নিঃসঙ্গ পিরামিড

এই কবিতাটা প্রায় এক দশক আগে কোনও এক পূর্ণিমার মাঝরাত্তিরে শহীদুল্লাহ হলের পুকুরপাড়ে বসে লেখা। জীবনবাবুর কোবতের অত্যধিক ছায়া থাকায় এতদিন ন্যাপথালিন দেয়া দেরাজে রেখে দিয়াছিলাম।

আজ জীবনবাবুর মৃত্যুদিবসে সে দেরাজ খুলে দিলাম। সকলের জীবন আনন্দময় হোক।


 

আমি এক নিঃসঙ্গ পিরামিড,
চারিদিকে ধু ধু মরুর মাঝে-
প্রবল বালিঝড়েও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা
এক নিঃসঙ্গ পাথুরে পিরামিড।

আমার মাঝখানে এক পাথুরে কফিনে,
সযত্নে রক্ষিত আছে আমার হৃদয়;
অবশ্য পিরামিডের রহস্য ভেদ করে
এখনো কোন প্রত্নতত্ত্ববিদ সেখানে পৌঁছতে পারেনি।

আমার মতই নিঃসঙ্গ পুরানো সঙ্গী চাঁদটা,
যখন জোছনার জোয়ারে খেলা করে,
আমার মমি করা হৃদপিণ্ডটা-
অন্ধকার কফিনে আটকা পড়ে ছটফটিয়ে ওঠে।

আমাকে ব্যাঙ্গ করে, আমারই পাদদেশে,
জোড়াখোলস ছেড়ে, নবযৌবনের আনন্দে
শিঁরদাঁড়া নেড়ে চলে যায়,
আলিঙ্গনাবদ্ধ যুগল সাপ।

মায়াবী জোছনায়, দূর মরুদ্যান থেকে যখন
ভেসে আসে হাসনাহেনার সুবাস, তখন-
অচিন প্রত্নতত্ত্ববিদের পথ চেয়ে বসে থাকা
বাক্সবন্দী হৃদয়, দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে মরুর বুকে।

দীর্ঘশ্বাসে তপ্ত বালির সাগরে ঝড় ওঠে,
বালিঝড়ে চাপা পড়ে যায় হাহাকার;
আমি আমার মমি করা হৃদয়ের কফিন
আগলে রাখি- নিঃসঙ্গ পিরামিডের মতন।

১,১৯২ বার দেখা হয়েছে

৬ টি মন্তব্য : “নিঃসঙ্গ পিরামিড”

মওন্তব্য করুন : ইশহাদ (১৯৯৯-২০০৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।