হাজী খাজা শাহবাজ
হাজী খাজা শাহবাজ মুঘল আমলে ভারতের কাশ্মীর থেকে বনিক হিসাবে বাঙলায় আগমন করেন। একজন সফল সওদাগর হিসাবে অচিরেই তিনি ঢাকায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। ফলে তিনি ‘মালিক-ই-তুজ্জার’ বা ‘ব্যবসায়ীদের চূড়ামনি/সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ী’ উপাধি ও ঢাকার টাইকুন হিসাবে পরিচিত হয়ে ওঠেন। ধনাঢ্য এই ব্যবসায়ী শহরতলী টঙ্গী এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন। বাঙলায় যখন মুঘল নৃপতি আওরঙ্গজেবের (রাজত্বকালঃ ১৬৫৮-১৭০৭ খ্রীঃ) ৩য় পুত্র সুবাহদার শাহজাদা মুহম্মদ আযমের শাসন (১৬৭৮-৭৯ খ্রীঃ) চলছিল সেই সময় ১৬৭৯ খ্রীঃ তিনি একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে রাজু চত্বর থেকে যে রাস্তাটি দোয়েল চত্বরের দিকে গেছে সে পথ ধরে এগোলে মুঘল আমলের বাগ-ই-বাদশাহী, বৃটিশদের সময় রেসকোর্স ময়দান, পোলোগ্রাউন্ড ও রমনা বা আজকের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মাথায় তিন নেতার সমাধির পিছনে/পূর্ব দিকে আদি রমনা এলাকার প্রথম স্থাপনা হাজী খাজা শাহবাজ মসজিদটি দেখতে পাওয়া যায়।
হাজী খাজা শাহবাজের প্রকৃত পরিচয় নির্ভরযোগ্য কোন সূত্র থেকে পাওয়া যায়নি একথা সত্য। তবে তিনি রাজমিস্ত্রী ছিলেন এমন ভাবনার পিছনেও কোন যুক্তি আছে কিনা তা বলা যাচ্ছে না। কেননা মুনশী রহমান আলী তায়েশ শাহবাজকে ‘রাজমিস্ত্রী’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন। এদিকে বাংলাপিডিয়া তাকে ‘শাহজাদা’ বলেছে। এসব পরস্পর-বিরোধী তথ্য থেকে তার আসল পরিচয় খুঁজে বের করা বেশ মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার আরেকটি সূত্র জনশ্রূতির বরাত দিয়ে বলছে, তিনি সুদূর ‘বাগদাদ শরীফ থেকে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে আসেন।’ অথচ অধিকাংশ সূত্র তাকে কাশ্মীর থেকে বাংলাদেশে আসার কথা বলেছে। তবে কি তিনি বা তার পূর্বপুরূষেরা আরব অঞ্চল থেকে প্রথমে কাশ্মীর ও পরে বাংলাদেশে আসেন?
তোরণ
সুবাহদার আজমের আমলে ঢাকা পূর্বের তুলনায় বেশ বড় আয়তনের ছিল, তা কম করে দৈর্ঘ্যে প্রায় ৬৪ কিলোমিটার তো হবে। পূর্ব দিকে ডেমরা খাল হয়ে পশ্চিমে মিরপুর এবং দক্ষিণে বুড়িগঙ্গা হয়ে উত্তরে টঙ্গী পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। তথাপি ঢাকার জনবসতি তথনো যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উত্তরে ততটা ঘন হয়নি তা অন্যান্য সূত্র থেকে বেশ বোঝা যায়। সুতরাং মসজিদে আগত মুসল্লীদের অধিকাংশই ছিলেন বাগ-ই-বাদশাহীর দক্ষিণের বাসিন্দা। আর সেজন্যই মসজিদের প্রধান ফটকটি ছিল বর্তমানে বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর পশ্চিমের/পিছনের দেওয়ালের দিকে। তাই মসজিদ চত্বরে প্রবেশ করতে হলে মসজিদের পূর্বদিকের দেওয়ালের মাঝ বরাবর যে বিশাল ও অপরূপ সুন্দর প্রবেশ তোরণ আছে যা ‘শাহ-কি-দেউড়ি’ নামে পরিচিত তা ব্যবহার করতে হতো। নিঃসন্দেহে মসজিদ ও মাযারের পাশাপাশি এই তোরনটিও এখনো যে কোন পর্যটকের জন্য আকর্ষণীয় এক দর্শনীয় দ্রষ্টব্য। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে, মুঘল স্থাপত্যের অত্যন্ত চমৎকার এই তোরণটি এখন বন্ধ এবং তা ব্যবহার করা হয় না। তোরনের মাঝের পথটি ছিল তুলনামূলকভাবে বড়। কিন্তু এখন দু’পাশে ছাদে উঠার জন্য সিঁড়ি দেখতে পাওয়া যায়। দরজার চৌকাঠে পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। ভগ্নাবস্থায় উদ্ধারের পর তোরণটি পুনরায় নির্মাণ করা হলে আদি নকশার সাথে মিল রেখে এর উপরে প্যানেল ও মার্লন নকশা তৈরী করা হয়।
