প্রাগৈতিহাসিক যুগের দোয়াঁশ মাটির ভূমি দ্বারা গঠিত বরিশাল বাংলাদেশের একটি অতি প্রাচীন স্থান। সে সময় গঙ্গার মোহনায় মোদকলিঙ্গ নামের যে দ্বীপ ছিল পন্ডিতরা মনে করেন বরিশালের আদি নামের অস্তিত্ব এই মোদকলিঙ্গ দ্বীপ-এর মধ্যে নিহিত। বর্তমানে গৌরনদী উপজেলার মেদাকুল গ্রাম আর মোদকলিঙ্গ দ্বীপ অভিন্ন – এমনটাই ধারনা বিশেষজ্ঞদের। আামরা দেখা পাই, ৩২৬ খ্রীঃপূঃ ম্যাসিডনের আর্গিয়াদ রাজবংশের ৩য় আলেকজান্ডার যখন ভারত অভিযান করেন তখনও বরিশাল একটি জনপদ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত। অন্যদিকে, মিশরের টলেমেইস হারমিওউ শহরে জম্মগ্রহণকারী বিখ্যাত গ্রীক ভূগোলবিদ, জ্যোতির্বিদ, গণিতজ্ঞ ও জ্যোতিষি ক্লডিয়াস টলেমিয়াস (টলেমি নামেই যিনি অধিক পরিচিত) প্রণীত ১৫০ খ্রীঃ মানচিত্রেও এ অঞ্চলের ভূভাগ নির্দেশিত হতে দেখা যায়। আবার বঙ্গের সেন বংশের দ্বিতীয় রাজা বল্লাল সেনের (১১৫৮ খ্রীঃ – ১১৭৯ খ্রীঃ) উত্তরসূরী রামনাথ দে যিনি দনুজমর্দন উপাধি ধারন করে দনুজমর্দন দেব (রাজত্বকাল ১৩৪২ খ্রীঃ – ১৩৩৯ খ্রীঃ) নামে আমাদের সকলের কাছে অতি পরিচিত তিনি তার গুরু চন্দ্রশেখর চক্রবর্তীর নামে মোদকলিঙ্গ দ্বীপের নাম ‘চন্দ্রদ্বীপ’ রাখেন – আমাদের ইতিহাসে এমন অসমর্থিত সূত্রের সমার্থন রয়েছে।
সেই সময়, উত্তরে ঢাকা জেলার ইছামতি নদী, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে মেঘনা নদীসহ খুলনা, সন্দীপ, নোয়াখালী, হাতিয়া, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, কোটালীপাড়া, বাগেরহাট ইত্যাদি বিস্তৃত অঞ্চল/ভূভাগ চন্দ্রদ্বীপ রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত হয়। চন্দ্রদ্বীপের প্রথম রাজধানী গোবিন্দপুর (বাকেরগঞ্জ) সোনারগাঁওয়ের সুলতানদের চাপে পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার কচুয়া নামক স্থানে স্থানান্তরিত হয়। নতুন এই রাজধানীর নাম রাখা হয় বাঙ্গালা। ইতিহাস স্বাক্ষ্য দেয়, বিখ্যাত এক ‘বাঙ্গালা’র কথা যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকেন্দ্র ও বন্দর হিসাবে সর্বমহলে স্বীকৃতি পেয়েছিল। মনে করা হয়, বাঙ্গালা আর বাকলা অভিন্ন। বৃহত্তর বরিশাল অঞ্চল ‘বাকলা-চন্দ্রদ্বীপ’ নামেও বিশেষ করে মোঘলামলে পরিচিত ছিল যা আইন-ই-আকবরী গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে। আরবী বাকলা শব্দের অর্থ শষ্য ব্যবসায়ী – হতে পারে আরব বনিকদের দ্বারা বাঙ্গালা বাকলা নাম ধারন করে। যাহোক, সেন বংশীয় মহান এই রাজা দনুজমর্দন দেব খ্রীঃ ১৪ শতকে চন্দ্রদ্বীপ নামের এক স্বাধীন রাজ্য ও রাজবংশের সূচনা করেন। ইতিহাসে সুবিখ্যাত এই রাজা, তার নিজ রাজ্যের নের্তৃত্বের পাশাপাশি কুলীন কায়স্থগণের ‘বাকলা সমাজ’ প্রতিষ্ঠা করেন ও এই সমাজের গোষ্ঠীপতি নির্বাচিত হন।
চন্দ্রদ্বীপ রাজবংশের ৯ম উত্তরসূরী এবং বাংলার বার ভূঁইয়ার অন্যতম রাজা কন্দর্পনারায়ন বসু (১৫৮৪ খ্রীঃ – ১৫৯৮ খ্রীঃ) পর্তুগীজ আর মগ দস্যুদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে কিংবা তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙ্গনের কারণে এবং জলোচ্ছ্বাসে পিতা জগদানন্দের মৃত্যূ ইত্যাদি কারণে চন্দ্রদ্বীপের রাজধানী ৩য় ও এই রাজবংশের রাজত্ব্যের সময় শেষবারের মতো বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশায় স্থানান্তর করে নতুন রাজধানীর নাম রাখেন ‘শ্রীনগর’। তিনি তার ১৪/১৫ বছরের রাজত্বকালে নতুন এই রাজধানীতে তৈরী করেন রাজবাড়ি আর রাজবাড়িকে ঘিরে মন্দির, দিঘী ও অন্যান্য স্থাপনা। কালের গর্ভে সে সবই আজ অস্তিত্বহীন। তবুও কালের স্বাক্ষী হয়ে এখনও রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ ও কিছু কিছু দিঘী কোনো ভাবে টিকে আছে।
এই রাজ বংশের ১৫তম উত্তর-পুরুষ শিব নারায়ণ মিত্র (১৭৬৯ খ্রীঃ – ১৭৭৭ খ্রীঃ)। শিব নারায়ণের মহিয়ষী দূর্গাবতী (মৃত্যু – ১৮১৩ খ্রীঃ)। দূর্গাবতীর স্বামী জমিদার শিব নারায়ণ মানসিক প্রতিবন্ধী ছিলেন এবং তার অকাল মৃত্যু হলে তাদের ছেলে লক্ষীনারায়ণ রাজা হন। লক্ষীনারায়ণেরও যখন অকাল মৃত্যু হয় তখন রাজ্য পরিচালনার ভার অর্পিত হয় রাণী দূর্গাবতীর উপর। এই সময় রাণী দূর্গাবতী গর্ভবতী ছিলেন এবং অল্পকাল পরেই জয়নারায়ণ নামে এক পুত্র সন্তানের জম্ম দেন। রাজা জয়নারায়ণ (১৭৭৮ খ্রীঃ – ১৮১৩ খ্রীঃ) নাবালক থাকায় রাণী দূর্গাবতীই কার্যত রাজ্য পরিচালনা করতে থাকেন। এই সময় অর্থাৎ নবাবী আমলে চন্দ্রদ্বীপের নাম মুঘল ‘আগা বাকেরের’ নামে ‘বাকেরগঞ্জ’ ও পরে বৃটিশ দখলদ্বারিত্বের সময় প্রধান লবন কারবারের কারণে ‘বরি-সল্ট’ হতে ‘বরিশাল’ নামকরণ করা হয়।
বরিশাল থেকে বানরীপাড়া – স্বরূপকাঠি রাস্তা ধরে এগোলে মাধাবপাশা গ্রাম – গ্রামের পশ্চিমে শ্রীপুর, পূর্বে কলাডেমা, উত্তরে পাংশা আর দক্ষিণে শোলনা ও ফুলতলা গ্রাম। জনশ্রূতি বলে, রাজা শিব নারায়ণ প্রজা সাধারনের জল কষ্ট নিবারনের জন্য এই গ্রামগুলোর মধ্যখানে একটি দিঘী খনন করেন। আবার অনেকের মত হলো, রাজা রাণীর সন্তুষ্টি কিংবা প্রেমের নিদর্শনস্বরূপ দিঘী খননের সিদ্ধান্ত নেন। সে মোতাবেক, রাজা রাণীকে পিছনে না ফিরে এক রাতে/সকাল-সন্ধ্যা যতদূর হেঁটে যেতে পারবেন সেই পরিমান জায়গা জুড়ে দিঘী কাটা হবে বলে প্রতিশ্রূতবদ্ধ হন। কথা মতো রাণী হাঁটছেন তো হাঁটছেনই, থামার নাম নেই, হঠাৎ রাণী পিছন থেকে ঘোড়ার ডাক/রাজ কর্মচারীদের ঢাকের আওয়াজ শুনতে পেলেন – থামলেন তিনি। কিন্তু ততক্ষনে রাণী ৬১ কানি পরিমান জায়গা হেঁটে ফেলেছেন। প্রতিশ্রূতি অনুযায়ী রাজার ইচ্ছা আর চারিদিকের গ্রামের হাজার হাজার মানুষের স্বেচ্ছাশ্রমের বিনিময়ে দিঘী ১৭৮০ খ্রীঃ/১১৮৭ বঙ্গাব্দে খনন করা হয়।
