একটা প্রশ্ন করলেন ম্যাডাম বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদের ভিত্তি কি? আমরা সবাই অবাক্ হয়ে তাকিয়ে রইলাম। প্রথম প্রথম প্রশ্নটি বুঝলাম না। ম্যাডাম এবার পরিষ্কার করে দিলেন। বলো এমন কি আছে যা আমাদের অন্য জাতি হতে পৃথক্ করে দিয়েছে? আমরা একে একে বলতে লাগলাম বাঙ্গালী সাহসী, অথিতিপরায়ন, বিদ্রোহী, আরো অনেক কিছু। কিন্তু তিনি একে একে দেখিয়ে দিলেন আমরা যা বলেছি তা আমাদের থেকে অন্য অনেক জাতিসমুহের মাঝে আরো বেশি পরিমাণে বিদ্যমান। এরপর হতে আমি সময় হলেই ভাবি আমাদের এমন কি আছে যা আমাদের জাতি গঠনের উৎসাহ যুগিয়েছে। আমি এখন পর্যন্ত এমন কিছু পাইনি যা বাঙ্গালী জাতির নিজস্ব ঐতিহ্য।
একটি জাতি গঠনের অনেক উপাদান থাকতে হয়। এসব উপাদানের মাঝে আমাদের যে সব উপাদান আছে তা হল সাধারণ ইতিহাস। এই সাধারণ ইতিহাস common sufferings হলে তা জাতি গঠন অধিক কার্যকরী। আমাদের common sufferings শুরু হয়েছে ১২০৫ সালে খলজী বাংলা জয়ের মাধ্যমে। এরপর হতে বাঙালির পূর্ব পুরুষ পরাধীন। ১৯৪৭ সালে এই বাঙ্গালী জাতির একটি অংশ স্বায়ত্বশাসিত রাজ্য হলেও অন্য অংশটি থেকে গেল পরাধীন। বাঙালির common sufferings এর ইতিহাস ৭৬৬ বছরের ইতিহাস। এত দীর্ঘ অত্যাচারীতের ইতিহাস আর কারো নেই। আরেকটি হল ভাষা যাকে বলা হয় lingua franca | অর্থাৎ একাধিক ভাষাভাষীর মাঝেও একটিমাত্র জাতি গঠিত হতে পারে। কিন্তু আমাদের এই ক্ষুদ্র সমস্যাও অতিক্রম করার প্রয়োজন নাই। আমাদের ১৫ কোটি লোকের মাঝে মাত্র ১% হল অন্য ভাষাভাষী। আমাদের মাঝে গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের মধ্যে যার অভাব বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়, সেটা হল peoples mobility and intra communication. এখানেই আমাদের কাজ করতে হবে। যদিও আমাদের জাতির বয়স মাত্র ৪০ বছর। আর এত স্বল্প সময়ে জাতীয়তাবোধের সকল উপাদান সমানভাবে সমৃদ্ধ হয়না।
জাতীয়তা একটি সামাজিক, সাংস্কৃতিক, এবং রাজনৈতিক আর্দশের সমন্বয়। এখানে ভুখন্ডগত সীমানা কখনই মুখ্য ভূমিকা পালন করেনা। আমরা প্রুশিয়ান জাতির কথা জানি, তারা ২য় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে এবং পরে ভিন্ন ভিন্ন রাষ্টের নাগরিক হয়েছেন কিন্তু তারা একটি সাধারণ জাতি। আবার ভিন্ন উদাহরণ রয়েছে যেমন ইন্ডিয়ায় প্রায় ৫০ এর অধিক জাতি আছে কিন্তু দেশ একটি। অর্থাৎ জাতি এবং দেশ ভিন্ন। একটি রাষ্ট্রের যেমন একাধিক জাতি থাকতে পারে তেমনি রাষ্ট্রহীন জাতি আছে। কিন্তু আমাদের জাতির পরিচয় নির্ধারণ করা হয়েছে ভূখণ্ড ভিত্তিতে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল ভূখণ্ড জাতি গঠনের কোনো উপাদান নয়।
