সততার পুরস্কার

…অনেক দিন ধরেই ভাবছি কি লেখা যায়,মন খারাপ হলে একা একা এখানে আসি আর সবার লেখা পড়ে চুপচাপ মন ভাল করে চলে যাই …লেখার হাত খুবই বাজে বলে লেখার কথা ভুলেও ভাবতে যাই না তবুও একবার লিখেছিলাম;এত ছোট হয়েছিল যে এডজুট্যান্ট সাহেব আমাকে এত ছোট ব্লগ না লেখার ব্যাপারে অনুরোধ করলেন ,আসলেই এত সুন্দর লেখাগুলোর মধ্যে এরকম বোরিং লেখা মানাবে না যাই হোক,একটা মজার ঘটনা শেয়ার করি…আমি তখন ক্লাস ১১ এ,JP শীপ দেয়া হয়ে গেছে.মোটামুটি শিওর কারা প্রিফেক্ট হতে যাচ্ছে।এরই মাঝে parents day আসল,তখন আবার আম-কাঁঠাল এর সময়।parents day তে যতটুকু সম্ভব দান মেরে এবার হাউসে নিয়ে আসলাম।কিন্তু স্যার এর কড়া আদেশ সব হাউস অফিসে জমা রাখতে হবে।কি আর করা,রেখেও আসলাম।Night prep এর পর house master sir শুনি আমাদের সবাই কে হাউস অফিসে ডেকেছেন।গিয়ে দেখি ২ টা ঝুড়িতে ২ টা বিশাল সাইজ এর কাঁঠাল।তার মধ্যে একটা আবার খাওয়া হয়ে গেছে। sir বললেন,”এটা তোমাদের কারও চুরি করা ফসল,হয় ক্লাস ১১,নাহলে ১২,drying room এ রাখা ছিল ,ক্লাস ১২ আমার সামনেই খেয়েছে,অতএব আমার সামনে বসেই তোমরা খাও” বলার সাথে সাথে সবাই কাঁঠাল এর উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ল,ফলাফল-চোখের পলকেই কাঁঠাল নাই।আমি কাঁঠাল খাই না তাই চুপচাপ দাড়িয়ে ছিলাম, sir একবার বললেন,”মাহমুদ,খাও” আমি মাথা নাড়ালাম যে খাব না।sir কিছু বললেন না।এবার আম এর পালা,আম ছিল আমাদের ই parents দের নিয়ে আসা।এবার আমিও লাফ দিলাম,দেরি করলে ভাগে কম পড়বে।ফলাফল একই,২ মিনিট ও লাগল না ফিনিশিং দিতে….এর কিছুদিনপর প্রিফেক্টশীপ দেয়ার পালা… auditorium এ পুরানো খাকি আর পুরানো বেল্ট নিয়ে বসে আছি,প্রিফেক্ট হবনা জানি বলে জুতাও পালিশ করিনি,হঠাত শুনি আমার নাম announce করছেনএডজুট্যান্ট স্যার…কোনরকম গুনাগুন না থাকা সত্তেও আমার উপর চাপানো হল House cultural Prefectship(যার tease name হাউসে কাউছার) নামের একটা অভিশাপ।আমি তো আকাশ থেকে পড়লাম,এইডা কিছু হইল?? JP না কিছু না,কেন এই Prefectship?? তার মধ্যে কালচারাল এর “ক” ও বুঝি না।অন্য হাউসের এক স্যার তো অনেকদিন জানতেন যে আমি House Games Prefect…যাই হোক,একদিন আমাকে house master sir ডাকলেন,ডেকে বললেন,” তোমাকে আমি প্রিফেক্টশীপ কেন দিয়েছি জানো?” আমি মাথা নাড়ালাম যে জানিনা।উনি আবার বললেন,” কারণ তোমার সততা,সেদিন চুরি করা কাঁঠাল সবাই খেয়ে ছিল,কিন্তু তুমি খাওনি” আমার তো তখন পেট চেপে হাসি আসছে,স্যার কে কিভাবে এখন বলি যে স্যার আমি তো কাঁঠাল ই খাই না,কিছু না বলে হেভি ভাব নিলাম যে কত বড় একটা সততার কাজ করলাম আমি।আর বের হয়ে হাসতে হাসতে পোলাপান রে নিয়ে বিড়ি ফুকতে গেলাম….
(প্রথম লেখা হিসেবে অখাদ্য হয়েছে বলে সবার কাছে আগে ভাগেই মাফ চেয়ে নিলাম)….

১,৫৯৮ বার দেখা হয়েছে

২০ টি মন্তব্য : “সততার পুরস্কার”

  1. মীম (২০০৬-২০১১)
    স্যার কে কিভাবে এখন বলি যে স্যার আমি তো কাঁঠাল ই খাই না,কিছু না বলে হেভি ভাব নিলাম যে কত বড় একটা সততার কাজ করলাম আমি।

    ভাইয়া সত্যিকার সততা অবলম্বন করেই দেখতেন কি হয়......!!!!! ;)) ;))

    জবাব দিন
    • আসিফ মাহমুদ

      হা হা হা জামশেদ স্যার এর সাথে বেশী সততা না দেখানোই ভাল ...উনি একবার হাউসের TV নষ্ট হওয়ার পর আমাকে বলেছিলেন যে,"you have to pay for this"...কি আজব!! :brick: আমি TV খুব একটা দেখতাম না বলে রুম এও যেতাম না....


      ...একদিন সবকিছু মুছে যায় হিমেল হাওয়ায়, স্মৃতিমাত্র লিখে নাম...সেইখানে আমিও ছিলাম...

      জবাব দিন
    • আসিফ মাহমুদ

      আপু,এটা আমার আত্নউপলব্ধি :-B ...আর সবার সামনে ফ্রন্ট রোল দিলে জুনিয়রগুলো হেভি বদমাশ,হা করে তাকায়ে থাকবে :bash:... তবুও সিনিয়র বলে কথা... :frontroll: :frontroll:


      ...একদিন সবকিছু মুছে যায় হিমেল হাওয়ায়, স্মৃতিমাত্র লিখে নাম...সেইখানে আমিও ছিলাম...

      জবাব দিন
    • আসিফ মাহমুদ

      ধন্যবাদ ভাই,থিসিস চলছে,নিয়মিত লেখা এখন হবেনা,তবে কথা দিচ্ছি,থিসিস এর পর ঈনশাল্লাহ লিখব...আর আমার থিসিস এর জন্য দোয়া করবেন...(B.Arch Thesis)


      ...একদিন সবকিছু মুছে যায় হিমেল হাওয়ায়, স্মৃতিমাত্র লিখে নাম...সেইখানে আমিও ছিলাম...

      জবাব দিন
    • আসিফ মাহমুদ

      পুরো প্রিফেক্টশীপ টাই আমার জন্য মজা ছিল,হাউস মাস্টার স্যার কে পরে বুঝাতে পেরেছিলাম যে আমি কালচারাল এর কিছুই বুঝি না,তাই উনি আমাকে কোনরকম সময় পার করতে বলেছিলেন। গরম পরোটা দিয়েই পার করে দিলাম 😛 😛


      ...একদিন সবকিছু মুছে যায় হিমেল হাওয়ায়, স্মৃতিমাত্র লিখে নাম...সেইখানে আমিও ছিলাম...

      জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।