম শুভ। তার দর্শনে সুখ অর্জনের উপর সবচেয়ে বেশী গুরুত্বারোপ করা হয়। আপোনিয়া তথা ব্যথা ও ভয় থেকে মুক্তির মাধ্যমেই এই সুখ অর্জন করা সম্ভব। তিনি শিক্ষা দিতেন, ভালোর পরিমাপক হচ্ছে আনন্দ আর মন্দের পরিমাপক হচ্ছে ব্যথা। তার মানে, উনি সব কিছুকে সুখের কষ্টিপাথরে যাচাই করে নিতে বলতেন। তিনি বলতেন, মানুষের বন্ধু-বান্ধবের সাথে মিলেমিশে স্বয়ম্ভর জীবন যাপন করা উচিত। তার মতে, মৃত্যুর মাধ্যমে দেহ এবং আত্মা উভয়ই শেষ হয়ে যায়, সুতরাং একে ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। তিনি আরও মনে করতেন, মহাবিশ্ব অসীম ও চিরন্তন, এবং এই সুবিশাল মহাবিশ্বের মধ্যে সকল ঘটনাই শূন্যদেশের মধ্যে পরমাণুর চলাচল ও মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটে।
এপিকুরোসের বাবা Neocles এবং মা Chaerestrate দুজনেই এথেন্সের নাগরিক ছিলেন। তার জন্মের ১০ বছর আগে (৩৪১ খ্রিস্টপূর্বাব্দের ফেব্রুয়ারিতে) তার বাবা-মা এথেন্স থেকে আইগায়ো সাগরের এথেনীয় উপনিবেশ সামোস দ্বীপে চলে আসেন। এখানেই ৩৪২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এপিকুরোসের জন্ম হয়। তার শৈশব ও বাল্যশিক্ষা সম্বন্ধে তেমন কিছু জানা যায়নি। দিওগেনেস লায়ের্তিওস তার সম্পর্কে যা লিখে গেছেন তা-ই তার জীবনী সম্পর্কে আমাদের প্রধান অবলম্বন। জানা যায়, বালক এপিকুরোস প্লেটোবাদী শিক্ষক পাম্ফিলোস এর কাছে চার বছর দর্শন পড়েছিলেন।
সামরিক বাহিনীতে দুই বছর সেবা দেয়ার জন্য ১৮ বছর বয়সে এথেন্সে যান। তখন আকাদেমির প্রধান ছিলেন ক্সেনোক্রাতেস। এরিস্টটল-ও বেঁচে ছিলেন। ৩২২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তিনি যখন মারা যান তখন এপিকুরোসের বয়স ২০ বছর। সে সময় নাট্যকার মেনান্দ্রোস-ও সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছিলেন। এপিকুরোস ও মেনান্দ্রোস সমবয়সী ছিলেন। এই সময়টাতেই তার দার্শনিক মতাবলীর গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়। এথেন্সের দর্শন তখন অস্তগামী। কয়েকজন শিক্ষক কেবল লাইসিয়ামে বসে মানুষকে শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন, বাকি অঞ্চলের অবস্থা বেশ খারাপ। এ কারণে দার্শনিকদের সম্বন্ধে এপিকুরোস অনেক বিরূপ ভাব পোষণ করতে শুরু করেন। এরিস্টটল ও প্লেটো দুজনেকেই বিদ্রুপ করেন, আর ইরাক্লেইতোস কে বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
৩২৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মহামতি আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর তার অন্যতম প্রধান সেনানায়ক পের্দিকাস এথেনীয়দেরকে সামোস থেকে কোলোফন-এ তাড়িয়ে দেন। সামরিক সেবা শেষে এপিকুরোস কোলোফনেই তার পরিবারের সাথে মিলিত হন। এখানেই দেমোক্রিতোসের অনুসারী নাওসিফানেস-এর কাছে পড়াশোনা করেন। ৩১১/৩১০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে মিতিলিনি শহরে শিক্ষকতা শুরু করেন। কিন্তু কিছু বিষয়ে বিবাদের কারণে তাকে এই শহর থেকে চলে যেতে বাধ্য করা হয়। এরপর লাম্প্সাকোস শহরে স্কুল খোলেন। ৩০৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এথেন্সে ফিরে আসেন।
এথেন্সে একটি বাগান ক্রয় করেন যার অবস্থান ছিল Stoa of Attalos এবং আকাদেমির মাঝামাঝি স্থানে। শোনা যায়, প্লেটোর আকাদেমি আর এরিস্টটলের লাইসিয়ামের মত এই বাগানেও প্রচুর শিক্ষার্থী আসতো। তাদের সবার কাছেই এপিকুরোস ছিলেন পরম শ্রদ্ধার পাত্র। বাগনটি “এপিকুরোসের বাগান” নামে প্রসিদ্ধি লাভ করেছিল। দিওগেনেস লিখেন, বিরুদ্ধবাদীরা কিছু অপবাদ রটালেও প্রকৃতপক্ষে এপিকুরোস ছিলেন খুব নরম মনের মানুষ, উদার ও বন্ধুবৎসল। মৃত্যুকালীন উইলে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে তার বন্ধুদের সন্তানদের জন্য অর্থ-সম্পত্তি বরাদ্দ করেন এবং একজন উত্তরসূরী মনোনীত করেন। তার মৃত্যুর পর এপিকুরোসবাদীদের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন এরমার্খোস।
এপিকুরোস কোনদিন বিয়ে করেননি, জানা মতে তার কোন সন্তানও ছিল না। কিডনিতে পাথর হয়েছিল। রোগে ভুগে ২৭০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ৭২ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে খুব অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও ইদোমেনেউস-কে লিখেন,
এমন এক দিনে তোমাকে চিঠিটা লিখছি যে দিনটি আমার জন্য খুব আনন্দের, একইসাথে এটা আমার জীবনের শেষ দিন। কারণ এমন এক বেদনাদায়ক রোগের আক্রমণে আমি মূত্রত্যাগে অক্ষম হয়ে পড়েছি, সেই সাথে আছে আমাশয়। এগুলো এতই কষ্টের যে আর কোনকিছুর পক্ষেই এই কষ্টের পরিমাণ বিন্দুমাত্র বাড়ানো সম্ভব না। কিন্তু আমার সারা জীবনের দার্শনিক ধ্যানের স্মৃতি যে আনন্দবোধের জন্ম দিয়েছে তা এই কষ্টকে ধুয়ে মুছে দিয়েছে। আমি তোমাকে একান্তভাবে অনুরোধ করছি ততটা আন্তরিকতার সাথে Metrodorus এর সন্তানদের যত্ন নিতে যতটা আন্তরিকতা সে আমার ও সামগ্রিক দর্শনের প্রতি দেখিয়েছে।
এপিকুরোসের দর্শনের উপর পূর্ববর্তী অনেক দর্শন ও দার্শনিকের প্রভাব আছে। কিন্তু তার কাজের মৌলিকত্বও খুব গুরুত্বপূর্ণ। তিনি দেমোক্রিতোসের দর্শন দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন ঠিকই, কিন্তু দেমোক্রিতোসের সাথে নিয়তিবাদ বিষয়ে তার বিশাল পার্থক্য ছিল। এপিকুরোস নিজে অবশ্য তার উপর দেমোক্রিতোসের প্রভাব স্বীকার করেননি। তিনি অন্য দার্শনিকদের দ্বিধান্বিত বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং নিজেকে স্ব-শিক্ষিত দাবী করেছেন।
[এখানে কেবল এপিকুরোসের জীবনী ও দর্শনের সারকথা বলা হয়েছে। তার দর্শন নিয়ে বিস্তারিত থাকবে পরের পর্বে- এরপর শুরু হবে দেমোক্রিতোস ও লুক্রেতিওস, এবং সক্রেটিস- যেসব গ্রিককে আমি ভাল পাই]
B-)
আবারও ফার্স্ট :thumbup:
অস্কার নিয়া লেখা কই ???
