ক্যাডেট কলেজ ব্লগে বৈচিত্র্য আনার জন্য আমি একটা নতুন উদ্যোগ নিচ্ছি। সবাই এ ব্যাপারে মতামত দিতে পারেন।
দেশ ও বিশ্বের সমসাময়িক পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন থাকা সবার জন্যই জরুরি। আমরা ক্যাডেট কলেজ ব্লগের মাধ্যমে সে সচেতনতা বৃদ্ধিতেও অবদান রাখতে পারি। তাই সাম্প্রতিক খবর নিয়ে ব্লগে কিছু লেখা আসলে মন্দ হয় না। আমিই শুরু করছি।
বর্তমানে বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা হচ্ছে ইসলামাবাদের ম্যারিয়ট হোটেলে বোমা বিস্ফোরণ। এর কয়েকদিন আগে দিল্লিতেও ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে। দিল্লি ও ইসলামাবাদের এই নরহত্যা নিয়ে লেখার মাধ্যমেই নতুন উদ্যোগটার শুভ উদ্বোধন করছি:
দিল্লীর বাজার এলাকায় ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণ
১৩ই সেপ্টেম্বর বিকেল ৬:০৭ থেকে ৬:৩৮ এর মধ্যে দিল্লীর ব্যস্ত এলাকায় পরপর চারটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৩০ জন নিহত হয়েছে আর আহত হয়েছে শতাধিক।
এই বোমা বিস্ফোরণের সাথে আগের কয়েকটি বোমা হামলার যোগসূত্র টানা যায়। এ বছরে ভারতের তিন জায়গায় তিনটি পৃথক পৃথক বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর আগে জয়পুর বোমা হামলায় ৬৩ জন নিহত হয়েছিল। “ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন” দল সে হামলার দায়িত্ব স্বীকার করে মিডিয়াকে চিঠি পাঠায়।
যথারীতি এই দিল্লী হামলারও দায়িত্ব স্বীকার করেছে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন। তারা প্রথম বোমা বিস্ফোরণের ঠিক পরপরই সব বড় বড় টিভি চ্যানেলে মেইল করে। মেইলে বলা হয়, তারা নিজেদের জিহাদের অংশ হিসেবে এই হামলা চালাচ্ছে। ভারতে মুসলিম পীড়ন ও মার্কিন নীতির প্রতি ভারত সরকারের সমর্থনকেই তারা এই হামলার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
এভাবেই অসহায় মানুষ গোঁড়া ধর্মপন্থীদের হামলার শিকার হচ্ছে। সন্দেহ নেই, যারা সেদিন বাজারে গিয়েছিলেন তাদের কারও সাথেই এই রাষ্ট্রনীতি আর ধর্মীয় রাজনীতির কোন সম্পর্ক ছিল না। তারপরও তাদেরকে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। কারণ, আমরা নৈতিকতা দ্বারা পরিচালিত রাষ্ট্রীয় আইনের মাধ্যমে সমাজে ভারসাম্য ও শান্তি আনয়নে ব্যর্থ হচ্ছি।
ইসলামাবাদের ম্যারিয়ট হোটেলে বোমা হামলা
ইসলামাবাদের হামলা আরও ভয়ানক। ২০শে সেপ্টেম্বর এক ট্রাক ভর্তি বোমা বিস্ফোরিত হয়েছে। পুরো হোটেলটাই ধ্বসিয়ে দিয়েছে। মৃতের সংখ্যা ৫৩, আহত কমপক্ষে ২৬৬। আর বিস্ফোরণের কারণে হোটেলের বাইরে ৬০ ফুট প্রশস্ত ও ২০ ফুট গভীর খাদের সৃষ্টি হয়েছে।
বেশী মানুষ নিহত হয়েছে বা বিস্ফোরণটা বেশী বিধ্বংসী ছিল, এই কারণেই কেবল ম্যারিয়ট হামলা নিয়ে বেশী আলোচনা হচ্ছে না। আলোচনা বেশী হওয়ার আরেকটা প্রধান কারণ, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মৃত্যু। ৫৩ জন নিহতের মধ্যে চেক প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত ইভো ৎসদারেকও আছেন।
পার্লামেন্ট ভবনের কাছে অবস্থিত ম্যারিয়ট হোটেল রাজনৈতিক দিক দিয়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ। ১১ই সেপ্টেম্বরের পর এই হোটলকে ঘিরে অনেক কিছু হয়েছে। রাজনীতির হর্তকর্তারা সব এখানে এসে পারভেজ মোশাররফের সামরিক নীতি ও মার্কিন তোষণ নীতি নিয়ে আলোচনা করতেন। সেই থেকেই অনেক আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে আছে এই হোটেল। এবার তারই পতন হল।