যেহেতু মসজিদে প্রবেশের প্রধান ফটকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সেহেতু এখন মসজিদে প্রবেশ করতে হলে শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক, খাজা নাজিমউদ্দিন ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এই ৩ নেতার সমাধির পাশ দিয়ে এক কালের বাগ-ই-বাদশাহীর দক্ষিণ-পশ্চিমে বাদশাহী মসজিদ রাস্তা ধরে ৪০০ মিটার এগোতে হবে। তবেই অনুচ্চ প্রাচীর বেষ্টিত মসজিদ চত্বরে প্রবেশের জন্য দক্ষিণ দিকের পথটি আপনি পাবেন। এ পথে প্রবেশ করলেই হাতের ডান দিকে মূল মসজিদ ও বামে শাহবাজের সমাধি ও সেই ফটকটির দেখা মিলবে।
মসজিদ
দিল্লী সালতানাতের বাহুডোর মুক্ত হয়ে সুলতানি শাসকরা বাঙলাকে স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিনত করে। কিন্তু মুঘল আমলে সেই স্বাধীনতা রহিত হয়। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের এই পরিবর্তন স্থাপত্য নকশায়ও প্রতিফলিত হতে দেখা যায়। ফলে সুলতানি আমলে যে নকশা, কাঠামো, কারুকাজ ইত্যাদি তৈরীতে দেশীয় কারিগররা স্বাধীনতা ভোগ করছিলেন মুঘল আমলে এসে তা বজায় রাখা সম্ভব হয়নি। কেননা মুঘলদের সাথে সাথে উত্তর ভারতীয় স্থাপত্য নকশা বাঙলায় প্রসার লাভ করতে শুরু করে। হাজী খাজা শাহবাজ মসজিদ এই ধারার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। অনেকে স্থাপনাটির সাথে শায়েস্তা খানী স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যের কথাও উল্লেখ করেছেন। এই মসজিদ ও মাযারের গম্বুজের দিকে লক্ষ্য করলেই এর সত্যতা বেশ বোঝা যায়। মুঘল আমলের গম্বুজগুলো সাধারনতঃ কন্দাকারে নির্মিত হতো আর তথাকথিত শায়েস্তা খানী রীতিতে এই গম্বুজের উচ্চতা সামান্য চাপা হতো। অবশ্য সকলের মনে রাখা প্রয়োজন যে, ‘শায়েস্তা খানী বৈশিষ্ট্য’ বলে স্থাপত্যকলায় আলাদা করে কিছু নেই। তবে শায়েস্তা খানের বাঙলায় দীর্ঘ সুবাহদারীত্বের সুবাদে দেশীয় ও উত্তর ভারতীয় মুঘল স্থাপত্যশৈলীর যে এক মিশেল ঘটে তাই ‘শায়েস্তা খানী বৈশিষ্ট’ নামে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে।
‘হাজী খাজা শাহবাজ মসজিদ’ নামের পাশাপাশি এই মসজিদ হাজী খোওয়াজা শাহবাজ মসজিদ, জ্বীনের মসজিদ, ৩ গম্বুজ মসজিদ, লাল মসজিদ, জোড়া মসজিদ ইত্যাদি নামেও পরিচিত। জনশ্রূতি আছে যে, জ্বীনে ধরা মানুষকে বদ জ্বীনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য এখানে নিয়ে এলেই জ্বীন আপনা আপনি পালিয়ে যায়। কি দৈব কারণে এই মসজিদে পা রাখলেই মানুষের ওপর থেকে বদ জ্বীনের আছর চলে যায় তার কোন ব্যাখ্যা দিতে পারলেন না কেউ। আরো জানতে পারলাম, হযরত হাজী খাজা শাহবাজ নাকি জ্বীনের সাথেই এই মসজিদে নামায় আদায় করতেন। মসজিদটির বহিরাভরন লাল রংয়ের হওয়ায় এর নাম লাল মসজিদ হয়। ইদানিং লক্ষ্য করছি, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা মসজিদের নাম ‘শাহবাজ খান মসজিদ’ বলে উল্লেখ করছে, ‘খান’ কোথা থেকে উদিত হল কে জানে!
