কথা ছিলো ঘর থেকে বেরিয়ে
হাজার মাইল হাঁটবো।।
এ পথে আমার সঙ্গী-সাথীরা
বেরিয়ে গেছে অনেক আগে।
আমাদের এই ঘরে ছিলেন
জনাকয়েক দাঁড়ি গোঁফ পাকা গুরুজন।
এ পথ ধরেই তারা গিয়েছিলেন
এবং
ফিরেও এসেছেন।
তাদেরই প্ররোচনায় আমার বন্ধুরা
এবং শেষান্তে আমি
ঘর ছাড়া হলাম।
গুরুজনদের কেউ একজন বলেছিলেন……
“এ পথেই এক ঝর্ণা নেমে আসে
তার স্রোতধারার পরে
নেচে নেমে আসে অসংখ্য জলপরী
তারা দু’মুঠোয় ভালোবাসা বিলায়”
কিন্তু
তিনি আমাকে এক চিমটি
ভালবাসা নিয়েই
আবার চলতে বলেছিলেন।
গুরুজনদের ই একজন বলেছিলেন……
“এ পথেই এক মহাদেশ আসে,
যেখানে অসংখ্য অনুগত প্রজা,
পূর্ণ সে দেশ সম্পদ ,নারী,খাদ্যে।
সেখানে সব ই আছে
নেই কেবল রাজা।”
প্রজারা আমাকে পেলেই
রাজা হবার অনুরোধ করবে।
গুরুজন সাবধান করে দিলেন
রাজা হওয়া চলবে না।
হতে হবে প্রজা কিংবা যোদ্ধা।।
গুরুজনদের একজন বলেছিলেন
“এ পথের কোথাও একটা
সরাইখানা আছে।”
যেখানে আমার অগণিত বন্ধু জুটবে।
তারা আমাকে ছাড়া খাবে না,
আমাকে ছাড়া হাসবে না
এভাবেই চলবে কিছুদিন।
গুরুজন আদেশ দিলেন……
“তাদের স্বার্থে নাড়া দিও না
তবেই হবে সর্বনাশ ।”
গুরুজনদের একজন বলেছিলেন……
“এ পথে মাঝে মাঝেই
আকাশ অন্ধকার হয়ে ঝড় হবে।
দমকা বাতাস উড়িয়ে নিতে চাইবে।
এখানে ওখানে আছড়ে পড়ে ক্ষত বিক্ষত হবে শরীর,
এ সময় কোন পথিক পাবে না,কোন বন্ধু পাবে না।
সেই দুঃসময়ে তুমি হবে একা।”
গুরুজন উপদেশ দিলেন-
“সেই ঝড়ে তুমি মানুষ তা ভুলে যেও।
জন্তুর মত গর্তবাস হবে
সমুচিত সিদ্ধান্ত।”
গুরুজনদের কেউ একজন বলেছিলেন……
“এ পথেই কোন এক সময়
যৌবনের ফল ধরবে বৃক্ষে।
তোমার বুকের অংশ নিয়ে
তোমার হাত ধরবে তোমার সন্তান,
তাদের অগণিত চাওয়া পাওয়ার মাঝে
দূর্বিষহ হবে জীবন।”
গুরুজন আদেশ দিলেন
“তুমি তাদের ইচ্ছে করে
হারিয়ে ফেলো না।।”
গুরুজনদের কেউ বলেছিলেন……
“ এ পথের শেষ প্রান্তে তোমার বার্ধক্য আসবে
তুমি হবে নিষ্ক্রিয়,নিস্তেজ।
দুর্বল সেই তুমি
লাঠিতে ভর করে ফিরে আসবে।
নিঃশেষ হবার আগের দিনগুলোতে
তুমি পাবে এক চিমটি সুখ
এ সুখ টিকে থাকার…ফিরে আসার।।”
গুরুজনদের আশীর্বাদ নিয়ে
আমি ঘর থেকে বের হই।
হঠাৎ দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করি,
“এ পথ কোথাও কি দ্বিধাবিভক্ত হয় নি?”
