ম্যাজিক বয় – ০১ – ০২ – ০৩ – ০৪ – ০৫
রাতে রফিকের না ফেরাটা খুব চিন্তার বিষয় ছিল। কিন্তু শফিক বা ফরিদা খুব একটা চিন্তা করলেন না। ভাইজান সারাদিন যে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন তাতে তার চলে যাওয়ার আনন্দেই তারা মশগুল ছিলেন। ফরিদা বরং একটু নিশ্চিন্তই থাকলেন, কারণ রফিক সঙ্গে থাকলে যাই হোক রতনের কোনো ক্ষতি হবে না। আর সে বাড়ি এসে করবে কী! ঘুমাবেই তো। তার চেয়ে এই ভালো।
কিন্তু সকালবেলা দুশ্চিন্তায় পড়তে হলো। কারণ মোহামেডান ক্লাবের সেক্রেটারি সেলিম বিশাল এক গাড়ি হাকিয়ে এসে জানতে চাইলেন, রতন কোথায়?
শফিক বললেন, রতনকে তো ওরা নিয়ে গেছে।
কারা?
যাদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল। ৫ লাখ টাকার চুক্তি।
সেলিম ধমকে ওঠলেন, যাদের সঙ্গে ৫ লাখ টাকার চুক্তি হয়েছিল! ওর মা কোথায়?
ফরিদা বেরিয়ে তাকে সম্মান দেখানোর সুযোগ পেলেন না। তার আগেই সেলিম তাকে অসম্মান করে ফেললেন খানিকটা। আপনারা কি ছেলে নিয়ে ব্যবসা পেতে বসেছেন?
এসব কি বলছেন ভাই আপনি?
রতন কোথায়?
রতনকে না আপনাদের লোকেরাই রাতে নিয়ে গেলো!
আমাদের লোকেরা? আমাদের কেউ এসেছিল?
দুজন লোক এসে বলল, আপনারাই পাঠিয়েছেন ওকে নিরাপদে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
ওহহো! আপনি আমাদের জানাবেন না। দুজন লোক বলল আর আপনারা তাদের দিয়ে দিলেন!
ওরা যে চুক্তির কপি দেখালো!
কোথায় সেটা।
কপিটা নিয়ে আসার পর দেখা গেলো সেটা একটা ভুয়া চুক্তিপত্র।
ফরিদা আর্তনাদ করে উঠলেন, আমার ছেলে! আমার ছেলে কোথায়?
অত চিন্তার কিছু নেই।
আমার ছেলে কি কিডন্যাপ হয়েছে? এখন কী হবে?
শেফালিও এসে কান্না জুড়ে দেয়, রতন কিডন্যাপ হয়েছে। এখন কী হবে গো?
সেলিম ধমক দিয়ে বলেন, রতন কিডন্যাপ হয়নি। ওকে যারা নিয়েছে তাদের আমরা চিনি। চলো আরেফীন বলে তিনি চলে যান।
শফিক কী করবেন ঠিক বুঝে না পেয়ে চুক্তিপত্রটা দেখতে বসেন। ফরিদা ধমকে ওঠেন, তুমি না উকিল। একটা ভুয়া চুক্তিপত্র ধরতে পারলে না!
এখন আমার দোষ হয়ে গেল!
আর তোমার বড় ভাই। এত না ঠাটবাট, এখন আমার ছেলে তো তার জন্যই গেল। আমি সবাইকে জেলের ভাত খাওয়াব।
সেদিন রাতে রতনদের নিয়ে গাড়িটা চলল সারারাত। ভোরের আলো যখন ফুটছে তখন রফিক জানলেন যে তারা পাহাড়ি কোনো এলাকায় চলে এসেছেন। বই পড়ে তিনি জানেন, বাংলাদেশে পার্বত্য চট্ট্গ্রাম বলে একটা জায়গা আছে। সেখানকার কোনো একটা নির্জন বাড়িতেই তাদের নিয়ে নামানো হলো।
রফিক জিজ্ঞেস করলেন, আপনারা কি আমাদের অপহরন করলেন?
তা একরকম বলতে পারেন!
কারণটা কি? আমাদের অপরাধ!
অপরাধ এই ছেলেটা ম্যাজিক জানে।
সেটা অপরাধ!
একরকমের অপরাধ তো বটেই।
অপরাধী হিসেবে গন্য করা হচ্ছে যখন তখন তাদের ঠিকমতো খেতে দেওয়া হবে না বলেই মনে করেছিলেন রফিক। হয়ত মাটিতে শুতে হবে। ঢাকা শহরেই মশার যন্ত্রণায় ঘুমানো যায় না, পাহাড়ে নিশ্চয়ই তার চেয়ে বড় কোনো উপদ্রব থাকবে।
কিন্তু বাস্তব ঘটনা সেরকম নয়। খুবই সাজানো-গোছানো একটা ঘর। সেখানে এমনকি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র পর্যন্ত আছে। সকালে নাস্তার আয়োজনটা হলো জম্পেশ। এত খাবার একসঙ্গে কোনোদিন ওরা দেখেনইনি।
রফিক একটু হিসাব মেলালেন, খুব সম্ভব এরা রতনকে বাইরে পাচার করে দেবে। এমনিতে সাধারণ ছেলেদেরই বিদেশে অনেক দাম, ছেলেধরার কাহিনী তো প্রায়ই শোনা যায়, রতন নিশ্চয়ই তার চেয়ে অনেক বেশি দামে বিকাচ্ছে। হয়ত বিক্রেতাদের কাছে রতনকে আকর্ষণীয় করে রাখার জন্য এমন সুরম্য ব্যবস্থা।
যে লোকটি গাড়ির সামনের সিটে বসেছিল সে ওদের নাস্তার টেবিল দেখিয়ে বলল, রতন তুমি খেয়ে নাও। খেয়ে বিশ্রাম নাও। আর এই যে তোমার জন্য অনেকগুলো বল রাখা আছে। সামনের লনও আছে। তুমি যখন ইচ্ছা খেলতে পারো। কোনো সমস্যা নেই।
রফিক ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করল, ঠিক কোন দেশে ওকে পাঠাচ্ছেন?
লোকটি ভুরু কুচকে বলল, কোন দেশে মানে!
না। মানে দেশটার নাম আগে জানলে একটু প্রস্তুতি নেয়া যেত। ধরেন ওখানে গিয়ে যদি ওদের ভাষায় কথা বলতে পারি তাহলে একটু সুবিধা হতো।
লোকটি হেসে দেয়। হাসতে হাসতে বলে, এখনই সবকিছু আপনাদের খোলাসা করতে পারছি না বলে দুঃখিত। কিন্তু আপনারা টেনশন নেবেন না। খুব দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
রতনের মধ্যে দেখা গেলো সত্যিই দুশ্চিন্তার কিছু নেই। সে গিয়ে খেতে বসেছে।
রফিকের আফসোস হতে থাকল। কেন তিনি ওর সঙ্গে আসতে গেলেন। ওরা একজনকে সঙ্গে আনতে চেয়েছিল। ভাইজানকে পাঠিয়ে দিলেই হতো।
আচ্ছা এখান থেকে কি পালিয়ে যাওয়া যায়! বাড়িতে একটা ফোন করলে হত। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তিনি বাড়ির ফোন নাম্বারটা জানেন না। জানার দরকারই হয়নি কোনো? তাকে অপহরন করা হতে পারে এটা কি ভাবতে পেরেছিলেন কোনোদিন?
রতনকে বললেন, রতন তুই চিন্তা করিস না। আমাদের এখান থেকে পালাতে হবে।
পালাতে হবে? কেন?
কেন বুঝতে পারছিস না? আমরা ছেলেধরার হাতে পড়ে গেছি।
ছেলেধরার হাতে পড়লে আমি পড়েছি। তুমি তো আর ছেলে নও। রতন হাসে।
রফিকের গা জ্বলে যায়। এই ছেলেটা অস্বাভাবিক হয়ে গেছে।
যে খাতাটায় রতনের মনোগত পরিবর্তন তিনি লিখে রাখছিলেন সেই খাতাটা সঙ্গে নিয়ে এলে এটাও নোট রাখতেন। ছেলেধরার হাতে পড়ার পরও সে রসিকতা করে। কিন্তু খাতাটাও আনা হয়নি।
রফিকের মেজাজ ভীষণ গরম হয়। আরও গরম হয় যখন দেখেন রতন এর মধ্যেই বল নিয়ে নেমে গেছে। দুটো লোককে সম্ভবত রাখা হয়েছে তাদের পাহারার দায়িত্বে, রতন তাদের নিয়ে খেলতে নেমে গেছে।
বিপদ! কী বিপদ!