আমরা জেনেছি, শাহবাজ টঙ্গীতে বসবাস করতেন, তাহলে কেনো তিনি তার বাড়ি থেকে কমপক্ষে ২২ কিলোমিটার দূরে রমনা এলাকায় এই মসজিদ নির্মাণ করলেন? জানা যায়, তিনি প্রতিদিন মাগরেবের নামায এই মসজিদে আদায় করতেন। প্রতিদিন কি তিনি টঙ্গী থেকেই মাগরেবের নামায আদায় করার জন্য এখানে আসতেন নাকি দিনের কাজ শেষ করে গদি থেকে ফেরত যাবার পথে মসজিদে আসতেন? এসব প্রশ্নের উত্তর আজ আর জানার উপায় নেই।
অনেকেই স্থাপনাটিকে শায়েস্তা খানের শাসন আমলে নির্মিত বলে দাবী করেছেন। ইতিহাস পাঠে জানা যায়, শায়েস্তা খান দু’বার বাঙলার সুবাহদার নিযুক্ত হন। প্রথমবার ১৬৬৪ খ্রীঃ থেকে ১৬৭৮ খ্রীঃ পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় দফায় ১৬৮০ খ্রীঃ থেকে ১৬৮৮ খ্রীঃ পর্যন্ত (১৬৭৮-৭৯ খ্রীঃ এক বছরের খানিকটা বেশী সময় বিরতিসহ – ঠিক যে সময় যুবরাজ আযম বাঙলার সুবাহদার নিযুক্ত হয়েছিলেন) মোট ২২ বছর বাঙলায় ছিলেন। সুতরাং নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, তার আমলে নয় বরং শাহজাদা আজমের সময়ই মসজিদটি তৈরী করা হয়েছিল।
মসজিদের কেন্দ্রীয় দরজার উপরে একটি শিলালিপি প্রথিত আছে। অবিকৃত দু’খন্ডের কাল পাথরের শিলালিপিটি নাসতালিক রীতিতে ফার্সী ভাষায় চমৎকারভাবে খোদাই করা। শিলালিপির ফার্সী ভাষার বাংলা উচ্চারনঃ
‘‘ছখ্ত হাজী খাজো শাহবাওজ ইন বানাও ইয়ে পাকর
অনকে দার রাফআত বে আরশে আযম আমবাজ ওমাদে
বার জবান আকল কুল তারিখে অন বনিয়াদে পাক
মসজিদে জিব জাহাজী খাজা শাহবাওজ ওমাদে সানাহ ১০৮৯ হিজরী”।
হরিনাথ দে, মুনশী রহমান আলী তায়েশ, ডক্টর আব্দুল করিমসহ আরো অনেকেই এই শিলালিপির ইংরেজী কিংবা বাংলা অনুবাদ করেছেন। এখানে ডক্টর আব্দুল করিমের ইংরেজী অনুবাদ তুলে ধরলামঃ
Haji Khwajha Shabaz built this holly building, which may be said to rise to the throne of Allah. Tell, by tongue that knows all things that the date of this building comes from “This is the mosque of Haji Khwajha Shabaz”; the year 1089 A.H.
তাহলে বাংলা অনুবাদ হতে পারেঃ
এই পবিত্র স্থাপনা হাজী খাজা শাহবাজ তৈরী করেছেন, আর এটা আল্লাহর আরশ পর্যন্ত যে উচুঁ তা বলা যেতে পারে। অধম বান্দার ভাষায় পবিত্র ঘর নির্মাণের তারিখ হিজরী ১০৮৯ সাল ‘এই খাজা শাহবাজের মসজিদ’-এর মাধ্যমে সুশোভিত হয়েছে।
এবার আসি মসজিদের স্থাপত্যিক বর্নণায়। মূল মসজিদটি মাটির অনুচ্চ এক মঞ্চের উপর দন্ডায়মান। আয়তকার মসজিদটি বাইরের দিক থেকে দৈর্ঘ্যে ২০.৭৩ মিটার ও প্রস্থে ৭.৯২ মিটার, দেওয়ালের পুরুত্ব প্রায় ১.২২ মিটার। দেখুন চার কোণায় ৪টি বুরুজ আছে যেগুলো ছাদবেড়ি পর্যন্ত অষ্টকোণাকার এবং এর উপর থেকে গোলাকার রূপ ধারন করে ছাদ ছাড়িয়ে বেশ খানিকটা উপরে উঠে গেছে। প্রতিটি বুরুজ নিয়মিত বিরতিতে আলংকরিক পট্টি দ্বারা নকশা করা আর চুঁড়াদন্ড শিরাল নিরেট অণুগম্বুজ দিয়ে সজ্জিত। বুরুজগুলোতে কারুকাজ করা পট্টি ও ছাদবেড়িতে ‘মার্লন’ নকশায় শোভিত। পূর্ব দেওয়ালের কেন্দ্রীয় দরজার দু’পাশে ও উভয় পাশের দরজার অপর পাশে আরও দু’টি মোট ৪টি, উত্তর ও দক্ষিণ পাশের দরজার দু’পাশে দু’টি এবং পশ্চিম দেওয়ালে পূর্ব দেওয়ালের ন্যায় ৪টি সরু বুরুজ কার্ণিশের সামান্য উপরে উঠে শেষ হয়েছে।
