নারীবাদে অসংখ্য ধারা বা উপধারা আছে। কিন্তু তিনটি শ্রেণী ভাগ মুখ্য। এগুলো হলো-
১। উদার নারীবাদ (LIBERAL FEMINISM)
২। চরম নারীবাদ (RADICAL FEMINISM)
৩। সমাজতান্ত্রিক নারীবাদ (SOCIALIST AND MARXIST FEMINISM)
উদার নারীবাদ (LIBERAL FEMINISM) রাজনৈতিক এবং আইনগত পরিবর্তনের মাধ্যমে পুরুষ ও নারীর মধ্যে সমতা বিধান করার কথা বলে। এটি মূলতঃ ব্যক্তি ও বিষয় স্বাতন্ত্র্য ভিত্তিক নারীবাদ। উদার নারীবাদ মূলতঃ নারীদেরকে তাদের সামর্থ্য প্রদর্শনের মাধ্যমে নারীদের সমানাধিকার অর্জনের কথা বলে।উদারনৈতিক নারীবাদেমন একটি সমাজের কথা বলে, যেখানে নারী ও পুরুষ তাদের সামর্থ্য প্রদর্শনের সমান সুযোগ অ সুবিধা ভোগ করবে। উদার নারীবাদ মনে করে নারীদেরই বৈষম্য দূর করার সামর্থ্য আছে। এর জন্য সমাজ কাঠামো পরিবর্তন করার প্রয়োজন নাই। উদার নারীবাদ সমাষ্ঠিক নয় বরং ইস্যূ ভিত্তিক আন্দোলনের কথা বলে। নারীনির্যাতন প্রতিরোধ, কন্যা শিশুর সুষ্ঠু লালন পালন, নারীদের স্বাস্থ্য পরিচর্যা, ও খাদ্য অনুশীলনে গুণগত পরিবর্তন হল উদারনৈতিক নারীবাদের কতিপয় ইস্যু।
চরম নারীবাদ (REDICAL FEMINISM) মূলতঃ পুরুষতান্ত্রিক সমাজকে ঘৃণা করে। এরা সমাজ কাঠামোকে আমূল পরিপর্বতনে আগ্রহী। তারা মনে করে নারী তখনই মুক্তি পাবে যখন পুরুষতান্ত্রিক ও শক্তি কৈন্দ্রিক বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা কে ধ্বংস করা হবে। চরম নারীবাদীরা মনে করে সমাজ আংশিক পরিবর্তন বা সংশোধনের মাধ্যমে নারীদের সমানাধিকার অর্জন সম্ভব নয়। তাদের মতে বর্তমান পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ভাবে ধ্বংস করার মাধ্যমেই নারী তাদের কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম। চরম নারীবাদে বেশ কিছু শাখা বা ধারা লক্ষ্য করা যায়। এগুলো হল সংস্কৃতি ও আচরণ গত নারীবাদ, বিচ্ছিন্নতাবাদী নারীবাদ, যৌনতাবিরধী নারীবাদ। সংস্কৃতিবাদী নারীবাদ মূলতঃ নারী চরিত্র ও তাদের মৌলিক গুনাবলীকে ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। এই ধারার নারীবাদীরা মনে করে নারীর দৈহিক দুর্বলতা নয় বরং নারীদের দৈনন্দিন আচার ও পারিবারিক কাজকর্মকে সামাজিক দায়বদ্ধতাকে গুরুত্বহীন এবং অপেক্ষাকৃত কম মূল্য দেওয়ার প্রবনতাই মূলতঃ নারী বৈষম্যের মূল কারণ। এই ধারা নারীদের বর্তমান সামাজিক দায়বদ্ধতা হতে বেরিয়ে এসে নিজেদের আচরণ পরিবর্তনের উপর গুরুত্ব দেয়। বিচ্ছণতাবাদী নারীবাদীরা মূলতঃ নারীপুরুষের পারস্পরিক যৌন সম্পর্ক কে অস্বীকার করে। তারা মনে করে নারী পুরুষের যৌনগত পার্থক্য কখনো সমাধান করা যাবে না। তারা মনে করে পুরুষ কখনো নারীদের সমানাধিকার দিবেনা। কারণ এতে পুরুষদের তাদের অধিকৃত কিছু শক্তি ত্যাগ করতে হবে। কিন্তু পুরুষ শক্তি ত্যাগে ইতিবাচক সাড়া দিবেনা। চরমপন্থীদের মধ্যে সর্বাধিক উচ্চাকাংখি অংশটি মাতৃত্বের দায় নিতে অস্বীকার করে। তারা মনে করে মানব জাতি রক্ষার দায় শুধু নারীরা কেন নিবে এ দায় পুরুষদেরকেও সমানভাবে ভাগ করে নিতে হবে। মাতৃগর্ভ ব্যতীত অন্যকোনো পন্থা শিশু জন্ম দিতে হবে। তারা এমনকি শুধুমাত্র নারীদেরকে নিয়ে পরিবার গঠনের কথা বলে।