কী করবেন এখন? তিনি চিরদিন দর্শনের বই পড়েছেন, মন এবং মনস্তত্ব, তার কোনো জ্ঞানই এখানে কাজে লাগানো যাচ্ছে না। ভেবে কোনো কুল পান না। তাই শেষে ঘুমিয়ে পড়েন।
দুপুরের দিকে রফিকের ঘুম ভাঙ্গে। একটা প্রচণ্ড শব্দে। ভয় পেয়ে প্রথমে কম্বল দিয়ে মাথা আরও ঢেকে নিয়েছিলেন। কম্বলের নীচে যাওয়ার পর আর কোনো শব্দ নেই। তার মনে হল ভয় দূর হয়ে গেছে। তিনি আস্তে আস্তে মাথাটা তুললেন, তুলে যাকে দেখলেন তাতে ভয় পাবেন না নির্ভয় হবেন ঠিক বুঝতে পারছিলেন না।
আবাহনী ক্লাবের ম্যানেজার হীরু বললেন, আমাকে দেখে চমকে গেছেন!
রফিক মাথা নাড়েন।
হীরু অপহরনকারী দলের সদস্য নাকি তিনি যাদের তিনি অপহরনকারী ভাবছেন তারা আসলে আবাহনী ক্লাবের লোক এই ভেবে তার মাথা গুলিয়ে যায়। দুটোর মধ্যে কোনটা হলে ভালো হয় সেটাও চিন্তার কথা। কারণ আবাহনীর সঙ্গে তিনি যে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন তার জন্যও তো শাস্তি প্রাপ্য। ওদের সঙ্গে চা-টা খেয়ে এসে দিব্যি মোহামেডানের সঙ্গে চুক্তি করে ফেলেছেন।
হীরু সোজা কথায় চলে যান, আপনি আমাদের সঙ্গে যেটা করেছিলেন সেটা কি ঠিক?
আপনারা আমাদের সঙ্গে যা করছেন সেটাও কি ঠিক?
ঠিক।
তাহলে আমাদেরটাও ঠিক। ওরা ৫ লাখ টাকা দিয়েছে। এক লাখ এডভান্স। আপনারা কোনো এডভান্স দেননি।
এজন্যই তো আপনাদের এখানে নিয়ে আসতে হলো।
কী করবেন? বিদেশে পাচার করে দেবেন। দেশের এমন একটা সম্পদকে…
আরে দুর। বিদেশে পাচার করব কেন? রতন আবাহনীর হয়ে খেলবে। দুদিন আপনাদের এখানে রাখা হবে। পরশুদিন থেকে দলবদল শুরু হচ্ছে। এখান থেকে সোজা গিয়ে সে রেজিস্ট্রেশন করে আসবে। তারপর আর কোনো সমস্যা নেই।
কিন্তু সেটা আমাদের বুঝিয়ে বললে হতো না! কী ভয় পেয়েছিলাম?
আপনাদের কিছু ভয় দেখানোর দরকার ছিল।
আচ্ছা এখন তাহলে বাড়িতে একটু খবরটা দিয়ে দেন। ওরা খুব টেনশনে আছেন।
খবর দেয়া যেত। কিন্তু খবরের সূত্র ধরে অনেক কিছু বেরিয়ে যাবে। দুটো মাত্র দিন তো! আর রতন তো ভালোই আছে। সে খেলাধুলা করছে। ঐ যে দেখেন!
দেখা গেলো রতন মনের আনন্দে খেলছে। পেছনে পাহাড়, অবারিত মাঠ পেয়ে তার ফুটবলপ্রতিভা যেন আরও শানিত। রফিক মুগ্ধ হয়ে দেখেন। বাস্তব জগতে ফিরে আসার পর দেখছেন জগতটা জটিলতা আর কুটিলতায় ভরা,কিন্তু এই জগতে যে আবার এমন মন ভরানো খেলাও দেখা যায়। পৃথিবীর এমন কিছু আনন্দ আছে বলেই বোধহয় জাগতিক এত কষ্ট মানুষ সহ্য করে নেয়। আরও বাঁচতে চায়।
দুটো দিন কাটল দারুন। ভয় কেটে যাওয়ার পর রফিক ঘুরে বেড়ালেন। প্রত্যন্ত পাহাড়ে গিয়ে দেখলেন এরও এক সৌন্দর্য আছে, নিজস্ব একটা ভাষা। না জীবন জিনিসটা খুব খারাপ নয়।
