রবীন্দ্রনাথ, বাঙ্গালী ও বাংলাদেশ এক নিবিড় বন্ধনে আবদ্ধ… আজ রবীন্দ্রনাথের ১৫৭তম জম্মদিবস। বিশ্বকবির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধায় নিবেদিত…
অনিবার্য কারণ বশতঃ আমার আজকের কর্মসূচীর পূর্ব পরিকল্পনা গত রাতেই বাতিল করতে হয়েছিল। অকস্মাৎ হাতে বেশ খানিকটা সময় ‘মেঘ না চাইতেই জল’র মতো চলে এলো। তাই বলে তো শুয়ে-বসে দিনটি আর পার করা যায় না! অযথা দেরী না করে ঘর থেকে তাই বের হয়ে এলাম। রাস্তা-ঘাটও বেশ ফাঁকা-ফাঁকা। মহাসড়কের গতিময় তান্ডব আজ স্থবির, ম্রীয়মান, গায়ে জোর-নেই জোর-নেই ভাব। দু’একটা মোটর গাড়ী হু-উ-শ করে পাশ কেটে যাচ্ছে বটে, তবে তাতে কিসের যেনো একটা কমতি আছে – ঐ যে দাপুটে-দাপুটে কেমন একটা ভাব থাকে নাহ!! আমার বেশ সুবিধেই হলো, একটু আরাম করে, নিরিবিলি পথ-ঘাট দেখতে দেখতে এগোতে থাকলাম। এপথ আমার বহু পরিচিত, আমার খুউব আপন। আমার আশৈশব-কৈশোরের বহু প্রত্যাশা, আনন্দ, বেদনা, চঞ্চলতা, ব্যকুলতার আসমুদ্র স্মৃতিতে ভরা এই মহাসড়ক। ছোটবেলায় ফি-বছর খুলনা-যশোর মহাসড়কের এ পথ ধরেই যে শীত বা গরমের ছুটিতে নানাবাড়ি যেতাম। আজ অবশ্য গন্তব্য নিকটেই… দক্ষিণডিহি, বেণীমাধব রায়চৌধুরীর বাড়ি।
বেণীমাধবকে আপনারা সবাই হয়তো এক্ষুনি চিনতে পারবেন না। তিনি সম্ভবত উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের এককালের নাম-ডাকওয়ালা দক্ষিণডিহি গ্রামে জম্মগ্রহণ করেছিলেন। ভৈরব নদের অববাহিকায় শান্ত, ছিমছাম, নিরিবিলি একটি গ্রাম দক্ষিণডিহি। সেখানেই ছিল তার ভিটামাটি। উপযুক্ত বয়স হলে পর দক্ষিণডিহির রায়বাড়ির বেণীমাধব বাবু একদিন বিয়ে করে ঘরে নিয়ে এলেন দাক্ষায়ণী দেবীকে। বিয়ের পর ১৮৭৪ খ্রীঃ মার্চ মাসে তাদের একটি কণ্যা সন্তান হয়। তারা তার নাম রেখেছিলেন ভরতারিণী। কিন্তু গ্রামের আপন মানুষগুলোর কাছে মেয়েটি পদ্ম, ফুলি, ফেলি নামেই অধিক পরিচিত ছিল। এরপর তাদের একটি ছেলে হলে তার নাম রাখা হয় নগেন্দ্রনাথ রায়চৌধুরী, কিন্তু গ্রামের লোকেরা ডাকতো ফেলুবাবু বলে। টিনের চালওয়ালা একটি বাড়িতেই ছিল তাদের সাদামাটা সংসার।
নৃতত্ব, প্রত্নতত্ব ও ইতিহাস স্বাক্ষ্য দেয়, দক্ষিণডিহি গ্রামটি বেশ প্রাচীন ও সম্মৃদ্ধ এক জনপদের অংশ। সতীশচন্দ্র মিত্র বলছেন, রাজা বল্লাল সেনের (১০৮৩ – ১১৭৯ খ্রীঃ) আমলে কণৌজাগত দক্ষের বংশধর ব্রাহ্মণ একটি পরিবারের দক্ষিণডিহিতে বিশেষ কর্তৃত্ব/প্রভাব ছিল। তাদের পূর্ব পুরুষ জয়কৃষ্ণের দু’পুত্র নাগরনাথ ও দক্ষিণানাথ রাজা গণেশের (১৪১০ – ১৪১৪ খ্রীঃ) সময় স্থানীয় কোনো হিন্দু নরপতিকে যুদ্ধে সাহায্য করার উপহার স্বরূপ রায়চৌধুরী উপাধি পায়। ক্রমে তারা চেঙ্গুটিয়া (যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলায় অবস্থিত)সহ আশেপাশের বেশ কিছু জায়গা দখল করে নিজেদের শাসনকার্য চালাতে থাকে। কৌশলগত নানাদিক বিবেচনা করে তারা দক্ষিণডিহির এই স্থানে বসতি স্থাপন করে। কিছুদিন পর দুই ভাইয়ের মধ্যে গন্ডগোল হলে উভয়ই একে অন্যের থেকে আলাদা হয়ে যায়। বড় ভাই নাগরনাথ রায়চৌধুরী ভৈরব নদের উত্তরে স্থান নেন তাই সেই এলাকার নাম হয় উত্তরডিহি আর ছোট ভাই দক্ষিণানাথ রায়চৌধুরী দক্ষিণে রয়ে যান বলে নাম হয় দক্ষিণডিহি।