😡
আজকে ৮:৩০ এ স্টার মুভিজ এ দেখাবে 😀
দেখতে হবে।
অস্কারের মুভি দেখি নাই একটাও, ক্যাম্নে লিখমু?
মুহাম্মদের লেখাটা পড়ে ভালো লাগলো. সানাউল্লাহ্কেও ধন্যবাদ তা পাঠানোর জন্য. মুহাম্মদের অন্যান্য দর্শনের লেখা পরার অপেক্ষায় আছি.
এই চান্সে এপিকুরোস (Έπίκουρος) লোক্টা তার বাগান সুদ্ধা বিখ্যাত হইয়া গেল ... :grr:
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
গুরু ইজ ব্যাক :salute:
ফুল ফর্মে ব্যাক :boss:
~x( :)) :khekz: :grr: :grr:
ইদোমেনেউসকে লেখা চিঠিটা সিরাম :duel: :thumbup:
"Never think that you’re not supposed to be there. Cause you wouldn’t be there if you wasn’t supposed to be there."
- A Concerto Is a Conversation
হুম, চিঠিটা পড়ে আমারও খুব ভাল্লাগছে।
এই কথা কি পুরোপুরি ঠিক ??? কারন অনেক সাইকো টাইপের লোক আছে, যারা মানুষকে কষ্ট দিয়ে আনন্দ পায় ... বহু লোক আছে, যারা সমাজের ক্ষতি হয় এমন অনেক কাজ নির্বিকার ভাবেই করে যায়। এই ব্যাপারটাকে যদি একটু বড় করা যায় যে --- ভালোর পরিমাপক গোষ্ঠি বা সমাজে কাজটা কতটুকু আনন্দ আনছে বা খারাপের পরিমাপক কতটুকু কষ্ট দিচ্ছে তাহলেও একই সমস্যা রয়ে যায়। এক সমাজ বা শহর বা এক দেশের জন্যে যেটা ভালো অন্য আরেক সমাজ বা শহর বা দেশের জন্যে সেটা ভালো নাও হতে পারে।
ওই কথাটা পড়ে মাথায় এইগুলো আসলো দেখে লিখে ফেললাম। যাহোক, লেখাটা পড়ে ইন্টেরেস্টিং লেগেছে। পরের পর্বগুলোর অপেক্ষাতে থাকবো।
সাইকো টাইপের লোকদের জন্য ফিলোসফি না
তাদের জন্য সাইকোলজি তো আছেই 😀
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
:)) :)) :)) :))
ভালো কইসস ...
তাইফুর ভাইতো বইলাই দিছে।
দর্শন এবং সেই দর্শন সমাজে প্রয়োগের মধ্যে বোধহয় বিশাল পার্থক্য আছে।
আসলে একটা বিষয় মেনে আমি তৃপ্তি পাচ্ছি, তার মানে এই না যে সেটা নির্বিচারে সমাজে প্রয়োগ করতে হবে কিংবা সেটাই সর্বজনীন সত্য। সবকিছুকেই যাচাই-বাছাই এর মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে- সুখই ভাল-মন্দের একমাত্র পরিমাপক হতে পারে, অন্তত আমার ক্ষেত্রে। শুধু এপিকুরোস না, বিংশ শতকে বার্ট্রান্ড রাসেল ও এমন কথা বলেছেন। তবে এই সুখ মানে ক্ষণিকের ইন্দ্রিয় সুখ চরিতার্থ করা না। প্রকৃতপক্ষে সুখের সংজ্ঞা হিসেবে এখানে আমি ধরে নিই: "এমন কিছু যা একবার অর্জন করে ফেললে আর কখনও দুঃখী হওয়ার প্রশ্ন উঠে না"। জন্ম, মৃত্যু, সংসার সবকিছুকে দুঃখ ভাবার পরই কিন্তু গৌতম বুদ্ধ সুখের সন্ধানে বেরিয়েছেন, সুখ পেয়েছেন কিনা জানি না, তবে নির্বাণ লাভ করেছেন- এই নির্বাণ ই হয়তো তার সুখ। নির্বাণ লাভের পর তিনি মানুষকে শুধু বলেছেন- আমি এই পথে নির্বাণ পেয়েছি, তোমরা যদি এই পথ অনুসরণ কর তবে হয়তো তোমরাও নির্বাণ লাভে সক্ষম হবে।
দর্শনের সামাজিক প্রয়োগের ব্যাপারে খুব বেশি কিছু জানি না। আমার দর্শনপাঠ এর লেখাগুলো হয়তো আমাদের মত এভারেজ মানুষ অর্থাৎ যারা বেসিকেলি সাইকো না, হিংসাত্মক বা সহিংস না তাদের কারও কারও কাজে আসতে পারে। কিন্তু সামাজিক প্রেক্ষাপটে এর গুরুত্ব অতো হবে না। সেজন্য আরও উপরের লেভেলে যেতে হবে। নৈতিকতার প্রশ্ন নিয়ে দর্শন সবসময় কাজ করে এসেছে, এখনও করেই যাচ্ছে। একটা ধর্মনিরপেক্ষ দেশে নৈতিকতার মানদণ্ড নির্ধারণে দর্শনেরই ভূমিকা রাখার কথা, অন্তত এই যুগে। এগুলো নিয়ে যদি আমি জানতে পারি তো অবশ্যই শেয়ার করবো...
[পরিশেষে আবারও বলি: তাইফুর ভাইয়ের ডায়লগ সিরাম পছন্দ হইছে]
চমৎকার সিরিজ মুহাম্মদ। চালিয়ে যাও।
আমি কিছুদিন আগেই হাইপেশিয়া'কে নিয়ে বানানো Agora ছবিটা দেখে টুকটাক পড়ছিলাম। হাইপেশিয়া সম্ভবত গ্রিক-রোমান দর্শনচর্চার শেষ জীবিত দার্শনিক ছিলেন। তারপর থেকে খ্রিস্টীয় ধর্মের দাপটে শুরু হয়েছিলো এক হাজার বছরের অন্ধকার সময়!