ওরা যখন বিশাল গাড়ি বহর নিয়ে ফুটবল ফেডারেশনের অফিসে এলেন তখন সেটা যাকে বলে জনারন্য। এতদিন রতনকে চিনত তার এলাকার মানুষ এবং ফুটবলের কিছু কর্মকর্তা, এখন টের পাওয়া গেল রতন জাতীয় ব্যক্তিত্ব হয়ে গেছে। এবং জাতীয় ব্যক্তিত্ব এমনকি তার ভাই-ভাবীও। ভাবীর ছবি ছাপা হয়েছে, ভাইয়ের সাক্ষাৎকার। রতনের পুরনো একটা ছবি ছেপে একটা পত্রিকা তাদের প্রথম পৃষ্ঠার প্রধান খবর করেছে, ম্যাজিক বয় এখন কোথায়? ম্যাজিক বয় নামটা খুব বাজার পেয়ে গেছে। এই বিশেষণটা সর্বজনীন। সবাই ব্যবহার করেছে।
আবাহনী সমর্থকগোষ্ঠী আগে থেকেই খবরটা জানত, কাজেই তারা ঢোল-বাদ্য নিয়ে হাজির। রতনের ছবি সম্বলিত টি-শার্টও বেরিয়ে গেছে বাজারে। তাদের বেশিরভাগের গায়ে সেই টি-শার্ট। না। রতন জাতীয় ব্যক্তিত্ব হয়ে গেলো। সেই রতন যে গত সপ্তাহেও ফরিদার হাতে কানমলা খেয়েছে। কথার উত্তর না দেয়ার জন্য তিনি দৌড়ে মারতে গিয়েছিলেন। রতনের কি এসব মনে আছে? মনে থাকলে কি সে তার ওপর প্রতিশোধ নেয়ার চেষ্টা করবে? এখন রতন যদি সবাইকে বলে এই লোকটা আমাকে মারতে চেয়েছিল, তোমরা তাকে মারো তাহলে নিশ্চিত লোকগুলো তাকে পিটিযে ভর্তা বানিয়ে দেবে? মানুষ যখন এমন বিখ্যাত হয়ে যায় তখন তাদের পুরনো দিনের কথা কি মনে থাকে? থাকলে কতোটা?
রতনের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে? কিন্তু রতন তো বলবে মনে হয় না। সে যেন এখন মানুষের সম্পত্তি হয়ে গেছে। এই কয়দিনে একবারও তো সে মায়ের কথা জিজ্ঞেস করল না! বিখ্যাত হলে কি মা কেমন আছেন সেটা জানার আগ্রহ থাকে না!
প্রথম ম্যাচে নামার আগে অবশ্য রতন মায়ের দোয়া নিয়ে গেল। এমনকি রফিককেও পা ছুঁয়ে সালাম করল।
মোহামেডান সমর্থকরা ক্ষুব্ধ ছিল। তাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে পরে আবাহনীতে খেলা, তা হোক না সেটা বাধ্য হয়ে, মেনে তো নেয়া যায় না। ঘটনার রেশে সেক্রেটারি সেলিম সাহেবকে এই মৌসুমের দলের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। কাজেই ওরা রতনের বিরোধিতা করবে এটাই তো স্বাভাবিক। ওরা ওর বিপক্ষে চেঁচাল, সে বল পেলেই ‘ভুয়া। ভুয়া’ চিৎকার।
রতন পাত্তাই দিল না। দিল আসলে। নইলে দ্বিতীয় মিনিটেই গোল করবে কেন? মাঝমাঠ থেকে এমন অবিশ্বাস্য শট যে জাল প্রায় ছিড়ে যায়। দ্বিতীয় গোলটি করল তিনজনকে কাটিয়ে। রাইট উইংয়ে বল ধরে ইনসাইড ডজে ঢুকে গেল ভেতরে, ডি বক্সের ঠিক বাইরে বডিডজে ছিটকে ফেলল সেন্ট্রাল ডিফেন্ডারকে, ওখান থেকে শট নিলেই গোল হয়। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে গতি বাড়িয়ে ওয়ান টু ওয়ান হয়ে গেল। গোলরক্ষক বেরিয়ে এসেছিল, বুটের ডগা দিয়ে বলটা একটু তুলে বুক দিয়ে সরিয়ে নিল। তারপর বল নিয়ে জালে গোলে ঢুকল একেবারে রাজা-রাজরার মতো!