আঙ্গিনা অতিক্রম করে মসজিদে প্রবেশ করার জন্য পূর্ব দেওয়ালে ৩টি বহুপত্র বিশিষ্ট খিলান দরজা আছে। মাঝেরটি তুলনামূলক বড় এবং কাল পাথরের চৌকাঠ দিয়ে গঠিত। পাশের ২টি মাঝেরটি থেকে খানিকটা ছোট। ৩টি প্রবেশপথই পরপর ২টি খিলান দ্বারা গঠিত। পূর্ব-দেওয়ালের খিলানগুলো সামনের দিকে সামান্য অভিক্ষিত, খাঁজকাটা ও ভিতরের দিকের তুলনায় একটু উঁচু আর ভিতরেরগুলো চারকোণাকার। উত্তর ও দক্ষিণ দেওয়ালে ১টি করে খিলানাকৃতির প্রবেশপথ আছে। পশ্চিম দেওয়ালের ভিতরের দিকে পূর্ব-দেওয়ালের খিলানপথগুলোর মুখোমুখি ৩টি মিহরাব রয়েছে। কেন্দ্রীয় মিহরাবটি বড় এবং বাইরের দিকে উৎগত। এর পাশে ইসলামিক চিরায়ত ধারায় ৩ ধাপবিশিষ্ট একটি মিম্বার আছে। মিম্বারটি কাল পাথরের তৈরী এবং এর সর্বোচ্চ ধাপটি সারিবদ্ধভাবে ফুলেল নকশা কাটা। কেন্দ্রীয় মিহরাব ও প্রবেশপথের অভিক্ষিত কাঠামোর উভয়পাশে ছোট ঠেসবুরুজ ছাদবেড়ি ছাড়িয়ে উপরে উঠে গেছে এবং চুঁড়াদন্ড কলশ ও ছোট গম্বুজ দ্বারা সজ্জিত। ঠেসবুরুজগুলোর ভিত্তি কলশ নকশায় শোভিত। মিহরাব খিলানের খিলান গর্ভ বর্শা ফলক নকশায় সজ্জিত এবং ফুলেল নকশা কাটা। মিহরাব ও খিলানপথ বাদ দিলে এই মসজিদের গায়ে মুঘল স্থাপত্যবৈশিষ্ট্য খিলান খোপ/ আয়নাখোপী নকশার পলেস্তরা করা। প্রত্যেক দরজার উপর সুন্দর খাঁজকাটা ও দরজার সর্বোচ্চ অংশ পত্রাকারে শেষ হয়েছে। মসজিদে পাথর ব্যবহার করা হয়েছে, যেমন ভিত্তির সামনের দেওয়ালের নীচে অলংকৃত পাথর বসানো আছে। প্রতিটি দরজার সামনে মেঝের খানিকটা অংশে পাথর বসানো এবং চৌকাঠ যে পাথরের তৈরী তা আগেই উল্লেখ করেছি কিন্তু মসজিদের স্থায়ীত্ব বাড়ানোর জন্য দেওয়ালেও নাকি পাথরের প্রলেপ দেওয়া ছিল – বিষয়টি আমি নিশ্চিত হতে পারিনি। এই মসজিদে প্রচলিত কোন কুলুঙ্গি ও জানালা ব্যবহার করা হয়নি।
এবার চলুন মসজিদের নামাজ কক্ষটি ভালভাবে দেখে নেই। ইটের জোড়া-স্তম্ভ থেকে উপরের দিকে উঠে একটি প্রশস্থ আড়াআড়ি খিলান মসজিদের ভিতরের অংশকে ৩টি বর্গাকার (প্রতি বাহুর পরিমাপ ৫.১৮ মিটার) অংশে বিভক্ত করেছে। প্রতিটি অংশের উপর ১টি করে মোট ৩টি গম্বুজ রয়েছে। ঢাকায় অবস্থিত ৩ গম্বুজ মসজিদের দু’ধরনের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়ঃ এর প্রথমটি যার ৩টি গম্বুজই সমান আকার-আকৃতির ও দ্বিতীয়টি যার মাঝের গম্বুজটি অপর দু’টি থেকে তুলনামূলক বড়। বোঝাই যাচ্ছে এই মসজিদ প্রথম ধরনটির সাথে মিলে যায়। মূলতঃ এই ধারার ঢাকায় এটিই একমাত্র মসজিদ। তবে দেশের অন্যান্য অঞ্চল যেমনঃ চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের ফিরোজপুর গ্রামের শাহ নেয়ামত উল্লা ওলী মসজিদ (স্থাপিতঃ ১৮ শতকের মধ্যভাগ), বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের খন্দকারটোলা গ্রামের খন্দকারটোলা মসজিদ (স্থাপিতঃ ১৬৩২ খ্রীঃ), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা সদরের আরিফাইল গ্রামের আরিফাইল মসজিদের (স্থাপিতঃ ১৬৬২ খ্রীঃ) সাথে এর মিল রয়েছে। অনু্চ্চ কাঁধযুক্ত ড্রামের উপর স্থাপিত এই সব গম্বুজের উপর পদ্ম ও কলশ চুঁড়া রয়েছে। কেন্দ্রীয় গম্বুজের ভিতরের ভিত্তিমূলে কোণা বের হওয়া ইটের অভিক্ষেপ ও এর উপর প্যাঁচানো দড়ির মত নকশা করা হয়েছে। গম্বুজ কেন্দ্রে স্তরীকৃত রোজেট নকশা দেখতে পাওয়া যায়।
