ব্যস্ত থাকি অফিস কাজে
সন্ধ্যা নাগাদ ঘর,
এই রুটিনে চলছে-ত বেশ
জীবন নিরন্তর।
বাবুর স্কুলের পড়ার বোঝা
রোজকার হোমওয়ার্ক–
বন্ধু বান্ধব মিলে চলি
সামলাই নেটওয়ার্ক।
মা’র ঔষধ, বাবার খরচ
মাস শেষে দেই পাঠিয়ে,
চিঠি ও লেখা হয়নাত আর
সংসার নেই গুছিয়ে।
বাবা, মায়ের অনেক ঋন
সবই আমি বুঝি–
মাঝে সাঝে আপন মনে
তাঁদের পরশ ও খুঁজি।
ভাল্লাগেনা ফোনটা বাজে
মিস্ কলটা এলে,
সময় মত খবরত নেই
অবসরটুকু পেলে !
মেজাজ চড়ে, মেসেজ পড়ে
“আর কত দিন বাকি?
একটু এসে যাস না ঘুরে,
মুখটা তোর দেখি”।
সময় কোথায়? এত আবদার
কেনই বাবা করে?
জানিনাত অগোচরে
মায়ের অশ্রু ঝরে।
সেদিন রাতে চোখ জুড়ে ঘুম
মা’র ফোন রিং টোন–
“খোকা, তোর বাবার অসুখ
আমার কথা শোন!
একটু এসে দেখে যাবি?
জ্বরের ঘোরে ঘুমে–
চোখ খুলেনা, তোকে খুঁজে
বাবার অবুঝ মনে”।
“রোদ্দুরটা বেশ চড়েছে
খোকা এলো নাকি?
কতদিন জানি কেটে গেল আহা!
একটু তারে দেখি”?
মনটা কেমন খারাপ হল
বললাম “আসছি কাল–
থাকব দু’দিন, অফিস খোলা
ফিরব সেই বিকাল”।
বাঁশঝাড় ঘেরা, ঘরটা মাটির
চারপাশ চুপচাপ—
অনেকটা মাস ফিরিনি এ ভিটে
অচেনা মাটির ধাপ।
মা’গো তোমার খোকা এলো
“বাবা কেমন আছে?”
‘আয় ভেতরে, ডাকছে তোকে
বসনা বাবার কাছে’ !
চোখ বুজানো, ঠোঁট শুকানো
হাতটা হাতে রাখি,
“ওরে খোকা, আয়না বুকে
একটু তোরে দেখি”।
জীবন প্রদীপ নিভে জ্বলে
আঁধারেই বসে থাকি–
ঝিঁ ঝিঁ পোকারা ও বোবা বনে গেছে
মরনের ডাকাডাকি।
“দুয়ারে এসেছে যমদূত আজ
সলতে নিভেছে নাকি?
শেষ সময়ে থাক বসে বাছা—
মনটা ভরে দেখি” !!
মঈনুল ইসলাম
সিলেট ক্যাডেট কলেজ
১১তম ব্যাচ (১৯৮৬-৯২)
ম্যানেজার, দেশীচাই এগ্রো প্রোডাক্টস
সুন্দর.....
এইসব নিয়েই আমাদের জীবন। আহা!! জীবন!!!
"চোখ খুলেনা, তোকে খুঁজে
বাবার অবুঝ মনে” - আহা! পৃথিবীর সব বাবারা তাদের সন্তানদের, নাতি-নাতনিদের স্পর্শে থাকুক, সান্নিধ্যে থাকুক...... লোকান্তরের পর, স্মৃতিতে থাকুক!