এপিকুরোসের তত্ত্ব নিয়ে চিন্তা করতে গিয়ে তো ঝামেলায় পড়ে গেলাম! সবকিছু ভালোর জন্যেই যদি মানুষ করবে, তাইলে ক্ষমতাবানের বুলিকেও সত্য মানতে হয় (ভালোর জন্যেই করা হয় বা ভালোর লোভ দিয়ে করানো হয়)।
মানুষের এই "সুখের প্রতি আকাঙ্ক্ষা"কে পুঁজি করেই কি "স্রষ্টা যা করেন, ভালোর জন্যেই করেন" ধারণার জন্ম?
আগোরা টা অচিরেই দেখতে হবে। রায়হানের কাছেই আছে, নিয়া আসতে হবে। হাইপেশিয়া নিয়েও লেখার ইচ্ছা আছে। মুভিটা দেখার পরই লিখব। আমার এর পরে টপ প্রায়োরিটি আছে আপাতত: লুক্রেটিয়াস, বুদ্ধ, হাইপেশিয়া, কিয়ের্কেগর।
প্যাচ আমারও লাগে। এজন্যই এ ধরণের লেখা উপসংহার টানার জন্য না হয়ে বরং হয় ভাব উস্কে দেয়ার জন্য হয়। সুখের আকাঙ্ক্ষা কে আসলেই নানাভাবে এক্সপ্লয়েট করা হয়েছে। গ্রিকরা আমার মনে হয় Hedonism তথা সুখবাদ এর মাধ্যমে মানুষের সুখলাভের চিরন্তন প্রচেষ্টাকে একটা শুভ দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা শুরু করেছিল। তারা মানুষকে পরম সুখের দিকে টানতে চেয়েছিল, ক্ষণিকের ইন্দ্রিয় তৃপ্তির দিকে নয়।
কিন্তু গোঁড়া খ্রিস্টান ধর্ম এসে মানুষকে আবার নামিয়ে দিয়েছে, স্বর্গের ধারণা আমদানির মাধ্যমে মানুষকে আক্ষরিক অর্থেই পশু করে ফেলেছে। স্বর্গের মত প্রলোভন যদি কারও সামনে থাকে তবে তার পক্ষে এমন অনেক কিছুই করা সম্ভব যা স্বর্গ না থাকলে সে করতো না। এর ভালর চেয়ে খারাপ প্রভাবই বেশি বলে প্রমাণিত হয়েছে। ধর্মগুরুরা স্বর্গের লোভ দেখিয়েছে, এছাড়া অন্যান্য প্রভাব বিস্তারকারীরাও বিভিন্ন জিনিসের লোভ দেখিয়েছে।
আমার মনে হয় গ্রিক সুখবাদ ই শ্রেয়তর। তবে অবশ্যই সেটা নিয়ে পরবর্তী দুই হাজার বছরে আরও অনেক নতুন নতুন ধারণা এসেছে। সেগুলো নিয়েও ভাবতে হবে। দর্শনের সুবিধা তো এখানেই- গোঁড়ামি নেই কোন, আঁকড়ে ধরে রাখার কিছু নেই, নতুনকে গ্রহণ করায় বাঁধা নেই।
আমার মনে হয় সুখের দুই রকম ধারণা/সঙগা আছে: (১) পজেটিভ ও (২) নেগেটিভ | পজেটিভ সঙ্গায় সুখ হচ্ছে আমাদের যে সব ইনদ্রঈয়-গর্তগুলি আছে তা পূরণ করে দেওয়া । আর নেগেটিভ সঙ্গায় সুখ হচ্ছে দুখ: রোধ করা| পাশ্চাত্য ধর্মে (বিশেষ করে সনাতনী ইসলাম ধর্মে) সুখকে পজেটিভ ভাবে দেখা হয়| অন্য দিকে প্রাচ্যের ধর্মে ( যেমন বুদ্ধ ধর্মে) সুখ কে নেগেটিভ ভাবে দেখা হয়|
মুহাম্মদ তোমার দাবি তুমি জানাতেই পারো। কিন্তু দাবি জানানোর ভাষার দিকে খেয়াল রাইখো। এমন শব্দ ব্যবহার করো না যেটাতে তোমার অ্যাগ্রেসিভ ভাব প্রকাশ পায় আর আমার মত এখানে যারা ধর্মের অনুসারী আছেন তারা কষ্ট পায়। এরকম শব্দচয়নই অনর্থক তর্ক-বিতর্কের উদ্দীপক। আশা করি কোটেশনের বোল্ড অংশটুকু এডিট করবা।
আচ্ছা, এডিট করে দিচ্ছি, আঘাত দেয়ার জন্য দুঃখিত।
কিছু হইলো এইটা?
শরিফ, মুহাম্মদ তো বলেছে এটা তার মত। এটা যে সহজে অর্জনযোগ্য এমনও নয়। তুমিও তোমার মত জানাও। জোরালো দাবি করো যে ধর্মকে পাঠ্যতে রাখতেই হবে। ওর মতপ্রকাশে তুমি, আমি, আমরা আহত হতে থাকলে বেচারা তার মত প্রকাশের সুযোগ তো পাবে না। আসলে একটা সহনশীল সমাজ নির্মানটা মূল কাজ। যেখানে আলোচনা-সমালোচনা, তর্ক-বিতর্ক চলবে কোনোরকম ভয়-ভীতি ছাড়াই। যেমন আমি এবং আরো অনেকে মনে করেন ধর্ম পাঠ্য হওয়া উচিত ১৮ বছর বয়স থেকে। তখন একজন শিক্ষার্থী তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব পড়বে। তারপর নিজে স্বাধীনভাবে বাছাই করবে কোনটা সে নেবে বা বর্জন করবে। অন্যেরা এর বিরোধীতা করতে পারেই।
ও ধর্মকে আবর্জনা বলেছে, ওর কাছে তাই মনে হয়েছে। কেউ বলতেই পারে জ্ঞান-বিজ্ঞান, দর্শন আসলে আবর্জনা। তাতেও কারো আপত্তি করার কিছু নেই। এ নিয়ে সুস্থ-সুন্দর এবং সহনশীল আলোচনা-বিতর্ক হোক। তাহলেই মানুষ আরো জ্ঞান অর্জন করবে। ভালো থেকো।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
অনেক ধন্যবাদ লাবলু ভাই, ব্যাখ্যা করে দেয়ার জন্য।