আড়াআড়িভাবে স্থাপিত খিলানগুলির ভার-বহনকারী জোড়া-স্তম্ভ ও মিহরাব খিলানের খিলান গর্ভের বর্শা ফলক নকশা এই মসজিদকে বিশেষ বৈশিষ্ট্য দিতে সক্ষম হয়েছে। কেননা জোড়া-স্তম্ভ ও বহু-খাঁজ সম্বলিত খিলান উত্তর-ভারতীয় মুঘল স্থাপত্যরীতিতে দৃশ্যমান। আর এখানে যে তা অনুকরণ করা হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ভারতের উত্তর প্রদেশ অঙ্গরাজ্যের আগ্রা জেলার রাজধানীতে অবস্থিত আগ্রা দূর্গে মুঘল সম্রাট শাহজাহানের (রাজত্বকালঃ ১৬২৮-১৬৫৮ খ্রীঃ) ‘খাস মহল’ কিংবা ভারতের বর্তমান রাজধানী দিল্লী দূর্গে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের পৃষ্টপোষকতায় নির্মিত ‘মতি মসজিদ (স্থাপিতঃ ১৬৬২ খ্রীঃ)’-এ একই স্থাপত্য-নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায়। বাংলাদেশে শুধু এই মসজিদেই নয় বরং শাহ নেয়ামত উল্লা ওলী মসজিদ, ঢাকার রমনা থানার অন্তর্গত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের উত্তর-পশ্চিম কোণায় অবস্থিত মুসা খান/খাঁর মসজিদ (স্থাপিতঃ অনির্ধারিত), মোহাম্মদপুরের সাতগম্বুজ মসজিদ (স্থাপিতঃ ১৬৮০ খ্রীঃ), ৬২ বেগম বাজার রোডের বেগমবাজারের বেগম বাজার জামে/করতলব/কারতালাব খানের মসজিদ (স্থাপিতঃ ১৭০১-১৭০৪ খ্রীঃ) ও লালবাগ থানার লালবাগ কেল্লার লালবাগ মসজিদ/লালবাগ কেল্লা মসজিদের(স্থাপিতঃ ১৬৫৯ খ্রীঃ) স্থাপত্য নকশায়ও হাজী খাজা শাহবাজ মসজিদের স্থাপত্যরীতি প্রতিফলিত হয়েছে।
বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে ‘বেচারাম দেউড়ির’ জগসা সাহেব এই মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন।
সমাধি
মসজিদ চত্বরের উত্তর-পূর্ব কোণে হাজী খাজা শাজবাজের সমাধি অবস্থিত। তার এই সমাধি ‘মাযার’ কিংবা ‘দরগা’ নামেও অনেকের কাছে পরিচিত। তিনি বেঁচে থাকতেই এই মসজিদ ও সমাধি নির্মিত হয়েছিল বলে বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা যায়। সমাধিসৌধটি দেখতে মসজিদের মত বলে অনেকেই এখানে ২টি পাশাপাশি মসজিদ থাকার কথা উল্লেখ করেছেন। আর সেখান থেকেই এই মসজিদের নাম জোড়া মসজিদ নামে কখন কখন বলা হয়েছে। তবে এই সমাধি বাংলার সমাধি-স্থাপত্যে বিশেষ স্থান দখল করে আছে এই কারনে যে, ‘বর্গাকৃতির সমাধি কক্ষের দক্ষিণে সংযোজিত বারান্দা’র ধারায় সারা বাংলাদেশে মাত্র ২টি স্থাপনায় এমন বারান্দা সংযুক্ত আছে। একটি হল এই সমাধিটি আর অপরটি হল ঢাকার মোহাম্মদপুর থানার মোহম্মদপুর জামে মসজিদ সংলগ্ন ‘দারা বেগমের মাযার’। আসলে ঢাকায় মুঘল সমাধিসৌধকে ৩ ভাগে ভাগ করা যায়, প্রথমতঃ ১ গম্বুজ বিশিষ্ট বর্গাকার সমাধি, দ্বিতীয়তঃ ১ গম্বুজ বিশিষ্ট বর্গাকার সমাধি কক্ষের দক্ষিণে সংযোজিত বারান্দাওয়ালা সমাধি ও তৃতীয়টিঃ ১ গম্বুজ বিশিষ্ট বর্গাকার সমাধি কক্ষের চারপাশে বারান্দাওয়ালা সমাধি।