খান জাহান আলী (১৩৬৯ – ১৪৫৯ খ্রীঃ) ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার থেকে, যশোরের মুড়লী হয়ে খুলনার ফুলতলার পয়োগ্রাম ভেদ করে যে ১১২ কিলোমিটার রাস্তা তৈরী করেন তার পাশে ৪টি কসবা/শহরও প্রতিষ্ঠা করেন। এই ৪টি কসবা/নগরের একটি হল পয়োগ্রাম। খান জাহান আলীর রাস্তাটি পয়োগ্রাম নগরকে দু’ভাগে ভাগ করার কারনে দক্ষিণের অংশের নাম হয় দক্ষিণডিহি আর উত্তরের অংশের নাম হয় উত্তরডিহি – সতীশ বাবু এমন তথ্যও উপস্থাপন করেছেন।
যাহোক, খান জাহান আলীর আগমনের পর উত্তরডিহির নাম হল খাঞ্জেপুর, সেখানে তিনি নিজ আবাস, মসজিদ, দিঘী ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা করে সদ্য প্রতিষ্ঠিত নগরের কার্যক্রম আরম্ভ করেন। আগেই বলেছি, গ্রামে তখনও রায়চৌধুরী পরিবারের খ্যাতি ও প্রভাব দু’ই সমানতালে বজায় ছিল। খান জাহান আলী বিচক্ষন শাসক, তিনি দক্ষিণানাথ রায়চৌধুরীর ৪ ছেলের মধ্যে প্রথম দু’জন কামদেব রায়চৌধুরী ও জয়দেব রায়চৌধুরী-কে তার সভাসদে গুরুত্বপূর্ন পদে নিয়োগ দেন। দক্ষিণানাথ রায়চৌধুরীর অপর দু’জন ছেলে হলেন রতিদেব রায়চৌধুরী ও শুকদেব রায়চৌধুরী।
খান জাহান আলী যখন বারবাজার ত্যাগ করে বাগেরহাট অভিমুখে অভিযানে রওনা হন তখন তিনি একজন ব্রাহ্মণকে পথ প্রদর্শক হিসাবে পান। উক্ত ব্রাহ্মণ পরবর্তীতে খান জাহান আলীর পয়োগ্রাম/দক্ষিণডিহি কসবা/নগরের উজির পদ লাভ করে। উজির মহাশয় ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়ে মুহাম্মদ তাহের নাম গ্রহণ করে (অনেকে বলেন তার আগের নাম গোবিন্দলাল রায়)। খান জাহান আলী দক্ষিণডিহি থেকে বাগেরহাটে গমন করলে পর উজির মুহাম্মদ তাহের-ই হন এখানকার শাসক। তিনি হিন্দু, বৌদ্ধ সকলকে নির্বিশেষে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ/দীক্ষা দিতে থাকেন। এভাবে যারা ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে প্রকৃত মুসলমান হলেন তারা ‘পীর আলি মুসলমান’ আর যারা মুসলমানের সাথে মিশে সমাজচ্যুত হলেন তাদের কেউ হলেন পীর আলি ব্রাহ্মণ, কেউ বা পীর আলি কায়স্থ ইত্যাদি। আর সেই থেকে এদেশে ‘পীর আলি’ বা ‘পীরালি’ সম্প্রদায়ের উৎপত্তি হয়। কথিত আছে, রামদেব ও জয়দেব উজির মুহাম্মদ তাহেরের সভাসদ হবার পর তাহের সুকৌশলে দু’ভাইকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে বাধ্য করে। অতপর তাহের তাদেরকে কামাল উদ্দীন ও জামাল উদ্দীন খাঁ চৌধুরী উপাধি প্রদান করে। এভাবে পয়োগ্রাম তথা দক্ষিণডিহিতে রায়চৌধুরী পরিবারের মধ্য দিয়ে পীরালি সম্প্রদায়ের যাত্রা শুরু হয়।
ঐ দিকে, খুলনার আরেকটি উপজেলা রূপসা’র পিঠাভোগ গ্রামে বাস করতেন কুশারী পরিবার। এই বংশের রামগোপালের বড় ছেলে জগন্নাথ কুশারীর সাথে দক্ষিণডিহি গ্রামের দক্ষিণানাথ রায়চৌধুরীর ৪র্থ পুত্র শুকদেব রায়চৌধুরীর কণ্যা সুন্দরী দেবীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর নব-দম্পতি দক্ষিণডিহি গ্রামেই তাদের সংসার শুরু করেন। জগন্নাথ কুশারীর দ্বিতীয় পুত্র পুরুষোত্তম, মেজো ছেলে মহেশ্বর কুশারী’র ছেলে পঞ্চানন কুশারী ও তাদের কাকা শুকদেব কুশারীকে সাথে নিয়ে ব্যবসার সন্ধানে গ্রাম ছেড়ে কলকাতার গোবিন্দপুর যান। ইউরোপীয়ান জাহাজের সাথে কারবার খুলে পঞ্চানন বাবু কিছু অর্থ উপার্জন করে সেখানেই একটি বাড়ি তৈরী করে বসবাস করতে থাকেন। অল্প দিনেই তিনি বাড়িতে একটি শিব মন্দিরও প্রতিষ্ঠা করেন। তার প্রতিবেশীরা কম-বেশী সবাই ছিলেন ধীবর। মন্দির প্রতিষ্ঠা করার কারণে পঞ্চানন বাবু এই সব তথাকথিত অতি সাধারন কৈবর্ত/জেলে মানুষগুলোর কাছে ঠাকুর বলে অভিহিত হতে থাকেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, তারা গোবিন্দপুরের যে হরিজন পল্লীতে প্রথম বসতি স্থাপন করেন সেখানে কোনো ব্রাহ্মণ না থাকায় তাদের মাঝে ব্রাহ্মণ পেয়ে সবাই তাদেরকে ঠাকুর বলে ডাকতে থাকে। যাহোক পঞ্চানন কুশারী কালে সবার কাছে হয়ে ওঠেন পঞ্চানন ঠাকুর।
পঞ্চানন ঠাকুরের পুত্র জয়রাম ঠাকুরের ছেলে নীলমনি ঠাকুর ১৭৮৪ খ্রীঃ কলকাতার জোড়াসাঁকোয় বাড়ি নির্মাণ করেন। নীলমনি ঠাকুরের পৌত্র দ্বারকানাথ ঠাকুর বৃটিশ বেনিয়াদের সাথে জাহাজের ব্যবসা পেতে অর্থ-সম্পদ যেমন পেয়েছেন তেমনি অর্জন করেছিলেন প্রভাব-প্রতিপত্তি। যৌবনে তিনি রেশম, নীল ক্রয়/সরবরাহ করা দিয়ে ব্যবসা শুরু করে পর্যায়ক্রমে লবন, কয়লার খনি ও চিনির কারখানা ইজারা নেওয়া, ঠাকুর কোম্পানী এমনকি ব্যাংক স্থাপন ও বাংলা ও বাংলার বাইরে জমিদারী কিনে বিশাল সম্পদ আর সম্পত্তির অধিকারী হন। দু’দফা বিলেত ভ্রমণ করে ও সেখানে দেদারছে খরচপাতি করার কারণে তার ‘প্রিন্স’ খেতাব জুটে এবং সেই থেকেই সবাই তাকে প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর হিসাবেই চিনেন। মূলতঃ তার হাতেই জোড়াসাঁকোর ঠাকুর এস্টেট প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর বিয়ে করেন দিগম্বরী দেবীকে। দ্বারকানাথের পুত্র দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর বিয়ে করেন সারদা সুন্দরী দেবীকে। দ্বারকানাথ ও দেবেন্দ্রনাথ উভয়ের শশুরবাড়িই দক্ষিণডিহি গ্রামে। রবীন্দ্রনাথ দেবেন্দ্রনাথের ১৫ জন সন্তানের মধ্যে ১৪ তম ও কুশারী বংশের রামগোপাল বংশধারার ১৩ তম পুরুষ।
জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের সাথে দীর্ঘকাল ধরেই দক্ষিণডিহি গ্রামের সম্পর্ক। বংশ পরম্পরায় এই গ্রাম/ এলাকা থেকেই ঠাকুর পরিবার বিয়ের কণ্যা খুঁজেছেন। রবীন্দ্রনাথের দাদী দিগম্বরী দেবী, কাকীমা ত্রিপুরা সুন্দরী দেবী, নিজের মা সারদা সুন্দরী দেবী, বউদি কাদম্বরী দেবী এবং বউ মৃণালিনী দেবী সবাই এই গাঁয়েরই মেয়ে। রবির নানা রামনারায়ন রায়চৌধুরী, মামা নিরাঞ্জন রায়চৌধুরী ও হিরম্ময় রায়চৌধুরী’র নিবাসও বেণীমাধব রায়চৌধুরীর বাড়ি থেকে মাত্র আধা কিলোমিটার দূরে উত্তরপাড়ার মঠবাড়ি। কাদম্বরী দেবীর বাড়িও গ্রামের মঠবাড়ি এলাকায়। জয়রাম ঠাকুরের স্ত্রী গঙ্গাদেবীর বাড়িও এখানে। নিকটাত্মীয় ও নিজের মামা বাড়ি এই গ্রামে হওয়ায় রবি বাবু তাই বেশ কয়েকবার মায়ের সাথে এখানে বেড়াতে এসেছেন।