প্রায় ৬ মাস ধরে ৩ লাখ টাকা ব্যায় করে দিঘী খনন করা হলো। স্বেচ্ছাশ্রমের পাশাপাশি খনন শ্রমিকদেরকে মুজুরী হিসাবে কড়ি প্রদান করা হয়। জনশ্রূতি আরো বলে, দিঘীতে পানি না ওঠার কারণে রাণীকে দিঘীর জলে আত্মাহুতি দিতে হয়েছিল। আত্মহুতির কালে রাণীর কোলে যে শিশু পুত্র ছিল রাজা তাকে নিয়ে বিপাকে পড়েন। কে দেখবে, কে দুধ দিবে, কে দিবে এই শিশুর মায়ের স্নেহ-মমতা-আদর! কিন্তু সমস্যার খানিকটা লাঘোব হলো যখন দাইমা শিশুটিকে নিয়ে দিঘীর পাড়ে বেড়াতে আসতেন তখন জলের ভিতর থেকে রাণী উঠে এসে কৌশলে তার সন্তানকে প্রতিদিন দুধ পান করাতেন এবং সকলের অগোচরে আবার উধাও হয়ে যেতেন। বিষয়টি প্রথমে দাইমা ও পরে রাজার নজরে এলে পর রাজা একদিন চালাকি করে রাণী যখন বাচ্চাকে দুধ পান করাচ্ছিলেন তখন দেখে ফেলেন বা দেখার জন্য জোর-জবরদস্তি করেন। সেই থেকে রাণী আর জল থেকে উঠেন নাই। যাহোক, রাণীর নামে দিঘীর নাম হয় ‘দূর্গাসাগর’ তবে কেউ কেউ ‘মাধবপাশা দিঘী’ বলেও জানেন।
দিঘী উদ্ভোধন অনুষ্ঠান বেশ আড়ম্বরের সাথে উৎযাপন করা হয়েছিল বলেই মনে হয়। নানা শ্রেণি-পেশার বিভিন্ন পদ ও মর্যাদার অতিথিদের সাথে ব্রাহ্মণদেরকেও নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল। তবে অনুষ্ঠানের আগে রাজ পরিবারের এক বৃদ্ধার মৃত্যু ঘটে বলে শোনা যায়, আর তার ফলে যথাসময়ে উক্ত অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু অনুষ্ঠানে আগত পতিত ব্রাহ্মনদের পরবর্তী উৎসর্গের দিন পর্যন্ত রাজবাড়ি থেকে পর্যাপ্ত জল-খাবার, আদর-আপ্যায়নের কোনো ত্রূটি করা হয়নি।
তেরছাভাবে উত্তর-দক্ষিণে দীর্ঘ এই দিঘীর মোট আয়তন ৪৫.৫৫ একর/২.৫ বর্গকিলোমিটার। শুধু জলকরের আয়তন ২৭.৩৮ একর। দিঘীর পাড় বেশ উঁচু ও প্রশস্ত। সমস্ত দিঘীটি এখন পাকা সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। দিঘীতে প্রবেশের জন্য পূর্ব ও পশ্চিম দিকের আব্দুর রব সেরেনিয়াবাত বা শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক গেটের যে কোনোটি ব্যবহার করে প্রবেশ করা যাবে। দিঘীর পানি স্বচ্ছ ও ব্যবহার উপযোগী। চাইলে সাঁতারও কাটা যাবে। খননের সময় দিঘীর চার পাড়ে ৪টি পাকা ঘাট তৈরী করা হয়েছিল। ঘাটগুলো প্রায় ১৫ মিটারের চেয়েও বেশী প্রশস্ত ছিলো। ইট দিয়ে ঘাটগুলো তৈরী করা হলেও পূর্ব ও দক্ষিণের ২টি ঘাট ধ্বংস হয়ে গেছে বেশ আগেই, অপর ২টি ঘাটের পশ্চিম দিকেরটি সময়ের প্রয়োজনে এখন তা টাইলস দ্বারা মুড়ে দেওয়া হয়েছে। উত্তরের ঘাটটি এখন আর ব্যবহার উপযোগী নয়।
দিঘীটি বৃটিশ দখলদারিত্বের আমলে একবার ও ১৯৭৪/৭৫ খ্রীঃ পুনরায় ১,২০০ টাকা খরচ করে সংস্কার করা হয়। দিঘীর মাঝখানে আছে একটি ছোট্ট দ্বীপ। মূলত দ্বিতীয় সংস্কারের সময় দ্বীপটি অবকাশ যাপন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তৈরী করা হয়েছিল। এরপর ১৯৯৭ খ্রীঃ – ১৯৯৯ খ্রীঃ দিঘীতে রক্ষনাবেক্ষনের কাজ করা হয়। দিঘী সংস্কারের সময় ৭/৮ম শতাব্দীর ২টি কষ্ঠিপাথরের মারিচী মূর্তি উদ্ধার করা হয় যা এখন ঢাকা জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। মারিচী মূর্তি পাওয়া যাওয়ায় ধারনা করা যায় যে, এখানে বৌদ্ধ সংস্কৃতির প্রভাব ছিল। হতে পারে পাল আমলে (৭৫০ খ্রীঃ – ১২০০ খ্রীঃ) বৌদ্ধ ধর্মের যে বিস্তৃতি ঘটেছিল তারই নিদর্শন এটি।
