নির্বাচনের আর বেশিদিন বাকি নেই। এখনই আমাদের প্রস্তুতি শুরু হতে পারে। মার্কিন নির্বাচনের সময় লাইভ ব্লগিং চলেছিল। পুরো নির্বাচনের ছবিটাই আমরা তুলে ধরেছিলাম। এবার আমাদের নির্বাচনে উন্মাদনার পরিমাণটা নিশ্চয়ই বেশী হবে। আমাদের নির্বাচন হয়ত এখনও সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ হয়ে উঠতে পারেনি। কিন্তু সরকার নির্ধারণে এর থেকে ভাল কোন উপায় নেই। তাই নির্দিষ্ট প্রার্থীর সবকিছু না দেখেই যেদেশের ভোটাররা সিদ্ধান্ত নিতে পছন্দ করে সেদেশের নির্বাচনকেও নিবিঢ়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার দরকার আছে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য নিয়মিত বাহিনী তো আছেই। সাথে আমরা একটা অনলাইন পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারি। এজন্য প্রথমেই জাতীয় সংসদের আসনবিন্যাস সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন।
তাই আজ জাতীয় সংসদের আসনবিন্যাস নিয়ে লিখছি। নারী আসন বাদ দিলে দেশে মোট আসনের সংখ্যা ৩০০। কোন জেলায় কতটি আসন তা দেখানোর জন্য একটি মানচিত্র তৈরী করলাম। সেই মানচিত্রটিই তুলে দিচ্ছি। একই বিষয়কে সামনে রেখে অবশ্য তিনটি মানচিত্র দেব। প্রথমটি থেকে পরের দুটি ভিন্ন। সবার সুবিধার্থে মানচিত্র সম্পর্কে কয়েকটি কথা বলে দেয়া প্রয়োজন:
– প্রথম মানচিত্রে কোন জেলার নাম দেয়া নেই। শুধু জেলার মধ্যে সে জেলায় আসন সংখ্যা লেখা আছে।
– আসন সংখ্যার উপর মাউস ধরলে একটি বক্সে সে জেলার আসনবিন্যাস চলে আসবে। অর্থাৎ কোন কোন অঞ্চল নিয়ে কোন কোন আসন সেটা।
– সংখ্যার উপর ক্লিক করলে ইংরেজি উইকিপিডিয়ায় সে জেলার নিবন্ধে চলে যাবেন।
এটুকু জানা থাকলে মানচিত্রটি দেখা শুরু করতে পারেন। তবে তারও আগে এক নজরে বিভিন্ন জেলার আসনবিন্যাস সম্পর্কে একটি ধারণা দিয়ে দিচ্ছি। কোন জেলায় কতটি আসন আছে তা বোঝানোর জন্য:
২০ – ঢাকা
১৬ – চট্টগ্রাম
১১ – ময়মনসিংহ, কুমিল্লা
৮ – টাংগাইল
৭ – বগুড়া
৬ – দিনাজপুর, রংপুর, নওগাঁ, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, যশোর, খুলনা, বরিশাল, কিশোরগঞ্জ, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী
৫ – গাইবান্ধা, পাবনা, জামালপুর, নেত্রকোনা, গাজীপুর, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, চাঁদপুর
৪ – নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, নাটোর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, ভোলা, ফরিদপুর, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, কক্সবাজার
৩ – ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পিরোজপুর, শেরপুর, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফেনী
২ – পঞ্চগড়, জয়পুরহাট, মেহেরপুর, চুয়াডাংগা, মাগুরা, নড়াইল, বরগুনা, ঝালকাঠি, রাজবাড়ী
১ – পার্বত্য খাগড়াছড়ি, পার্বত্য রাংগামাটি, পার্বত্য বান্দরবান
নির্বাচনের ফলাফলও উপরের মানচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে। এজন্যই সবার সাথে আগেই মানচিত্রটির পরিচয় করিয়ে দিলাম।
নিচের মানচিত্রে জেলার ইংরেজি নামসহ আসন সংখ্যা আছে। এটা কাজে লাগতে পারে।
জেলার নাম বাংলা এমন একটা মানচিত্রও হাতে ছিল। সুতরাং সেটাও তুলে দিচ্ছি। জেলার উপর বাংলায় আসন সংখ্যাটা বসিয়েছি।
আর নির্বাচনের বিস্তারিত তথ্যের জন্য বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের লিংকটা দিয়ে দিচ্ছি:
– বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের বাংলা ওয়েবসাইট
নির্বাচনের পুরো সময়টা আমাদের সাথেই থাকুন। লাইভ ব্লগিং এ সবার অংশগ্রহণের কোন বিকল্প নেই। তাহলে শুরু হোক নির্বাচনের লাইভ ব্লগিং। আমি প্রথমেই কয়েকটা আপডেট জানিয়ে দেই:
– গতকাল আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে। আজ বিএনপি-ও ইশতেহার ছেড়ে দিয়েছে।
– গতকাল থেকেই রাজনৈতিক মিটিং-মিছিল এর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। ১৭ তারিখেই জরুরী অবস্থার অবসান ঘটছে।
– সব দলই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করে দিয়েছে। খালেদা ও এরশাদ দুজনেই সিলেট দিয়ে শুরু করেছেন।
– হার্ভার্ড ইন্টারন্যাশনাল রিভিউয়ে প্রকাশিত সজীব ওয়াজেদ জয়ের একটি লেখায় আওয়ামী লীগের হিতে-বিপরীত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তারপরও সবাই আওয়ামী লীগকে ফেভারিট ধরছেন।
মুহাম্মাদ, তুই পারসও ... :clap:
নির্বাচন নিয়ে তোর উচ্ছাসটা ভাল লাগল। সবার আলোচনার সুযোগ তৈরী করে দেবার জন্য সাবাশি দিচ্ছি। ম্যাপগুলো অসাধারণ হইছে।
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
😀
প্রথম ম্যাপটা বানাইতে পুরা একদিন লাগছে: আজকে সারাদিন। 😛
বস বস :boss: :boss: :boss: :boss:
এত কষ্ট করার ধৈর্য্য যে কই পান আল্লাহ মা'বুদই জানে :clap: :clap: :clap:
না আপনারা আসলেই বস :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff: :salute: :salute: :salute:
"আমি খুব ভাল করে জানি, ব্যক্তিগত জীবনে আমার অহংকার করার মত কিছু নেই। কিন্তু আমার ভাষাটা নিয়ে তো আমি অহংকার করতেই পারি।"
আজকে রাস্তায় মিছিলের শব্দ পায়াই বোধহয় ধৈর্য্যের উৎপত্তি ঘটছে। আজই তো জরুরী অবস্থার ইতি ঘটলো। বাংলাদেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম জরুরী অবস্থার অবসানে রাস্তা তাই পুরা গরম ছিল। মৈমনসিং এর মেইন রাস্তার আশেপাশেই বাসা, সেই সুবাদে চিল্লাপাল্লার শব্দ পাই। 😀
মুহাম্মদ আমি বুঝতেছি না আমি ভুল জানি নাকি, কিন্তু আজ মনে হয় জরুরী অবস্থার ইতি ঘটে নাই। ওটা হবে ১৭ তারিখে। আজ থেকে মিছিল,মিটিং,জনসভা ইত্যাদি করার সুযোগ দেয়া হইছে, তাই না? একটু দেখিস। মনে হয় ১০/১১ তারিখ নির্দেশটা দেয়া হইছিলো।
হ্যা, আমারই ভুল হইছে। জরুরী অবস্থায় বোধহয় ১৭ তারিখেই শেষ হবে। গতকাল থেকে মিছিল-মিটিং এর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হইছে।
নির্বাচনী ব্লগিং এর শুভ সূচনা। অনেক কষ্ট হয়েছে বোঝা যায়। তোরে :salute:
আচ্ছা আরেকটা ম্যাপ করা যায় না? ইউএস এর মতো। গতবার বিএনপি কোন কোন আসন পেয়েছে, আওয়ামীলীগ কোনগুলা পেয়েছে সেটা চিহ্নিত থাকবে (রঙ দিয়ে)...
হ্যা, পরবর্তী মানচিত্রই হবে গত বছরের নির্বাচনী ফলাফল নিয়া। এখন আর বেশী কষ্ট হবে না। কারণ ডাটা সব ইনপুট করা হয়ে গেছে। ফটোশপ দিয়া কালারিংটা ঠিক করে ফেলা যাবে। সেজন্য অবশ্য জিহাদের সাথে একটু আলাপ করতে হইবো। অচিরেই আসতেছে, চিন্তা নাই।
নিজেদের এলাকার আসন সমুহে কোন দল বা প্রার্থীর অবস্থান কি রকম, তার তুলনামুলক আলোচনা করা যেতে পারে।
বেশ কিছু দল তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষনা করেছে, সেগুলির ভালো মন্দ দিক নিয়ে আলোচনা করার এখনই সময়।
মুহাম্মদ কি বলো?
হ্যা, এখন সবচেয়ে হট ইস্যুই বোধহয় ইশতেহার। আওয়ামী লীগের ইশতেহারের একটা রিভিউ প্রথম আলোতে পড়লাম, ভাল্লাগছে। জামাতের মেনিফেস্টো নিয়া একজন এক সকাল নষ্ট করছেন, সচলায়তনে। সেটাও ভাল্লাগছে। লিংকগুলা দেই:
- তাৎক্ষণিক বিশ্লেষণ: আ. লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ২০০৮- এর প্রথম পাঠ
- জামাতের ম্যানিফেস্টো নিয়ে নষ্ট সকাল
মুহাম্মদ,
আমার কাছে অসাধারন লাগছে :thumbup: :thumbup: :thumbup: । প্রশংসা করার ভাষা খুজে পাচ্ছিনা। বেশি ভালো লাগছে এই ভেবে যে, আমার এখানে (লাইবেরিয়াতে) ডিশ সংযোগ থাকলেও কোন বাংলাদেশী চ্যানেল আসেনা। এই ব্লগের মাধ্যমে নির্বাচনী ফলাফল টা সরাসরি সম্প্রচারের মতোই মনে হবে আমার কাছে। তোমাদের কারনে ব্লগের আকর্ষন দিন দিন বেড়েই চলছে :guitar: :tuski: :awesome: । অনেক অনেক ধন্যবাদ। 🙂 🙂 :thumbup: :thumbup:
হুম, তাইলে লাইবেরীয়বাসীদের বিরাট উপকার করতে যাচ্ছি। ভাবতেই ভালু লাগছে... 🙂
আমি মনে হয় মহাম্মদের মত সকল বিষয়ে আগ্রহী না হলেও এই একটা(রাজনীতি) ব্যাপারে খুবই আগ্রহ পাই। তাই নির্বাচনটা আমার কাছে খুবই মহত্ত্বপূর্ণ বিষয়। এই লেখাটার জন্য অনেক ধন্যবাদ মুহাম্মদ।
তাইলে তোর কাছ থেকে নির্বাচনমুখী লেখা পাইতেছি নিশ্চই? অপেক্ষায় থাকলাম...
তা তো বটেই, তা তো বটেই। শিরোনাম ঠিক হয়ে গেছে...
তোমার ভাই, আমার ভাই...
দাড়িপাল্লা- দাড়িপাল্লা ;;)
আমার একটা লাগামছাড়া স্বপ্নের কথা বলি।এমন দিন আসবে যেইদিন বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে অন্য দেশের মানুষ তাদের ভাষায় ব্লগিং করবে-ঠিক সেইভাবে মাতামাতি করবে যেমনটা আমরা ইউ এস নির্বাচন নিয়ে করি।
দেখে যেতে পারি বা না পারি-আসুন আমরা সবাই সেই দিন আনার চেষ্টা অন্ততঃ করি!
:clap:
খুবই চমৎকার কাজ হয়েছে মুহাম্মদ।
দারুন। :clap: :clap: :clap:
প্রথম ম্যাপটা এক কথায় অসাধারন। :boss:
আমার প্রস্তাব হচ্ছে ,বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আমরা সবাই এখানেই আলোচনা করবো। অন্য কেউ আলাদা পোস্ট না দিয়ে বরং মন্তব্যে সব চিন্তা ভাবনা শেয়ার করলে সবার জন্যই ফলো-আপ করতে সুবিধা হবে। আর পোস্টটাও অনেক গভীরতা পাবে।
নিয়মিত সবাই এখানেই আপনাদের চিন্তা ভাবনা, মতামত শেয়ার করুন।
তবে একটু সচেতন থেকে যাতে আমাদের নিজেদের মধ্যে কাঁদা ছোড়াছুড়ি না হয়। সহনশীল হয়ে এবং অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে।
আপাতত এই পোস্টটা স্টিকি করা হলো।
তাহলে স্টিকিই থাকল। নির্বাচন পর্যন্ত নির্বাচন বিষয়ক একটা পোস্ট সবসময় স্টিকিই থাকুক। এই পোস্টে আপাতত লাইভ ব্লগিং চলুক। তবে এই পোস্টে মন্তব্য খুব বেশী হয়ে গেলে এটা বাদ দিয়ে আরেকটা পোস্ট শুরু করা যেতে পারে। নতুন পোস্টটাও স্টিকি থাকবে এবং সেটাতে আগের পোস্টের লিংক দেয়া থাকবে।
বিবিসি-তে যেভাবে লাইভ আপডেট চলে অনেকটা সেভাবেই।
কামরুল ভাই, একদম এইখানেই করতে হবে এমন তো কথা নেই। সবাই নিজের মতামত নিজের মতো করে ব্লগ আকারে দিতে পারেন। তাহলে খেলা জমবে ভালো :grr:
হ্যা, আলাদা পোস্ট দেয়াকে নিরুৎসাহিত করা উচিত না। আমারও তাই মত। অন্য কেউ নিজের মতামত জানিয়ে আলাদা ব্লগ দিতে পারেন। সেক্ষেত্রেও খেলা জমবে।
আমি শুধু ফলো করতে সুবিধা হয় যাতে সেজন্যে এখানেই লিখতে বলেছি।
যে কেউ চাইলে আলাদা ব্লগ দিতে পারে।
তবে ব্যাক্তিগত ভাবে বিভিন্ন পোস্টে আলোচনা করার চেয়ে এক জায়গায় নিয়মিত আলোচনায় আমি বেশি স্বছন্দ্য বোধ করবো।
অনেকের কাছ থেকে তাইলে আলাদা পোস্ট পাবার আশায়ও রইলাম। 😀
একসাথে থাকলে আসলেই ফলো করতে সুবিধা হয়। আর সব ধরণের মন্তব্য/তথ্য একসাথে থাকলে আমার মতো পাঠকদের খুব সুবিধা 😀
আলাদা হোক আর এখানেই হোক, আশায় আছি পোলাপাইন সবাইর আলোচনাগুলার জন্য 🙂
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
আমি নির্বাচন ডিউটি থিকা বাদ পরছি... :(( :(( :(( :(( :((
আমি পরীক্ষা দিতে যাপ্পো না...নির্বাচন দ্যাখপো... :(( :(( :(( :((
ফাইজলামি বাদ, দোস্ত ভাল হইসে কাম ডা, তোর ধইর্য দেইক্ষা ভাল লাগতাসে...আসলেই এইরকম একটা জিনিস দরকার ছিল :clap: :clap: :clap: সাবাস বেটা...
ওয়েল ডান মুহাম্মদ :clap: :clap: ।
আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় থাকলাম।
আমি নিশ্চিত সিসিবি'র কল্যাণে এখানে অনেকের চাইতে বেশি আপ টু ডেটেড থাকব।
Life is Mad.
সবার উদ্দেশ্য একটা কথা বলতে চাই,
এই ব্লগে মূলত আমরা ধর্ম এবং রাজনীতি সংক্রান্ত ব্লগ নিরুৎসাহিত করে এসেছি সব সময়, সেটা অবশ্যই নবিস এই ব্লগকে অনাকাংখিত ঝামেলা থেকে মুক্ত রাখার জন্য।
কিন্তু সেই নীতিমালা ব্যাতিক্রম এখন করা যেতে পারে। যেহেতু, দেশে এখন নির্বাচনী হাওয়া বইছে এবং ইতিমধ্যে প্রমানিত হয়েছে সিসিবির সদস্যরা সবাই যথেষ্ট পরিমাণে সহনশীল এবং একাডেমিক বিতর্কে উৎসাহী সুতরাং মুহাম্মদ এর উদ্যোগ যে প্রশংসনীয় তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
:boss: :boss: :boss: :boss: :boss: :boss: :boss:
এক্মত...আসেন সুষ্ঠু সুন্দর নিরপেক্ষ ব্লগিং করি... :awesome: :awesome: :awesome:
🙂
সবচেয়ে বেশী আসনওয়ালা চার দলই নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেছে। এখানে সবগুলো ইশতেহারের লিংক দেয়া হচ্ছে:
- আওয়ামী লীগ (পিডিএফ)
- বিএনপি (প্রথম আলো থেকে। ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারে ওপেন করুন)
আ. লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ২০০৮ আর বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় তার রিভিঊ পড়ে বেশ কিছু পয়েন্ট বেশ যৌক্তিক মনে হলো। পাঠকদের সাথে শেয়ার করছি।
প্রতিশ্র"তির একটি দীর্ঘ তালিকা দিয়ে ভোটারদের মন জয় করতে চেষ্টার ত্র"টি করেনি আওয়ামী লীগ।
১.
নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় গেলে মেয়াদ শেষ হবার আগে বিদ্যুৎ উৎপাদন সাত হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার প্রতিশ্র"তি দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
বিদ্যুতের উৎপাদন এতটা বাড়াতে হলে গ্যাস অথবা কয়লার সরবরাহও সে হারে বাড়াতে হবে। মূলত গ্যাস বা কয়লার ঘাটতির কারণেই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো পূর্ণ ক্ষমতায় উৎপাদন করতে পারছে না।
বিদ্যুৎ উৎপাদনের এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আওয়ামী লীগ কি করবে সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলা হয়নি। একটি সংক্ষিপ্ত অনুচ্ছেদে যা বলা হয়েছে তা পড়ে মনে হয় ইস্তেহারের লেখকদের পরিস্থিতির গভীরতার ব্যাপারে তেমন ধারণা নেই।
২.
ইস্তেহারটির প্রকৃত দুর্বলতা হলো এতে কোনো আয়-ব্যয়ের উল্লেখ নেই। প্রতিশ্র"তি বাস্তবায়নের অর্থায়ন কোথা থেকে হবে সে ব্যাপারে ইস্তেহারে সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই। যদি দাতাদের সাহায্যের ওপর ভরসা করার ইচ্ছা না থাকে তাহলে অবশ্যই আওয়ামী লীগকে কর অনেক বাড়াতে হবে।
৩.
নির্বাচনের ফল কখনোই নিশ্চিত নয়। তাই ইস্তেহারে ফল যা-ই হোক তা মেনে নেওয়ার জন্য আশ্বাস দেওয়া উচিত ছিলো আওয়ামী লীগের।
৪.
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সন্তোষের কথা জানালেও এতে হরতাল বন্ধের বিষয়ে কোনও বক্তব্য না থাকায় অনেকেই খুব হতাশ হয়েছেন।
আগ্রহী অন্যদের এ ব্যাপারে মতামত কি তা জানার আগ্রহ রইলো।
জামাতের ইশতেহারও পড়ে সেটা নিয়ে আলোচনা করার ইচ্ছে আছে
তাও ভালো লীগ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কথা বলে নাই। আমার মতে বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা ঠিক হবে না। বিএনপি তাদের ইশতেহারে পারমাণবিক শক্তি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলছে। কিন্তু এটা খুবই উচ্চাভিলাষী চিন্তা এবং বাংলাদেশে এর কোন যৌক্তিকতা নেই। কারণগুলো এরকম:
- পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনক্ষমতা খুব বেশী না। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পাওয়ার স্টেশনের উৎপাদন ক্ষমতা ২২,০০০ মেগাওয়াট। অথচ সর্ববৃহৎ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা মাত্র ১৩,০০০ মেগাওয়াট। তাই সব দিক দিয়ে জলবিদ্যুতের কোন বিকল্প নেই।
- বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশগুলোতেই পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশী। রাশিয়ার মতো দেশেই যেখানে ঘটেছে সেখানে বাংলাদেশ তো কোন ছাড়। আর্থার সি ক্লার্ক ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, ২০১১ সালের মধ্যে পৃথিবীর কোন উন্নয়নশীল দেশ পারমাণবিক শক্তি অর্জন করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটাবে।
তাই আমার মতে বিএনপি-র এই স্বপ্ন অনেকটা ম্যাগলেভ ট্রেনের মতোই। বিদ্যুতের দিক দিয়ে লীগের চিন্তাভাবনা সে তুলনায় ভাল। তারা ২০২১ সালের মধ্যে ২০,০০০ মেগাওয়াটে পৌঁছে যাওয়ার কথা বলেছে। স্বাধীনতার রজত জয়ন্তী নিয়ে উৎসাহটা ভাল লেগেছে। তবে সুস্পষ্ট কোন পদক্ষেপের কথা বলা নেই। আর ইশতেহারে কিছু বলেও লাভ হয় না। গত বছর নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে করা এক জরিপে দেখা গেছে: দলের ৯০% সমর্থকই ক্ষমতার শেষ বর্ষে তার দলের ইশতেহারের কিছুই মনে করতে পারেনি। এমনকি দলের অফিসেই ইশতেহারের কোন কপি ছিল না। ইশতেহার শোভা পাচ্ছিল কেবল রাজনীতি গবেষক ও বুদ্ধিজীবীদের কাছে, যাদের কোন পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষমতা নেই।
সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে ব্লাসফেমি আইন।
বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ইশতেহারে এ নিয়ে কিছু বলা না থাকলেও তাদের দুই শরীক দল জামায়াতে ইসলামী (চারদল) ও জাতীয় পার্টি (মহাজোট) ধর্মের কথিত অবমাননার জন্য ব্লাসফেমি আইন প্রণয়নের কথা বলেছে।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের অন্যতম শরীক জামায়াতে ইসলামীর ইশতেহারে ব্লাসফেমি আইন প্রণয়ন প্রসঙ্গে বলা হয়, 'বই-পত্র, পত্র-পত্রিকা, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে ধর্মবিরোধী প্রচারণা ও কটুক্তিকারীদের প্রতিরোধ ও শাস্তি বিধানের জন্য ব্লাসফেমি ধরণের আইন প্রণয়ন করা হবে।'
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের অন্যতম অংশীদার জাতীয় পার্টির নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছে, "ক্ষমতায় গেলে আল্লাহ, রাসুল ও শরিয়তের বিরুদ্ধে কটুক্তিকারীদের শাস্তির বিধান সম্বলিত আইন করবে জাতীয় পার্টি।"
যদিও তাদের জোটের নেতৃত্বে থাকা বিএনপি ও আওয়ামী লীগ উভয়েই তা বাস্তবায়ন না করার ইঙ্গিত দিয়েছে, তারপরেও শেষ পর্যন্ত আমাদের দেশে সবচেয়ে খারাপটাই ঘটে।
প্রশংগত উল্ল্যেখ করি, উপমহাদেশে পাকিস্তানে ব্লাসফেমি আইন রয়েছে যা সেদেশে একটি বিতর্কিত ইসু। সেদেশের খ্রিস্টানসহ সংখ্যালঘুদের অভিযোগ তাদের ওপর হামলা চালানোর জন্য জঙ্গিবাদিরা এ আইনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে।
আমি শঙ্কিত।
জামাতের ইশ্তেহারে আরেকটি নতুন বিষয় এসেছে । বিশ থেকে ত্রিশ বছর বয়সী সকল বাংলাদেশী নাগরিকের বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ।
হায়রে, অভাগা দেশ। মুলধারার শিক্ষা ব্যাবস্থা উন্নতির কোন পদক্ষেপ নেই, সামরিক প্রশিক্ষণ। (সমর = জঙ্গ) !!!
এসে গেছে ফায়ারফক্সে প্রথমআলো পড়ার এড-অন 🙂 🙂
যারা বানাইছেন, তাদেরকে :boss:
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
মুহাম্মদরে :salute: প্রথম মানচিত্রটা এতো ইনফরমেশনের হটস্পট দিয়া সাজাইতেতো জান বের হয়ে যাবার কথারে। চলুক আলোচনা। চমৎকার একটা লাইভ ব্লগ হবে এতই নিঃসন্দেহে :thumbup:
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
http://timesofindia .indiatimes. com/Kolkata_ /Bangladesh_ officers_ to_join_Vijay_ Diwas_celebratio ns/articleshow/ 3820717.cms
😕 😕 😕 এইটা আবার কি :-/ :-/ :-/
"আমি খুব ভাল করে জানি, ব্যক্তিগত জীবনে আমার অহংকার করার মত কিছু নেই। কিন্তু আমার ভাষাটা নিয়ে তো আমি অহংকার করতেই পারি।"
খবরটা পত্রিকায় পড়লাম। এইখানে লিংকটা ঠিকমতো আসে নাই। আবার দেই:
Bangladesh officers to join Vijay Diwas celebrations
কলকাতায় প্রতি বছরই ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস হিসেবে পালিত হয়: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের বিজয় দিবস। এবারের এই বিজয় দিবসে বাংলাদেশের কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তাও অংশ নিচ্ছেন। উল্লেখ্য ভারতীয় সেনাবাহিনীই এই বিজয় দিবসের আয়োজন করে থাকে।
actually in this news i wanted to point about the the claim that "Bangladesh Army will seek assistance of INDIA to bring Ershad to power".
Is it really true??????? ~x( ~x( ~x( ~x(
sorry my i'm now in a problem to write in Bangla.
হায় হায়, এইটা আমি কি শুনলাম?
আমিও এই সম্বন্ধে কিছুই জানি না। কেউ জানলে জানেন। এইটা কি শুনতাছি। আর্মি এইসব কি শুরু করতাছে?
নাউজুবিল্লাহ একি কথা শুনি আজ x-( x-( x-(
"আমি খুব ভাল করে জানি, ব্যক্তিগত জীবনে আমার অহংকার করার মত কিছু নেই। কিন্তু আমার ভাষাটা নিয়ে তো আমি অহংকার করতেই পারি।"
x-( x-( x-( x-(
মুহাম্মদ,
অনেক পরিশ্রম করে এই লেখাটা দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। :salute:
আশা করি নির্বাচনের সময় জুড়ে আমরা এখানে নিয়মিত আপডেট পাব।
ভাল জিনিস... ধন্যবাদ ভাই...