রবির বউদি জ্ঞাণদানন্দিনী দেবী অনেককাল বাপের বাড়ি বেড়াতে যান নাই, ১৮৮২ খ্রীঃ পূঁজার সময় তাই তিনি ভিটা দেখার অভিপ্রায়ে রবি বাবুসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে যশোরের নরেন্দ্রপুর আসেন। মনে মনে আরেকটা উদ্দেশ্যও অবশ্য তার ছিল, আর তা হলো পীরালি পরিবারের মধ্য থেকে নববধুর খোঁজ করা। উল্লেখ করার প্রয়োজন আছে কি, জগন্নাথ কুশারী থেকেই রবীন্দ্রনাথের পরিবার পীরালি সম্প্রদায়ভুক্ত হন! নরেন্দ্রপুরের কাছেই দক্ষিণডিহি গ্রাম। তরুণ রবি মামা বাড়ি বেড়াতে এসে গ্রামের ‘তিতির পুকুর’ ঘাটে ভবতারিণীকে দেখে মুগ্ধ হন – এমন একটি গল্প গ্রামের মানুষের কাছে প্রচলিত আছে। দক্ষিণডিহির বেণীমাধব বাবুরও পীরালি ঘর। ২২ বছরের যুবক রবি বাবুর সাথে ৯ বছরের ফুলির পরের বছর ২৪ অগ্রাহায়ন ১২৯০ বঙ্গাব্দ/০৯ ডিসেম্বর ১৮৮৩ খ্রীঃ জোড়াসাঁকোর বাড়িতে ৩,২৮৩ টাকা ২ পাই খরচা করে খুব সাদামাটা ভাবেই বিয়ে হয়ে যায়। ঐ একই দিনে রবি বাবুর কাকা মারা যান বলেই বোধ হয় তাদের বিয়েটা খুব সাদামাটা ভাবে সম্পন্ন করা হয়। বিয়ের পর ভরতারিনী ঠাকুর পরিবারের প্রথানুযায়ী নাম পরিবর্তন করে মৃণালিনী দেবী হন। মৃণালিনী মানে পদ্ম, নামটি হয় রবীন্দ্রনাথ নিজে না হয় তার ভাই দ্বিজেন্দ্রনাথ দিয়েছিলেন।
মৃণালিনী দেবী ১৮৭৪ খ্রীঃ ১ মার্চ/১২৮০ বঙ্গাব্দ ফাল্গুন মাসে (অনুমান করা) দক্ষিণডিহি গ্রামের রায়চৌধুরী পরিবারে জম্মগ্রহণ করেন। মাত্র ৯ বছর বয়সে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঘরে বউ হয়ে জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়ীতে যান। বিয়ের ৩ বছর পর ১৮৮৩ খ্রীঃ তাদের কোল জুড়ে আসে প্রথম সন্তান মাধুরীলতা, এরপর একে একে রথীন্দ্রনাথ ১৮৮৮ খ্রীঃ, রেনুকা ১৮৯১ খ্রীঃ, মীরা ১৮৯৪ খ্রীঃ ও শমীন্দ্রনাথ ১৮৯৬ খ্রীঃ জম্মগ্রহণ করে। ১৮৮০ খ্রীঃ গ্রামের পাঠশালায় প্রথম বর্গ পর্যন্ত লেখাপড়া করলেও ঠাকুর বাড়ির বউ হবার সুবাধে ও ভাসুর সত্যেন্দ্রনাথের স্ত্রী জ্ঞাণদানন্দিনী দেবীর উদ্যোগে তাকে বিয়ের পরও নিয়মিত লেখাপড়া শিখতে হয়। এই ধারাবাহিকতায় ও শ্বশুরের ইচ্ছায় লরেটো হাউজে ১৮৮৪ খ্রীঃ শুধু তিনি ভর্তিই হননি বরং বাসায় মেম সাহেবের তদারকিতে ইংরেজী ও সংস্কৃত শেখার জন্য ১৮৮৪-৮৫ খ্রীঃ পন্ডিত হেমচন্দ্র বিদ্যারত্ন মহাশয়ের দারস্ত হন। তিনি যে যথাযথভাবেই লেখাপড়া শিখেছিলেন সে প্রমাণ পাওয়া যায় তার সংস্কৃত থেকে রামায়ন বাংলায় অনুবাদ করার মধ্য দিয়ে। লেখাপড়ার পাশাপাশি তিনি ১৮৮৬ খ্রীঃ ‘সখিসমিতি’ ও ‘শিল্পমেলার কর্ত্রীসভার’ সখি নির্বাচিত হন। মার্ক টোয়েনের অনুরাগী মৃণালিনী দেবী ১৮৮৯ খ্রীঃ স্বামীর লেখা ‘রাজা ও রাণী’ নাটকে নারায়ণীর নাম ভূমিকায় অভিনয় করে সকলের কাছে প্রশংসিত হন। তিনি পরিবারসহ শিলাইদহ, গাজীপুর, কলকাতা ভ্রমণ/অবস্থান করেন এবং জীবনের একটি বিশেষ অংশ শান্তিনিকেতনে কাটান। নির্দ্বিধায় সকলেই স্বীকার করেন যে, মৃণালিনী দেবীর অসম্ভব ভাল হাত ছিল রান্না-বান্নায়। শান্তিনিকেতনের ‘আশ্রম বিদ্যালয়’ যা এখন ‘বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়’ তা প্রতিষ্ঠায় তার অবদানও বিশেষভাবে স্মরণীয়, প্রয়োজনের সময় তিনি তার গহনা এমনকি হাতের বালা পর্যন্ত খুলে স্বামীকে দেন। বিনয়ী, সুদর্শনা, সাজগোজে অনাগ্রহী, চির অভিমানী মৃণালিনী দেবী ১৯ বছরের বর্ণাঢ্য সংসার করে মাত্র ২৯ বছর বয়সে ২৩ সেপ্টেম্বর ১৯০২ খ্রীঃ জোড়াসাঁকোয় পরোলোক গমন করেন।
