মাদার তেরেসা ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম সেরা মানবতাবাদী ও মানবসেবী। গোঁড়া ধর্মীয় মনোভাব এবং রাজনৈতিকি অপোরচুনিজম এর কারণে সমালোচিত হলেও তার অনবদ্য মানবসেবা নিয়ে কেউ সন্দেহ পোষণ করে না।
আলবেনীয় ভাষায় তার নাম: Nënë Tereza, ন্যন্য টেরেজা
মেসিডোনীয় ভাষায়: Агнес Гонџа Бојаџиу (Agnes Gonxhe Bojaxhiu) – আগনেস গঞ্জা বয়াজু
জন্ম – ২৬শে আগস্ট, ১৯১০
মৃত্যু – ৫ই সেপ্টেম্বর, ১৯৯৭
মাদার তেরেসা তৎকালীন উসমানীয় (অটোমান তুর্কী) সাম্রাজ্যে জন্মগ্রহণকারী ভারতীয় রোমান ক্যাথলিক মিশনারি কর্মী। তিনি সন্ন্যাস জীবন গ্রহণ করে মানবতার সেবায় আত্মনিয়োগ করেছিলেন। ১৯৫০ সালে ভারতের কলকাতায় “মিশনারিস অফ চ্যারিটি” প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে তাঁর এই মানবসেবার সূচনা ঘটে। প্রায় ৪০ বছর ধরে তিনি দরিদ্র, অসুস্থ, এতিম ও মুমূর্ষু মানুষের সেবা করেছেন। সেই সাথে মিশনারির বিকাশ ও উন্নয়নে অক্লান্ত পরীশ্রম করেছেন। প্রথমে ভারত ও পরে সমগ্র বিশ্বে তাঁর এই মিশনারি কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়ে।
১৯৭০-এর দশকে মানবতাবাদী কর্মী এবং দরিদ্র ও অসহায় মানুষের সুহৃদ হিসেবে বিশ্বব্যাপী তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে। ম্যালকম মাগারিজের “সামথিং বিউটিফুল ফর গড” নামক প্রামাণ্য চিত্র ও বইয়ের মাধ্যমেই তাঁর নাম সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছিল। মানবতাবাদী কার্যক্রমের জন্য তেরেসা ১৯৭৯ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার এবং ১৯৮০ সালে ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ভারতরত্ন লাভ করেন। মিশনারিজ অফ চ্যারিটি বিস্তৃত হতে থাকে। তাঁর মৃত্যুর সময় ১২৩টি দেশে মোট ৬১০টি মিশনের মাধ্যমে এই মিশনারি তাঁর কাজ করে যাচ্ছিল। মিশনারির পাশাপাশি তারা এইডস, কুষ্ঠ ও যক্ষ্মা রোগে আক্রান্তদের জন্য আবাসন, সুপ কিচেন, শিশু ও পরিবার পরামর্শ কেন্দ্র, এতিমখানা ও অসংখ্য বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিল।
মৃত্যুর পর পোপ জন পল ২ মাদার তেরেসাকে স্বর্গীয় বলে আখ্যায়িত করেন এবং তাঁর নাম দেন কলকাতার স্বর্গীয় তেরেসা (Blessed Teresa of Calcutta, ব্লেসেড তেরেসা অফ ক্যালকাটা)। ২০০৩ সালে অর্থাৎ তার মৃত্যুর ৬ বছর পর পোপ তাকে “সেইন্ট” ঘোষণার প্রক্রিয়া শুরু করেন। ক্যাথলিক ধর্মমত অনুসারে কাউকে সেইন্ট ঘোষণা করতে হলে তার মৃত্যুর পর বেশ কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হয়। প্রথম ধাপ হচ্ছে “বিটিফিকেশন” (Beatification)। আর সেইন্ট ঘোষণার এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় ক্যননাইজেশন। মাদার তেরেসার বিটিফিকেশন ইতিমধ্যেই করা হয়েছে। ক্রমান্বয়ে হয়তো তিনি ক্যাননাইজেশন শেষে সেইন্ট উপাধি পাবেন, যেভাবে সেইন্ট উপাধি পেয়েছিলেন ফ্রান্সের সেইন্ট তেরেসা। এই সেইন্ট তেরেসার নামই মাদার তেরেসা গ্রহণ করেছিলেন।
প্রাথমিক জীবন
মাদার তেরেসার আসল নাম আগ্নেস গঞ্জা বয়াজু (আ-ধ্ব-ব: ‘agnɛs ‘gɔndʒa bɔ’jadʒu)। আলবেনীয় ভাষায় আগনেস গঞ্জা শব্দের অর্থ “গোলাপকুঁড়ি”। তাঁর জন্ম ১৯১০ সালের ২৬শে আগস্ট বর্তমান মেসিডোনিয়া প্রজাতন্ত্রের রাজধানী স্কোপিয়েতে। বাবা নিকোলা বয়াজিউ আলবেনীয় রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। মায়ের নাম দ্রানাফিল বয়াজিউ। বয়াজিউ পরিবারের মূল বাসস্থান ছিল আলবেনিয়ার Shkodër (শকড্যর) নামক স্থানে। আগনেস ছিলেন পরিবেরের সর্বকনিষ্ঠ সন্তান। ১৯১৯ সালে এক রাজনৈতিক সমাবেশে তার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই অসুখেই তিনি মারা যান। তখন আগনেসের বয়স ছিল আট। বাবা মারা যাওয়ার পর মা তাকে রোমান ক্যাথলিক আদর্শে বড় করতে থাকেন। ছোটবেলাতেই রোমান ক্যাথলিক মিশনারি ও সাধু-সন্ন্যাসীদের কাহিনী শুনে তিনি মুগ্ধ হতেন। ১২ বছর বয়সেই বুঝতে পারেন, তাকে ধর্মীয় আদর্শে জীবন পরিচালনা করতে হবে। ১৮ বছর বয়সে ধর্মীয় কাজে আত্মনিয়োগ করার জন্য সিস্টার্স অফ লোরেটো-তে মিশনারি হিসেবে যোগ দেন। এর পর আর কোন দিনই নিজের মা এবং বোনদের সাথে তার দেখা হয় নি।
মিশনারি জীবনের প্রথমেই আগনেস আয়ারল্যান্ডের রাথফার্নহামের “লোরেটো অ্যাবি”-তে যান ইংরেজি ভাষা শেখার জন্য। কারণ সিস্টার্স অফ লোরেটোর মিশনারিরা ভারতের স্কুলগুলোতে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে এই ভাষাই ব্যবহার করতো। ১৯২৯ সালে প্রাথমিক অধ্যয়ন শেষে হিমালয় পর্বতমালার পাশে দার্জিলিং শহরে নবিশ হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৩১ সালের ১৪ই মে মঠবাসিনী হিসেবে প্রথম শপথ গ্রহণ করেন। এই শপথের সময়ই “তেরেসা” নামটি বেছে নেন। উল্লেখ্য রোমান ক্যাথলিক মিশনারির প্যাট্রন সেইন্ট “Thérèse de Lisieux” (১৮৭৩-৯৭) এর নামানুসারেই তিনি এই নাম পছন্দ করেছিলেন। ১৯৩৭ সালের ১৪ই মে তেরেসা চূড়ান্ত শপথ গ্রহণ করেন। এ সময় কলকাতার পূর্বাঞ্চলের এক লোরেটো কনভেন্ট স্কুলে শিক্ষকতা করতেন।
স্কুলে পড়াতে তেরেসার বেশ ভাল লাগত। কিন্তু তার আশপাশের দারিদ্র্য, খাদ্যাভাব আর বিশৃঙ্খলা তাকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছিল। তিনি সাধারণ মানুষের দুর্দশা অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করতেন। ১৯৪৩ সালে বঙ্গ অঞ্চলে গুরুতর দুর্ভিক্ষ শুরু হয়। কলকাতার অনেক মানুষ এতে মৃত্যুবরণ করে। ১৯৪৬ সালে হয় হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা। এ সময় ভীতি ও হতাশা শহরটিকে গ্রাস করে। তেরেসার উপর এই পরিবেশের বিশাল প্রভাব পড়েছিল।
মিশনারিস অফ চ্যারিটি
১৯৪৬ সালের ১০ই সেপ্টেম্বর ধর্মীয় নির্জনবাসের জন্য দার্জিলিং যাওয়ার সময় তার মধ্যে এক গভীর উপলব্ধি আসে। এই অভিজ্ঞতাকে পরবর্তীতে “the call within the call” হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। এ নিয়ে তিনি আরও বলেছিলেন,
কনভেন্ট ত্যাগ করে দরিদ্রদের মাঝে বাস করা এবং তাদের সহায়তা করা আমার জন্য আবশ্যক ছিল। এটা ছিল এক সরাসরি আদেশ। এই আদেশ পালনে ব্যর্থ হওয়ার অর্থ ছিল বিশ্বাস ভেঙে ফেলা।
১৯৪৮ সালে কনভেন্ট ত্যাগের অনুমতি নিয়ে দরিদ্রের মাঝে মিশনারি কাজ শুরু করেন। প্রথাগত লোরেটো অভ্যাস ত্যাগ করেন। পোশাক হিসেবে পরিধান করেন নীল পারের একটি সাধারণ সাদা সুতির বস্ত্র। এ সময়ই ভারতীয় নাগরিকত্ব গ্রহণ করে বস্তি এলাকায় কাজ শুরু করেন। প্রথমে মতিঝিলে (পশ্চিমবঙ্গের) একটি ছোট স্কুল স্থাপনের মাধ্যমে শুরু করেছিলেন। পরবর্তীতে ক্ষুধার্ত ও নিঃস্বদের ডাকে সাড়া দিতে শুরু করেন। তাদের বিভিন্নভাবে সাহায্য করতে থাকেন। তার এই কার্যক্রম অচিরেই ভারতীয় কর্মকর্তাদের নজরে আসে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও তাঁর কাজের স্বীকৃতি দিয়েছিলেন।