উচুঁভূমির উপর বর্গাকার (প্রতিবাহু প্রায় ৭.৯২ মিটার পরিমাপের) মনোরম ১ গম্বুজ সমাধি কক্ষের মাঝখানে মৃত্যূর পর তাকে সমাধিস্থ করা হয়। মূল কবরের উপর ৩ ধাপবিশিষ্ট নকল আরেকটি যে কবর তৈরী করা হয়েছে আমরা তাই এখন দেখতে পাই। সমাধির সামনের দিকে ৩টি ও পূর্ব ও পশ্চিম দিকে ১টি করে খিলান পথ ছিল। বর্তমানের দক্ষিণ দিকের বারান্দার সাথে একটি প্রশস্ত প্রবেশপথ ব্যবহার করা হচ্ছে। এই প্রবেশপথটি সামনের দিকে খানিকটা প্রসারিত। সামনের দিকের মাঝের প্রবেশ পথটি এখনো দেখতে পাওয়া যায়, তবে পাশের পথগুলো দেওয়াল তুলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। খিলানপথের দু’পাশের দেওয়াল প্যানেল দ্বারা অলংকৃত এবং বারান্দার পূর্ব ও পশ্চিম দিকে দু’টি খিলান জানালা আছে।
৪ কোণায় ৪টি অষ্টকোণাকার বুরুজ আছে। বুরুজগুলো ছাদবেড়ি ছাড়িয়ে উপরে উঠে গেছে। নিয়মিত ব্যবধানে আলংকারিক পট্টি দ্বারা সজ্জিত। নিরেট চুঁড়াদন্ড মুঘল রীতির ছত্রী ও কলশ নকশায় সজ্জিত। ছাদের ছাদবেড়ি মার্লন নকশায় শোভিত। সমাধির চারপাশের দেওয়াল ও ভিতরের দিকে পলেস্তরার আয়নাখোপী নকশাকাটা। সমাধি কক্ষের দক্ষিণ পাশে যে বারান্দাটির কথা আগে উল্লেখ করেছি তা দোচালা একটি কুঁড়েঘর আকৃতির। অত্যন্ত সুন্দর এই বারান্দা বেগম বাজার জামে/করতলব/কারতালাব খান মসজিদের ইমামের বাসস্থানের সাথে মিল রয়েছে। বারান্দাটি প্রায় সাড়ে ৩ মিটার পরিমান চওড়া। এই বারান্দার ছাদ ও সামনের দেওয়াল ভেঙ্গে পড়ার পর সংস্কার করা হয়েছে।
সমাধির ভিতরের অংশে উত্তরের দেওয়ালে একটি মিহরাব আছে। ভিতরের অংশে সুন্দর প্যানেলিংয়ের কারুকাজ দেখতে পাওয়া যায়। ছাদের উপরের গম্বুজটি অষ্টভূজাকার একটি ড্রামের উপর স্থাপিত। গম্বুজের উপরের অংশ পদ্ম ও কলশ চুঁড়া দ্বারা শোভিত। তবে গম্বুজটি সংস্কারের আগে মার্লন ও আরবীয় নকশায় সুসজ্জিত ছিল বলে জানা যায়।
সমাধির পিছনের দিকে আরো কিছু ইমারতের সন্ধান পাওয়া যায়, ধারনা করা হয় সেখানে মসজিদের খাদেম/তত্ত্বাবধায়করা বসবাস করতেন। এখনো প্রধান ফটক লাগোয়া স্থানে অপরিকল্পিত ও অস্থায়ী বাড়ীঘর তৈরী করা হয়েছে, এই বাড়ীটি এখানে শুধু যে বেমানান আর বেক্ষাপ্পা তাই নয় বরং দৃষ্টিকটুও বটে।
মুঘল স্থাপত্য বৈশিষ্টানুযায়ী মসজিদ, প্রধান ফটক ও সমাধিসৌধের নির্মাণ সামগ্রী হিসাবে ইট, চুন সুরকির মশলা এবং এই মশলা ব্যবহার করে দেওয়ালে প্রলেপ ও তার উপর সাদা চুনকামের কাজ করা ছিল। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক ঢাকার সংরক্ষিত ৯৩টি স্থাপনার মধ্যে এটিও একটি। যতটা সম্ভব আদি কাঠামো ঠিক রেখে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এ স্থাপনা ২০১৪ খ্রীঃ সংস্কার করে বর্তমান রূপ দিয়েছে। ৪ কাতারের এই মসজিদে এখানো নিয়মিত ওয়াক্তিয়া নামায আদায় করা হয়। পাশাপাশি প্রতি রবিবার সকালে সুফি সাধক হযরত মাওলানা আজামগাছি (রহঃ) কর্তৃক প্রবর্তিত বিশ্বজনীন উরসেকুল মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
প্রায় সাড়ে ৩শ বছরের পুরোনো এই মসজিদের পশ্চিম দিকে রাস্তার উপর মীর জুমলা গেট/রমনা গেট/ ময়মনসিংহ গেট/ঢাকা তোরন নামে আরেকটি প্রাচীন স্থাপনা রয়েছে। আর এই গেটের দেওয়াল ঘেঁষে আছে ঘুঁটেওয়ালীর মাযার। সেসব কথা আরেকদিন হবে।
উপসংহার
