আমাদের বুড়া চিকি

সায়েদ ভাইয়ের চিকি নাম্বারিং এর কাহিনী শুনে আমার একটা কথা খুব মনে পড়ে গেল।
কলেজে দেখতাম বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতার কয়দিন, কিছু ক্যাডেটকে নির্বাচন করা হতো ভলেন্টিয়ার ক্যাডেট হিসাবে। যারা একটু অন্যদের থেকে একটু আলাদা(!) ছিল আরকি…. ক্লাশ সেভেন আর এইটের ক্যাডেটদের এই ভাবে সিলেক্ট করা হতো। তারা বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতার কয়দিন, টাই টুই পরে ফুলবাবু হয়ে ঘুরে বেড়াতো ।

আমাদের ব্যাচের শান্তশিষ্ট একজন ছিল। সে আবার ঐ সকল পোলাপানদের আবার “হাই চিকি” বলে মাঝে মাঝে, তো আমি ওকে বলতাম কি ব্যাপার? বেশ জেলাস্ ফিল করো মনে হয়? (উল্লেখ্য আমি তাকে সবসময় তুমি বলতাম) ও উত্তরে বলতো “কেন আমাদের সিলেকশন করে না?” আমি হেসে বলতাম “কারন আমরা চিকি নয়” ।

এই বিষয়টা নিয়ে আমি প্রায় ওকে একটু নাড়াদিতাম….পুরা ক্লাশ টুয়েলভ পর্যন্ত….
যাহোক সময় কেটে যেতে যেতে আমরা তখন ক্লাশ টুয়েলেভে উঠে গেলাম এবং আমাদের জীবনের শেষ বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতার মুখোমুখি হলাম। সেবার আমাদের এ্যাডজুন্টে স্যারের তার স্বভাবচরিত আমাদের কলেজে আবার একটা নতুন নিয়ম চালু করার ঘোষনা দিলেন।
ঘোষনা অনুযায়ী “বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতার কয়দিন, ক্লাশ টুয়েলভের যারা এ্যাথলেট ও প্রিফেক্ট না, তাদের থেকে কিছু ক্যাডেট নির্বাচন করা হবে, যারা জুনিয়র ভলেন্টিয়ার ক্যাডেটদের নিয়ন্ত্রণ করবে (মানে চিকিদের লিডার)। তাই আমরা আবার অপেক্ষায় রইলাম, প্রিফেক্ট ও এ্যাথলেট বাদে,সেই পুরানো আমাদের ব্যাচের কোন কোন স্পেশাল (!) ক্যাডেট বাকী আছে…যারা আবার তাদের শেষ বয়সে স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে “বুড়া চিকি” হিসাবে…আমরা মোটামুটি একটা প্রাথমিক তালিকাও রেডী করে ফেললাম….

কিন্তু সি.পি যেদিন তালিকা আনলো..আমি নামগুলো দেখতে লাগলাম….না সবাই মোটামুটি সেই সেভেন, এইটের পুরানো মুখগুলো…..যাদেরকে আমরা প্রাথমিক তালিকায় রেখেছিলাম, কিন্তু শেষের নামটা দেখে বেশ বড় সাইজের ধাক্কা খেলাম………….।

শেষদৃশ্য: আমি বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতার প্রথমদিন ব্রেকফাস্টে ডাইনিং টেবিলের একপ্রান্তের চেয়ারে বসা এ্যাথলেটের ড্রেস পরে…..আর অপর প্রান্তে আমার ব্যাচের সেই “আক্ষেপ করা ক্যাডেট” বসে আছে সেই সেভেন, এইটের “স্পেশাল ড্রেসে”…….

১,১৬০ বার দেখা হয়েছে

১১ টি মন্তব্য : “আমাদের বুড়া চিকি”

  1. তৌফিক (৯৬-০২)

    ক্লাস টুয়েলেভে চিকি =)) =)) =))

    নিচু ক্লাসে তো পোলাপাইনের তাও কিছু পোলাপাইন পোলাপাইন ভাব থাকে, উচা ক্লাসে উঠলে তো সবার চাপা চুপা ভাইঙ্গা একাকার। 🙁

    জবাব দিন
  2. আরিফ (৯৫-০১)

    @কাইয়ুম(ফৌজিয়ান)ভাই,কোথায় যাব..বিলাইর মত ঘাপটি মাইরা ছিলাম...
    @সায়েদ ভাই, এই সব উদ্ভট চিন্তা মেজর মাকসুদ বাদে...আর কার উর্বর মস্তিস্কে আসতে পারে বলেন....
    @তৌফিক, কি কউ? ক্লাশ ১২এ তো আমাদের ব্যাচের বেশীর ভাগের চাপা ভাংগে নাই... 😀 মনে হয় তোমরা আকাম বেশী করতা :gulli: 😛

    জবাব দিন
  3. আরিফ (৯৫-০১)

    @তৌফিক
    আমার মনে হইল কলেজে তুমি এত সুন্দর হাতেরকাম :gulli: কেমনে করতা....? 😀
    @তারিক
    তুমিও কি আমার টেবিলমেট ছিলা?মনে নাই sry. তবে নিশ্চয়ই চিকি ছিলানা... 😀 থাকলে খেয়াল থাকতো.... 😛

    জবাব দিন
  4. আহ্সান (৮৮-৯৪)

    আরিফ,
    জটিল লিখছো...।
    তোমার বন্ধু তবুও ক্লাশ টুয়েলভে এসে স্বীকৃতি পাইছে...। কিন্তু আমার মত কেউ কউ আছে যাদের কখনই এরকম গ্রুপে যাতে হয়নাই (আমি অবশ্য শুকরিয়া আদায় করি এইজন্য)। তবে মেস মিটিং নামক যে একটা ব্যাপার ঘটতো, সেইটাতে যাবার খুব ইচ্ছা ছিল। কারণ, মিটিং (দায় সারা গোছের) শেষের খাওয়া দাওয়ার গল্প (আমার সেইসব বন্ধুদের কাছ থেকে শোনা)শুনে আমারো খুব ইচ্ছা হইছিলো যাবার। কিন্তু কি করবো, বিধি বাম। ৬ বছরে বিধি কখনই আমার ক্ষেত্রে ডান হয় নাই।

    জবাব দিন
  5. আরিফ (৯৫-০১)

    আহ্সান ভাই,এই স্বীকৃতি কেউ পেতে চাই না আশা করি,তবে মেস মিটিং সবাই পেতে চাই,আমারও ইচ্ছা ছিল মেস মিটিং কিন্তু আমারও বিধির বাম যে, কলেজে কোন লীডারাই ছিলাম না 😛 , না ফর্ম না ১৬জন।

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।