গুরুজন বিস্মিত হলেন,
বললেন,
“এ পথ ধরে কিছু দূর এগোলেই
অন্য এক পথ পাবে।
সেই পথ গেছে গহীন অরণ্যে।”
আমি হাটতে শুরু করি,
অনেকদূর এগিয়ে থমকে দাড়াই,
যেখানে পথ দ্বিবিভক্ত।
গুরুজনের নির্দেশিত পথের দিকে তাকাই,
মনে হয়…
সব অকারণ,অযৌক্তিক,কৃত্রিম।
যুগে যুগে
এ পথ প্রলুব্ধ করেছে
ক্ষমতায়,ভালবাসায়,
বন্ধুত্বে ,সন্তানে
ও নারীতে।।
খুব দূর হতে,
নির্বাসিত জীবনের ছন্দ আসে কানে।
বিমুগ্ধ আমি
অরণ্যপথে ঘুরে দাড়াই।।
অসাধারণ.........পুরোটা অবশ্য বুঝি নি। তবে মূল ভাবটা বুঝতে পেরেছি।
এই লাইনগুলো সবচেয়ে ভাল লেগেছে।
এই লাইনগুলোও। তবে এই ভুল আমাদের কারো না হোক।
কবি কি এটাই বলতে চাইলেন?
আমার তো বরং মনে হলো বারবার একই ভুল করতে চাইলেন।
অবশ্য কবিই কইতে পারবেন।
নূপুর ভাই এইটা আমার পক্ষ থেকে বলেছি। কবি কি বোঝাতে চেয়েছেন জানি না।
সেটা বুঝেছি।
তবে
--------
এ প্রলোভনের ভুল করতে চাওনা তুমি?
তাই বোঝালে?
আমি অবশ্য এই ভুলের গোলকধাঁধাতেই বারবার ফিরে আসতে চাইবো,
কোন গুরুর উপদেশই কানে না তুলে।
ভালবাসা, বন্ধুত্ব, স্ত্রী-সন্তানের মধ্যে সমস্যা নয়। সমস্যা হচ্ছে ভুল পথ বেছে নেয়ায়। ভুল পথে যে বন্ধু, স্ত্রী, সন্তান পাওয়া যাবে তারা কল্যাণ নিয়ে আসবে না। মূল পথেও বন্ধু, স্ত্রী, সন্তান পাওয়া যাবে। তারা কল্যাণ নিয়ে আসবে। বিশ্বস্ত সূত্রে এ খবর পেয়ে আমি বিশ্বাস করেছি।তাই আমি কামনা করেছি এই ভুল আমাদের কারো না হোক।
আর আমি অবিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়ে করেছি অবিশ্বাস.... 😛
মজা করছিলাম।
এটা বেশ মজার ব্যাপার, না? পথের মতোই পাঠকের মতও দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যা্চ্ছে লেখাটি পড়ে।এখানেই এটির সার্থকতা।
তা কবি প্রথম পোস্ট দিয়েই ডুব মেরেছে।
বোধ হয় অরণ্যপথে পালাইসে। 😀
পুরাটা পড়তে গিয়া ১ম হইতার্লাম না 🙁
ভালো লাগলো..
ভাবছি আমিও একটা কবিতা লিখবো। নাম হবে 'দুলাভাই যখন কবি' :grr:
সাথীপু বললো আপনার জীবনের প্রথম কবিতা।
ভালো হয়েছে। শুধু শিরোনামের 'ভূল' বানানটা ভুল হয়েছে 😀
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
ভালো লাগা জানিয়ে গেলাম। শুভ ব্লগিং ভাইয়া। বেশি বেশি লিখবার অনুরোধ রইলো।
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
এখানকার সময়ে সকালবেলাতেই পড়ে মুগ্ধ হয়েছিলাম। কাজের সময় মন্তব্য করে হয়ে ওঠেনি। প্রথম ব্লগের শুভেচ্ছা!
আরো আরো লেখা চাই।
:boss: :boss:
বানান:
দূর্বিষহ: উ-কার হবে।
হাটতে; দাড়াতে : চন্দ্রবিন্দু হবে জায়গা মতো। 😀
:boss: :boss:
যেমন রক্তের মধ্যে জন্ম নেয় সোনালি অসুখ-তারপর ফুটে ওঠে ত্বকে মাংসে বীভৎস ক্ষরতা।
জাতির শরীরে আজ তেম্নি দ্যাখো দুরারোগ্য ব্যাধি - ধর্মান্ধ পিশাচ আর পরকাল ব্যবসায়ি রূপে
- রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
- ভালো লেগেছে।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx