মাঝে মাঝে নিজের মন কে ছুটি দিতে হয় এই শহুরে কোলাহল থেকে। ক্লান্ত-শ্রান্ত মন কে নিয়ে যেতে হয় প্রকৃতির কাছে, সবুজের মাঝে। এজন্যই গত সপ্তাহে ঘুরতে গিয়েছিলাম সীতাকুণ্ড এর চন্দ্রনাথ পাহাড়ে।
শহর থেকেমাত্র ২৫ কিমি দূরেই সীতাকুণ্ড। সেখানে সিএনজি অটো বা মাইক্রো ভারা করে আপনি সহজেই যেতে পারেন। আমরা ১৩ জন মিলে লেগুনা ভাড়া করেছিলাম। সকাল ৮ টায় চিটাগাং এ কে খান বাস স্টপ থেকে যাত্রা শুর করে দেড় ঘন্টার মধ্যেই পৌঁছে যাই। মাঝপথে আবার গাড়ি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল বলে ৩০ মিনিটের বিলম্ব। দিনটা বেশ পরিষ্কার। মেঘ মুক্ত পরিস্কার নীল আকাশ, সকাল ১০ টার দিকেই প্রচন্ড তাপ দিচ্ছে।কয়েকদিন বৃষ্টির পরে আকাশে যেন নতুন সূর্য উঠেছে।
সীতাকুণ্ড শহর থেকে পুব দিকে চন্দ্রনাথ পাহাড়। রাস্তায় কাওকে বললেই দেখিয়ে দিবে। কলেজ রোড, এর পর ব্যাস কুন্ড। তারপর আর গাড়ি যায় না। গাড়ি থেকে নেমেই দেখি পাহাড় দেখা যাচ্ছে।
পাহাড় দেখেই এত তাড়াতাড়ি উঠতে শুরু করি যে ১০ মিনিট হাটার পড়েই একদম ক্লান্ত হয়ে যাই। তারপর রেস্ট নিয়ে নিয়ে উঠে যেতে প্রায় ২ ঘন্টা লেগে গেল। প্রথম পাহাড়ে উঠার পড়ে মনে হচ্ছে আর কোন শক্তি নাই। এদিকে পানি যা নিয়ে এসেছিলাম, সব খেয়ে শেষ। আরো বেশি পানি আনলে ভালো হত হয়ত। সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগতেছিল অসহ্য গরমের জন্য। তবে পাহাড়ে উঠে দেখি ঠাণ্ডা বাতাস আর মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। মনে এত কস্ট করে আসা টা স্বারথক হলো।
এরপর আমরা ২য় পাহাড়ে বড় মন্দির টা দেখার জন্য চলে যাই। এটা আরো উপরে কিন্তু এই পথ টা দিয়ে উপরে উঠতে তেমন কষ্ট হচ্ছিল না। হালকা বৃষ্টি হউয়ায় ঠাণ্ডা বাতাস আর ছায়া ছিল বলে হয়ত।
আমরা প্রায় দেড় ঘন্টা পাহাড়ের উপর ছিলাম। কি অপরূপ দৃশ্য। একপাশে বড় বড় টিলা-পাহাড়, অন্য পাশে সমুদ্র। সীতাকুন্ড শহরটাও দেখা যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, এখানেই একটা বাড়ি বানিয়ে থেকে যাই। কিন্তু তা কি আর হয়? আমাদের নেমে যেতে হলো একটু তাড়াতাড়ি করেই। কারন এরপর খেয়ে দেয়ে আবার গুলিয়াখালি যেতে হবে।
গুলিয়াখালি সি বীচ সীতাকুণ্ড থেকে মাত্র ১০ কিমি পশ্চিমে। যেতে প্রায় ২৫ মিনিট লাগলো। সাড়ে ৫ টায় গিয়ে পৌছলাম, তারপর অ মনে হলো দেরী হয়ে গেল। আরো আগে আসলে ভাল লাগত।
জোয়ারে পানি আসা শুরু হয়ে গিয়েছিল প্রায়।
অবশেষে আমরা ফেরার জন্য রওনা করি। সাক্সেসফুল একটা ট্যুর ছিল। তবে যারা এখানে যাবেন তাদের জন্য কিছু টীপ্সঃ
১। ভোরে পাহাড়ে উঠা সবচেয়ে ভাল। নাহয় রোদের তাপে যায় যায় অবস্থা হয়ে যায়।
২। প্রচুর পানি এবং স্যালাইন নিয়ে যাবেন। পাহারে উঠার সময় এর উপযোগিতা হারে হারে টের পেয়েছিলাম।
৩। গামছা বা সান ক্যাপ নয়ে যাবেন। সানগ্লাস নেয়াও ভালো।
৪। পাহাড়ে উঠার সময় বামের রাস্তা ফলো করবেন আর নামার সময় ডান পাশের টা, মানে যেটায় সিঁড়ি করা।
৫। গুলিয়াখালি বিচে যাওয়ার সময় অবশ্যই জোয়ার ভাটার সময় যেনে নিবেন।
সবশেষে আমার করা একটু ছোট্ট ভিডিও দেখে নিতে পারেন, ভালো লাগবে আশা করি
:clap: :clap:
:thumbup: :thumbup:
ধন্যবাদ ভাই
বেশ ভাল লাগল তোমার লেখাপড়ে। ভ্রমনই হোক জীবনের লক্ষ্য....