যে শব্দটা ব্যবহার করেছিলাম তাতে আমার কোনই আপত্তি নেই। তারপরও কেন যেন উঠিয়ে দিলাম শব্দটা, আসলে ভাবছিলাম এটাকে কেন্দ্র করে আবার আলোচনা অন্যদিকে ঘুরে যেতে পারে। তাই উঠিয়েই দিলাম।
তবে পাশাপাশি এটাও মনে করি যে ধর্মকে ব্যঙ্গ করা এবং হেয় করার অধিকার সমাজে থাকতে হবে। একটা সিনেমা দেখে যদি কট্টর সমালোচনা করা যায় তবে ধর্ম নিয়ে যাবে না কেন। একসময় এলভিস প্রিসলি-র নামে পশ্চিমারা জান দিতো, তাই বলে কি তখন প্রিসলি-র কট্টর সমালোচকও ছিল না? তারা একই সাথে সহাবস্থান করে নি? দুই দলের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হতো প্রচুর, কিন্তু কখনও খুনাখুনির হতো না। আর ইদানিং ধর্ম নিয়ে কিছু বললে, বা নবীকে ব্যঙ্গ করে কার্টুন আঁকলে মৃত্যুর হুমকি খেতে হয়। বাকস্বাধীনতার বিকাশে মনে হয় "আবর্জনা" শব্দটা রেখেই দেয়া উচিত ছিল, এতে সহনশীলতার সীমাটা যাচাই করা হয়ে যেতো।
সানাউল্লাহ ভাইয়া, আমার মনে হয় ধর্ম নিয়ে কথা বলা যতটা সেন্সিটিভ জ্ঞান-বিজ্ঞান, দর্শনের ব্যাপারটা ততটা না। সেন্সিটিভ মনে না করলে আমার কিছু বলার নেই।
শরিফ, এইরকম স্পর্শকাতর শব্দ দিয়েই কিন্তু মত প্রকাশের স্বাধীনতা আটকে দেওয়া হয়। তসলিমা নাসরিন ইসলাম ধর্মীয় মোল্লাদের চক্ষুশূল। আর মকবুল ফিদা হুসেন হিন্দু শিবসেনার শত্রু। ধার্মিকদের একটা বড় অংশের সহনশীলতা এতো কম যে, তারা আতংকে থাকেন তাদের বিশ্বাসে আঘাত লাগলে সেটা খান খান হয়ে ভেঙে পড়বে। তাদের বিশ্বাসটা এতো স্পর্শকাতর কেন? জ্ঞানের, বিশ্বাসের সব কিছু নিয়ে কঠোর কথা বলা যাবে, কিন্তু ধর্ম নিয়ে নয়! মুহাম্মদ তো কোনো ধর্মীয় নেতা বা স্রষ্ঠাকে নিয়ে কিছু বলেনি। ধর্মকে আফিম বা নেশা বলেছেন কার্ল মার্ক্স। আরো অনেক কঠোর কথা কিন্তু শ শ বছর আগে অনেকই বলে গেছেন।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ জরুরী, তা না হলে কোন কাজই হবে না।
"Hitting below the belt" কখনই ভালো তর্কের পরিবেশ সৃষ্টি করে না। তা ধর্ম প্রচারকই করুক, বা বড় কোন দার্শনিকই করুক। অনেক বিখ্যাত লোক অনেক অখ্যাত কাজ করেছেন, তিনি বিখ্যাত বলেই তার সব কাজ উদাহরন হিসেবে আনাটা বোকামী। এবং তা গ্রহনযোগ্য নয়।
সানাউল্লাহ ভাইয়ের বক্তব্য তাই ভালো লাগেনি।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
আপনার মন্তব্য এ দ্বিমত। কারণ উপরের কমিকের মতো হওয়ার কোনও মানে নাই। হাস্যকর জিনিসে বিশ্বাস করলে হাসাহাসি সহ্য করতেই হবে। আর একটা কথা, মুহাম্মদ কোন ধর্ম প্রচার করছেনা। সে যতই চিল্লা পাল্লা করুক, বা ভদ্রভাবে বুঝিয়ে বলুক একজন তার বিশ্বাস ছেড়ে মুহাম্মদের বিশ্বাস মেনে নিবে- তা আমি মনে করিনা। কারণ যুক্তি নামক জিনিসটা আসলে কাজ করেনা, করলে মানুষ ধর্ম বিশ্বাসী থাকতো না।
কনভার্টের জন্য মোমেন্ট অফ এনলাইটমেণ্ট আসা দরকার। আসলেই বিশ্বাস ভাংগবে।
ফয়েজ ভাই, ধর্মের সাথে তর্কের কিছু নেই। যারা ধর্মে বিশ্বাস করেন তারা খুব ভাল করেই জানেন যে বাস্তব বুদ্ধির আলোকে ব্যাপারটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, আদম-হাওয়া থেকে মানুষের উদ্ভব হতে পারে না, কোন মানুষের পক্ষে মাছের পেটে তিন দিন থাকা সম্ভব না, কোন এক ব্যক্তির প্রায় প্রতিটি বিয়ে সিদ্ধ করার জন্য ঈশ্বরের থেকে আয়াত নামতে পারে না-- ইত্যাদি ইত্যাদি। ধর্মের সাথে তর্কের আসলে কিছু নেই। তর্ক হতে পারে একটি জ্ঞানের সাথে অন্য একটি জ্ঞানের। কিন্তু ধর্ম সেই অর্থে কোন জ্ঞান নয়। এখানে জ্ঞান বলতে আমি বিজ্ঞান-দর্শন-যুক্তিবিদ্যা-গণিত কে বুঝাচ্ছি। ধর্ম একটা অযৌক্তিক বিশ্বাস, অযৌক্তিক কারণ, ধর্মের মূলকথাই হচ্ছে কিছু প্রশ্নে কোন যুক্তি দেখানো যাবে না। আর কিছু প্রশ্নে যুক্তি না দেখানো আর সকল প্রশ্নে যুক্তি না দেখানো খুব কাছাকাছি।
ধর্মের সাথে আমি কোন তর্কে নামিনি এখানে। এটা যে অ্যাবসার্ড সেটা ধরে নেয়ার কোন বিকল্প নেই...
