এক.
“ঘেউউউউ”।
গাজী সাহেবের ঘুমটা ভেঙে গেল। মাথার কাছে টেবিলে রাখা ঘড়িটার দিকে চাইলেন তিনি। রাত তিনটা বাজে। চারদিক সুনসান।
বাইরে থেকে আবার আওয়াজ ভেসে এলো, “ঘেউউউউ”। এবং এরপর ক্রমাগত ঘেউঘেউ চলতেই থাকলো।
বিরক্ত হয়ে গাজী সাহেব বারান্দায় বেরিয়ে এলেন। এলাকার নেড়ী কুত্তাটা তাঁর বারান্দার সামনে দাঁড়িয়ে ক্রমাগত ঘেউঘেউ করেই চলেছে।
তিনি বেরিয়ে আসতেই অবশ্য কুকুরটা অন্যদিকে দৌড় দিল। ভয় পেয়েছে হয়তো। গাজী সাহেব আবার বিছানায় এসে শুয়ে পড়লেন।
দুই.
“ঘেউউউউ”, আজ আবার।
গাজী সাহেব তিতিবিরক্ত হয়ে উঠেছেন। গত এক সপ্তাহে এটা তৃতীয়বার। কুকুরটা গাজী সাহেবের বারান্দাটাকেই কেন বেছে নিলো বোঝা যাচ্ছে না। পাঁচতলা বাসার নীচতলায় স্ত্রী-সমেত ভাড়া থাকেন তিনি। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে, ছেলেটা পড়ার জন্য মালয়েশিয়ায় আছে। সারাদিন অফিসে কাজ করার পরে রাতে বাসায় এসে একটু শান্তিতে ঘুমোবেন সে উপায় নেই।
“ঘেউউউউউ।”
নাহ! এর একটা ব্যবস্থা করা দরকার। মাথায় সেই চিন্তা নিয়ে গাজী সাহেব শুয়ে রইলেন। কুকুরটা আরও পাঁচ-ছয় মিনিট চেঁচিয়ে চলে গেলো।
তিন.
গাজী সাহেব এলাকার মেথরটাকে কিছু টাকা দিয়েছিলেন। মেথরটা ব্যবস্থা করে পৌরসভা থেকে লোক এনে কুকুরটাকে তুলে নিয়ে গেল। গাজী সাহেব নিশ্চিন্ত।
চার.
“ওগো, শুনছো! সর্বনাশ হয়ে গেছে।”
সকালে কলে পানি না থাকলেও আফরোজ বলবে সর্বনাশ হয়ে গেছে। তবুও গাজী সাহেব উঠে বসলেন।
“কি হয়েছে?”
“ড্রয়িংরুমে গিয়ে দেখ। এ কি হলো!”
গাজী সাহেব ড্রয়িংরুমে আসলেন। ফ্রীজ-টিভি-ওভেন যা ছিলো কিছুই নেই। ড্রয়িংরুমটার পাশে বারান্দা। গাজী সাহেব বারান্দায় আসলেন। গ্রীলটা সুন্দর করে কাটা। রাতে চোর নিঃশব্দে কেটেছে। গাজী সাহেবের ঘুমে একটুও ব্যাঘাত হয়নি।