বেণীমাধব রায়চৌধুরী জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের বাজার সরকার/সেরেস্তার কোনো কর্মচারী ছিলেন। সেখানে তার মাইনে ছিল ১২ টাকা। তবে দক্ষিণডিহিতে বেণীমাধব বাবুর ৮.৪১ একর পরিমান জমি ছিল। জমিদার ঘরে মেয়ে বিয়ে দেবার পর তার কাঁচা ভিটে ভেঙ্গে ছেলে নগেন্দ্রনাথ রায়চৌধুরী ১৮৯০ খ্রীঃ পাকা ‘রায়বাড়ি’র নির্মাণ কাজ শুরু করেন। তাদের বাড়ির মূল ভবনটি ৬ কক্ষবিশিষ্ট ও ৬০ সেন্টিমিটার উঁচু একটি মঞ্চের উপর দন্ডায়মান। নীচ তলায় ৪টি, দ্বিতীয় তলায় ২টি ও একটি চিলেকোঠা নিয়ে পুরো ভবনটি বিন্যস্ত। দোতলার দক্ষিণ দিকে প্রশস্ত বারান্দায় দাঁড়িয়ে প্রধান প্রবেশ পথটি দেখতে বেশ লাগে। সেই পথ ধরে এগিয়ে আসলে ৫ ধাপ সিঁড়ি অতিক্রম করে ৩টি অর্ধচন্দ্র খিলান পথের মধ্য দিয়ে নীচ তলার বারান্দায় এসে উপস্থিত হওয়া যাবে। খিলান পথের সম্মুখের দেওয়ালের মাঝেরটি সদর দরজা ও দু’পাশে দুটি জানালা। বাড়ির পিছনের সিঁড়ি বেয়ে দোতলা ও চিলেকোঠায় যাওয়া যাবে। সিঁড়ির রেলিং লোহার নকশা ও কাঠের সম্বন্নয়ে গঠিত। দোতলার দক্ষিণেও একটি বারান্দা আছে যার সামনের দিকে ৬টি গোলাকার স্তম্ভ রয়েছে। দক্ষিণ দিক বাদে বাকী সব দিকে লোহার রেলিং আছে। উপরে কাঠের ড্রপওয়াল আছে।
ইট, চুন, সুরকীর গাঁথুনীতে তৈরী দালানটির ছাদ লোহার কড়িকাঠ ও কাঠের বর্গার সমন্নয়ে গঠিত। উভয় তলার ছাদ বরাবর সমান্তরাল কার্ণিশ আছে। তেতলার ছাদের শুধু দক্ষিণ দিকেই নকশা করা একটি প্রাচীর আছে। পুরো বাড়িটি একটি প্রাচীর দ্বারা ঘেরা। বাড়ির স্থাপত্যকলায় ইউরোপীয় রেনেসাঁ শৈলীর ছাপ লক্ষ্য করা যায়। টিনের চালওয়ালা তাদের আদি বাড়িটির অস্তিত্ব এখন আর নেই বটে তবে দোতলা বাড়ির উত্তর-পশ্চিম কোণায় সেই বাড়ির মেঝের আলামত দেখতে পাওয়া যায়।
বেণীমাধব বাবু সব সময় দক্ষিণডিহির বাড়িতে থাকতে পারতেন না, অধিকাংশ সময় তিনি কর্তব্যের প্রয়োজনে কলকাতায় অবস্থান করতেন। তার একমাত্র ছেলেও কলকাতায় থাকতেন এবং মাঝে মধ্যে এখানে আসা-যাওয়া করতেন। তার ছেলের পুত্রগণ কখনো কখনো ঐ একই উদ্দেশ্যে এখানে আসতেন। বেণীমাধব বাবুর ৮.৪১ একর বিষয় সম্পত্তির দেখাশুনাও তারাই করতেন। ১৯৪০ খ্রীঃ দিকে ফেলুবাবু তার পরিবারের অন্যন্য সদস্যদের নিয়ে দেশ ত্যাগ করেন। সম্ভবতঃ দেশ ত্যাগের আগে তিনি স্থানীয় জমিদার বিজয় কৃষ্ণ দাসকে তার পরিবারের সমুদয় সম্পত্তি বন্দোবস্ত দেন। বিজয় বাবু ১৯৬৫ খ্রীঃ দেহ ত্যাগ করার আগে জনৈক নবকুমার মুস্তাফিকে ফেলুবাবুর বাড়ি ও সম্পত্তি দেখভালের জন্য নায়েব নিযুক্ত করেন। অজ্ঞাত কারণে নায়েব সাহেব নিরুদ্দেশ হলে পর বাড়িসহ সকল সম্পত্তি বেদখল হয়ে যায়। ১৯৫৫/৬৫ খ্রীঃ ফেলুবাবুর ছেলে ধীরেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী ও ছেলে বউ নলিনীবালা দেবী শেষ বারের মতো দক্ষিণডিহি যান।