মুহাম্মদ তোমার আইডিয়া টা আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে
পাশাপাশি যদি এলাকার দুনীর্তিবাজ, ঘুষখোর, রাজাকার প্রার্থীদের নাম তুলে ধরা যেত আর ও ভাল হত...... যদি ও খুব ই কঠিন একটা কাজ.........
আজকের প্রথম আলোর খবর:
২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ৫২টি আসনের ১১১টি কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যার প্রায় দ্বিগুণ ভোট পড়েছে। এই দ্বিগুণ ভোট দিয়েই ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছিল। এই ১১১টি আসনের মধ্যে ৭১টিতে বিএনপি ৩২টিতে আওয়ামী লীগ ও ২টিতে জাতীয় পার্টি, ১টিতে জামাত আর বাকি চারটিতে অন্যান্য প্রার্থী বিজয়ী হয়।
- প্রথম আলোর খবর
এ কী শুনিলাম!!!
কিন্তু এই সংখ্যাধিক্যে নাকি ভোটের ফলাফলের উপর কোন প্রভাব পড়ে নাই?
তাইতো দেখা গেছে। কোন কেন্দ্রে যত জন ভোটার আছে ভোট পড়েছে তার প্রায় দ্বিগুণ। তারপরও বিনা দ্বিধায় ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এতো বিদেশী পর্যবেক্ষক থাকতেও এটা কিভাবে সম্ভব হল? জানি না। আর এই খবর আমরা এখন জানতে পারছি কেন সেটাও বোধগম্য না।
জামাতের মেনিফেস্টোর খবর কেউ জানেন নাকি!
ওরা "অ্যান্টি-ব্লাসফেমি আইন" করবে বলে প্রতিজ্ঞা করেছে। এই আইনের আসল লক্ষ্য সকল ধর্মনিরপেক্ষ মুক্ত-মনাদের হত্যা করা, চিরদিনের জন্য বাঙালিত্বের অবসান ঘটানো।
তাদের মতে, এই আইন না থাকায়ই দাউদ হায়দার, তসলিমা নাসরিনেরা দেশ ছেড়ে যেতে পেরেছে আর আহমদ শরীফ বা হুমায়ুন আজাদেরা কোন শাস্তি পায়নি। তারা ক্ষমতায় এলে আহমদ শরীফের উত্তরসূরীরা কেউ টিকে থাকতে পারবে না। হুমায়ুন আজাদের গুণমুগ্ধদের জেলে যেতে হবে। কারণ তাদেরকে বলা হবে দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী।
আসুন আমরা সচেতন হই। খুব কাছ থেকে লক্ষ্য না করলে জামাতের চাল ধরা যাবে না, আর চাল ধরতে না পারলে তাদের নিশ্চিহ্নও করা যাবে না।
এ নিয়ে আরও খবর আছে। জাতীয় পার্টিও তাদের ইশতেহারে ব্লাসফেমি আইন করবে বলে জানিয়েছে।
তবে আশার কথা, প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এই আইন করবে না বলে জানিয়েছে। তারা বলেছে, এর আগে কাদের কোন ইশতেহারেই ব্লাসফেমি আইনের বিষয়টি ছিল না, এবারও নেই।
একটু আগে প্রথম আলোতে একটা রিপোর্ট পড়লাম। সবার জন্য হুবহু ছেপে দিচ্ছি।
সংবাদ বিশ্লেষণ
ব্লাসফেমি আইন ও হরতাল নিষিদ্ধ প্রসঙ্গ
জামায়াত ও জাপার ধারণার সঙ্গে একমত নয় বিএনপি-আ.লীগ
চারদলীয় জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামী তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বলেছে, ক্ষমতায় গেলে তারা ব্লাসফেমি (ধর্মের অবমাননা) আইন করবে। মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টিও তাদের ইশতেহারে ক্ষমতায় গেলে পরোক্ষভাবে একই ধরনের আইন করার ঘোষণা দিয়েছে।
দল দুটি ক্ষমতায় গেলে হরতাল নিষিদ্ধ করার আইন করারও ঘোষণা দিয়েছে। তবে তাদের প্রধান শরিক বিএনপি ও আওয়ামী লীগ এসব ধারণার সঙ্গে একমত নয়।
আইনজ্ঞ ও বুদ্ধিজীবীরাও বলছেন, একুশ শতকে এসে কোনো দেশে ব্লাসফেমির মতো কোনো আইন হতে পারে না। এটা করা হলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে। তাঁরা বলছেন, হরতালের মতো প্রতিবাদের কর্মসুচি নিষিদ্ধ করা কোনোভাবেই গণতান্ত্রিক চেতনার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।
উইকিপিডিয়া অনুযায়ী কয়েক শ বছর আগে অনেক দেশে ব্লাসফেমি আইন প্রণয়ন করা হয়। বিশেষ করে যিশুখ্রিষ্টের সমালোচনা বন্ধ করতে এই আইন করা হলেও অনেক দিন ধরে অনেক দেশে এই আইনের কোনো প্রয়োগ নেই। আবার অনেক দেশ এই আইন বিলুপ্তও করেছে।
১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা ব্লাসফেমির ধারণার বিরোধী। ধারা ৭ অনুযায়ী আইনের চোখে সবাই সমান। ধারা ১৮-তে আছে, সবারই নিজ নিজ চিন্তা, বিবেক ও ধর্মের স্বাধীনতা আছে। ধারা ১৯ অনুযায়ী প্রত্যেকের মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে।
আবার বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী সব নাগরিকের চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা আছে, আছে মত প্রকাশের স্বাধীনতাও।
উইকিপিডিয়া ঘেঁটে দেখা যায়, স্কটল্যান্ডে সর্বশেষ ১৮৪৩ সালে ব্লাসফেমি আইনে কাউকে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল। ইংল্যান্ডে সর্বশেষ ১৯২১ সালে এক ব্যক্তিকে এই আইনের অধীনে কারাদন্ড দেওয়া হয়েছিল।
বিচারপতি গোলাম রাব্বানী প্রথম আলোকে জানান, কয়েক শ বছর আগে ব্রিটেনে একদল খ্রিষ্টান ধর্মদ্রোহিতার নামে কিছু মানুষকে পুড়িয়ে মারে। তখন এদের বাঁচাতে এমন একটি আইন করা হয়েছিল, যেন ধর্মদ্রোহী বলে কোনো লোকদের পুরিয়ে মারা না হয়।
বাংলাদেশের আশপাশের দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র পাকিস্তানে ব্লাসফেমি আইন আছে। ১৯৮২ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউল হক এ আইনটি পাস করেন। তখন পাকিস্তান দন্ডবিধির ২৯৫(খ) ধারা অনুযায়ী পবিত্র কোরআনের অসম্মান করা হলে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের বিধান করা হয়। এরপর ১৯৮৬ সালে ২৯৫(গ) ধারায় মহানবী (সা.) কে নিয়ে অসম্মানজনক কোনো উক্তি করার দায়ে মৃত্যুদন্ডের বিধান করা হয়। তবে ২০০৪ সালে পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ব্লাসফেমি আইনে শাস্তির বিধান কমিয়ে একটি প্রস্তাব পাস করে।
পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিরোধীদের দমনে বা ব্যক্তিগত শত্রুদের ঘায়েলে ব্লাসফেমি আইনের অপব্যবহারের একাধিক উদাহরণ রয়েছে। খ্রিষ্টান, হিন্দু ও শিখদের দমনেও মুসলিম মৌলবাদীরা এই আইনটির অপব্যবহার করেছে। আহমদিয়া মুসলিমরা সেখানে এই আইনের মূল শিকার।
পাকিস্তানে ‘ন্যায়বিচার ও শান্তি কমিশনের’ একটি প্রতিবেদনে দেখা যায়, ১৯৮৮ সাল থেকে ২০০৫ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত ৬৫০ জন লোকের বিরুদ্ধে ব্লাসফেমি আইনের অধীনে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছিল। ওই সময়ে ২০ জনকে মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করে হত্যা করা হয়েছে। ২০০৫ সালের জুলাই মাসে ব্লাসফেমির অভিযোগে ৮০ জন খ্রিষ্টানকে কারাদন্ড দেওয়া হয়।
জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছে, ‘বই, পত্রপত্রিকা, ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ধর্মবিরোধী প্রচারণা ও কটুক্তিকারীদের প্রতিরোধ ও শাস্তি বিধানের জন্যে ব্লাসফেমি জাতীয় আইন করা হবে।’
চারদলীয় জোটে জামায়াতের শরিক বিএনপির মুখপাত্র ও যুগ্ম মহাসচিব নজরুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে এ বিষয়ে বলেন, ‘জামায়াত তার রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটি বলেছে। তবে এ ধরনের কোনো চিন্তা আমাদের মাথায় নেই।’ চারদলীয় জোট ক্ষমতায় গেলে বিএনপির ওপর জামায়াত চাপ সৃষ্টি করতে পারে কি না−জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা (জামায়াত) ৩৪টি আসনে নির্বাচন করছে, আর আমরা নির্বাচন করছি ২৬০টি আসনে। তারা কীভাবে চাপ সৃষ্টি করবে, এটা তো বুঝলাম না ভাই।’
১১ ডিসেম্বর জাতীয় পার্টির প্রকাশিত ইশতেহারেও বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ্, রাসুল (সা.) ও শরিয়তের বিরুদ্ধে কটুক্তিকারীদের শাস্তির বিধান সংবলিত আইন প্রণয়ন করা হবে।’
বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানীর মতে, জাতীয় পার্টি পরোক্ষভাবে ব্লাসফেমি আইন করারই ঘোষণা দিয়েছে। আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরীও তা-ই মনে করেন। মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বলেছি, আমরা সব ধর্ম পালনের অধিকার নিশ্চিত করব। পাশাপাশি কোরআন সুন্নাহ্বিরোধী কোনো আইন করব না। এটা আমাদের কোনো নতুন অবস্থান নয়।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি আমার কর্মসুচি সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেব। অন্যের কর্মসুচি সম্পর্কে আমি ব্যাখ্যা দেব না। এটা এরশাদ সাহেবকে জিজ্ঞেস করেন।’
জামায়াতের হরতালবিরোধী আইন করার অঙ্গীকারের বিষয়ে বিএনপির মুখপাত্র প্রথম আলোকে বলেন, হরতাল গণতান্ত্রিক অধিকার। কেউ এটা বাতিল করার কথা বলতে পারেন না। তবে সবাই মিলে যদি একমত হওয়া যায় যে জাতীয় স্বার্থে কেউ হরতাল করবে না, তাহলে একটা বিষয় হয়। তবে কেউ এ বিষয়ে বাধ্য করতে পারে না।
মতিয়া চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, আইএলও চুক্তিতে সই করে এমন দায়িত্বহীন কথাবার্তা তাঁরা বলতে পারেন না। শ্রমজীবী মানুষের প্রতিবাদের ভাষা নিষিদ্ধ করা কোনো দায়িত্বশীল আচরণ হতে পারে না। চেষ্টা থাকবে, যাতে হরতালের প্রেক্ষাপট তৈরি না হয়।
বিচারপতি গোলাম রাব্বানী জানান, তিনি কর্মরত থাকাকালে একটি রায় দিয়েছিলেন যাতে বলা আছে, কেউ হরতাল করলে তাঁকে বাধা দেওয়া যাবে না। আবার কাউকে বাধ্যও করা যাবে না।
মূল লেখার লিঙ্ক এইখানে।
রিপোর্টটা ভাল লাগল। এদেশে বোধহয় ব্লাসফেমি আইন হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। কারণ জামাত বা জাতীয় পার্টি কখনই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আসন লাভ করত পারবে না।
এই লেখার লিঙ্কটা সম্ভবত তৌফিক অন্য একটা পোস্টে দিয়েছে। কিন্তু এই পোস্টে বেশি প্রাসঙ্গিক বলে এখানে লেখাটা ছেপে দিলাম।
সঙ্গে মুল রিপোর্টের লিঙ্ক
নির্বাচনী প্রচারে ধর্মের অপব্যবহার
ভোটারের কাছে জামায়াতের কর্মীরা যা বলছেন
পরকালে মানুষের আমলনামা বা কাজের হিসাব দাঁড়িপাল্লায় মাপা হবে, তাই এ প্রতীকে ভোট দিলে বেহেস্ত পাওয়া যাবে
প্রথম আলো ডেস্ক
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার শাহাপুর গ্রামের কে এম রহমানের স্ত্রী সেলিনা খাতুন (৩৬) একদিন বিকেলে রান্না করছিলেন। হঠাৎ তাঁর উঠানে ঢুকে পড়েন দুজন বোরকা পরা নারী। তাঁরা সেলিনাকে সালাম দেন, এগিয়ে এসে চুলার পাশে বসেন। বলেন, দীনের দাওয়াত দিতে এসেছেন।
এরপর ঘণ্টাখানেক তাঁরা পবিত্র কোরআন-হাদিসের বয়ান করেন, সেলিনাকে উপদেশ দেন নামাজ পড়তে, স্বামী-শ্বশুর-শাশুড়ির খেদমত করতে। সাত দিনের মাথায় আবার তাঁরা আসেন এবং সেলিনাকে তাঁর প্রতিবেশী মমতাজ আলীর বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে ছিলেন গ্রামের আরও ৩০-৩৫ জন নারী।
সেখানে কোরআন ও হাদিসের বয়ানের একপর্যায়ে ওই দুই নারী বলেন, শুধু নামাজ পড়লে বেহেস্ত পাওয়া যাবে না। বেহেস্ত পেতে হলে ইসলামি রাজনৈতিক দলে, ইসলামি আন্দোলনে শরিক হতে হবে। আর একমাত্র বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ইসলামের পথে কাজ করছে এবং এ সংগঠনের সদস্য হয়ে মাসিক চাঁদা দিলে আজীবন সওয়াব মিলবে।
শাহাপুর গ্রামের সেলিনা খাতুন জানান, নিয়মিত বৈঠকে এই দুজন দীনের কথার ফাঁকে ফাঁকে ভোটের পরামর্শ দেন। বলেন, হাসিনা-খালেদা মনগড়া আইন বানিয়ে দেশ চালান; কোরআনের আইন ছাড়া যাঁরা দেশ চালান, তাঁদের ভোট দেওয়া নাজায়েজ; জামায়াতের দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিলে দুনিয়া ও আখেরাতে শান্তি মিলবে; পরকালে মানুষের আমলনামা বা কাজের হিসাব যেহেতু দাঁড়িপাল্লায় মাপা হবে, তাই এ প্রতীকে ভোট দিলে বেহেস্ত পাওয়া যাবে।
আমরুলবাড়ী গ্রামের আব্দুল খলিলের স্ত্রী মনসুরা বেগম (৩৫) বলেন, ‘জামাতি মহিলারা অ্যালা আর হামাক কোরআন-হাদিস বয়ান করি শুনায় না। খালি কয় আজারুল ইসলামোক (রংপুর-২ আসনের জামায়াতের প্রার্থী আজহারুল ইসলাম) ভোট দিলে বেহেশতো পাইমেন। কোরআন-হাদিসও মানা হইবে।’
দেশের বেশ কয়েকটি স্থানে প্রথম আলোর অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ইসলামের কথা বলে, ভয় দেখিয়ে জামায়াতের পক্ষে ভোট চাওয়া হচ্ছে।
এভাবে সাধারণ মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসকে ব্যবহার করে নিজেদের ভোট বাড়ানোর চেষ্টাকে অত্যন্ত গর্হিত কাজ বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব ধর্মতত্ত্ব বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ধর্মকে রাজনীতিতে টেনে আনাকে তিনি মোটেও সমর্থন করেন না। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা সাধারণ মানুষকে ধর্মের ভয় দেখিয়ে যেভাবে অসৎ উদ্দেশ্যে ভোট চাইছে, ধর্মের বিবেচনায় তা অত্যন্ত পাপ ও গুনাহ্র কাজ। ড. নুরুল ইসলাম জামায়াতের এই ধর্মবিরোধী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