🙂
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
B-)
মজাদার বিষয়। আপনার কথা আমি বুঝলাম কিন্তু সমস্যা হচ্ছে উদ্দেশ্য ধরতে পারলাম না। আপনি কি এটা নিয়ে কোনো সিরিজ করতে যাচ্ছেন? (যেহেতু এখানে কোনো প্রশ্ন/উত্তর ছিলো না তাই আমি ভুমিকা হিসেবে ধরতে পারি লেখাটিকে)
আমার জাতীয়তা নিয়ে আরো লেখার ইছছা আছে। তবে সে লেখা আরো অনেক জটিল হবে। আমি কম করে লিখতে পছন্দ করি। কারন বিষয়গুলো খুব মজার নয়। তাই কম করে লেখাটা বুদ্ধিমানের কাজ।
এগোতে থাকুন। পেছনে আছি।
শুভকামনা রইলো।
ভাইয়া, আমিও একটু কনফিইউজড, সামগ্রিকভাবে লেখাটা আমার ভালো লেগেছে; কিন্তু লেখার বিষইয়বস্তু পরিষ্কার হয়নি আমার কাছে 😕 😕 , তাই কেমন যেন দিকহারা হয়ে ঘুড়েছি খানিকটা। যদিও আমার মনে হয়েছে বাঙ্গালি জাতি হিসেবে আপনি আমাদের স্বা্তন্ত্র্য সন্ধান করেছেন :-B
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
এইখানে একটা ছোট্ট ভুল আছে।- বখতয়ারের আগে বাংলা শাসন করেছে 'সেন'রা। ওরা এসেছিলো দক্ষিণ-ভারতের কর্ণাটক থেকে। ধরে নিচ্ছি, তোমার ম্যাডাম কথাটা মনের ভুলে বলেছেন। কারণ, এই তথ্যটা আমরা নাইন-টেনের ইতিহাস টেক্সটবইতেই পড়েছিলাম যা রচিত হয়েছিল চারজন স্বনামধন্য ডক্টরেটকর্তৃক লিখিত বাংলার ইতিহাসের (তিনখন্ডের) উপর ভিত্তি করে (হুসনে আরা ম্যাডাম ও হাসান স্যার বইটাকে 'ফোর ডক্টরস' বলতেন)।
তবে আরো বড় সমস্যা হল, যে অর্থে জাতিয়তাবাদ সংজ্ঞায়িত করা হয়, তা ইউরোপীয় কনটেক্স থেকে এসেছে উনিশ শতক থেকে।একারণে এর আগে সংগৃহীত তথ্যের অভাবে আমাদের জাতীয়তা খুঁজতে যাওয়া খুবই কঠিন, যদিও আমি বলছি না যে অসম্ভব।-
অতএব, চালায়া যাও।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
ভাইয়া ইউরোপ কনটেক্সট কথাটা আমি পরে আনতে চেয়েছিলাম সমালোচনাতে। ভাইয়া নৃতাত্বীক ভাবে বঙ্গালী জাতি সৃস্টি হয়েছে অস্ট্রিক, দ্রাভির, আর্য ,নিষাধ, এরকম ৩৬ টি ছোটো বড়ো জাতি গোষ্ঠী নিয়ে। তাই সেন্রা কোনো বহিশত্রু নয়। তাদের শোষণ অনেকঅটা নিজেদের হাতে শোষিত হওয়ার মত। কিন্তু মুসলিম শাষণকে বলা হয় মধ্য যুগ। ইন্দো-ইউরোপীয় অরথাত তুরস্ক হতেই অধিকাংশ মুসলিম সেনাপতি রায্য জয়ের জন্য বাংলায় আগমন করেন। তারা কখনই এদেশের সাধারন মানুশের সাথে মিশে যেতে পারেনি।
আমি তোমার এই অবস্থানটা অনুমান করেছিলাম, কিন্তু বেনিফিট-অব-ডাউট দিছিলাম নিশ্চিত হতে।-
সেনরা এইসবের কোনোটার মধ্যে পড়ে না। তাদের স্পষ্ট ইতিহাস আছে যার মাধ্যমে তারা সব সময়ই দেখিয়েছে যে তারা বাংলার বাইরের এবং সেই কারণে শ্রেষ্ঠতর, ঠিক যেভাবে তুর্কী মুসলমান শাসকেরা নিজেদের সৈয়দ/পাঠান হিসেবে পরিচয় দাবী করে বাংলার বাইরের+সেই কারণে শ্রেষ্ঠত্ব দাবী করতো।