এরপর বাড়িটি অবৈধ দখলদারদের কবলে পড়ে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় বাড়িটিকে কেন্দ্র করে রবীন্দ্র স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হলে ৭ সেপ্টেম্বর ১৯৯৫ খ্রীঃ ঐতিহাসিক বাড়িটি অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়। ঐ একই বছরের ১৪ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে রবীন্দ্র কমপ্লেক্সের যাত্রা শুরু হয়। জেলা প্রশাসনের নিকট হতে ৮ আগষ্ট ২০০০ খ্রীঃ স্থাপনাটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরকে হস্তান্তর করা হলে, ২০১০ খ্রীঃ স্থাপনাটি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসাবে ঘোষনা দেওয়া হয়। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনায় ভারতের শান্তি নিকেতনের আদলে পূর্ণাঙ্গ রবীন্দ্র কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য প্রথমে কবি ও কবি পত্নীর আবক্ষ মূর্তি স্থাপন করা হয়। ভাষ্কর্য দুটি উদ্বোধন করেন কথাশিল্পী হাসান আজিজুল হক ও ড. সানজীদা খাতুন। অতপর, ২০১২ খ্রীঃ ভবন সংস্কার, সীমানা প্রাচীর, বিদ্যুৎ সংযোগ, বাড়ির পূর্ব দিকে পুরোনো ছবেদা তলায় মৃণালিনী মঞ্চ, রবীন্দ্র সংগ্রহশালা, পাঠাগার, পিকনিক স্পট, সংযোগ রাস্তা প্রশস্তকরণ, বিশ্রামাগার, প্রক্ষালন ইত্যাদি কাজ সম্পন্ন করা হয়। তবে এখনো মিলনায়তন, রবীন্দ্র চর্চা কেন্দ্র, অতিথিশালা, কারুশিল্প ইন্সটিটিউট, ছাত্রাবাস, পুকুর, অফিস ভবন, আবাসিক এলাকা, স্কুলসহ বেশ কিছু কাজ বাস্তবায়নের অপেক্ষায় আছে। দোতলা ইমারতটির আদি রং লাল হলেও এখন সাদা চুনকাম করা হয়েছে। অবশ্য প্রত্নতত্ত্ব অধদপ্তর বলছে মূল বাড়িটি সাদা রঙেরই নাকি ছিল, পরে লাল রং ধারন করেছে। সংস্কারের নামে নিদর্শনটির মৌলিকত্ব ও প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব নষ্ট করা হয়েছে এমন একটি অভিযোগ বিভিন্ন কর্ণার থেকে উত্থাপন করা হয়েছে।
১০ মে ২০১৫ খ্রীঃ থেকে স্থাপনাটি ‘দক্ষিণডিহি রবীন্দ্র স্মৃতি জাদুঘর’ হিসাবে সরকারি স্বীকৃতি লাভ করে। নির্ধারিত মূল্যে টিকেট কেটে আপনিও জাদুঘরে প্রবেশ করতে পারেন। কবি ও কবি পত্নীর বিভিন্ন সময়ের আলোকচিত্র, কবিতা, এই ভবনের সংস্কার কাজের আলোকচিত্র ইত্যাদি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে যা আপনি ঘুরে ঘুরে দেখতে পারেন।
দক্ষিণডিহিতে রবি বাবু আদেৌ তার শ্বশুরবাড়ি এসেছিলেন কিনা তা আসলে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। একবার খুলনা মহাকুমা হাকিমের আদালতে হাজিরা দেবার পর ০৪ ডিসেম্বর ১৯০৮ খ্রীঃ সম্ভবত রবীন্দ্রনাথ তার শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলেন, তার আগমন উপলক্ষ্যে নিকটবর্তী রেল স্টেশন সাজানো, তাকে বরণ করার জন্য সেখানে জন সমাগম ইত্যাদি নানা তথ্য বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া গেলেও সে সব প্রমাণের অভাবে গ্রহন করা হয়নি। বিয়ের আগে বউদির সাথে কণে দেখা উপলক্ষ্যে বা মায়ের সাথে মামা বাড়ি বেড়াতে আসা ইত্যাদি ঠিক কবে, কখন হয়েছিল তাও বিতর্ক উতরাতে পারেনি। তবুও রবীন্দ্র বা রবীন্দ্র পরিবারের স্মৃতি বিজোড়িত ঐতিহাসিক বাড়িটি এখন আমাদের ঐতিহ্যের একটি অংশ।