প্রথম দিকের এই দিনগুলো তার জন্য বেশ কষ্টকর ছিল। এ নিয়ে ডায়রিতে অনেক কিছুই লিখেছেন। সে সময় তার হাতে কোন অর্থ ছিল না। গরীব এবং অনাহারীদের খাবার ও আবাসনের অর্থ জোগাড়ের জন্য তাকে দারে দারে ঘুরতে হতো। ধনী ব্যক্তিদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে হতো। এসব কাজ করতে গিয়ে অনেক সময়ই হতাশা, সন্দেহ ও একাকিত্ব বোধ করেছেন। মাঝে মাঝে মনে হয়েছে, কনভেন্টের শান্তির জীবনে ফিরে গেলেই বোধহয় ভাল হবে। ডায়রিতে লিখেছিলেন:
Our Lord wants me to be a free nun covered with the poverty of the cross. Today I learned a good lesson. The poverty of the poor must be so hard for them. While looking for a home I walked and walked till my arms and legs ached. I thought how much they must ache in body and soul, looking for a home, food and health. Then the comfort of Loreto [her former order] came to tempt me. ‘You have only to say the word and all that will be yours again,’ the Tempter kept on saying … Of free choice, my God, and out of love for you, I desire to remain and do whatever be your Holy will in my regard. I did not let a single tear come.
১৯৫০ সালের ৭ই অক্টোবর তেরেসা “ডায়োসিসান কনগ্রেগেশন” (বিশপের এলাকার মত সমাবেশ) করার জন্য ভ্যাটিকানের অনুমতি লাভ করেন। এ সমাবেশই পরবর্তীতে মিশনারিস অফ চ্যারিটি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এই দাতব্য প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য তেরেসার নিজের ভাষায় বললেই ভাল শোনাবে:
Its mission is to care for the hungry, the naked, the homeless, the crippled, the blind, the lepers, all those people who feel unwanted, unloved, uncared for throughout society, people that have become a burden to the society and are shunned by everyone.
কলকাতায় মাত্র ১৩ জন সদস্যের ছোট্ট অর্ডার হিসেবে চ্যারিটির যাত্রা শুরু হয়েছিল। বর্তমানে এর অধীনে ৪,০০০ এরও বেশি নান কাজ করছেন। চ্যারিটির অধীনে এতিমখানা ও এইডস আক্রান্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্র পরিচালিত হয়। বিশ্বব্যাপী শরণার্থী, অন্ধ, পক্ষাঘাতগ্রস্ত, বয়স্ক, মাদকাসক্ত, দরিদ্র, বসতিহীন এবং বন্যা, দুর্ভিক্ষ বা মহামারিতে আক্রান্ত মানুষের সেবায় চ্যারিটির সবাই অক্লান্ত পরীশ্রম করে যাচ্ছেন।
১৯৫২ সালে মাদার তেরেসা কলকাতা নগর কর্তৃপক্ষের দেয়া জমিতে মুমূর্ষুদের জন্য প্রথম আশ্রয় ও সেবা কেন্দ্র গড়ে তোলেন। ভারতীয় কর্মকর্তাদের সহায়তায় একটি পরিত্যক্ত হিন্দু মন্দিরকে কালিঘাট হোম ফর দ্য ডাইং-এ রূপান্তরিত করেন। এটি ছিল দরিদ্র্যদের জন্য নির্মীত দাতব্য চিকিৎসা কেন্দ্র। পরবর্তীতে এই কেন্দ্রের নাম পরিবর্তন করে রাখেন “নির্মল হৃদয়”। এই কেন্দ্রে যারা আশ্রয়ের জন্য আসতেন তাদেরকে চিকিৎসা সুবিধা দেয়া হয় এবং সম্মানের সাথে মৃত্যুবরণের সুযোগ করে দেয়া হয়। মুসলিমদেরকে কুরআন পড়তে দেয়া হয়, হিন্দুদের গঙ্গার জলের সুবিধা দেয়া হয় আর ক্যাথলিকদের প্রদান করা হয় লাস্ট রাইটের সুবিধা। এ বিষয় তেরেসা বলেন,
A beautiful death is for people who lived like animals to die like angels — loved and wanted.