আরেকটু খোলাসা করে বললে বলতে হয়: "এপিকুরোস এর সাথে দেমোক্রিতোস এর তর্ক হতে পারে কিন্তু এপিকুরোস এর সাথে মুহাম্মদ এর তর্কের কোন অবকাশ নেই।"
তর্ক নিয়ে তো কোন কথা বলিনি। ইন-ফ্যাক্ট এই ব্যাপারে তর্কের আসলে তেমন অবকাশ নেই, তা তুমি আমি দুজনেই জানি। একটা পিওর বিশ্বাস, আরেকটা পিওর যুক্তির ব্যাখ্যা। যখন বিজ্ঞানের কোন ব্যাখ্যা ধর্মের সাথে মিলে যায় তখন ধার্মিকরা শাটের কলার উচূ করে, আর যখন মিলেনা তখন নি-ধার্মিকরা মুচকি হাসে। এইতো।
আমি আপত্তি করেছি শব্দ চয়ন নিয়ে। তুমি নির্বোধ হতে পার, কিন্তু আমি তোমাকে সবার সামনে কখনই নিবোর্ধ বলবো না, কারন আমি তোমাকে সম্মান করি।
এর চেয়ে সহজ করে আর ব্যাখ্যা করতে পারবো না।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ভুল বুঝেছেন। আমি কোন ব্যক্তিকে আবর্জনা বলি নি, ধর্ম নামক একটা আইডিয়া কে আবর্জনা বলেছি। যেমন আমি সবার সামনে বলতেই পারি "স্লামডগ মিলিওনার" একটা আবর্জনা, তার মানে তো এই না যে আমি স্লামডগ এর একনিষ্ঠ ফ্যানদেরকে আবর্জনা বলছি। ড্যানি বয়েল এর এতো সাধের কর্মকে আবর্জনা বলতে পারলে মুহাম্মদের সাধের কর্মকে কেন আবর্জনা বলতে পারবো না?- এটাই আমার প্রশ্ন।
উদাহরন হিসেবে স্লামডগ কে নিয়ে আসা একটা কাচা কাজ মনে হল। আচ্ছা তবুও বলি যদি "স্লামডগ" কে কেউ নিজের দূর্বলতার জায়গায় বসায়, তা ব্যক্তিহোক, বা সমাজ, তাহলেও আমি তাদের সামনে স্লামডগ কে আবর্জনা বলবো না, তাদের সম্মান করেই। শুধু স্লামডগ কেন, যে মানুষ পর্ণোগ্রাফি করে এটাকে পরিশুদ্ধ বিনোদন মনে করে আমি তাদের এই মনে করাকে সম্মান করবো, আমার কাছে এটা বিকারগ্রস্থ মনে হতে পারে, হয়ত তাদের কাছে আমি বিকারগ্রস্থ, কিন্তু তাদের মর্যাদার দিকে আমার লক্ষ্য থাকবে।
দূর্বল জায়গায় আঘাত করে কথা বলা আমার কাছে কাপুরুষতার চেয়ে বেশি কিছু নয়। এতে সাময়িক জয়ের তৃপ্তি পাওয়া যায়, কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয় না।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
নীচে আমিনের মন্তব্যে হালকা হতাশ হলাম। তুমি আমি বরং ওপেন ফোরামে আলাপ না করে আলাদা আলাপ করতে পারি। ফোনে বা সামনাসামনি। এভাবে আলাপ করলে মূল আলোচনা ব্যহত হবে। পোস্টের দিক বদলে যাবে।
মন্তব্য গুলো মুছে দিতে পার।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
না, মন্তব্যের দরকার আছে ফয়েজ ভাই। এবারও ক্লিয়ার হলো না। আমি যে 'আবর্জনা' শব্দটা ইউজ করলাম এটা নির্দিষ্ট কাউকে লক্ষ করে? এটা তো একটা ওপেন ফোরামে বললাম। আপনি যা বললেন এটা হলে পত্রিকায় কোন ধরণের ব্যঙ্গাত্মক কিছুই প্রকাশ করা যাবে না, কারণ দেশে এমন কেউ না কেউ নিশ্চয়ই থাকবে যে উক্ত ঘটনাকে দুর্বল জায়গায় আঘাত বলে মনে করবে। সিসিবি তো একটা ওপেন ফোরাম, এটা তো কেবল দুজনের মধ্যে কথোপকথন নয়। এ ধরণের ফোরামে কতটুকু লেখা যাচ্ছে সেটা দিয়েই তো বাক স্বাধীনতার সীমা যাচাই করা হয়। কেউ এটাকে দুর্বল জায়গায় আঘাত মনে করতেই পারে, আবার কেউ এটাকে সম্পূর্ণ যৌক্তিক একটা ব্যাপারও মনে করতে পারে। কিন্তু আদতে এটা কাউকেই নির্দিষ্ট করে বলা হয় নি, যেমন আপনার সাথে মুখোমুখি কথা বলার সময় নিশ্চয়ই আমি আবর্জনা শব্দটা ব্যবহার করবো না, সম্মানের খাতিরে, ব্যাপারটা যৌক্তিক হলেও ব্যবহার করবো না। কিন্তু ওপেন ফোরামে করবো, এখানে বিষয়টা অন্যরকম।
এবারে অ্যাভাটর সিনেমা নিয়ে কি পরিমাণ খারাপ খারাপ রিভিউ আসছে ভাবতেও পারবেন না, অনেক ক্রিটিক পঁচায়া একাকার করছে। এটা কিন্তু তারা তাদের এমন কোন বন্ধুর সাথে আলোচনার সময় বলেনি যে বন্ধু অ্যাভাটর ভালবেসেছে। এটা তারা পত্রিকায় প্রকাশ করেছে। এখন পুরো পৃথিবীর মানুষের কথা মাথায় রাখলে তো পত্রিকায় জীবনে কোন কিছুর কট্টর ও ব্যঙ্গাত্মক সমালোচনাই করা যাবে না। ভলতেয়ার দের তুখোড় রঙ্গ সমালোচনা বিলুপ্ত হতে বসবে।
দুখ:জনক! বিশেষ যুগে ও সমাজে জন্মগ্রহন বা অবস্থানের কারনে বিভিন্ন ধর্ম সম্পর্কে পড়তে হচ্ছে; অজ্ঞতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার জন্যে| এ সবে সময় নষ্ট না করে মৌলিক বিষয়ে (যেমন গণিত, পদার্থ বিদ্যা) যদি সময় ব্যায় করতে পারতাম তাহলে জীবনটা আরো সুন্দর হোত|
:thumbup:
আমার বন্ধুয়া বিহনে
ধন্যবাদ রাব্বি ভাই।
ভাই বাকস্বাধীনতা অব্যশই থাকা উচিত.কিন্তু আমার মত্ত যারা বর্তমান জীবনের চেয়ে মৃত্যুর পরের জীবন নেয়ে বেশি চিন্তিত তারা যাতে আহত না হই সে দিকেও তো খিয়াল রাখা উচিত, কারণ আরব দেশের মোল্লারা তো এই সব উধারণ দিয়েই সাধারণ ধর্মপ্রিয় মুসলিম দের আত্মঘাতী বোমারু বানায়. 😕