রংপুরের বদরগঞ্জে জামায়াতের নারী কর্মীরা মেয়েদের বলছেন, নৌকা, লাঙল ও ধানের শীষে ভোট দিলে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। তবে কোথাও কোথাও কর্মীরা ধানের শীষের পক্ষেও ভোট চান। জয়পুরহাটের কালাইয়ে বোঝানো হচ্ছে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে ১৯৭২-এর সংবিধান চালু করবে, দেশে সব ইসলামি দল নিষিদ্ধ করা হবে এবং ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ইসলামের অবমাননা করা হবে। সিলেটের জকিগঞ্জ ও কানাইঘাটে বোঝানো হচ্ছে, ‘আওয়ামী লীগ ভারতের দালাল। নৌকায় ভোট দিলে হিন্দুর সঙ্গে আখেরাত হইব।’ বিভিন্ন স্থানে জামায়াতের অঙ্গসংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্থাও এ ধরনের প্রচার চালাচ্ছে।
দাওয়াতি ডাক, তালিম ও কোরআন-শপথ: জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মুজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, দেশের প্রতিটি উপজেলায় সংগঠনের নারী কমিটি আছে এবং দেশজুড়ে নারীসদস্য বা রুকনও রয়েছে। তাঁর মতে, বন্ধু, সমর্থক, কর্মী, অগ্রসর কর্মী, সদস্যা প্রার্থী−ধাপে ধাপে রীতিমতো পাঠ্যক্রম শেষ করে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় পাস করে সব শেষে হওয়া যায় সদস্যা বা রুকন।
মুজিবুর রহমান আরও জানান, জেলা-উপজেলা নেত্রীদের তত্ত্বাবধানে কর্মীরা প্রথমে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে সাধারণ নারীদের কোরআন-হাদিস ও ইসলামের বিধি-বিধান সম্পর্কে আলোচনা শোনার দাওয়াত দেন। তারপর স্থানীয় কোনো কর্মী বা সমর্থকের বাড়িতে নিয়মিত তালিম, মাহফিল বা উঠান বৈঠকের ব্যবস্থা করা হয়।
বিভিন্ন এলাকায় প্রথম আলো দেখেছে, অংশগ্রহণকারীরা মূলত নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের। অংশগ্রহণকারীদের জাকাতের টাকা ও বিভিন্ন ধরনের অর্থ-সহায়তা বা সেবাও দেওয়া হয়। কোথাও কোথাও ইসলামী ব্যাংকের উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ঋণ-সহায়তা দেওয়া হয়।
রুকনরা নির্দিষ্ট হারে চাঁদা দেয়। অন্যরাও আর্থিক সংগতি অনুপাতে সাপ্তাহিক বা মাসিক চাঁদা দেয়। এয়ানত নামে পরিচিত এ চাঁদার টাকায় সাংগঠনিক কাজ চলে। রংপুরের বদরগঞ্জে বলা হয়েছিল এ টাকায় ধর্মীয় গ্রন্থ কেনা হয়। উপজেলার শাহাপুর গ্রামের সেলিনা খাতুনের মনে সন্দেহ হওয়ায় তিনি তিন মাসে ৬০ টাকা এয়ানত দেওয়ার পর দল ছেড়ে দেন।
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের নারীরা জানিয়েছেন, প্রথম কয়েক দিন ইসলাম বিষয়ে আলাপ-আলোচনার পর একপর্যায়ে তাঁদের বোঝানো হয় নির্বাচনে নারীদের করণীয়, কোন রাজনৈতিক দলকে কেন সমর্থন দিতে হবে এসব। ভোটের কাছাকাছি সময়ে কোরআন স্পর্শ করিয়ে তাঁদের ওয়াদা করানো হয়। এমনকি স্বামীর কাছেও এসব গোপন রাখতে বলা হয়।
গাইবান্ধা জেলা জামায়াতের আমির মো. আব্দুর রহীম বলেন, ‘মহিলা জামায়াতের মাহফিল দলের নির্বাচনী প্রস্তুতি। এভাবে নারীদের মধ্যে জনসংযোগ ও তাদের ভোট সংগ্রহ দলের একটি নীতি।’
বগুড়ার শেরপুর উপজেলা জামায়াতের আমির এম এ হালিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মহিলাদেরও রাজনীতি করার অধিকার আছে। ইসলামি রাষ্ট্র কায়েমের লক্ষ্যে মহিলাদের ছাড়া সমাজ বিপ্লব সম্ভব না।’
বদরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল হান্নান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মহিলারা ধর্মভীরু। সামান্যতে ওদের মন গলে যায়। তারা নিজেরা যা জানে তা রাতে স্বামীকেও বোঝানোর চেষ্টা করে। এসব ভেবে জামায়াতে ইসলামীর দাওয়াতি কার্যক্রমের মাধ্যমে গ্রামের সাধারণ মহিলাদের সমর্থন আদায়ের জন্য আমাদের মহিলা সংগঠন গড়া হয়েছে। এতে মূল সংগঠনের চেয়ে বেশি সাড়া পাচ্ছি।’
রায়গঞ্জের নারী ভোটাররা: সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় আলতাব হোসেনের স্ত্রী রেজিয়া বেগমের নেতৃত্বে এলাকায় মহিলা জামায়াতের কার্যক্রম শুরু হয় বছর সাতেক আগে। তালিমে অংশগ্রহণকারীরা জানান, তাঁদের ২০০৩ সালে ধানগড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জামায়াতের নেতা ইটভাটার মালিক মোশাররফ হোসেনকে ভোট দিতে বলা হয়।
এ নির্বাচনে বিএনপির নেতা ধানের চাতালমালিক মোশাররফ হোসেন সরকার মাত্র ৩৫ ভোটের ব্যবধানে চেয়ারম্যান হন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘মোট ভোটারের অর্ধেক নারী হলেও বিএনপি অথবা আওয়ামী লীগের এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেই। জামায়াত একাই এদের দলে টানতে নানামুখী চেষ্টা করছে।’
রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হানিফ উদ্দীন সরকার বলেন, ‘তালিম বা দাওয়াত যে নামেই ডাকি না কেন, মহিলা ভোটারদের কোরআন-হাদিসের কথা বলে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।’ উপজেলা জামায়াতের আমির আলী মর্তুজা অবশ্য দাবি করেন, ‘মহিলা জামায়াতের দাওয়াতি কাজ মহিলাদের ইসলামের আলোকে ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ করছে। এটা গোপন বা বিভ্রান্তিকর কিছু নয়।’
রংপুরে দীন কায়েমের লক্ষ্যে: রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া) আসনে চারদলীয় জোটের প্রার্থী বিএনপির রহিম উদ্দিন ভরসার পক্ষে জামায়াতে ইসলামীর নারী-পুরুষ কর্মীরা ভোট চাইতে মাঠে নেমেছেন।
জানা যায়, এ আসনে মহিলা জামায়াতের প্রায় ১৩৫টি গ্রাম-ইউনিট বা শাখা আছে। এদের বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা জানান, তাঁরা এবার নির্বাচনে চারদলীয় জোটের প্রার্থীকে ভোট দিতে ওয়াদাবদ্ধ হয়েছেন।
গঙ্গাচড়ার সদরে প্রতি মাসে উঠান বৈঠক হয় গোলাম রব্বানী ও মৌলভীবাজার এলাকার আসাদুল হকের বাড়িতে। রব্বানীর স্ত্রী রূপালী বেগম ও আসাদুলের স্ত্রী আফরোজা বেগম ইউনিয়ন মহিলা জামায়াতের নেত্রী। এমন এক বৈঠকে যোগ দিয়ে বিলকিস বেওয়া ও নাছিমা আক্তার কিছুটা বিভ্রান্ত হয়েছেন। প্রথম আলোকে তাঁরা বলেন, শহর থেকে আসা মহিলারা বৈঠকে আল্লাহ ও রসুলের কথা বলেন সেটা ঠিক আছে। কিন্তু তাঁরা ভোটের কথা বলেন কেন?