বাঙলার প্রথম মুঘল সুবাহদার ও ঢাকার মুঘল শাসন প্রতিষ্ঠাকারী ইসলাম খাঁর মরদেহ ‘জাহাঙ্গীর নগরস্থ ‘‘বাগ-ই-শাহী” উদ্যানে আনা হয় এবং সেখানেই তাকে দাফন করা হয়’। অপরদিকে ১৯০৫ খ্রীঃ বঙ্গভঙ্গের পর রমনা এলাকার জঙ্গল পরিষ্কার করে ও অসংখ্য কবর স্থানান্তর করে বর্তমান রমনাকে আধুনিকরূপ দেওয়া হয়। কবর থাকার কারণেই কিনা জানি না তবে নিরিবিলি, শান্ত, গাছ-গাছালিতে ঘেরা ঢাকা শহরের কোলাহলময় যান্ত্রিক হাঙ্গামায় জীবন যখন জেবরার, নাজেহাল তখন শাহবাজ মসজিদের পার্থিব সুনসান নীরবতা আপনাকে ক্ষণিকের তরে হলেও পরম শান্তি দিবে – এ আমি হলফ করে বলতে পারি।
———————————————————————————————————————————————
১১ জানুয়ারী ২০১৯ খ্রীঃ
mamun.380@gmail.com
ঢাকা-১২৩০
তথ্যসূত্রঃ
বই
১. ৬৪ জেলা ভ্রমণ, লিয়াকত হোসেন খোকন, অনিন্দ্য প্রকাশ, ফেব্রূয়ারী ২০০৭ খ্রীঃ, পৃঃ ৬৩/৭১/
২. ঐতিহাসিক ঢাকা মহানগরীঃ বিবর্তন ও সম্ভাবনা, সম্পাদনাঃ ইফতিখার-উল-আউয়াল, ডিসেম্বর ২০০৩ খ্রীঃ, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, পৃt ৩৩৬-৩৩৭/
৩. ঢাকা অভিধান, খন্দকার মাহমুদুল হাসান, ফেব্রূয়ারী ২০১৪ খ্রীঃ, ঐতিহ্য, পৃঃ ১৪৪/
৪. ঢাকা ইতিহাস ঐতিহ্য, এ কে এম শাহনাওয়াজ, প্রথম প্রকাশ ফেব্রূয়ারী ২০১৮ খ্রীঃ, নভেল পাবলিশিং হাউজ, পৃঃ ১১০-১১১/
৫. ঢাকা পুরান, মীজানুর রহমান, প্রথমা, জানুয়ারী ২০১১ খ্রীঃ, পৃঃ ১১০-১১১/
৬. ঢাকার কথা, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, পৃt ৪৮/
৭. ঢাকার খেরোখাতা ইতিহাস ও ছবিতে, মুন্সী আরমান আলী, জ্ঞান বিতরণী, অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৪ খ্রীঃ, পৃt ৯১-১০১/
৮. ঢাকার পুরোনো কথা, মনোয়ার আহমদ, মাওলা ব্রাদার্স, জুন ২০০৮ খ্রীঃ, পৃঃ ৪৮/
৯. ঢাকাঃস্মৃতি বিস্মৃতির নগরী, মুনতাসীর মামুন, ১৯৯৩ খ্রীঃ, অনন্যা, পৃঃ ৬৫/
১০. তাওয়ারিখে ঢাকা, মুনশী রহমান আলী তায়েশ, অনুবাদঃ এ.এম.এম. শরফুদ্দীন, পৃt ১৬৯/
১১. প্রাচীন বাংলার আনাচে কানাচে, খন্দকার মাহমুদুল হাসান, পার্ল পাবলিকেশন্স, একুশে বই মেলা ২০০৯ খ্রীঃ, পৃঃ ২৩২/
১২. প্রাচীন বাংলার পথে প্রান্তরে, খন্দকার মাহমুদুল হাসান, পার্ল পাবলিকেশন্স, একুশে বই মেলা, ২০০৭ খ্রীঃ, পৃঃ ২৪৭/
১৩. পর্যটন নগরী ঢাকা, কাজী জিলহাজ, ফেব্রূয়ারী ২০১৪ খ্রীঃ, ন্যাশনাল পাবলিকেশন, পৃঃ ৩৭/
১৪. বাঙলাদেশের প্রত্নসম্পদ, আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া, দিব্যপ্রকাশ, ১৯৮৪ খ্রীঃ, পৃঃ ৩৭-৩৯/৫৪৫-৫৪৬/
১৫. বাহারীস্তান-ই-গায়বী, মির্জা নাথান, খালেকদাদ চৌধুরী অনূদিত, ফেব্রূয়ারী ২০০৪ খ্রীঃ, দিব্যপ্রকাশ, পৃঃ ২০৩/
১৬. বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য, রওশন আরা রুশনী, অমর একুশে বইমেলা ২০১৭ খ্রীঃ, জিনিয়াস পাবলিকেশন্স, পৃঃ ৩৭-৩৯/
১৭. বাংলাদেশের জেলা-উপজেলার নামকরণ ও ঐতিহ্য, মোহাম্মদ নূরুজ্জামান, মাওলা ব্রাদার্স, মার্চ ২০০৭ খ্রীঃ, পৃঃ ১৯৫/
১৮. বাংলাদেশের মসজিদ, হাসান জুবায়ের, ফেব্রূয়ারী ২০১৬ খ্রীঃ, কলি প্রকাশনী, পৃঃ ৪৭-৪৯/
১৯. বাংলাদেশের মুসলিম পুরাকীর্তি, ড. সৈয়দ মাহমুদুল হাসান, মাওলা ব্রাদার্স, ফেব্রূয়ারী ২০০১ খ্রীঃ, পৃঃ ১৩০-১৩২/
২০. বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, এ কে এম শাহনাওয়াজ, নভেল পাবলিশিং হাউজ, মার্চ ২০০৯ খ্রীঃ, পৃঃ ৭৭/
