জব্বার এর বলি খেলার কথা অনেক অনেক বার শুনেছি শুধু। অনেক সময় টিভি তে বা খবরে এক নজর দেখারও সুযোগ হয়েছে। তবে এবার বৈশাখী মেলায় বলি খেলা সামনা সামনি দেখার সুযোগ হয়েছে। এই কুস্তি/বলি খেলা যে কতটা থ্রিলিং সামনা সামনি না দেখে বুঝা মুশকিল। সবচেয়ে মজার ব্যপার হলো শুধু শক্তিশালী বা আকারে বড় হলেই যে এই খেলায় যে জিত নিশ্চিত তা নয়, বরং টেকনিকটাই আসল। প্রথমে টিভিতে দেখা WWW এর রেসলিং এর সাথে তুলনা করে অনেক স্লো খেলা মন হচ্ছিল, আসলে খেলার নিয়মটাই এমন। ধীরে ধীরে কুস্তি করে প্রতিপক্ষ কে কাবু করতে হয়।
এর ইতিহাসটা আরো মজার। ভারতবর্ষের স্বাধীন নবাব টিপু সুলতানের পতনের পর এই দেশে বৃটিশ শাসন শুরু হয়। বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ এবং একই সঙ্গে বাঙালি যুবসম্প্রদায়ের মধ্যে ব্রিটিশবিরোধী মনোভাব গড়ে তোলা এবং শক্তিমত্তা প্রদর্শনের মাধ্যমে তাদের মনোবল বাড়ানোর উদ্দেশ্যে চট্টগ্রামের বদরপতি এলাকার ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর বলী খেলা বা কুস্তি প্রতিযোগিতার প্রবর্তন করেন। ১৯০৯ সালের ১২ বৈশাখ নিজ নামে লালদীঘির মাঠে এই বলীখেলার সূচনা করেন তিনি। ব্যতিক্রমধর্মী ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য ব্রিটিশ সরকার আবদুল জব্বার মিয়াকে খান বাহাদুরউপাধিতে ভূষিত করলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি আমলে বৃহত্তর চট্টগ্রাম ছাড়াও বার্মার আরাকান অঞ্চল থেকেও নামী-দামি বলীরা এ খেলায় অংশ নিতেন।
আমি সেভাবে ছবি তোলার বা ভিডিও করার প্রস্তুতি নিয়ে যাই নি। আমি যেখানে থাকি, সেখানে মেলায় বলি দের কে খেলায় অংশগ্রহনের আমন্ত্রন জানানো হয়। এর মাঝে গত বারের চ্যম্পিওন জীবন বলিও ছিল। ২ দিন ব্যাপী খেলা শেষে আবারো এই প্রতিযোগীতায় জীবন বলীই তার কোশলী খেলায় বাকিদের পরাজিত করে চ্যাম্পিওন ট্রফি পেয়ে যায়।
ইচ্ছা আছে আগামি বছর ১২ বৈশাখ বা ২৫ এপ্রিল আসল জব্বারের বলি খেলা দেখার ইচ্ছে আছে। আপনাদের যদি কারো সামনা সামনি খেলা দেখার ইচ্ছে হয়, চলে আসতে পারে, লাল দীঘীর মাঠে, চট্টগ্রাম।
এই খেলাটি অত্যন্ত চমৎকার ও জনপ্রিয় খেলা । খুব ভালো লাগলো ।