তুমি দুইটা কাজ কর।
এক- আরব দেশের মোল্লাদের কাছ থেইকা সাবধান থাকো।
দুই- শুদ্ধ বাংলা লেখা অভ্যাস কর। 🙂
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
আরে ভাই এইখানে এই ফির্স্ট লিখলাম.বাংলায় প্রবলেম হওয়াই স্বাভাবিক.আর কথাও লেখার আগে মানুষের ফীলিংস নেয়া চিন্তা করাও উচিত. 🙂
নাজিব, বাংলা প্রথম লিখলে বলেই তো আরো বেশি সাবধানী হওয়া দরকার, প্রকাশ এ ক্লিক করার আগে অন্তত একবার পড়ে দেখ, নিজেই তখন ভুলগুলো শুধরে নিতে পারবে।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
আমারই ভুল হইছে।
আমার উচিত ছিল আরব দেশের মোল্লাদের মত তোমার কাছ থেকে দূরে থাকা।
লিখো। এইভাবে 'ফির্স্ট' লিখতে লিখতে একদিন ফার্স্ট হইয়া যাও, এই কামনা করি।
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
:))
ব্যাপক বিনোদন
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
সাধুবাদ জানাই তোমার এই উদ্যোগকে। আমার নিজেরও পরিকল্পনা আছে তোমার কাছাকছি। সকল দার্শনিকদের জীবনিগুলো অন্তত ইংরেজী উইকি থেকে অনুবাদ করে বাংলা উইকিতে নিয়ে আসা। সাথে কিছু ইতিহাসের বিষয়ঃ যেমন ফরাসী বিপ্লব, আমেরিকার বিপ্লব, বা গ্রিক সভ্যতা কিংবা ব্যবিলনীয় সভ্যতা, কিংবা মানব সভ্যতার ইতিহাসগুলো। কিন্তু অনুবাদের জন্য সময় দিতে পারছি না। এই বছরটা খুব কঠিন যাবে আমার। পিএইচডি শেষ করতে হবে। দেখি পিএইচডি শেষ হলে যদি, হাতে অবসর (?) আসে। তুমি চালিয়ে যাও, এবং আমার আন্তরিক ধন্যবাদ আবারো গ্রহন করো। টুকটাক যে কোন সাহায্য লাগলে জানিও। এই বার বইমেলায় সবাই বই কিনছে দেখে আমিও আমাজন থেকে কিছু বই কিনে ফেললাম। প্লেটোর রিপাব্লিক, উইল ডুরান্ট এর দ্যা স্টোরি অফ ফিলোসফি, দ্যা লেসন অফ ফিলোসফি, নিৎসের দ্যা স্প্যাক অফ জরাথ্রুষ্ট, বাট্রান্ড রাসেলের দ্যা প্রবলেম অফ ফিলসফি, সহ আরো কিছু বই। এক বছর চলে যাবে এগুলো পড়তে পড়তে 🙂 । সুযোগ পেলে বইগুলো হতে কিছু সারমর্ম দেওয়ার চেষ্টা করবো, কিন্তু সময় পাবো বলে মনে হয় না :(( । ভাল থেকো।
চরম চরম বই কিনেছেন মোস্তফা ভাই। আমি নিৎশের দাস স্পাক জরথুস্ত্র সফট কপি নামিয়ে পড়া শুরুর চেষ্টা করেছিলাম। বেশিদূর যাওয়া হয়নি, পড়তে হবে বইটা।
পিএইচডি শেষ করেন তাড়াতাড়ি। আপনার লেখার অপেক্ষায় থাকলাম। স্কলারলি এনসাইক্লোপিডিয়া হিসবে দর্শন নিয়ে নিচের সাইট দুটো খুব ইউজ করি আমি। লিংক দিলাম:
- স্ট্যানফোর্ড এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ফিলোসফি
- ইন্টারনেট এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ফিলোসফি
লেখাটা ভীষন ভালো লেগেছে। যদিও দর্শন বিষয়ে জ্ঞান সামান্যই। একমাত্র পড়া বই Tractatus Logico-Philosophicus। লেখক Ludwig Wittgenstein । ইনি বিংশ শতাব্দীর বেশ নামকরা দার্শনিক। ইউনিভার্সিটিতে থাকার সময় তাঁর এই বইটার বাংলা অনুবাদ পড়েছিলাম বুয়েটের এক ছোট ভাইয়ের সৌজন্যে। খুব মজাও পেয়েছিলাম পড়ে। আপাতত হাতের কাছে নেই, তবে আজিজে পাবি। সুযোগ পেলে পড়ে দেখিস।
যে লাইনটা সবচেয়ে পছন্দ হয়েছিল সেটা তথাকথিত স্পর্শকাতরতার দোহাই দিয়ে মুছানো হয়েছে তোকে দিয়ে। সমস্যা নেই, একদিন এসব জঞ্জাল দূর হবে পৃথিবী থেকে।
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
বইটার প্রতি প্রচণ্ড রকমের লোভ হইতেছে। আজিজে খোঁজ লাগাইতে হবে অচিরেই। যা দেখলাম এই বইটাকে বিংশ শতকের দর্শনের সেরা ৫ টা বইয়ের একটা বলা হয়। বিষয়বস্তুও অসাধারণ। এমন বইয়ের বাংলা অনুবাদ আছে ভাবতেই মন ভরে যায়।
ঐ লাইন কাটা ঠিক হয় নাই, আফসোস হইতেছে এখন। 🙁
এই বইটার কথা প্রথম জেনেছিলাম একটা ব্লগ থেকে। আহমাদ মোস্তফা কামাল এই বইয়ের একটা রিভিউ লিখেছিলেন। সেটা এখানে পাবে।
পিডিএফ পাবা এখানে।
বাংলা বইটা পাইলে আমাকে মেইলে জানায়ো। আমিও কিনবো। আর লাইন কাটাকুটি বড়ো বিচিত্র লাগলো। 🙁
কামরুল ভাইয়ের সাথে একমত।
আন্দালিব
কী যে দারুণ একটা কাজ করছিস , জানিস না। অরিজিনাল বইটা খুজতেছিলাম বহুদিন ধরে। আহ! আজকেই প্রিন্ট মারবো।
আমার কাছে একটা খাওয়া পাওনা রইলো তোর।
রিভিউটা পড়লাম। ভালো লাগছে।
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
কাটাকুটি আমারই বিচিত্র লাগতেছে এখন।
রিভিউটা অতি অতি ভাল লাগছে। ভিটগেনস্টাইন এর বই অতি সত্বর পড়ে শেষ করবো, ইংরেজিটাই। তারপর বঙ্গানুবাদ ও পড়বো। বইটা এক পলক দেখেই মুগ্ধ হলাম, সেই স্পিনোজা স্টাইলের বই। স্পিনোজার এথিক্স বইয়ের কথা খুব মনে হয়ে গেল।
বিংশ শতকের দার্শনিকদের মধ্যে ভিটগেনস্টাইন নিয়ে বিস্তারিত লিখতেই হবে আমাকে...