সাইবেরিয়া থেকে শীতের মৌসুমে অতিথি পাখীদের কলকাকলিতে এই সেদিনও মুখরিত থাকতো দিঘীর জল ও আঙ্গিনা। সরাইল ও বালিহাঁস পাখীর অভয়ারাণ্য হিসাবে দিঘীটি বেশ অনেককাল ধরেই প্রসিদ্ধ। পাখীগুলো দিনের বেলায় দিঘীর জলে জলকেলী করত আর সাঁঝের বেলায় দল বেঁধে আকাশে চক্কর দিতো – এমন স্বর্গীয় দৃশ্য না দেখলে বিশ্বাস হবার জো নেই। অত্যন্ত দুখজনক হলেও সত্য যে, সাম্প্রতিককালে অতিথি পাখীর সংখ্যা ধীরে ধীরে এমনভাবে কমে গেছে যে এখন নেই বললেই চলে। তবুও মন্দের ভাল!! এখন দেশী বক আর পানকৌড়ির দেখা তো অন্তত মেলে।
এখানে নানান জাতের বনজ, ফলজ ও ঔষধি গাছ রয়েছে যেমন শিশু, সুপারী, মেহগনী, রয়েছে নারকেল বাগান। পাড় জুড়ে দর্শণার্থী ও ভ্রমণকারীদের মনোরঞ্জনের জন্য গাছ-গাছালির ফাঁকে ফাঁকে মাটির তৈরী আর্টিফিসিয়াল জীবজন্তু যেমন হরিণ কিংবা বাঘের দেখা মিলবে। দূর্গাসাগরে প্রবেশের পরপরই হাতের ডানে দেখা মিলবে খাঁচাবন্দী হরিনের। যেখানে এককালে জীবন্ত পাখীদের সরব উপস্থিতিতে মুখরিত থাকতো দিঘী আঙ্গিনা আজ সেখানে কৃত্রিম পশুপাখির সংস্থাপন করে আমরা কি আমাদের মানবিক দৈন্যতাই আড়াল করতে চাচ্ছি নাহ! দিঘীর চারিদিক জুড়ে আছে ১.৬ কিলোমিটার দীর্ঘ পায়ে চলা পথ। ক্লান্ত পর্যটকদের বিশ্রামের জন্য বসার বেঞ্চ রয়েছে। বর্তমানে দিঘীতে প্রশাসনিকভাবে মাছ চাষের পাশাপাশি হাঁস পালনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এখানে নির্দিষ্ট সময়ে টিকেট কেটে বড়শী দিয়ে মাছ ধরার ব্যবস্থা আছে। চাইলে এখন এখানে নৌকায় করে দিঘীর জলে ঘুরেও বেড়াতে পারেন। দিঘীর বিশাল আঙ্গিনা পিকনিক স্পট হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে অনেক যুগ ধরেই। দিঘীর পশ্চিম পাড়ের ঘাট সংলগ্ন স্থানে জেলা পরিষদের ডাক বাংলো রয়েছে – চাইলে সেখানে রাত্রিযাপনও করা যায়। সিসিটিভি দ্বারা সার্বক্ষনিক ভিজুয়াল সার্ভেলিয়েন্সের মধ্যে এখন পর্যটক ও দর্শনার্থীরা আরো নিরাপদ ও সুরক্ষিত।
প্রতি বছর চৈত্র মাসের অষ্টমী তিথিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা ‘চৈত্রি শুক্লাষ্টমীর পূণ্য স্নানে’র উদ্দেশ্যে দিঘী প্রাঙ্গনে সমবেত হয়ে থাকেন। তাদের বিশ্বাস এখানে গোসল করলে তাদের অতীতের পাপপোচন হবে এবং আগামী দিনের সকল মনোবাসনা পূরণ হবে। এই স্নানকে ঘিরে এখানে একটি মেলাও বসে যা এখন এই দিঘীর ঐতিহ্যের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দিঘী খননের শ্রমিকেরা দিনভর মাটি কেটে কাজ শেষে পশ্চিম পাশে খনন যন্ত্রগুলো ধুয়ে নিতেন, এভাবে নাকি আরেকটি জলাশয়ের সৃষ্টি হয় – নাম কোদাল দিঘী। এই রকম নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায় দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার পালশা ইউনিয়নের বেলাওয়া গ্রামের আন্দিয়া দিঘীর দক্ষিণ-পশ্চিম কোণার কোদাল দিঘী-তে। খুঁজলে হয়তো এ রকম সদৃশ্য বাংলাদেশে আরো পাওয়া যাবে।
দিঘী খননের উদ্দেশ্য নিয়ে যেসব জনশ্রূতি বা কিচ্ছা আপামর জনসাধারনের মাঝে ব্যাপকভাবে প্রচলিত তা যে নিতান্তই আমাদের নিজেদের মনগড়া, কাল্পনিক চিন্তা-ভাবনার প্রকাশ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বাংলাদেশের অনেক দিঘী ঘিরে রাজকণ্যা, রাণী কিংবা রাজমাতার হেঁটে যাওয়া, পা থেকে রক্ত ঝরা, দিঘীতে পানি না ওঠা কিংবা বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানো ইত্যাদি বিষয়াদির বহুল প্রচলন রয়েছে (উদাহরনস্বরূপ বলা যায় – মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার রামপাল ইউনিয়নের রামপাল কলেজের দক্ষিণ পাশের রামপাল/বল্লাল সেনের দিঘী, মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার, হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার, পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার, নেত্রকোনা জেলার সুসাং দূর্গাপুর উপজেলার একই নামের ও কাহিনী উপজীব্য করে রচিত কমলা রাণীর দিঘী/সাগর দিঘী, লালমনিরহাট জেলার রাজার হাট উপজেলার সিন্দুরমতি দিঘী)।
একটু খেয়াল করলেই বোঝা যায়, দূর্গাসাগর যখন খনন করা হয় তখন রাজা শিব নারায়ন বেঁচে ছিলেন না, এমনকি তাদের পুত্র রাজা জয় নারায়ণও ছিলেন নাবালক। সুতরাং ধারনা করা যুক্তি সংগত যে, রাণী দূর্গাবতী বৃটিশ সরকারের কাছ থেকে ছেলে জয় নারায়নের নামে জমিদারীর সনদ কিনে যখন নিজেই রাজ্য পরিচালনা করছিলেন তখন তিনি নিজেই প্রজাদের পানির কষ্ট নিবারনের জন্য দিঘীটি খনন করে থাকবেন। পরে তারই নামে দিঘীর পরিচিতি/নামকরণ হয়। ১৭৮০ খ্রীঃ যদি দিঘীতে পানি না ওঠার কারণে রাণীর মৃত্যূ হতো তাহলে উনি কিভাবে ১৮১৩ খ্রীঃ পর্যন্ত বেঁচে থাকবেন? ১৭৭৭ খ্রীঃ রাজা শিব নারায়ণ মারা গেলে কিভাবে তিনি তার মৃত্যূর ৩ বছর পর দিঘী খননের সময় ১৭৮০ খ্রীঃ রাণীকে হেঁটে যেতে বলেছিলেন? সুতরাং রাজার রাণী-প্রেম কিংবা রাণীর রাত জেগে হাঁটা, আত্মাহুতি, শিশু সন্তানকে দুধ খাওয়ানো সবই নিছক মনগড়া – বাস্তবের সাথে যার কোনো মিলই নেই।
বাংলাদেশে অল্প কিছু দিঘীর জলকরের মাঝে দ্বীপসদৃশ জলটুঙ্গি/স্থাপনা/নিদর্শন দৃষ্টিগোচর হয়। ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বাদুরগাছা গ্রামের ‘বেড় দিঘী’ ও রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার চতরা ইউনিয়নের নিশ্চিন্দবাটি-আঙ্গারীপাড়ার/কাটাদুয়ারের ‘নীল দরিয়া’র কথা এক্ষেত্রে প্রনিধাণযোগ্য। এসব স্থাপনা কেনো, কি উদ্দেশ্যে নির্মাণ/স্থাপন করা হয়েছিল তা স্পষ্ট নয়। তবে দূর্গাসাগরের দ্বীপটি পূর্বে আলোচিত দিঘী সমূহের সাথে সাদৃশ হলেও উদ্দেশ্য যে এক নয় তা স্পষ্ট। কেননা আমরা আগেই দেখেছি, দ্বীপটি পরবর্তীতে পর্যটকদের মনোরঞ্জনের জন্য সংযোজন করা হয়েছিল।
আমরা কতিপয় ভাগ্যবান বরিশাল ক্যাডেট কলেজে লেখাপড়ার সুযোগে ফি-বছর বার্ষিক বনভোজন উপলক্ষ্যে দিঘী পাড়ে জমায়েত হতাম। প্রথমবার ছাড়া আমরা আর কোনোবার সেখানে যাবার উৎসাহ না বোধ করলেও কলেজ কর্তৃপক্ষের ব্যাপক উৎসাহে তাতে কোনো ভাট পড়তো বলে মনে হয় না। কখনো কলেজ বাসে আবার কখনো শ্রেণি শিক্ষকদের তত্বাবধানে পদব্রজে এখানে যাওয়া-আসা আমাদের শৈশবের স্মৃতিকে করেছে রঙিন। দিঘীপাড়ে ভলিবল-ফুটবল খেলা, মাটিতে বসে প্লেট হাতে বন্ধুদের সাথে একসাথে দুপুরের খাবার খাওয়া, শিক্ষকদের চোখ ফাঁকি দিয়ে দিঘীর জলে গোসল করা, বিকালে হালকা গানের আসর বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপভোগ করা, এ্যাডজুডেন্টের সাথে দল বেঁধে বাজারে যাওয়া, সেখান থেকে কলার কান্দি ঘাড়ে ধরে নিয়ে কলা খেতে খেতে পথ চলা, নানা পোজ-ঢং করে ছবি তোলা – এসব স্মৃতি দূর্গাসাগর আর আমাদের প্রতিটি ক্যাডেটকে এক নিবিড় বন্ধনে আবদ্ধ করে রেখেছে। বরিশাল ক্যাডেট কলেজ বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নে অবস্থিত। দূর্গাসাগর আর ক্যাডেট কলেজ উভয়ই বাবুগঞ্জ উপজেলার দুটি নিদর্শন।
দূর্গাসাগর দিঘী বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়নের মাধবপাশা গ্রামে অবস্থিত। বরিশাল বিভাগের সবচেয়ে বড় আয়তনের দিঘীটি বর্তমানে জেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। দিঘী সংরক্ষণে প্রশাসন কর্তৃক যে সমস্ত ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে তা প্রশংসারযোগ্য। সরকারি ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি বেসরকারি ও ব্যাক্তিগত উদ্যোগ, দ্বায়িত্ব ও সচেতনাবোধ আমাদের ঐতিহ্যময় প্রত্ন-সম্পদগুলোকে ভবিষ্যৎ প্রজম্মের জন্য সুরক্ষিত করবে – আমাদের সকলকেই এ জন্য এগিয়ে আসতে হবে।
————————————————————————————————————————————————
০৯ জুন ২০১৮ খ্রীঃ
mamun.380@gmail.com
পুনশ্চঃ ব্যবহৃত ছবিগুলোর কোনো কোনোটি ফেসবুকের বন্ধু ও ইন্টারনেট থেকেও সংগ্রহ করেছি। যাদের ছবি ব্যবহার করেছি তাদেরকে ব্যাক্তিগতভাবে কৃতজ্ঞতা জানানো উচিত ছিল কিন্তু তা না করার অপারগতার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। আশা করি সকলেই নিজগুনে ক্ষমা করে দিবেন।
তথ্যসূত্রঃ
১. ৬৪ জেলা ভ্রমণ, লিয়াকত হোসেন খোকন, পৃঃ ৩২৬/৩২৭/৩২৮/৩৩০/৪৪১/৪৫০/৫৩০/
২. ঐতিহ্যবাহী বরিশাল, টি.এম. জালালউদ্দীন, পৃঃ ৮-৯/১৪/৮৫/১০৬/১৪০/
৩. প্রাচীন বাংলার ধুলো মাখা পথে, খন্দকার মাহমুদুল হাসান, পৃঃ ৩৪/৩৪৬/
৪. প্রাচীন বাংলার লুপ্তনগরী, খন্দকার মাহমুদুল হাসান, পৃঃ ২৩৮-২৪০/
৫. বাংলা ও বাঙালির ইতিহাস, খন্দকার মাহমুদুল হাসান, পৃঃ ১৯/২৪/
৬. বাঙ্গালার ইতিহাস, রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, ১ম খন্ড, পৃঃ ৯২-৯৪/৯৭/১৪০/১৪২/
৭. বাঙ্গালার ইতিহাস, রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, ২য় খন্ড, পৃঃ ৯৮/১০০/১০৩/১০৪/
৮. বাংলার প্রাচীন সভ্যতা ও পুরাকীর্তি, খন্দকার মাহমুদুল হাসান, পৃঃ ৬৩/২০৩/
৯. বাঙালীর ইতিকথা, খন্দকার মাহমুদুল হাসান, পৃঃ ৩০/
১০. বাংলায় ভ্রমণ, ইস্ট বেঙ্গল রেলওয়ে (১৯৪০)/BANGLAY BHRAMAN, a `Travelogue on historical documents and legends by E. B. RAILWAY (1940), পৃঃ ১৫৭-১৬০/
১১. বাংলাদেশের জেলাসমূহের নামকরণ ও ইতিহাস, ড. আব্দুর রাজ্জাক খাঁন, পৃঃ ১৯৪-১৯৭/
১২. বাংলাদেশের জেলা-উপজেলার নামকরণ ও ঐতিহ্য, মোহাম্মদ নূরুজ্জামান, পৃঃ ২৫৩-২৫৪/
১৩. বাংলাদেশের সন্ধানে, মোবাশ্বের আলী, পৃঃ ২১৩-২১৪১৪.
১৪. বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, এ কে এম শাহনাওয়াজ, পৃঃ ৪৫/৮৪/
১৫. বাঙলাদেশের প্রত্নসম্পদ, আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া, পৃঃ ৪৪৬/
১৬. মেগাস্থেনীসের ভারতবিবরণ, শ্রীরজনীকান্ত গুহ এম এ, পৃঃ ১২০/
১৭. যশোহর খুলনার ইতিহাস, প্রথম খন্ড, সতীশ চন্দ্র মিত্র, পৃঃ ১১৬-১১৭/২০৮-২০৯/
১৮. যশোহর খুলনার ইতিহাস, দ্বিতীয় খন্ড, সতীশ চন্দ্র মিত্র, পৃঃ ৪৬/৫৯/৮৩/২০২-২০৩/
১৯. শিলালেখ-তাম্রশাসনাদির প্রসঙ্গ, ড. দীনেশচন্দ্র সরকার, পৃঃ ১৫১/
২০. সিয়ার-উল-মুতাখখিরিন-সৈয়দ গোলাম হোসেন খান তবাতবায়ি, মূল ফারসি থেকে অনুবাদ ও টীকা আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া, পৃঃ ৩৬৪/
২১. স্থাপত্যের ইতিহাস, মোহা. মোশাররফ হোসেন, পৃঃ ১৪৯/
২২. স্থাপত্যের ইতিহাস, মোহা. মোশাররফ হোসেন, পৃঃ ১৪১/১৪৯/
২৩. বরিশালের দূর্গাসাগর দিঘি, মোহাম্মদ শফিকুর রহমান, দৈনিক প্রথম আলো, ২১ এপ্রিল ২০০২ খ্রীঃ/
২৪. চন্দ্রদ্বীপের উপাখ্যান, সাইফুল ইসলাম, দৈনিক সমকাল, ১৫ অক্টোম্বর ২০১১ খ্রীঃ/
২৫. উম্মাদ রাজার কান্ড, সাইফুল ইসলাম, দৈনিক সমকাল, ১৯ নভেম্বর ২০১১ খ্রীঃ/
২৬. বাকলা চন্দ্রদ্বীপ থেকে আজকের বরিশাল, দৈনিক সংগ্রাম, ২৫ জুন ২০১২ খ্রীঃ/
২৭. বাকলা-চন্দ্রদ্বীপ থেকে বরিশাল পরতে পরতে জড়িয়ে আছে ইতিহাস, ঐতিহ্য আর লৌকিকতা, মু. ইশরাত হোসেন লিপটন, সামহয়ারইনব্লগ.কম, ১৯ জুলাই ২০১২ খ্রীঃ/
২৮. বিলুপ্ত চন্দ্রদ্বীপ, সাইফুল ইসলাম, দৈনিক সমকাল, ২৫ আগষ্ট ২০১২ খ্রীঃ/
২৯. চন্দ্রদ্বীপের দীঘি, দৈনিক সমকাল, ০১ সেপ্টেম্বর ২০১২ খ্রীঃ/
৩০. বরিশালের নয়নাভিরাম দূর্গাসাগর দেখতে পর্যটকদের ভীড়, খালিদ সাইফুল্লাহ, দৈনিক নয়াদিগন্ত, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১২ খ্রীঃ/
৩১. দূর্গাসাগর দেখতে পর্যটকদের ভিড়, আরিফ হোসেন, দৈনিক আমার দেশ, ১০ নভেম্বর ২০১২ খ্রীঃ/
৩২. বরিশাল, দৈনিক সমকাল, ০৫ ডিসেম্বর ২০১২ খ্রীঃ/
৩৩. দেখা হয় নাই দূর্গা সাগর দিঘী, দৈনিক ইত্তেফাক, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৩ খ্রীঃ /
৩৪. ঐতিহাসিক দীঘির সংরক্ষণ, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৩ খ্রীঃ/
৩৫. বাংলার দিঘী বাংলার জল, তাপস রায়, রাইজিংবিডিডটকম, ২৭ জুন ২০১৫ খ্রীঃ/
৩৬. দেড়শ’ বছরের পুরানো দিঘীটি ঘিরে নানা ইতিহাস দূর্গাসাগর পর্যটন সম্ভাবনার অপমৃত্যুর আশংকা, সাগরকণ্যা, ১০ ডিসেম্বর ২০১৫ খ্রীঃ/
৩৭. দূর্গাসাগর দিঘীতে পর্যটক আকর্ষণের উদ্যোগ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ খ্রীঃ/