এর কিছুদিনের মধ্যেই তেরেসা হ্যানসেন রোগে (সাধারণ্যে কুষ্ঠরোগ নামে পরিচিত) আক্রান্তদের জন্য একটি সেবা কেন্দ্র খোলেন যার নাম দেয়া হয় “শান্তি নগর”। এছাড়া মিশনারিস অফ চ্যারিটির উদ্যোগে কলকাতার বাইরে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বেশ কিছু কুষ্ঠরোগ চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এই কেন্দ্রগুলোতে ঔষধ, ব্যান্ডেজ ও খাদ্য সুবিধা দেয়া হয়।
মিশনারি শিশুদের লালন-পালন করতো। এক সময় শিশুর সংখ্যা অনেক বেড়ে যাওয়ায় তেরেসা তাদের জন্য একটি আলাদা হোম তৈরীর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। এই অনুভূতি থেকেই ১৯৫৫ সালে “নির্মল শিশু ভবন” স্থাপন করেন। এই ভবন ছিল এতিম ও বসতিহীন শিশুদের জন্য এক ধরণের স্বর্গ।
অচিরেই মিশনারিস অফ চ্যারিটি দেশ-বিদেশের বহু দাতা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির দৃষ্টি আকর্ষণে সমর্থ হয়। এর ফলে অনেক অর্থ সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। ১৯৬০-এর দশকের মধ্যে ভারতের সর্বত্র চ্যারিটির অর্থায়ন ও পরিচালনায় প্রচুর দাতব্য চিকিৎসা কেন্দ্র, এতিমখানা ও আশ্রয় কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়। ভারতের বাইরে এর প্রথম কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৫ সালে ভেনিজুয়েলায়। মাত্র ৫ জন সিস্টারকে নিয়ে সে কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৬৮ সালে রোম, তানজানিয়া এবং অস্ট্রিয়াতে শাখা কোলা হয়। ১৯৭০-এর দশকে এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ ও আমেরিকার কয়েক ডজন দেশে শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়।
আন্তর্জাতিক কার্যক্রম
১৯৮২ সালে বৈরুত অবরোধের চূড়ান্ত প্রতিকূল সময়ে মাদার তেরেসা যুদ্ধের একেবারে ফ্রন্ট লাইনের হাসপাতালে আটকে পড়া ৩৭ শিশুকে উদ্ধার করেন। ইসরায়েলী সেনাবাহিনী ও ফিলিস্তিনী গেরিলাদের মধ্যে সাময়িক যুদ্ধ বিরতি ঘটিয়ে পরিবেশ কিছুটা অনুকূলে এনেছিলেন। এই সুযোগেই রেড ক্রসের সহায়তায় যুদ্ধ বিধ্বস্ত অঞ্চলে যান। বিধ্বস্ত হাসপাতালগুলো থেকে কম বয়সের রোগীদের সরিয়ে আনেন।
সমাজতান্ত্রিক শাসনের সময়ে পূর্ব ইউরোপের অনেক দেশেই মিশনারি কার্যক্রম নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু ১৯৮০-‘র দশকে ইউরোপের সে অংশ তুলনামূলক উদার হয়ে উঠে। এ সময়েই মাদার তেরেসা মিশনারিস অফ চ্যারিটির কাজ পূর্ব ইউরোপ পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হন। কয়েক ডজন প্রকল্পের মাধ্যমে তার কাজ শুরু হয়েছিল। এ সময় গর্ভপাত এবং বিবাহবিচ্ছেদ-এর বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থানের কারণে অনেকে তার সমালোচনা করেন। কিন্তু তেরেসা সব সময় বলতেন,
No matter who says what, you should accept it with a smile and do your own work.