প্রতি বছর ২৫ শে বৈশাখ ও ২২ শে শ্রাবণে রবীন্দ্র জয়ন্তী ও কবি প্রয়াণ দিবস বেশ আড়ম্বরের সহিত পালন করা হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথ ও মৃণালিনী দেবীর বিবাহ বার্ষিকীতে এখানে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, লোকমেলা ইত্যাদির আয়োজন হয়। যাদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় বাড়িটি সংরক্ষন করে পর্যটক-বান্ধব করা সম্ভব হয়েছে তাদের প্রতি রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা। আমরা মৃণালিনী দেবীসহ তার স্বামী রবীন্দ্রনাথ ও পরিবারের অন্যান্য পরলোকগত সকল সদস্যের প্রতি জানাই আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি। এশিয়া মহাদেশের প্রথম নোবেল বিজয়ী, বাংলা সাহিত্যের প্রবাদ-পুরুষ, দু’টো দেশের জাতীয় সংগীতের একমাত্র রচয়িতা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও তার পরিবারের স্মৃতি-বিজোড়িত দক্ষিণডিহি গ্রাম দেশ-বিদেশে আজ সুপরিচিত। সময়-সুযোগ মতো আপনিও যাবেন একবার…
আমরা বৃহত্তর যশোর-খুলনার মানুষেরা অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি আমাদের…
‘‘বাড়ির কাছে আরশী নগর
(একঘর) সেথা পড়শী বসত করে
আমি একদিনও না দেখিলাম তারে…”
———————————————————————————————————————————————-
০৭ মে ২০১৮/
mamun.380@gmail.com
তথ্যসূত্রঃ
১. যশোহর খুলনার ইতিহাস, প্রথম খন্ড, সতীশ চন্দ্র মিত্র, পৃঃ ২২১-২২৯/
২. যশোহর খুলনার ইতিহাস, দ্বিতীয় খন্ড, সতীশ চন্দ্র মিত্র, পৃঃ ৫৪০/
৩. যশোর জেলার ইতিহাস, আসাদুজ্জামান আসাদ সম্পাদিত, পৃঃ ১৩২/
৪. ৬৪ জেলা ভ্রমণ, লিয়াকত হোসেন খোকন, পৃঃ ২৮২/৪৭১/
৫. বাঙলাদেশের প্রত্নসম্পদ, আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া, পৃঃ ৪২৪/
৬. বাংলাদেশের মুসলিম পুরাকীর্তি, ড. সৈয়দ মাহমুদুল হাসান, পৃঃ ৭০/
৭. বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্বশুরবাড়ি, আঞ্চলিক পরিচালকের কার্যালয়, খুলনা, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়/
৮. আমি মৃণালিনী নই, হরিশংকর জলদাস/
৯. রবীন্দ্র কমপ্লেক্সের সব উন্নয়ন থেমে গেছে, বিধান দাশগুপ্ত, দৈনিক প্রথম আলো, ০৭ মে ২০০৮ খ্রীঃ/
১০. দক্ষিণডিহিতে রবীন্দ্র কমপ্লেক্স কতদূর?, দৈনিক কালের কন্ঠ, ০৮ মে ২০১২ খ্রীঃ/
১১. বিস্মৃত এক নগরী, সাইফুল ইসলাম, দৈনিক সমকাল, ২০ অক্টোবর ২০১২ খ্রীঃ/
১২. খুলনা, দৈনিক সমকাল, ০৫ ডিসেম্বর ২০১২ খ্রীঃ/
১৩. বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্বশুরবাড়ি গ্রাম-দক্ষিণডিহি, সবুজ ওয়াহিদ, প্রিয়.কম, ০৯ মে ২০১৩ খ্রীঃ/
১৪. রবীন্দ্রনাথের শ্বশুরবাড়ি, মনোজ কুমার মজুমদার, দৈনিক প্রথম আলো, ৩১ আগষ্ট ২০১৩ খ্রীঃ/
১৫. শ্বশুরবাড়ি দক্ষিণডিহি, এই সময়, সুশীল সাহা, ০৪ জুন ২০১৪ খ্রীঃ/
১৬. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্বশুরবাড়ি, freetouristguide, ১৭ জুলাই ২০১৪ খ্রীঃ/
১৭. রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিবিজড়িত স্থান, দৈনিক বর্তমান, ০৯ অক্টোবর ২০১৪ খ্রীঃ/