মুহাম্মদ,
পোষ্টে আমাকে স্মরণ করায় ধন্যবাদ। লেখার সাথে অনেকাংশেই একমত। কিন্তু কিছু অমিল আছে, সেইগুলা আগে বলিঃ
১। বৌদ্ধ দর্শনমতে মৃত্যু দঃখময় নয়, এটা হচ্ছে জীবনের এক পর্ব থেকে আরেক পর্বে গমনের স্বাভাবিক প্রকৃয়া। ওদের মৃতদেহ সৎকারের রীতি দেখলে ব্যাপারটা ভালো বোঝা যায়। সেখানে কোনো 'মাতম' নেই। (গত বছর পার্বত্য চট্টগ্রামের এক বিখ্যাত বৌদ্ধ ভিক্ষুর সৎকার অনুষ্ঠান টিভি'তে প্রচার করছিলো)। বুদ্ধের মতে জীবনে দুঃখ আসে জীবনের প্রতি মোহ/মায়া থেকে। আর সেই মায়া কাটানো যায় ইন্দ্রীয়মুক্তির মাধ্যমে যে অবস্থাকে বুদ্ধ বলেছেন 'নির্বান'- যখন পার্থিব এই জীবনের প্রতি কোন টান অবশিষ্ট থাকে না।
২। সামাজিকতার পুরোটাই দুঃখময় নয়। আরো ভালো করে পর্যবেক্ষন করো নিজের চারপাশ;- এরপরও যদি তোমার ধারণা অপরিবর্তিত থাকে, তাহলে আমি তোমার জন্য সংকিত হবো।
৩। ধর্ম নিয়ে আমি চেষ্টা করি কোন মন্তব্য না করতে। কিন্তু তোমাকে যেভাবে জেনেছি এই পর্যন্ত, তা'তে মনে হয়েছে তোমাকে বলা দরকার যে তোমার- এবং আরো কারো কারো- ধর্ম-বিষয়ক অবস্থানটা রীতিমত dogmatic. - তোমাকে মনে হয়েছে শুদ্ধ জ্ঞানের প্রতি অনুরাগী, এবং সেই পথে চলতে সমর্থও। তাই এই কথাটা বললাম। ভালো না লাগলে বলে দিও, আর বলবো না।
- ধর্মের নেতিবাচক দিকটা উম্মোচিত হয় যখন সামষ্টিক পরিমন্ডলে ধর্মকে ক্ষমতার জন্য ব্যবহার করা হয়। একটা বিষয় মনে রাখা দরকার যে, সমাজের অতি অল্প মানুষই ধর্মকে ক্ষমতার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। বেশিরভাগ মানুষ নিতান্তই ব্যক্তিগত জীবনে ধর্মকে চর্চা করে। সমাজের এই অধিকাংশের কাছে ধর্মের কদর আলাদা (ভুল/শুদ্ধ বিবেচ্য নয়)। কাজেই এদের সাথে আলোচনায় ধর্মের নেতিবাচক দিকটা কখনোই মুখ্য হয়ে উঠতে পারেনা। একারণে, ধর্ম-বিরোধী কথাবার্তায় তাদের মনে আঘাত লাগলে আমি সেটা স্বাভাবিক মনে করি, এবং মানুষ হিসেবে তাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে।
- পোষ্টে এপিকুরোসের দর্শন নিয়ে আলাপ আশা করেছিলাম, খুব একটা পেলাম না। আশা করি এটা কন্টিনিউ করবে এবং পরবর্তী পর্বে এ' বিষয়টা নিয়ে আসবে। একটা সূত্র দেইঃ কার্ল মার্ক্সের পিএইচডি থিসিসের বিষয় ছিলো এপিকুরোস ও দেমোক্রিতোসের দর্শনের তুলনামূলক আলোচনা (সম্ভবতঃ তুমি অলরেডি এটা জানো)।
কে কি বলে তা'তে আমি কিছু মনে করি না। আমি তোমাকে মুক্তমনা বলে জানি (প্রকৃত অর্থে, সচলীয় অর্থে না কিন্তু)। তাই উপরের কথা গুলো বললাম। মনকে মুক্ত রাখা মানে আমার কাছে সবকিছু থেকেই মুক্ত রাখা, যেকোন বিশ্বাস থেকেই (ধর্ম শুধুই ভালো, ধর্ম শুধুই খারাপ- এইসব বিশ্বাস থেকেও)।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ মাহমুদ ভাই।
১। বুদ্ধের জন্ম, মৃত্যু এবং সংসারকে বিষাদের কাতারে ফেলার ব্যাপারটা আমি জেনেছিলাম রাহুল সাংকৃত্যায়নের লেখা "মহামানব বুদ্ধ" বইটাতে। তবে হ্যা এটা ঠিক যে, এখানে পরম দুঃখ বোঝানো হয়নি। জীবনের প্রতি মোহেরই কারণেই যে দুঃখ আসে এটা ঠিক মনে হচ্ছে। আসলে মনে হয় জন্ম-মৃত্যু-সংসার নয় বরং এসবের প্রতি আমাদের মোহ-মায়া ঘটিত টানটাকেই দুঃখ বলেছেন বুদ্ধ- বুঝলাম আপনার কথা।
২। পুরোটা বোধহয় দুঃখময় নয়, কিন্তু যখন লেখাটা লিখছিলাম তখন পুরোটাই দুঃখময় মনে হচ্ছিল। সংকিত হওয়ার মত দুঃখময় আমি মনে করি না আসলে। নিৎশে টাইপের নাইহিলিস্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই আমার মনে হয়।
৩। dogmatic- কিছুটা মানলাম। কিন্তু আমার অবস্থান থেকে সরে আসতে পারছি না। ধর্মের বিরুদ্ধে যখন কথা বলছি তখন ধর্মের জ্ঞান-ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট অংশটার বিরুদ্ধেই কথা বলছি এটা সরলমনা ধার্মিকদের বোঝা উচিত এবং সে অনুযায়ী সহনশীলতাকে ঝালাই করা উচিত। যেমন আমি যদি কখনও চলচ্চিত্র শিল্পের সমালোচনা করি তখন পরিচালক নির্বিশেষে সবাইকেই সেই সমালোচনার কাতারে ফেলে দেয় না সবাই। ধর্ম পালনকারী শুধু নয় একেবারে মূল ধর্মের তীব্র সমালোচনার পরিবেশ সমাজে তৈরি হোক এটা চাই। ধর্মগুরুদের নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন আঁকার পরিবেশ তৈরি হোক এটাও চাই। ডাচ যে কার্টুনিস্ট মুহাম্মদের কার্টুন এঁকেছিল তার নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে একটা লেখা আছে- ঐটা অনুবাদ করার ইচ্ছা আছে। তাতে বোঝা যাবে এ ধরণের কার্টুন আঁকার উদ্দেশ্য যে সহনশীলতা ও বাকস্বাধীনতার সীমা যাচাই করা, আর কেবলমাত্র ইসলামের ক্ষেত্রেই যে সেই সীমা ভয়ানক সংকুচিত সেটাও বোঝা যাবে। যীশুকে নিয়ে যা ইচ্ছা তাই বলা যায় অথচ মুহাম্মদের নামে এক বাক্য বললেই মৃত্যুর হুমকি খেতে হয় কেন? ধর্মের সমালোচনা মানে এক অর্থে ধর্মগুরুদেরই সমালোচনা।
৪। এই পোস্টটা আসলে একেবারে ভূমিকা, এখানে এপিকুরোসের জীবনীটাই কেবল এসেছে। পরের পর্বে এপিকুরোসের দর্শন নিয়ে আলোচনা করবো। হ্যা মার্ক্সের অভিসন্দর্ভের কথা জানা আছে। ঐটার বাংলা অনুবাদও পেয়েছি মার্ক্সিস্ট ডট অর্গ এ। ওটা কাজে লাগবে। আসলে পরমাণুবাদ এবং নিয়তিবাদ বিষয়ে দেমোক্রিতোস ও এপিকুরোস এর অবস্থান নিয়ে আলোচনা খুবই জরুরী, এর প্রয়োজনীয়তা বোধহয় কখনই ফুরাবে না।
আরেকটা বিষয় মাহমুদ ভাই:
আমি এখানে ধর্মের উপযোগীতা নয় বরং প্রতিষ্ঠিত ধর্মগুলো যে ভয়ানক রকম, মানে যাকে বলে সাইকো টাইপের মিথ্যা বা কুসংস্কারে আক্রান্ত সেটা নিয়েই বেশি কথা বলছি। পৃথিবীর ১০০ কোটি মানুষের কাছে সেই মিথ্যা কুসংস্কারের প্রয়োজনীয়তা থাকলেও কিন্তু সমালোচনার গতি পরিবর্তনের উপায় নেই।
মুহাম্মদ, জীবন পুরোটাই বিষাদময় নয় বলার পর স্বস্তি পেলাম। জীবনের আসলে অনেক রঙ!