মাদার তেরেসা ইথিওপিয়ার ক্ষুধার্তদের কাছে যেতেন, ভ্রমণ করতেন চেরনোবিল বিকিরণে আক্রান্ত অঞ্চলে। আমেরিকার ভূমিকম্পে আক্রান্তদের মাঝে সেবা পৌঁছে দিতেন। ১৯৯১ সালে মাদার তেরেসা প্রথমবারের মত মাতৃভূমি তথা আলবেনিয়াতে ফিরে আসেন। এদেশের তিরানা শহরে একটি “মিশনারিস অফ চ্যারিটি ব্রাদার্স হোম” স্থাপন করেন।
১৯৯৬ সালে পৃথিবীর ১০০ টিরও বেশি দেশে মোট ৫১৭টি মিশন পরিচালনা করছিলেন। মাত্র ১২ জন সদস্য নিয়ে যে চ্যারিটির যাত্রা শুরু হয়েছিল সময়ের ব্যবধানে তা কয়েক হাজারে পৌঁছোয়। তারা সবাই বিভিন্ন দেশের প্রায় ৪৫০টি কেন্দ্রে মানবসেবার কাজ করে যাচ্ছিল। গরিবদের মধ্যেও যারা গরিব তাদের মাঝে কাজ করতো এই চ্যারিটি, এখনও করে যাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চ্যারিটির প্রথম শাখা প্রতিষ্ঠিত হয় নিউ ইয়র্কের ব্রঙ্ক্স বরোর দক্ষিণাঞ্চলে। ১৯৮৪ সালের মাঝে যুক্তরাষ্ট্রে চ্যারিটির প্রায় ১৯টি শাখা সক্রিয়ভাবে কাজ করা শুরু করে।
চ্যারিটি দাতব্য কাজের জন্য যে অর্থ পেতো তার ব্যবহার নিয়ে বেশ কয়েকজন সমালোচনা করেছেন। ক্রিস্টোফার হিচেন্স ও স্টার্ন সাময়িকী সমালোচনা করে বলেছে, গরীবদের উন্নয়নের কাজে চ্যারিটিতে যত অর্থ আসে তার কিছু অংশ অন্যান্য কাজেও ব্যয় করা হয়।
স্বাস্থ্যহানি ও মৃত্যু
১৯৮৩ সালে পোপ জন পল ২ এর সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে রোম সফরের সময় মাদার তেরেসার প্রথম হার্ট অ্যাটাক হয়। ১৯৮৯ সালে আবার হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পর তার দেহে কৃত্রিম পেসমেকার স্থাপন করা হয়। ১৯৯১ সালে মেক্সিকোতে থাকার সময় নিউমোনিয়া হওয়ায় হৃদরোগের আরও অবনতি ঘটে। এই পরিস্থিতিতে তিনি মিশনারিস অফ চ্যারিটির প্রধানের পদ ছেড়ে দেয়ার প্রস্তাব করেন। কিন্তু চ্যারিটির নানরা গোপন ভোটগ্রহণের পর তেরেসাকে প্রধান থাকার অনুরোধ করে। অগত্যা তেরেসা চ্যারিটির প্রধান হিসেবে কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন।
১৯৯৬ সালের এপ্রিলে পড়ে গিয়ে কলার বোন ভেঙে ফেলেন। অগাস্টে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন। এর পাশাপাশি তার বাম হৃৎপিণ্ডের নিলয় রক্ত পরিবহনে অক্ষম হয়ে পড়ে। ১৯৯৭ সালের ১৩ই মার্চ মিশনারিস অফ চ্যারিটির প্রধানের পদ থেকে সরে দাড়ান। ৫ই সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।
কলকাতার আর্চবিশপ Henry Sebastian D’Souza বলেন, তেরেসা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তিনি এক ধর্মপ্রচারককে এক্সরসিজম করতে বলেছিলেন। কারণ তার ধারণা ছিল, কোন শয়তান তেরেসাকে আক্রমণ করেছে।
মৃত্যুর সময় মাদার তেরেসার মিশনারিস অফ চ্যারিটিতে সিস্টারের সংখ্যা ছিল ৪,০০০; এর সাথে ৩০০ জন ব্রাদারহুড সদস্য ছিল। আর স্বেচ্ছাসেবীর সংখ্যা ছিল ১০০,০০০ এর উপর। পৃথিবীর ১২৩টি দেশে মোট ৬১০টি মিশনের মাধ্যমে চ্যারিটির কাজ পরিচালিত হচ্ছিল। এসব মিশনের মধ্যে ছিল এইডস, কুষ্ঠ ও যক্ষ্মা রোগে আক্রান্তদের জন্য চিকিৎসা কেন্দ্র, সুপ কিচেন, শিশু ও পরিবার পরামর্শ কেন্দ্র, এতিমখানা ও বিদ্যালয়।
মাদার তেরেসার সমালোচনা
মা তেরেসার দর্শন ও প্রায়োগিক দিক নিয়ে বেশ কিছু সমালোচনা হয়েছে। অবশ্য সমালোচকরা খুব বেশি তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করতে পারে নি। একথা স্বীকার করে নিয়েই ডেভিড স্কট বলেন,