১৮. ‘শ্রীযুক্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শুভবিবাহ সম্পন্ন’, ফখরে আলম, দৈনিক কালের কন্ঠ, ০৯ ডিসেম্বর ২০১৪ খ্রীঃ/
১৯, রবীন্দ্র-মৃণালিনীর স্মৃতিধন্য ভবন সংস্কারের নামে পুরাকীর্তি নষ্ট, দৈনিক প্রথম আলো, ২৭ জানুয়ারী ২০১৫ খ্রীঃ/
২০. ২০ বছরেও পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়নি দক্ষিণ ডিহির রবীন্দ্র কমপ্লেক্স, দৈনিক সংগ্রাম, ১০ মে ২০১৫ খ্রীঃ/
২১. কবিগুরুর বিয়ের গল্প, তাপস রায়, রাইজংবিডি.কম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ খ্রীঃ/
২২. খুলনায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অরুণ শীল, এই বেলা.কম, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৫ খ্রী /
২৩. দক্ষিণডিহিতে রবীন্দ্রনাথ ও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, আবুসালেহ সেকেন্দার, ০৭ মে ২০১৬ খ্রীঃ/
২৪. দক্ষিণডিহির রবীন্দ্র জাদুঘরে বেড়েছে পর্যটক সমাগম, এনামুল হক, দৈনিক ইত্তেফাক, ০৮ মে ২০১৬ খ্রীঃ/
২৫. কখনও দক্ষিণডিহির শ্বশুরালয়ে যাননি রবীন্দ্রনাথ!, আসিফ আজিজ, ৩০ ডিসেম্বর২০১৬ খ্রীঃ/
২৬. রবীন্দ্রনাথের জীবনে ঘনিষ্ট দুই নারী মৃণালিনী ও কাদম্বরী, এম এম খায়রুল আনাম, দৈনিক কালের কন্ঠ, ১২ জানুয়ারী ২০১৭ খ্রী/
২৭. রবীন্দ্রনাথের জীবনে মৃণালিনী, দিনেশ মাহাতো, দৈনিক জনকন্ঠ, ২৭ জানুয়ারী ২০১৭ খ্রী/
২৮. রবীন্দ্রনাথের শ্বশুরবাড়ি দক্ষিণডিহি, বিধান দাসগুপ্ত, বাংলাদেশ প্রতিদিন, ২৮ এপ্রিল ২০১৭ খ্রীঃ/
২৯. আজও পূর্ণতা পায়নি রবীন্দ্র কমপ্লেক্স, শামসুল আলম খোকন, লোকসমাজ, ০৫ মে ২০১৭ খ্রীঃ/
৩০. ২২ বছরেও পূর্ণতা পায়নি খুলনার রবীন্দ্র কমপ্লেক্স, পরিবর্তন, ০৬ মে ২০১৭ খ্রীঃ/
৩১. বাংলাদেশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কবির পিতৃপুরুষের আদি বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ি, দৈনিক প্রথম আলো, ০৭ মে ২০১৭ খ্রীঃ/
৩২. খুলনার রবীন্দ্র কমপ্লেক্স অবহেলিত রয়ে গেল, মুহাম্মদ নুরুজ্জামান, রাইজংবিডি.কম, ০৮ মে ২০১৭ খ্রীঃ/
৩৩. ফুলতলার ‘রবীন্দ্র কমপ্লেক্স’ ২২ বছরেও পূর্ণতা পায়নি, দৈনিক প্রথম আলো, ০৯ মে ২০১৭ খ্রীঃ/
৩৪. রবীন্দ্রনাথের শ্বশুড়বাড়ি দক্ষিণ ডিহি ও পৈত্রিক নিবাস পিঠাভোগ দৃষ্টিনন্দন হচ্ছে, দৈনিক সংগ্রাম, ১৬ মে ২০১৭ খ্রীঃ/
৩৫. রবিঠাকুরের শ্বশুরবাড়ি, তাসনুভা মেহজাবীন, হ্যালো.বিডিনিউজ২৪.কম, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭ খ্রীঃ/
৩৬. উইকিপিডিয়া/বাংলাপিডিয়া/অন্তঃজাল
Bhalo Likhechen ...
আশা করি সবারই খুব কাজে লাগবে ...
এন্ড্রয়েড এ্যাপ টি আপনার ফোনে ইনস্টল করতে নিচের ইমেজটিতে ক্লিক করুন ...
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.grayblueit.mahe_ramzan
ধন্যবাদ
চমৎকার, তথ্যসমৃদ্ধ একটি পোস্ট।
অচর্চিত ইতিহাস একসময় বিলুপ্ত হয় বিস্মৃতির অতল গর্ভে। তোমার এ প্রয়াস ইতিহাস জানতে ইচ্ছুক পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে বলে আমার বিশ্বাস।
আপনার সুন্দর ও অনুপ্রেরণামূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।