ভর্তি যুদ্ধ

( বড় লেখা মানুষে পড়তে চায় না, অথচ আমার লেখা রাবারের মত বড় হয়ে গেছে । ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি ।)

 

Bangladeshi-All-Public-University

জ্ঞান দিতে পয়সা লাগে না । তাই সকলেই আমরা ফ্রি ফ্রি জ্ঞান দেই । জ্ঞান বিতরণ করে ভালো টাকা কামানোর পথও আমার জন্য বন্ধ । সোশ্যাল মিডিয়াই তাই আমার কষ্ট বুঝলো ।

নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের প্রথম সারির দুইটি লোভনীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । বহু দিনের ক্ষুধার্ত ভিখারির সামনে পোলাও- কোর্মার গন্ধের মত ।
মেডিকেল কলেজের ফল পেকে সম্প্রতি অনেকেই তার স্বাদ ভোগ করছে ।

ইনশা আল্লাহ ঢাবি-ক ও বুয়েট ভর্তি পরীক্ষাও তার ফল মানুষের সামনে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেবে । অনেক পরিশ্রমী শিক্ষার্থীরাই সেই ফলস্বরূপ দুনিয়ার অমৃত পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করতে থাকবে । আত্মীয় –স্বজন – বন্ধুমহল – সমাজে “বাহবা -বাহবা” বৃষ্টি ঝড়িতে থাকিবে ।

আহা !! সাধু !! সাধু !!

কিন্তু, অনেক পরিশ্রমীরাই ছাঁকনির সূক্ষ্ম জালে আটকে যাবে । ১ লক্ষ শিক্ষার্থী খুব ভালো প্রস্তুতি নিলেও সুস্বাদু ফল কিন্তু ভোগ করবে গুটি কয়েক জনই । যতগুলো সিট আছে, শুধু ততগুলোই পূর্ণ হবে ।

জায়গা না পেয়ে বাকিরা শুধু আঙুল কামড়াবে ।

 

one-successful-person-holds-succeed-word-others-fail-succeeds-lay-crushed-under-symbolizing-how-31864199

আর সমাজ ছিঃ ছিঃ করিয়া করিয়া তাদের চেষ্টা ও পরিশ্রমকে উপেক্ষা করিয়া এঘরে –ওঘরে, এর-ওর কানের কাছে ঘ্যানর ঘ্যানর করিতে থাকিবে । “আরে অমুকের ব্যাটা অমুক তো কোথাও চান্স না পাইয়া ধ্বংস হইয়া গেল ।”

আর কোথাও চান্স পেলে কেউ বলবে-
“দেখ , দেখ ! চান্স পাইয়া ভাব- সাব বেড়ে গেছে । আগের মত আর কথাই বলে না ।”
সমাজ মিথ্যা প্রশংসা অথবা দুর্নাম কোনটাই করিতে ছাড়িবে না ।
ভাগ্যের চাকা যে কোন দিকে যখন তখন ঘুরে যেতে পারে । ১-২ ঘণ্টায় সব কিছু ওলট পালট হয়ে যেতে পারে । আবার উড়ে এসে জুড়ে বসতেও পারে তা কাহারো মাথা ব্যাথার বিষয় নয়।

 

তাই, অনুগ্রহ করে বলবো –
ভাই ও বোনেরা !

সুযোগ এসেছে, কাজে লাগাও । সময় একটি অনেক বড় নেয়ামতপূর্ণ বিষয়। একটি ফলের ব্যবসা। ঠিক ভাবে ঠিক জায়গায় বিক্রয় করতে পারলে লাভবান হবে । নতুবা পড়ে থাকতে থাকতে নিজে তো পচবেই, সাথে সাথে পরিবেশকেও দুর্গন্ধময় করে তুলবে । পরে তাকে সবাই সবার থেকে দূরে ফেলে দেবে ।
সকল উপকারি ও প্রয়োজনীয় কাজ মন দিয়ে কর । মাথা খুলে পরীক্ষা দিতে বসো না । বুদ্ধিকে কাজে লাগাও ।

যারা পবিত্র যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে গাজী হয়ে বেঁচে থাকে, তাদের সম্মানের চাইতে যারা মরণকে বরণ করে নেয় সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টির জন্য, দিনশেষে তার লাভটাই বড় ও চিরস্থায়ী । ধর্ম তো তাইই বলছে ।

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষাই আজ অবধি তোমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় ও কঠিন যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়া। এখানেও টিকে থাকাই বড় কথা নয় ।
টাকা দিয়ে প্রশ্ন কিনে বা অন্যের কাছে পাপের সাহায্য ভিক্ষা নিয়ে টিকে থাকা তেলাপোকার মত জীবনের চাইতে সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে নিজের মেধা দিয়ে লড়াই করে বিরাট হস্তিকায় হয়ে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়াও মহা সৌভাগ্যময় ।

আর যা কিছু কর না কর উদ্দেশ্য হওয়া উচিত – “বিশ্বের সকল প্রাপ্তির উৎস অনুসন্ধান করে সবকিছুর সেই উৎস “মহান পালনকর্তা”-কে সন্তুষ্ট করা ।”
তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির মনোবাসনা পূরণে ব্যর্থ হলেও জীবন উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের পথে হাটার গতি বেড়ে গেলে এখানেই প্রকৃত সফল হবে তুমি ।

আর ভর্তি যুদ্ধে জয়ী হবার মাধ্যমে জ্ঞান, বুদ্ধি, শ্রম ও মেধাকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর পাশাপাশি ভর্তি যুদ্ধের গাজী সফলদের কাতারে থাকার বিরাট বড় নেয়ামতকে স্বীকার করে “বিশ্বের সকল প্রাপ্তির উৎস অনুসন্ধান”-এ বের হয়ে পড়বে ।

আর সত্যের ডাকপিয়ন হয়ে সারা বিশ্বের মানুষকে পৌঁছিয়ে দেবে সেই সত্যের মহাবাণী ।

পৃথিবীর ভাল বিশ্ববিদ্যালয় / কলেজে চান্স পাওয়ার চেষ্টা কর। তবে সেটা সামান্য কয়েকটা বছরে অনিশ্চিত সুখকে খোঁজার জন্য নয় । যেই জীবনের শুরু আছে কিন্তু শেষ নেই- সেই জীবনকে রাঙ্গানোর জন্য, নিশ্চিত সুখকে চিরতরে পাওয়ার জন্য । স্বর্গের মহা আলয়ে সিট বা আসনসংখ্যা তো সীমিত নয় । না কাউকে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, না কাউকে ওয়েটিং – এ থাকতে হয় । এত কিছু লাগে ?

কত সহজেই না তা লাভ করা যায় !

২ টি মন্তব্য : “ভর্তি যুদ্ধ”

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।