মাদার তেরেসা স্বয়ং দারিদ্র্য বিমোচনের বদলে ব্যক্তি মানুষকে জীবিত রাখার উপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।
এছাড়া কষ্টভোগ বিষয়ে তার মনোভাবও সমালোচিত হয়েছে। অ্যালবার্টার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনি মনে করতেন, কষ্টভোগের মাধ্যমে যীশুর কাছাকাছি যাওয়া যায়। এছাড়া ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল ও দ্য ল্যান্সেট পত্রিকায় তার সেবা কেন্দ্রগুলোর চিকিৎসা সেবার মান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। অনেকেই এক হাইপোডার্মিক সূচ একাধিক বার ব্যবহারের কথা বলেছেন। কেন্দ্রগুলোর জীবনযাত্রার নিম্ন মানও সমালোচিত হয়েছে। তার উপর চ্যারাটির অ-বস্তুবাদী দৃষ্টিভঙ্গি পদ্ধতিগত রোগ-নিরূপণকে প্রায় অসম্ভব করে তুলেছিল।
তেরেসার সবচেয়ে কঠোর সমালোচনা করেছেন বিশ্ববিখ্যাত সাংবাদিক, সাহিত্য সমালোচক, প্রমাণ্য চিত্র নির্মাতা ও লেখক “ক্রিস্টোফার হিচেন্স”। হিচেন্স মাদার তেরেসার রাজনৈতিক আদর্শকে Opportunist আখ্যা দেন। তিনি বলেন, তেরেসা দারিদ্র্য দূরীকরণের কাজ করেন নি এবং সেটা করতে কাউকে উদ্বুদ্ধও করেন নি; বরং দারিদ্র্য কিভাবে সহ্য করতে হয় তা শিখিয়েছেন। ক্যাথলিক ধর্মের সবচেয়ে গোঁড়া প্রচারণাগুলো কাজে লাগিয়েছেন। দারিদ্র দূরীকরণের কোন কাঠামোগত প্রচেষ্টা বা অর্থনৈতিক গবেষণাকে তিনি উদ্বুদ্ধ করেন নি। হিচেন্স মাদার তেরেসার একটি উক্তিকে বেশ প্রধান্য দেন- ১৯৮১ সালের এক সাংবাদিক সম্মেলনে তেরেসা বলেছিলেন,
I think it is very beautiful for the poor to accept their lot, to share it with the passion of Christ. I think the world is being much helped by the suffering of the poor people.
ক্রিস্টোফার হিচেন্স তেরেসার কড়া সমালোচনা করে একটি বই লিখেছেন, বইটির নাম “The Missionary Position: Mother Teresa in Theory and Practice”। ধারালো যুক্তি থাকলেও গবেষণামূলক কর্ম হিসেবে বইটি খুব বেশি প্রশংসিত হয় নি। তেরেসার অপোরচুনিস্ট কর্মকাণ্ড তুলে ধরার জন্য যে ধরণের গবেষণামূলক তথ্য প্রয়োজন তা এই বইয়ে ছিল না। তারপরও সার্বিকভাবে অনেকে বইয়ের প্রশংসা করেছেন। তারিক আলির সাথে মিলে হিচেন্স এ সম্পর্কিত একটি প্রামাণ্য চিত্রও তৈরি করেছেন, নাম “Hell’s Angel”। ইউটিউব থেকে দেখতে পারেন:
প্রথম অংশ – দ্বিতীয় অংশ – তৃতীয় অংশ
বাংলাদেশী হিসেবে তেরেসার প্রতি আমাদের ঋণ
ব্যক্তিগতভাবে আমি “সেক্যুলার হিউম্যানিজম” এর ভক্ত। মানুষ হয়ে জন্মে আরেক জন মানুষকে বা সমগ্র মানবতাকে ভালোবাসার জন্য ঐশ্বরিক বিশ্বাসের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। কিন্তু তারপরও সবার উপরে মানবতাকে স্থান দেই। যে যে বিশ্বাস থেকেই মানবতার জন্য কাজ করুক না কেন তিনি আমার কাছে পরম শ্রদ্ধেয়। জন্ম নিয়ন্ত্রণ, ধর্মীয় বিশ্বাস, গর্ভপাত ইত্যাদি বিতর্কিত অনেক বিষয়ে মাদার তেরেসার সাথে হয়তো আমার মিলবে না, তারপরও একজন নিবেদিতপ্রাণ মানবতাবাদী হিসেবে এই মহিয়সী নারীকে শ্রদ্ধা করে যাব আজীবন।