এমন ফুটবল বাংলাদেশের মানুষ স্বপ্নেও দেখেনি। আবাহনী গ্যালারি তখন আরেকটু হলে ভেঙ্গে পড়ে এবং মোহামেডান গ্যালারি তারাও এখন উল্লাসে শামিল। মানবীয় ক্ষমতার ফুটবলারের বিরোধীতা করা যায়, কিন্তু এতো স্বর্গ থেকে নেমে আসা রতœ যেন। বহুদিন পর বাংলাদেশের মানুষ এটাও দেখল যে আবাহনী-মোহামেডান গ্যালারি একেবারে একাকার। তার আগে অবশ্য বহুদিন পর গ্যালারি-ভর্তিও দেখা গেল। ক্রিকেটের জোয়ার এবং ফুটবলের ভাটায় গত কয়েক বৎসর কাক আর পুলিশ ছিল ফুটবল দর্শক, রতনসূত্রে এবার মানুষও আসবে নিশ্চিত। প্রথম দিনে একটা ছোট ম্যাচেই তো মানুষে ভর্তি।
ম্যাচ শেষে সাক্ষাৎকারের জন্য মানুষের ভীড়। এতটাই যে ফরিদা কিংবা রফিকও তার কাছে যেতে পারল না।
অনেক অনুরোধে রতন শুধু একটা কথাই বলল, মাত্র তো শুরু। আরও অনেক কিছু বাকি আছে।
কেউ একজন প্রশ্ন করল, আপনি কি বাংলাদেশকে বিশ্বকাপে নিয়ে যেতে পারবেন?
রতন কিছু বলল না। আবাহনীর সেক্রেটারি হীরু বললেন, রতন যে ফুটবলটা খেলছে সেটা খেললে বিশ্বকাপ কেন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নও হওয়া সম্ভব।
সাংবাদিকরা কলম-ক্যামেরা রেখে হাততালি দিল।
রতন এসবই দেখল। দেখে আনন্দের বদলে একটু বিষন্ন হয়ে গেল। এই আনন্দ-এই উচ্ছাসটা যদি চিরস্থায়ী হতো!
রতনের চোখে জল চলে আসে। সে বাথরুমে চলে যায়।
চোখে পানি দেখলে মা অনেক কিছু জানতে চাইবে। যার উত্তর দেয়া সম্ভব নয়।
বাথরুমে গিয়ে শুনতে পায় ফিসফিস করে কারা যেন কথা বলছে। সে কান দিতে চায়নি, তবু কথাগুলো কানে চলে আসে।
এই ছেলে তো শেষ করে দেবে মনে হয়!
হু। তোমার-আমার কারো আর ভাত নেই।
তাইতো দেখছি। ও এমন খেললে আমাদের তো আগামী বছর লাখ দূরে থাক, হাজার টাকাও দেবে না। দেখছিস না কালই হীরু ভাইকে এডভান্সের টাকা বলাতে কেমন চোখ ওল্টাল। অথচ গত বছরও পুরো টাকা প্রথম ম্যাচের আগে দিয়েছে।
কী করবি তাহলে?
কিছু তো করবই। আমার একটা আইডিয়া আছে।
কী?
ওরা গলা আরও নামায়।
রতন চাইলেই শুনতে পারত। শুনতে চায় না। তার বরং শত্র“দের এই তৎপরতায় একটু হাসি পায়।
চলবে…
১ম
:boss: :boss: :boss:
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
মামুন, অসংখ্য ধন্যবাদ, বই পেয়েছি। ইনফ্যাক্ট হাতে আসেনি ব্যক্তিগত অসুবিধায় অফিসে যেতে পারছিনা বলে, তবে অফিসে এসেছে এটা স্টাফ নিশ্চিত করেছে।
পড়ছি......
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
মামুন ভাই, দারুন। :hatsoff: :hatsoff:
ফয়েজ ভাই, বই হাতে না পেয়েই "পড়ছি"? 😮 😮 আপনে কি বস নিজেই ম্যাজিক পাঠক, না কি বইটাই ম্যাজিক বই? :khekz: :khekz:
(নাহ, :frontroll: শুরু করি)।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
আমি কিন্তু দেইখা ফালাইছি 😛
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
চলবে...।
অফটপিকঃ
রায়হান , মুহাম্মদ, তুহিন, জিহাদ আর তানভীর
মামুন ভাইয়ের অটোগ্রাফ সহ তোমাদের জন্যে বইগুলি আমার বাসায় আছে।
যার যখন সময় হবে এসে নিয়ে যাবা।
বেশি দেরি করলে আমি মাইরা দিমু সব গুলি। 😛
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
আমার জন্য একটা মাইরা দে দোস্ত :grr: ।
x-( x-( :duel: :duel: :duel:
ভাইয়া, খুবই মজা লাগছে! একটানে পড়ে গেলাম।
মামুন ভাইকে আবার :salute:
:salute:
চরম লেখা B-)