১৪২৩। শুভ নব বর্ষ। নতুন বছর শুরু হল। বছর শুরুর সাথে সাথে একটা নতুন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম–লেখালেখি। অনেক আগে সিসিবি তে নিবন্ধন করেছিলাম, কিন্তু কখনও লেখা হয়নি। প্রথমত বাংলা লেখাটা বেশ কষ্টকর, খুব বেশি চেষ্টা করা হয়নি কখনও। দ্বিতীয়ত, হাতে সময় কম ছিল। কলেজ থেকে বের হয়েছি ২০০৩। দেখতে দেখতে ১৩ বছর পার হয়ে গেল। কলেজে টুকটাক লিখতাম, ওয়াল মাগাজিন, ক্রনিকাল এ কিছুটা হাতে খড়ি হয়েছিল। তারপর লম্বা গ্যাপ। মাঝখানে কম্পুটার সায়েন্স পড়ে সবকিছু শুকিয়ে গিয়েছিল। এখন গবেষণা করতে এসে মনে হচ্ছে একটু লেখালেখি করলে মন্দ কি? যাই হোক, লেখা ই তো কাজ। কিছু আইডিয়া রান্না কর, এক্সপেরিমেন্ট কর, তারপর পরিবেশন কর পেপার আকারে। তাছাড়া গবেষণা করলে কিছু কছু কথা জমা হয়ই, সেগুলো সব সময় সবাই কে বলা যায় না। সুতরাং, লেখা একটা ভাল আইডিয়া বলেই মনে হচ্ছে আপাতত।কিছু লোড কমে যাবে আশা করি।
সাস্কাতুন কানাডা’র একটি ছোট শহর। সাস্কাতুনে এসেছি ২০১২ তে। কানাডা বা ইউরোপ এ আসলে প্রথমে সবার ই একটি ভাল লাগার অনুভুতি হয়, এটাকে লোকজন বলে– Cultural Honeymoon. সবকিছু ই নিজের দেশের থেকে ভাল মনে হয়। রাস্তা ঘাট সুন্দর, সবাই ত্রাফিক আইন মেনে চলছে, সবার মুখে ই হাসি। শপিং মল গুলোতে সবার ই ব্যবহার ভাল, দামটা একটু বেশী । প্রফেসর কে “স্যার” বললে বিব্রত হয়, নাম ধরে ডাকলে খুশী হয়। সবাই লাইন এ সিরিয়াল মেনে চলে, কেউ ঠেলাঠেলি করে না। মোট কথা, একেবারে আইডিয়াল, যেটা বাংলাদেশে আমরা সবসময় চাই। কার কারো Honey moon Impact কিছু দিন পর চলে যায়, কিন্তু কার কারো এই ইমপ্যাক্ট টা থেকে যায় এবং তারা দিবাস্বপ্ন দেখা শুরু করে। একটা পর্যায়ে বিদেশের সবকিছু তাদের ভাল লাগে আর দেশের সবকিছুর জন্য খারাপ লাগা শুরু হয় তাদের । যে মাটি, হাওয়া আর জলে তার বড় হয়ে উঠা, সেগুলো তারা বেমালুম ভুলে যায় আর নিজেকে তারা কেন জানি বাংলাদেশি ভাবতে চায় না। কথা এবং টোনে কেমন একটা ইউরোপীয়ান ভাব চলে আসে। অহরহ এদের দেখি, কেমন যেন একটা খারাপ লাগা অনুভুতি হয় এই সব বাঙ্গালীদের দেখলে।কেমন যেন মনে হয় এই ধরনের বাঙ্গালীদের/লোকদের কারণে ব্রিটিশরা শত শত বছর শাসন করতে পেরেছিল। যাই হোক, ইতিহাস টেনে নিয়ে এসে লাভ নেই। ব্রিটিশদের দেশেই গবেষণা করতে এসেছি। আশা আছে ফিরে যাব একদিন।
নতুন বছর শুভ হোক সবার । আর আমার প্রথম বাংলা লেখা টা প্রাকটিস হয়ে গেল 🙂
আমাদের দেশের মানুষের চাইতে এই ভিনদেশী বনে যাবার প্রবণতাটা বোধ করি পৃথিবীর আর কোনো দেশের মানুষের মধ্যে এতোটা দেখা যায় না।
বলতে দ্বিধা নেই, আমরাই প্রিথিবিতে সবচে হিনমন্নতায় ভোগা জাতি। আমাদের দেশ আমাদের ভালোলাগেনা।আমাদের ভাষা আমাদের ভালোলাগেনা। ইংলিশ বলতে গরব বোধ করি। জাও কেউ আবার বাংলা বলি তাও অর্ধেক থাকে ইংলিশ মেসানো বাংলা আর ইংলিশ মিলিয়ে কিজে একটা আজব ভাষা বলি নিজেরাও মনেহয় সব বুঝিনা!!