একজন বাংলাদেশী হিসেবেও তেরেসার প্রতি আমাদের অনেক ঋণ। তিনি পুরো মানবতাকেই ঋণী করে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধের পর শরণার্থী এবং অবকাঠামো সমস্যার পাশাপাশি বাংলাদেশের একটি বড় সমস্যা ছিল বীরাঙ্গণা সমস্যা। অনেকে অনেক কথা বললেও সুনির্দিষ্ট কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছিল না। আর চোখের নিমেষে বড় বড় সব উদ্যোগ নিয়ে ফেলার ক্ষমতা কার আছে তা তো আমরা জানিই। মাদার তেরেসা কি করেছিলেন তা অমি রহমান পিয়ালের জবানিতেই শোনা যাক,
বীরাঙ্গনা সমস্যা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। দিশে পাচ্ছে না কোনো। একটা চুপ চুপ ভাব চারদিকে। মেরে ফেলা হবে না আত্মহত্যায় প্ররোচিত করা হবে- এমন নক্সায় ব্যস্ত সমাজপতিরা। মাদার এলেন। ঢাকার বুকে ৫টি বাড়ি ভাড়া নিয়ে খুললেন বীরাঙ্গনাদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র।
মুক্তিযুদ্ধে ধর্ষিতদের বঙ্গবন্ধু যথাযোগ্য সম্মান দিয়েছিলেন। তাদেরকে বীরাঙ্গণা নামে আখ্যায়িত করে তাদের বিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে অনেক যুবক তাদের বিয়ে করতে এগিয়ে এসেছিল যদিও তাদের অধিকাংশই এসেছিল অর্থের লোভে। মাদার তেরেসা এসব প্রত্যক্ষ করেছেন। গর্ভপাতের বিপক্ষে থাকার পরও সরকারের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়েছেন। তারপরও বীরাঙ্গণা সমস্যার সহজ সমাধান হয় নি। অধিকাংশ বীরাঙ্গণাই সন্তান জন্ম দিয়েছেন, তাদের অনেকেই অবলম্বন করেছেন মাদার তেরেসাকে।
তথ্যসূত্র
অনেক দিন আগে বাংলা উইকিপিডিয়াতে মাদার তেরেসা নিবন্ধটি লেখার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। জীবনী পুরোটা লিখেছিলামও, মূলত ইংরেজি উইকিপিডিয়ার অনুবাদের মাধ্যমে। জানি উইকিপিডিয়া বেশি নির্ভরযোগ্য না। তাই সবগুলো তথ্যই গ্রহণযোগ্য সূত্রের সাথে মিলিয়ে দেখেছি। আজ ৫ই সেপ্টেম্বর মা-র ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে উইকিপিডিয়ার সেই লেখাটাই সিসিবি-তে প্রকাশ করলাম। তবে উইকির লেখায় কিছু পরিবর্তন করেছি, অনেক কিছু যোগ করেছি এবং বানান শুদ্ধ করেছি। উইকিপিডিয়ার লেখাটা পরিবর্তিত হয়ে গেলেও যেন ব্লগের এই লেখাটা মাদার তেরেসার মৃত্যুবার্ষিকীতে আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি হিসেবে টিকে থাকে…
:hatsoff: :hatsoff:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
:salute:
আগে ২য় হয়ে নেই ... এরপর পড়ব 😀
তৃতীয় হইসেন। এইবার পড়া শুরু করেন 😛
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
মাদার তেরেসাও নোবেল শান্তি পুরষ্কার পেয়েছেন আবার আমাদের......... 😐
শ্রদ্ধা তাঁকে।
ইউনূস কে অবশ্য আমি অন্যদের মত এত বেশি হেলা করি না। নোবেল শান্তি পুরষ্কার অধিকাংশই বিতর্কিত এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে যেসব কারণে এগুলো দেয়া হয়েছে পৃথিবীল উপর তার কমবেশি প্রভাব আছেই।
খুব ভাল কাজ হয়েছে মুহাম্মদ।
কাল এতো চুপচাপ ছিলা কেন।
(আরেকটা কথা, কিছু মনে কইরো না, শ্রদ্ধাঞ্জলি বানানটা এরকম হবে।)
আসলে শিরোনামটা দেয়ার সময় আমি খুব ভয়ে ভয়ে ছিলাম বানানটা নিয়া। ক্যান জানি প্যাঁচ লেগে গেছিল। ঠিক করে দিতেছি।
................ :clap: :clap: :clap:
:hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:
"Never think that you’re not supposed to be there. Cause you wouldn’t be there if you wasn’t supposed to be there."