কোন বিশেষ অবস্থানে দাঁড়িয়ে (Dogmatic) দর্শনের পাঠে 'ভুল পাঠের' আশংকা প্রবল, আর 'আংশিক পাঠ' ত অবশ্যম্ভাবী। এটাই তোমাকে মনে করিয়ে দিতে চাইছিলাম। অনেক সময়-শ্রম-আবেগ ব্যয় করে দর্শনের যে বইগুলো তুমি পড়তে পরিকল্পনা করছো, পূর্বে থেকেই একটা 'সাইড নেওয়া'র কারণে তা' বিফলে না-যাক সেই প্রর্থনা করি। অপেক্ষায় থাকলাম তোমার দর্শনের উপর লিখা পোষ্টগুলোর জন্য।
- আমিও সমালোচনা পছন্দ করি, তা সে যেকোন কিছুরই। আমি বলতে চেয়েছিলাম সমালোচনার ভাষা/উপস্থাপনার ঢং নিয়ে। শুধুমাত্র উপস্থাপনার কারণে একটা খুবই তিক্ত সমালোচনা মধূর---> অকর্ষনীয়----> গ্রহনযোগ্যতা লাভ করে; আবার একই কারণে খুবই যুক্তিপূর্ণ+সহজে গ্রহনযোগ্য একটা সমালোচনাও তিক্ত---->বিরক্তিকর---->বিফলে যায়।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
পড়ছি মুহাম্মদ। 🙂
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
থ্যাঙ্কিউ
চমৎকার লেখা মুহাম্মদ। এপিকুরাসের সেই বিখ্যাত উক্তি নিয়ে আলোচনা নিশ্চয়ই পরের পর্বে হবে?
কোন উক্তির কথা কস?
এইটা? চরম একটা উক্তি। এমনকি কার্ল মার্ক্স ও তার ডক্টোরাল অভিসন্দর্ভের ভূমিকায় এটা উল্লেখ করছে।
কস্কি!
নীচে লিখা দিলাম 😀
Is God willing to prevent evil, but not able?
Then he is not omnipotent.
Is he able but not willing?
Then he is malevolent.
Is he both able and willing?
Then whence cometh evil.
Is he neither able nor willing?
Then why call him GOD?
এইটা নিয়া তো থাকবেই, পুরা একটা পর্ব। আমি দর্শন নিয়া লেখতে লেখতে মারা যামু। দর্শনের উপ্রে কিছু নাই, আর ধর্মের নিচে কিছু নাই। মানব জ্ঞানের সর্বোচ্চ পর্যায় দর্শন আর সর্বনিম্ন পর্যায় ধর্ম।
কোন সমস্যা নেই। আমরা তোমার একটা মুর্তি বানিয়ে রাখবো তখন। নাম দিব "শহীদ মুহাম্মদ" 🙁 । পরবর্তী পর্ব ছাড়লে ফেইসবুকে একটি মেসেজ দিও বা লিঙ্ক দিও। ব্লগে এখন সব সময় চোখ রাখার সময় পাই না। কাজের চাপ অনেক বেশি :(( ।
😀
হ্যা, ফেসবুকে জানাবো।
ভাই......এত জ্ঞান নিয়ে ঘুমান ক্যামনে? 😕
পইড়া তো আমারি মাথা ঘুরান দিল :clap:
চালায়ে যান বস :boss:
থ্যাংকস আবারও...
কি অদ্ভুত সুন্দর ভাবে তোমরা সবাই জ্ঞান গর্ভ আলোচনা করছ । আমার তো মরে যেয়ে আবার তোমাদের সাথে জন্মাতে ইচ্ছা করছে ।
পরের পর্ব ও আরো আলোচনার জন্যে আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করব ।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনার মন্তব্যে খুব উৎসাহ পেলাম।
মুহামমডদর লেখাটা পড়ে বেশ ভালো লাগলো| আগামীতে দরশনের উপোর আরো লেখা পড়ার আপেক্ষায় থাকবো
আপনার সাইটটা দেখে ভাল লাগল। পরের পর্বে বিস্তারিত আলোচনা হবে আশাকরি।
ব্যাক্তিগত লাইফ নিয়া আমি বিরাট বিজি তাই সিসবির জন্য টাইম দিতে পারতেসি না। এই পোস্টের জন্য ভালো লাগা জানাতে লগ ইন করলাম। যেহেতু ভূমিকা অতএব চলতে থাকুক লেখা।
এডিট করা অংশের ব্যাপারে তেমন কিছু বলার দেখছি না যদিও সেইটা নিয়া উপরে অনেক ত্যানা প্যাচাপ্যাচি হইছে দেখতাসি। তবে আমি নিজে ব্যাক্তিগতভাবে একাডেমিক শিক্ষায় ধর্মকে তুলে দেয়ার পক্ষপাতী। তার পরিবর্তে বিকল্প কিছু ভাবি নি আগে। দর্শন যদি তার বিকল্প হয় সেটা তো দারুণ। তবে এই ত্যানা প্যাচাপ্যাচির মাঝে এর পক্ষ বিপক্ষের অনেক কথাই একটু অস্বস্তিকর ঠেকেছে (যদিও আমার অস্বস্তির কথা ভেবে কেউ মত প্রকাশে বাধ্য না এই ব্যাপারে আমি সম্পূর্ণ সজাগ)। আপাতত সময়ের অভাবে ঐদিকে গেলাম না। তবে দর্শন নিয়ে আরো কিছু পোস্ট দিতে থাকো মুহম্মদ যাতেআমাদের মত পাঠকরা গিলতে থাকে। ধন্যবাদ।
দিব, ভবিষ্যতে দর্শন নিয়াই বেশি পোস্ট দিব...
ফয়েজ ভাই , বস ,আমি এখন বাইরে । ফ্রি হয়া আপনেরে নক দিমু ।
থেংকু থেংকু
B-) B-)