সমাজতান্ত্রিক নারীবাদ (SOCIALIST AND MARXIST FEMINISM) নারী বৈষম্যকে মার্ক্সের তাত্ত্বিক দিক দিয়ে বিশ্লেষণ করে থাকে।সমাজতান্ত্রিক নারীবাদ মনে করে নারী বৈষম্যের মূলকারণ হলো পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা যা নারীদের অবমুল্যায়ন করছে। বর্তমান সমাজ নারীকে পণ্য এবং সন্তান উতপাদনের যন্ত্র মনে করে। তারা মনে করে ধনতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা যে রাষ্ট্রকাঠমো তৈরি করেছে তা শক্তি কেন্দ্রিক। আর সমাজের প্রতিষ্ঠিত শক্তি মানে পুরুষ সমস্ত দ্রব্য ও সেবা কে নিজের জন্য ব্যবহার করছে। আর এভাবেই সমাজের অন্যান্য দ্রব্যের মত নারীও পুরুষদের অধিকার চলে গেছে। সমাজতান্ত্রিক নারীবাদ মূলতঃ রাষ্ট্রীয়কাঠামোর ভিতরে নারীবৈষম্যকে দেখে।
কার্ল মার্ক্স মনে করে যখন শ্রেণীবৈষম্য ধ্বংস হবে তখন আর নারী বৈষম্য থাকবে না। সমাজতান্ত্রিক নারীবাদ মূলতঃ শ্রেণী সংগ্রামের বর্ধিতাংশ। তবে অনেক সমাজতান্ত্রিক একে শ্রেণীসংগ্রাম হতে পৃথকভাবে উপলব্ধি করার চেষ্টা করেছেন। আবার অনেক সমাজতন্ত্রী সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন নারীদের অংশ গ্রহনে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সমালোচনা করেছেন।
১ম অনেকদইন পর 😀
এজন্য বানান ভুল হইসে :((
ঐ, তুই কই ছিলি এই কইদিন?
হে হে...আমারও বানান ভুল। 😛
লেখা তো মনে হয় শেষ হয়নাই । ইনফরমেটিভ পোস্ট । তোমার নিজের দৃষ্টিভংগী শেয়ার করলে আলোচনা আরো ইন্টারেসটিং হবে বলে মনে হয় ।
- ঐ :grr:
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
হা আমি আসলে সংগা হিসাবে বর্ণনা করেছি। পরর্বতি লেখা যাতে কারও বুঝতে প্রব্লেম না হয়। যদিও পরবর্তি লেখা ১ সপ্তাহ পরে। ঠিক এই বারে।
জানতে পারলাম, পরের পর্বের জন্য wait করতেছি।
অফ টপিকঃ wait-এর বাংলা প্রতিশব্দটা লিখে কেমনে? আমি লিখতে পারতেছি না। :(( :(( :((
k+k+h= ক্ষ, মনে হয় এখানেই সমস্যা :-B
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
ক্ষ ক্ষ। হইছে। ধন্যবাদ
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
(দুই শব্দের মাঝে স্পেসগুলো একটু খেয়াল করিস দোস্ত 🙂 )
চালিয়ে যান। পড়ছি। হুমায়ুন আজাদের "নারী" পড়ার পরই এ নিয়ে প্রথম আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছিল। বেগম রোকেয়া আর মেরি ওলস্টোনক্র্যাফটের কথা শুনে খুব ভাল লেগেছিল। রবীন্দ্রনাথের সমালোচনাও খুব মনে ধরেছিল।
আমার মনে হয়েছে হুমায়ুন আজাদ "চরম নারীবাদ" এর সমর্থক ছিলেন। নারী বইয়ে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের পুরো কাঠামো ভেঙে ফেলার বিষয়ে কিছু কথা ছিল। কলেজে পড়া বইগুলোর মধ্যে এটা ছিল অন্যতম সেরা। তাই মাঝেমাঝেই মনে পড়ে।
আমি হুমায়ুন আজাদ এর নারী বইটি পরি নাই। ওলস্টোনক্র্যাফটের সাথে রোকেয়ার তুলোনা করার একটা ইছছা আছে। তবে শুধু রোকেয়াকে আলোচণা করব।
আমার খুব ভালোলেগেছে॥
জেটুকু লিখেছেন ভালই লিখেছেন ।কিন্তু আমাদের যখন বিসতৃত বিবরণ প্রয়োজন তখন আমরা কোথায় পাব।তাই আপনার কাছে আমার একানত অনুরোধ যে নারিবাদ বিষয়ে আপনি আমাদের জন্য পরিপূণ বিবরণ লিখুন।