- A Concerto Is a Conversation
ধন্যবাদ মুহাম্মদ।
মা তেরেসার মত ও পথের অনেক কিছুর সঙ্গে প্রচণ্ড ভিন্নমত থাকলেও এক জায়গায় আমি তার সঙ্গে নিজের মতের মিল খুঁজে পাই। মানবতার প্রশ্নে। এই বিশ্বের প্রতিটি মানুষের জীবন গুরুত্বপূর্ণ। আগে মানুষকে বাঁচাতে হবে, তারপর আসবে দারিদ্র বিমোচনের প্রশ্ন। আর সব কাজ সবাইকে করতে হবে এমন কোনো ধারণায়ও আমি বিশ্বাস করি না। যে যেই কাজটাই করুন না কেন আন্তরিকতা আর সততার (নিজের বিবেকের কাছে) সঙ্গে করলেই হলো।
মা তেরেসার জন্য শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা। :hatsoff:
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
ক্রিস্টোফার হিচেন্স তো তেরেসাকে সরাসরি অপোরচুনিস্ট আখ্যা দিয়েছেন। অঢেল অর্থ সম্পত্তি দিয়ে তিনি কেবল কনভেন্ট তৈরি করেছেন, ভাল কোন হাসপাতালও করেন নি, আর কনভেন্টের হাসপাতালগুলোর মান নাকি আশানুরূপ না। হিচেন্সের মতে ভ্যাটিকান সিটি তার বিশ্বব্যাপী রাজনীতিতে মাদার তেরেসাকে একটি গুটি হিসেবে ব্যবহার করেছে কিংবা তেরেসাই ভ্যাটিকানের রাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষার মাধ্যমে নিজের ক্যাননাইজেশন নিশ্চিত করেছেন। হিচেন্স বলছেন, মিশনারি অফ চ্যারিটিস এর যে পরিমাণ অর্থ আছে তা দিয়ে নাকি কলকাতাকেন্দ্রিক একটি অতি উন্নত মানের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য গবেষণা কেন্দ্র তৈরি করা যেতো। কিন্তু তেরেসা নাকি চূড়ান্ত কোন সমাধানের স্বপ্ন না দেখে কেবল স্বর্গারোহণের আগে মানুষকে সহ্য করতে শিখিয়ে গেছেন।
এছাড়া মার্কিন সরকার, কম্যুনিস্ট আলবেনীয় সরকার, গুয়েতেমালায় হত্যাযজ্ঞ এসবের বিরুদ্ধে যে ধরণের পদক্ষেপ নেয়া দরকার ছিল তেরেসা নাকি সেটা করেন নি। সেসব ক্ষেত্রে কেবল ভ্যাটিকানের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করেছেন। পৃথিবীর গুরুত্বপূর্ণ সকল পুরষ্কার অর্জনকেও হিচেন্স কটাক্ষ করেছেন।
কিন্তু তেরেসা সম্পর্কে আমার মতামত এখনও অনেকটা আপনার মতই। অনেক ভুল ত্রুটি ও ক্ষতিকর দর্শন থাকা সত্ত্বেও তেরেসার মানবসেবার চেতনাকে হেলা করা যায় না। কারণ তিনি তার কাজ সততার সাথেই করেছেন, আমার অন্তত তাই মনে হয়।
ভালো হয়েছে ভাইয়া, ধন্যবাদ। 🙂
মা তেরেসার জন্য শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা। :hatsoff: :hatsoff:
অফটপিকঃ কথা শেষ না করে জিহাদকে দিয়ে দিলে ক্যান? :-B
:shy: 😀
মা তেরেসার জন্য শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা। :salute:
অনটপিকে কোন কথা নাই। অফটপিকে একটা কথা বলি, এতো সুন্দর সুন্দর লেখাগুলা মির্জাপুর ট্যাগাও না ক্যা? গত কয়েক পোস্টে দেখছি ট্যাগ দাও না। ঝিনাইদহ যে আমাদের ছাড়ায়ে যাইতেছে, খেয়াল করছো নাকি??
এরপর থেকে দিব। এইটাতে লাগায়া দিতেছি।
শ্রদ্ধাঞ্জলি
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
মজার ব্যাপার হল- ঢাকা তে কিন্তু মাদার তেরেসার অনাথ আশ্রম এখনো full fledged operation চালিয়ে যাচছে ।