৩৮. দূর্গাসাগর পাড়ে এবার দেখা যাবে হরিণের বিচরন, বাংলানিউজ২৪, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ খ্রীঃ/
৩৯. ডায়েরী অফ এ লোনলি ট্রাভেলার, দূর্গাসাগর দিঘী, রাণী দূর্গাবতী ও অন্যান্য, নাহিদ জাহান মুনা, ৩১ জানুয়ারী ২০১৭ খ্রীঃ/
৪০. বরিশালে দূর্গাসাগরে আয় বেড়েছে বাড়েনি পর্যটকদের সেবার মান, লিটন বাশার, দৈনিক ইত্তেফাক, ১১ মে ২০১৭ খ্রীঃ/
৪১. যে সৌন্দর্য ইতিহাসের কথা বলে দূর্গাসাগর, রবীন ভাবুক, কীর্তণখোলাঅনলাইন,কম, ১১ মে ২০১৭ খ্রীঃ/
৪২. দূর্গাসাগর দিঘী ভ্রমণে কেনো যাবেন? দেখুন ছবিতে!, আফসানা সুমী, সহ-সম্পাদক, প্রিয়.কম, ২৬ আগষ্ট ২০১৭ খ্রীঃ/
৪৩. বরিশালের ঐতিহ্য দূর্গাসাগর, বেশতো.কম/
৪৪. দূর্গাসাগর দিঘীতে মাছের পোণা অবমুক্ত, আমাদের বরিশাল/
৪৫. বরিশালের দূর্গাসাগর দিঘীতে পূণ্যস্নান অনুষ্ঠিত, ৭১টিভি.নিউজ.টিভি, জহির রায়হান/
৪৬. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন, বরিশাল, বাবুগঞ্জ/
৪৭. উইকিপিডিয়া/বাংলাপিডিয়া/বরিশালপিডিয়া/
অসাধারণ পোস্ট, ভাই! বোঝাই যাচ্ছে কী কষ্ট করে যত্নের সাথে লিখেছেন। আফসোস, একবার কুয়াকাটা থেকে ফেরার পথে মাত্র ঘণ্টাখানেক বরিশাল ছিলাম। ফল, কিছুই দেখা হয় নি... একবার অনেক সময় হাতে নিয়ে যেতে হবে। 🙂
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
অনেক অনেক ধন্যবাদ কষ্ট করে পড়ার জন্য ও সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
ঘোরাঘুরির সচিত্র বর্ণনার সাথে সাথে বেশ কিছুটা ইতিহাসও জানা হলো, বিশেষ করে "নবাবী আমলে চন্দ্রদ্বীপের নাম মুঘল ‘আগা বাকেরের’ নামে ‘বাকেরগঞ্জ’ ও পরে বৃটিশ দখলদ্বারিত্বের সময় প্রধান লবন কারবারের কারণে ‘বরি-সল্ট’ হতে ‘বরিশাল’ নামকরণ করা হয়" - এ তথ্যগুলো নতুন করে আবার জেনে ভাল লাগলো।
আর ক্যাডেট হিসেবে স্মৃতিচারণ তো সব সময়ই সবার ভাল লাগে। সুন্দর পোস্ট, অভিনন্দন! :clap:
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার ভাল লেগেছে জেনে খুবই আনন্দিত হলাম। আবারো একবার নতুন করে অনুপ্রানীত হলাম, উজ্জিবীত হলাম। আপনার সুস্থ্য ও দীর্ঘজীবন কামনা করি।
সুন্দর কিছু সুন্দর...! পড়ার সময় যখন প্রতিটা শব্দের মধ্যে ডুবে গিয়ে, সেই পরিবেশে নিজেকে আবিস্কার করি, তখনই লেখাটি স্বার্থক। আর স্বার্থক আপনি, যিনি আরেকবার সেখানে টেনে নিলেন....!!!!
আপনার সুন্দর, মন ছোঁয়া ও অনুপ্রেরণামূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। বাংলাদেশের প্রত্নতাত্বিক নিদর্শনগুলো যাতে হারিয়ে না যায়, আমাদের ঐতিহ্যগুলো অন্তত আমরা সবাই জানি.... সে প্রচেস্টা সকলের মাঝে অব্যাহত থাকুক। ভাল থাকবেন।