অবশ্য গণ্যমান্য কয়েকজন থাকলেও, মৃতের প্রায় সবাই সাধারণ মানুষ। সব হামলায়ই এমনটি হয়। আজকালকার বিশ্ব পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, সন্ত্রাসী হামলার লক্ষ্য গণ্যমান্যরা হলেও সে হামলার উপকরণ হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
পারভেজ মোশাররফের পদত্যাগের পরপরই এই হামলার ঘটনা ঘটল। কেউই দায়িত্ব স্বীকার করেনি। তবে যথারীতি ধারণা করা হচ্ছে, এটা মার্কিনীদের তথাকথিত সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের বিরুদ্ধে ইসলামী জঙ্গী গোষ্ঠীরই তৎপরতা। মার্কিন বেনামী কর্মকর্তারা দাবী করছেন ঐদিন হোটেলে অনেক মার্কিনী ছিলেন এবং তারাই ছিল এ হামলার মূল লক্ষ্য।
হারকাতুল-জিহাদ-আল-ইসলামী, আল কায়েদা সন্দেহের তালিকায় আছে।
পাকিস্তান দিন দিন আরও বিষাক্ত হয়ে উঠছে। দেশটা কখনই বিষহীন থাকতে পারেনি। নিজে বিষ পান করেছে নয়তো অন্যকে বিষ পান করিয়েছে।
এ হামলায় নিহত সাধারণ মানুষের প্রতি সমবেদনা জানাই। সেই সাথে শত বিদ্বেষ থাকা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিকতার স্বার্থে কামনা করি, পাকিস্তানের বিষাক্ত দিনের অবসান হোক।
It's really sad that these bombings keep happening year after year. And no one seems to be able to do anything to stop this madness.
This is a very good initiative to write about important current world/Bangladesh events, although politics of our country should be excluded from this nonpolitical blog.
Muhammad, I wrote a long reply to one of your comments about cadet 'gunijans' on the blog - "Cadets - reality and expectations". Please read that if you have time.
হিমু ভাইয়ের কথাটা শেয়ার করি।
পাকিস্তানীরা যে বিষবৃক্ষের বীজ নিজেরা বপন করেছে, লালন করেছে, রক্ষা করেছে এতদিন, সেই বিষবৃক্ষের ফল তাদের এখন ভোগ করতে হচ্ছে। পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ এর হাত থেকে পরিত্রাণ পাবেন কি না জানি না, তাঁদের প্রতি রইলো গভীর সমবেদনা। আজ আপনারা যে কয়েকটি লাশ চোখের সামনে রেখে কাঁদছেন, তেমনি লক্ষ লক্ষ লাশ চোখের সামনে রেখে আমরা কেঁদেছি। আপনারা তখন হন্তারক ছিলেন, এখনও সে ইতিহাসকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেন। দুনিয়া গোল। যে মৃতদেহ আমাদের মাটিতে পঁচে গলে মিশে গেছে, তা আপনাদের মাটিতে আবার ভেসে উঠছে।
😐
রায়হান রে তুই আমার মনের কথাটা বলছ মামা।
হিমু বা যেই বলে থাকুক, কথাটা পুরো সত্য না। পাকিস্তানীরা কখনোই বাংলাদেশকে হারাতে চায়নি অথবা হারিয়ে খুশি হয়নি। এমনকি তাদের শাসকগণও নয়। তারা সবসময় ৭১-এ তাদের ভুল পদক্ষেপের জন্য দোষ স্বীকার করে এবং আফসোস করে।
বন্য কি এটা আমাদের বন্য ফুয়াদ নাকি? সিসিবি সমাবেশে আসলা না যে। অনেকদিন লেখ না।
মঞ্জুর কেমন আছ ভাইয়া। এখনো কিছু লেখলা না
আমার নিজের দেশ নিয়ে কোন হতাশা আসলেই আমি পাকিস্তানের কথা চিন্তা করি। হতাশা কেটে যায়।
তপু ভাই
আগে আমি ভালোয় ভালোয় বাইর হইয়া আসি, তারপর যা হওয়ার হউক। 🙁