আজব জাতি আমরা,আজব আমাদের মন মানসিকতা।
ইউরোপ এর উপনিবেশ টা হয়ত এখনও মনে রয়ে গেছে। এটা ঠিক আমরা পিছিয়ে আছি, তবে আত্মসম্মন ও আত্মবিশ্বাস টা খুব জরুরি বেচে থাকার জন্য।
An ordinary man with extra-ordinary ambitions
ব্লগে স্বাগতম মাসুদ। সিসিবিতে প্রথম লেখা দেবার পরে ছোট্ট একটা ড্রিল আছে,১০টা ফ্রন্টরোল দিয়ে সেটা পুরোন করে নাও তাড়াতাড়ি।
ইংরেজি নতুন বছরে অনেককেই নতুন সিদ্ধান্ত নিতে দেখি, বাংলা নববর্ষে মনে হয় এই প্রথম দেখলাম, ভাল লাগলো।
উন্নত বিশ্ব বা সেখানে বসবাস করা বাংলাদেশিদের সাথে পরিচয়ের সুযোগ হয়নি, তোমার চোখে এবার কিছুটা দেখে নেই।
আশা করি নিয়মিত লেখা পাব, হ্যাপি ব্লগিং
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
ধন্যবাদ 🙂 চেষ্টা করব লেখার। গ্রীষ্ম আসছে, ফ্রন্টরোল দেয়া যাবে 😀 বাকি সময় তো বরফে ঢাকা থাকে চারপাশ।
An ordinary man with extra-ordinary ambitions
ব্লগে স্বাগতম।
বাইরে ভাল লাগার মতো অনেক কিছুই রয়েছে।
১১ বছর আগে এখানে এসে আমার মনে হয়েছিলো এদের কিতাব টা নাই কিন্তু এরা কতো নিয়াম কানুন মানে। আর আমাদের কিতাব আছে, কিন্তু আর কিচ্ছু নাই।
এখানেও খারাপ অনেক কিছুই রয়েছে।
এখানেও সরকার নানা ধরণের দুর্নীতি করে।
তবে যাদের হানিমুন কাটে না সেটা তাদের জন্যই ভালো। কারণ এইসব আত্মপরিচয় হীন বাঙাল লইয়া আমরা কী করিবো!!!
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
😀
An ordinary man with extra-ordinary ambitions
ব্লগে স্বাগতম মাসুদ ভাই। বিদেশে গিয়েছিলাম। হানিমুনেও ছিলাম বছরখানেক। তারপর একাকিত্ব গ্রাস করা শুরু করলো। টঙয়ের দোকানে এককাপ চা, একটি সিগারেট। বিয়েতে স্বাস্থ্যের তোয়াক্কা না করে কাচ্চি সাটানো। মায়ের মুখ, বন্ধুর সাথে আড্ডা কিংবা প্রেমিকার হাত ধরতে চাইবার ইচ্ছা, সব মিলিয়ে খিচুড়ি পাকিয়ে গেলো। চলে এলাম দেশে। ঠিক কতটা ভালো আছি জানি না তবে খারাপ নেই মোটামুটি নিশ্চিত।
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
২০১৫ তে গিয়েছিলাম দেশে। ফিরে আসার কষ্ট টা কখনও আগে বুঝিনি। এখন প্রতি রাতে স্বপ্ন দেখি দেশের।
An ordinary man with extra-ordinary ambitions