২১. বরেন্দ্র অঞ্চলে মুসলিম ইতিহাস-ঐতিহ্য, ড. এ কে এম ইয়াকুব আলী, পৃঃ ১৭১/
২২. বৃহত্তর ঢাকার প্রাচীন কীর্তি, আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া, দিব্যপ্রকাশ, ফেব্রূয়ারী ২০১০ খ্রীঃ, পৃঃ ১৬১ – ১৬৩/
২৩. মসজিদনগরী ঢাকা, ড. সৈয়দ মাহমুদুল হাসান, বইমেলা ২০১৩ খ্রীঃ, কালিকলম প্রকাশনা, পৃঃ ৪২-৪৩/
২৪. সিভিলিয়ানদের চোখে ঢাকা, মুনতাসীর মামুন, ফেব্রূয়ারী ২০০৩ খ্রীঃ, সময়, পৃঃ ৪৫/৬০/৮২/
২৫. সেকালের ঢাকা, খন্দকার মাহমুদুল হাসান, শোভা প্রকাশ, একুশে বইমেলা ২০১২ খ্রীঃ, পৃঃ ৩৮/
২৬. হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি, গোলাম মুরশিদ, অবসর, জানুয়ারী ২০০৬ খ্রীঃ, পৃঃ ৪১৬/
২৭. DHAKA A record of Its Changing Fortunes, Ahmad Hasan Dani, Editor Abdul Momin Chowdhury, First Edition 1956, Asiatic Society of Bangladesh, পৃঃ ১৫৩-১৫৬/
২৮. DHAKA PAST PRESENT FUTURE, Editor Sharif Uddin Ahmed, পৃঃ ৪৭/৩৩০/৩৩১/৩৩২/৩৩৪/৩৪০/ ৩৫৩/৩৬০/৩৬৬-৩৬৭/৩৬৯-৩৭০/৩৭৪-৩৭৫/৩৭৭-৩৭৮/৩৮০/
পত্র-পত্রিকা
১. ৩৩৮ বছরের শাহবাজ মসজিদ, শরিফুল হাসান, ২৮ এপ্রিল ২০১৭ খ্রীঃ, দৈনিক প্রথমআলো/
২. ৪০০ বছরের উদ্যান, ১৫ জুন ২০১৩ খ্রীঃ, দৈনিক প্রথমআলো/
৩. অনন্য স্থাপত্যশৈলীর প্রাচীন মসজিদ, গোলাম আশরাফ খান উজ্জ্বল, ১১ জুলাই ২০১৫ খ্রীঃ, দৈনিক সমকাল/
৪. আমাদের প্রত্নসম্পদ আমাদের অহংকার, সৈয়দ আবুল মকসুদ, ০৯ মার্চ ২০১১ খ্রীঃ, দৈনিক প্রথমআলো/
৫. কালের স্বাক্ষী ঢাকার হাজী শাহবাজ জামে মসজিদ, আসাদুল ইসলাম, ২২ অক্টোবর ২০১১ খ্রীঃ, দৈনিক সংগ্রাম/
৬. গৌরবময় স্মৃতি শাহবাজের মসজিদ, আশীষ-উর-রহমান, ২১ মে ২০১০ খ্রীঃ, দৈনিক প্রথমআলো/
৭. ঢাকার ৯৩টি স্থাপনা ও সাত এলাকা সংরক্ষিত ঘোষণা, কয়েকটি নষ্ট করা হয়েছে, কিছু বেদখল, দৈনিক প্রথম আলো, ২৩ মার্চ ২০০৯ খ্রীঃ/
৮. ঢাকার সংরক্ষিত স্থাপনার কয়েকটি, ২৩ মার্চ ২০০৯ খ্রীঃ, দৈনিক প্রথমআলো/
৯. নতুন রূপে পুরনো ঐতিহ্য, ফটোফিচার, ১০ নভেম্বর ২০১৪ খ্রীঃ, দৈনিক ইত্তেফাক/
১০. মসজিদের গায়ে ঢাকার ইতিহাস, মিল্লাত হোসেন, কাওছার শাকিল ও আজহার হোসেন, ২৯ আগষ্ট ২০১০ খ্রীঃ, দৈনিক প্রথমআলো/
১১. রমনা গেট, রণদীপ বসু, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১১, দৈনিক ইত্তেফাক/
উম্মুক্ত উৎস
১. উইকিপিডিয়া/বাংলাপিডিয়া/
২. জীবিত অবস্থায় নির্মিত হাজী শাহবাজের মসজিদ ও মাজার, মাহিদা মৌ, ট্রিপ জোন, জুলাই/আগষ্ট ২০১৮ খ্রীঃ/
৩. ঢাকার কথা ২৯ মোঘল স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্য ও হাজী খাজা শাহবাজ মসজিদ, অধ্যাপক এ কে এম শাহনাওয়াজ, ১৯ মার্চ ২০১৬ খ্রীঃ, এনটিভিঅনলাইন/
৪. যে মসজিদের আঙিনায় এলেই পালায় জিন!, সাখাওয়াত আল আমিন, ১০ নভেম্বর ২০১৭ খ্রীঃ, চ্যানেলআইঅনলাইন.কম/
অসাধারণ হয়েছে লেখাটি, অনেক তথ্য বহুল আমার গোছালো লেখা।
ধন্যবাদ
তথ্য সেবা
আপনার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
ঐতিয্য গুলোকে এত সহজ ও সুন্দর ভাবে তুলে ধরার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আপনার সুন্দর মন্তব্যে অনুপ্রেরণা পেলাম। আপনাকে ধন্যবাদ।