আমি বলবো, ইতিহাসের বইপত্র আরেকটু ঘেঁটে দেখতে। এই জাতীয় লিখা লিখতে রেফারেন্স জরূরী। তুমি সঠিক হলে আমিও শুধরে নিই।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
আমিও একটি বই খুজছি আমার নিজের লাইব্রেরীতে কিন্তু বইটা যে কে নিল। এটা আপাতত স্বগিত থাক। আমিও আরেকটু খোজখবর নিএ দেখি। আপনার ইনফর্মেশন এর জন্য ধন্যবাদ। ইনশাল্লাহ আরো যখন লিখব তখন আর বেশি রেফারেন্স ব্যাবহার করবো। আর আপনার নিকত থেকেও এরকম সংশোধনী আশা করি।
:bash:
আসল কথাই বলতে ভুলে গেছি,- সেনরা বাংলায় 'কূলীন ব্রাহ্মণ্য' প্রতিষ্ঠা করেছিল এখানকার প্রধানত বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর উপর এবং সেটা ছিল জবরদস্তিমূলক। এই নির্যাতনও দলে দলে বাংলার সাধারণ মানুষের ইসলাম গ্রহনের কারণ ছিল। আল্লাহর ভয় বা ইসলামে মুগ্ধ হওয়ার তুলনায় ব্রাহ্মণদের অত্যাচার থেকে রক্ষা পাবার আকাংখাও কম ছিলো না।
(শওকত আলীর একটা উপন্যাস আছে সেই সমইয়ের প্রেক্ষিতে লেখা 'প্রদোষে প্রাকৃতজন', ভালো লাগবে। সেলনা হোসেনের উপন্যাস 'নীল ময়ূরীর যৌবন'ও পড়ে দেখতে পারো, চর্চাপদের রচয়িতাদের নিয়ে লেখা, আরেকটা আগের সময়কালের প্রেক্ষিতে)।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
ভাইয়া এই কথাটা আর ভালভাবে ব্যাখ্যা করলে ভাল হত।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
দোস্ত, বিষয়টা বেশ জটিল। কিন্তু তোর সাহসের প্রশংসা করতে হয়। তোকে দিয়েই হবে.........
চালিয়ে যা।
:clap:
বিষয়বস্তু বেশ খটমটে এবং জটিল...
তবে লেখাটা কিছু ভাবতে উদ্বুদ্ধ করেছে...
ভাই, এই জাতীয় কঠিন বিষয়গুলা একটু সহজ ভাষায় বোঝানো গেলে আরো চালায়া যান...
আমরা আছি আপনার সাথে
এমনে খুজতে খুজতে সব জাতি না আবার "বান্দর জাতি" তে পরিনত হই যায়।
পয়লা তো এইরকমই কিছু একটা ছিল, নাকি?
জুক্স করলাম ভাইডি.........। মাইন্ড খাইও না
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
=)) =))
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
পরের পর্বের জন্য wait করছি।
অফ টপিকঃ wait-র বাংলা লেখে কেম্নে? মানে যুক্ত বর্ণটা ~x( ~x(
অপেক্ষা... ক্ষ= kkh
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
আমিও জানলাম। আমিত KSH দিয়ে লেখতাম
আগামী সপ্তাহে লিখব...........................এই শিরনামে আমি রাষ্ট্র, জাতীয়তা, জাতিগোষ্ঠী, মানোবাধিকার,সুশীল সমাজ, এসব বিষয় নিয়ে লিখতে চাই।
দারুন, অপেক্ষায় থাকলাম জমজমাট আলোচনামূলক লেখগুলোর জন্যে :clap:
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!