কালাইয়ে নারী ভোটের সুফল: জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা জামায়াতের রাজনৈতিক সেক্রেটারি মাওলানা নুরুজ্জামান সরকার বলেন, ‘১৯৯৬ সালের নির্বাচনে এখানকার জামায়াতের প্রার্থী হারার পর ২০০১ সালের নির্বাচনে চারদলীয় জোটের পক্ষে মহিলা কর্মীদের প্রথম মাঠে নামানো হয় এবং সুফল পাওয়া যায়।’
তিনি বলেন, ‘উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় মহিলা জামায়াতের ছয়জন দায়িত্বশীলা (সভাপতি) ও উপজেলায় একটি প্রধান দায়িত্বশীলার পদ রয়েছে। তাদের নেতৃত্বে মহিলা জামায়াতের পৃথক সাতটি কমিটির অধীনে প্রায় প্রতিটি গ্রামে শাখা কমিটি রয়েছে।’
কালাই পৌর মহিলা জামায়াতের দায়িত্বশীলা শামসাদ ইয়াছমিন (শাপলা) বলেন, মাসের প্রথম সপ্তাহে ইসলামি প্রচারপত্র, বই, ক্যাসেট ও সিডি বিলানো হয় এবং নবাগত নারীদের নাম লেখানো হয়। দ্বিতীয় সপ্তাহে কোরআন-হাদিসভিত্তিক বিভিন্ন ইসলামি বক্তব্য শোনানো হয়। তৃতীয় সপ্তাহে তাদের নিয়ে ছোট ছোট দল গঠন এবং চতুর্থ সপ্তাহে সাধারণ সভা ডেকে সেখানে সরাসরি ভোট চাওয়া হয়।
উপজেলা মহিলা জামায়াতের একাধিক কর্মী প্রথম আলোকে বলেন, গ্রামের নারীরা তাঁদের প্রায়ই প্রশ্ন করেন, দাঁড়িপাল্লায় ভোট না চেয়ে ধানের শীষে কেন ভোট চাওয়া হচ্ছে। ভোটারদের এমন প্রশ্নে তাঁরা কখনো কখনো বিব্রত বোধ করেন।
মাওলানা নুরুজ্জামানও এমন কথা স্বীকার করে বলেন, ভোটারদের বোঝানো হয়, জামায়াত বিএনপির সঙ্গে ভোটবিনিময় করে থাকে। এখানে ধানের শীষে ভোট চাইলেও জামায়াতের আসনে বিএনপির কর্মীরা অনুরূপ জামায়াতের পক্ষে ভোট চান। কাজেই ধানের শীষে ভোট দেওয়ার অর্থই দাঁড়িপাল্লাতে ভোট দেওয়া।
উপজেলা মহিলা জামায়াতের সভানেত্রী হান্না বানু বলেন, ‘জোট প্রার্থীর পক্ষে ভোট না চাইলে আল্লাহর কাছে গুনাহগার হয়ে যাব। বিএনপির সাথে বেঈমানি করা হবে। কারণ বিএনপি অন্যত্র জামায়াত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছে।’
দাঁড়িপাল্লা আখেরাতের প্রতীক!: পাবনা শহরের আটুয়া হাজীপাড়া এলাকার গৃহিণী রোখসানা বেগম বলেন, ‘দাঁড়িপাল্লা ন্যায় আর আখেরাতের প্রতীক, তাই দাঁড়িপাল্লায় ভোট দেবেন। এ কথা বলে একটি লিফলেট আমার হাতে ধরিয়ে দিলেন বোরকা পরা দুজন মহিলা।’ রাধানগর এলাকার গৃহিণী কেয়া বেগম বলেন, ‘তাঁদের কথাবার্তায় শিক্ষিত মনে হয়েছে। পরিচয় জানতে চাইলেও দেননি। তবে তাঁদের ভাষা পাবনার নয়।’ শালগাড়িয়া এলাকার কলেজশিক্ষক আকলিমা বেগম বলেন, ‘এদের ভোট চাওয়ার কৌশলে নিরক্ষর, ধর্মভীরু ও বয়স্ক মহিলারা বিভ্রান্ত হচ্ছেন।’
জামায়াতের নারী কর্মীদের পাশাপাশি ইসলামী ছাত্রী সংঘের প্রায় পাঁচ হাজার কর্মী এখন পাবনা-১ ও ৫ আসনে মতিউর রহমান নিজামী ও আবদুস সুবহানের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন।
দাঁড়িপাল্লায় ভোট না দিলে দোজখে জ্বলতে হবে: সীমান্তবর্তী সিলেট-৫ (কানাইঘাট-জকিগঞ্জ) আসনে গতবার সাংসদ ছিলেন জামায়াত নেতা মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী। এখানে জামায়াতের মহিলা শাখা কাজ শুরু করে ১৯৯৯ সালে। জকিগঞ্জ জামায়াত সুত্র দাবি করছে, কর্মী ও রুকন মিলিয়ে দুই শতাধিক নারী এখন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সক্রিয় আছে। নারী সমর্থক রয়েছে সহস্রাধিক।
‘মৃত্যুর পর নেকি-বদির ওজন হবে দাঁড়িপাল্লায়। এই দাঁড়িপাল্লায় ভোট না দিলে দোজখে জ্বলতে হবে’−এ রকম হাদিসের বয়ান শুনিয়ে জেলা জামায়াতের সভানেত্রীর নেতৃত্বে নারী নেত্রীরা প্রচার চালান এ আসনে। সম্প্রতি কানাইঘাটের নন্দিরাই আলাউদ্দিনের বাড়ি, বিষ্ণুপুর, বড়দেশ ও উমাগর গ্রামে প্রচারণা চালান তাঁরা।
বিষ্ণুপুর গ্রামের আছিয়া বেগম (৩৫) বলেন, ‘তারা আইয়া আমরারে পরকালের কথা বইলা পাল্লা মার্কায় ভোট দিতে কইল। আরও কইল আওয়ামী লীগ ইন্ডিয়ার দালাল। নৌকায় ভোট দিলে ইন্দুর লগে আখেরাত অইব।’ বড়দেশ গ্রামের হাওয়ারুন বেগম (৪০) বলেন, ‘ইবেটিনতে আইয়া কইলা নাও মার্কা বে-ইসলামি পার্টি। নাওয়ে ভোট দিলে বেস্তো যাওয়া যাইত নায়।’ একই গ্রামের আফিয়া বেগম (২৫) বলেন, ‘আপা হখলে কইছইন পাল্লা মার্কায় ভোট দিলে দেশো ইসলামি আইন অইব। দুনিয়া-আখেরাতও ভালা অইব। তাইন ইন্দু পাটির নাও মার্কাত ভোট না দেওয়ার লাগি কইয়া গেছইন।’
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা জামায়াতের মহিলা সহকারী সেক্রেটারি মাহবুবা বেগম বলেন, ‘আমরা কানাইঘাট ও জকিগঞ্জে প্রচার চালিয়েছি। তবে কী বক্তব্য দিয়েছি ঠিক মনে পড়ছে না।’
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন পাবনা অফিস ও বদরগঞ্জ (রংপুর), পীরগাছা (রংপুর), গঙ্গাচড়া (রংপুর), রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ), কালাই (জয়পুরহাট), গাইবান্ধা, শেরপুর (বগুড়া) ও কানাইঘাট (সিলেট) প্রতিনিধি]।
প্রথম আলোর এই কথার সাথে একটু দ্বিমত পোষণ করছি। এই লেখা পড়ে মনে হতে পারে কেবল ভোট বাড়ানোর জন্যই জামায়াত নারীদল গঠন করেছে। এটা ঠিক না। জামাত প্রতিষ্ঠার একেবারে শুরু থেকেই নারী দল ছিল। এই পন্থী দলগুলোকে চার ভাগে ভাগ করা যায়:
১। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ
২। মহিলা জামায়াত
৩। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির
৪। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্থা
এর মধ্যে মহিলা জামায়াত মূল জামায়াতে ইসলামীর অধীনেই পরিচালিত হয়। অবশ্য প্রতিটি শাখায় পুরুষ জামায়াত ও মহিলা জামায়াতের আলাদা কার্যকরী পরিষদ থাকে। শাখার পুরুষ দলের প্রধানকে বলা হয় আমীর, আর মহিলা দলের প্রধানকে বলা হয় সভানেত্রী।
কিন্তু ছাত্র শিবির ও ছাত্রী সংস্থা স্বায়ত্তশাসিত। অর্থাৎ শিবির ও ছাত্রী সংস্থা কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য জামায়াত বা মহিলা জামায়াতের কাছে দায়বদ্ধ নয়। উচ্চতর পর্যায়ে যেমন, পুরুষ জামায়াতের সাথে মহিলা জামায়াতের সম্পর্ক আছে; শিবির ও ছাত্রী সংস্থার মধ্যে তেমন কোন সম্পর্ক নেই।
আর শাখার ব্যাপারে বলতে হয়, দেশের সব জেলা শহর এবং বড় বড় উপজেলা শহরে এই চারটি দলেরই শাখাভিত্তিক কার্যক্রম আছে, এটা নির্দিষ্ট করে ভোটের জন্য তৈরী করা হয়নি।
এখানে এক জায়গায় "ইসলামী ছাত্রী সংঘ" লেখা হয়েছে। এটা ছাত্রী সংস্থা হবে।
আমি এতকিছু জানি কারণ আমার পরিবারের অবস্থাটা এমন:
১। বাবা জামায়াতে ইসলামীর রুকন (সর্বোচ্চ পদ)
২। মা মহিলা জামায়াতের রুকন (সর্বোচ্চ পদ)
৩। আমি একসময় শিবির করতাম (সাথী ছিলাম), আমার ছোটভাই এখনও করে (সে বর্তমানে সাথী)
৪। আমার ছোট বোনকে অনেকটা জোর করেই ছাত্রী সংস্থা করানো হয়
সুতরাং ভোটকে কেন্দ্র করে মহিলা জামায়াত ও ছাত্রী সংস্থা গঠনের বিষয়টি আদৌ সত্য নয়।
কিন্তু এখানে একটা কিন্তু আছে। কিন্তুটা এরকম:
জামায়াত মানুষকে নিজেদের দলে টানার জন্য কিছু সাধারণ নীতি প্রয়োগ করে। এটা তারা সবসময়ই করে এসেছে। সেই ১৯৪১ সাল থেকেই। এই নীতিগুলো কট্টর ধর্মবাদী। জামায়াতের একটি বই আছে যার নাম:
- শরীয়তের দৃষ্টিতে ভোট
এই বইয়েই ভোট সম্পর্কে জামায়াতের নীতি লেখা আছে। নীতিটা এরকম:
জামায়াতের মূলনীতি হচ্ছে, আল্লাহ্র জমিনে আল্লাহ্র আইন ছাড়া আর কারও আইন চলবে না। আল্লাহ্র আইন মানে হচ্ছে কুরআন, হাদিস, ইজমা, কিয়াস। শরিয়তের এই চারটি উৎসের মাধ্যমেই রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবার পরিচালনা করতে হবে। এবং একটি ইসলামী সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শরীক হওয়া প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরয। এই ফরয কাজ অবশ্যই কোন সংগঠনে থেকে করতে হবে। কারণ কুরআনে আছে, যে সংগঠন থেকে দূরে সরে গেল সে আল্লাহ্র রজ্জু খুলে ফেলল বা আল্লাহ্র কাছ থেকে দূরে সরে গেল- এ ধরণের কিছু। এজন্য প্রত্যেককে কোন একটি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকারী সংগঠনে যোগ দিতে হবে (যে যেটাকে ঠিক মনে করে) নয়তো নিজে একটা আলাদা সংগঠন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সবশেষে তারা বলে, বাংলাদেশে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে জামায়াতই সবচেয়ে শুদ্ধ সংগঠন, সুতরাং এতে যোগ দেয়াই উচিত। জামায়াত মনে করে, মুহাম্মাদ যেভাবে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করেছেন প্রতিটি মুসলিমকেও সেভাবে করতে হবে, কিন্তু যুগের সাথে তাল মিলিয়ে প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আসতে পারে। জামায়াতের প্রক্রিয়া হচ্ছে নির্বাচন, তথা রাজনীতি। সুতরাং বুঝতেই পারছেন তাদের মতে, নির্বাচনে জামায়াতের সুবিধা হয় এমনভাবে ভোট দেয়া প্রত্যেক মুসলিমের জন্যই ফরয। যে মহাজোটে ভোট দেবে সে তার জাহান্নামে যাওয়ার রাস্তাই তৈরী করবে। এটা জামায়াত সবসময়ই বলে আসছে, আসলে এটাই তাদের মূলনীতি।
সুতরাং হিসাব মতে, তাদের নির্বাচনে অংশ নেয়ারই সুযোগ দেয়া আইনসিদ্ধ নয়। কারণ এ ধরণের নির্বাচনী প্রচারণা কোন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সিদ্ধ হতে পারে না। প্রকৃতপক্ষে কোন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ধর্মীয় রাজনৈতিক দলই সিদ্ধ হতে পারে না। তারপরও জিয়া নামের এক কথিত মহান রাজনীতিবিদ এই অকাট মূর্খের মত কাজটি করে গেছেন, ধর্মীয় রাজনৈতিকে বৈধতা দিয়ে গেছেন।
সুতরাং ধর্মীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ করা ছাড়া উপায় নেই। ধর্মীয় রাজনীতি মানেই তো নির্বাচনে ধর্মকে ব্যবহার করা। এখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপকের কথা আছে:
তিনি যা বলেছেন তার সারকথা হল, ধর্মীয় রাজনীতিই সিদ্ধ হতে পারে না। এখন দেশে ধর্মীয় রাজনীতিও রাখা হবে আবার সেই ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলো ধর্মীয় নির্বাচনী প্রচারণা করলে বাধও সাধা হবে সেটা যুক্তিযুক্ত নয়।
তাই এবার লীগ ক্ষমতায় গেলে তাদের কাছে আমার দাবী থাকবে:
বাংলাদেশে ধর্মীয় বা ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষিত হোক।
ধর্মীয় রাজনীতির খারাপ দিক আমাদের দেখা হয়ে গেছে।
তবে ধর্মীয় রাজনীতিকে অদূর ভবিষ্যতে নিষিদ্ধ করা সম্ভব না। তাই আমরা আপাতত কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারি। আমার প্রস্তাবগুলো এরকম:
- দেশের রাজনীতিবিরোধী ধর্মীয় নেতাদের দিয়ে সাধারণ মানুষকে বোঝাতে হবে যে, মুসলিম হলেই রাজনীতি করতে হবে বা ইসলামী আন্দোলন করতে হবে এমন কোন কথা নেই।
- আপাতত স্ববিরোধিতা করতেই হবে। অর্থাৎ ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলোকেও ধর্মীয় নির্বাচনী প্রচারণা করতে দেয়া যাবে না। গ্রামের মূর্খ লোকেরা যদি বুঝে, দাড়িপাল্লায় ভোট না দিলে বেহেশতে যাওয়া যাবে না তখন অবস্থাটা কি হবে একবার চিন্তা করুন। তাই এর আশু প্রতিকার প্রয়োজন।
- ধর্মের অহিংস ও রাজনীতিবিমুখ চরিত্রটা মানুষের সামনে তুলে ধরার ব্যবস্থা করতে হবে।
অনেক কিছু জানলাম। ধন্যবাদ মুহাম্মদ।
আচ্ছা, ময়মনসিংহে তোমার বাসা কোথায়? আমারটা আকুয়ায়, যেখানে র্যাবের সাথে জে এম বি - র এনকাউন্টার হয়েছিল তার কাছেই।
সাধারণ অশিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত মানুষ যখন "ভোট দিলে পাল্লায়, খুশি হবে আল্লায়" মার্কা কথা শুনে বিশ্বাস করে, তখন আমি মনে করি এটাই স্বাভাবিক। কারণ, বাংলাদেশের মানুষ সাধারণভাবে ধর্মভীরু। কিন্তু শিক্ষিত সমাজ যখন এই ধর্ম ব্যবসায় সামিল হয়, ঠিক মেলাতে পারি না। আই ইউ টি-তে শিবির আস্তানা গাড়ল কিভাবে? কেউ কিছু বলে না? অবস্থাটা কিরকম এখন? সময় পেলে জানিও।
আমার বাসা "জিলা স্কুলের পিছনে", গুলকিবাড়ির একটু আগে, গুলকিবাড়ির গলিতেই আমি থাকি।
আকুয়ায় প্রায়ই যাওয়া হত। সেখানে একসময় আমরা প্রাইভেট পড়তাম। আমাদের ব্যাচের নাইম (এফএইচ) এর বাসা আকুয়ায়। রাশেদ (আপনের হাউজের) ও একসময় আকুয়াতে থাকত, এখন মৈমনসিং ছেড়ে চলে গেছে।
আকুয়ার কোথায় আপনের বাসা? আমি মাদ্রাসা কোয়ার্টার প্রায়ই যাই, ওখানেই নাইমের বাসা, রাশেদও ওখানে থাকত।
আইইউটি-তে রাজনীতি না থাকায় শিবির আসল কিভাবে সেটা নিয়ে বিশাল কাহিনী আছে। রাজনীতি নাই, অথচ শিবির আছে, শুনলে আশ্চর্য লাগে। কিন্তু এখানে আসলে আশ্চর্যের কিছু নাই। কারণ, রাজনীতি ছাড়াও শিবিরের আরও কাজ আছে, কুরআন-হাদিস নিয়মিত পাঠ, ইসলামী বই পড়া, নিয়মিত ব্যক্তিগত রিপোর্ট রাখা এবং নেতাদেরকে সে রিপোর্ট দেখানো শিবিরের মেইন কাজ। এই কাজগুলো যেখানে রাজনীতি নেই সেখানেও করা যায়। বাংলাদেশে রাজনীতি নেই এমন অনেক প্রতিষ্ঠানেই শিবির আছে, যদিও অন্য কোন দল নেই। এর প্রধান কারণ, অন্য ছাত্র সংগঠনগুলোর কাজ রাজনীতিভিত্তিক, কিন্তু শিবিরের অনেক কাজের সাথেই রাজনীতির কোন সম্পর্ক নেই।
আইইউটি-র অবস্থা আমি মোটামুটি জানি, অ্যালার্মিং কিছু না। কারণ বুঝতেই পারছেন, আইইউটি-তে কখনও প্রকাশ্য রাজনীতির জন্ম হবে না, ঐ জিনিসটা পোলাপানের মধ্যে নাই। তাই শিবিরও কখনও প্রকাশিত হবে না। গোপনে বা অর্ধগোপনে যেটা হচ্ছে সেটা একান্তই কিছু ছাত্রের ব্যক্তিগত জীবনের ব্যাপার। আমার জানামতে আইইউটি-তে এসে কেউ শিবির হয় না, হলেও খুব কম। এই তিন বছরে বোধহয় আমাদের ব্যাচের সর্বোচ্চ ১ জন শিবির হয়েছে। যারা আগে থেকেই শিবির ছিল তারাই আইইউটি-তে আসার পর সংগঠিতভাবে তাদের পূর্বের কাজকর্মগুলো চালিয়ে যায়। সত্যি বলতে এতে বাধা দেবারও কিছু নেই। কারণ, তারা প্রকাশ্যে দাওয়াতও দিচ্ছে না, আইইউটি-র প্রথাবিরোধী কোন কাজও করছে না। যদি সেরকম কিছু করে তাহলে আমরা অবশ্যই বাধা দেব।
আর আমাদের একজন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কিছু পক্ষপাতিত্বমূলক লেখা লিখেছিল, সেটা নিয়ে আমাদের মধ্যে কথা হয়েছে। কিন্তু আমরা কাউকে ফোর্স করিনি। সে শিবিরের দৃষ্টিকোণ থেকে যেভাবে বলছে, আমরা সেটাকেই তথ্য দিয়ে ভুল প্রমাণ করেছি। সেরকম চলতেই থাকবে, সবসময়।
আর তৌফিক ভাই, আপনাদের সময় তো বোধহয় শিবির বলতে কিছু ছিল না। ব্যক্তিগতভাবে দুই একজন শিবির থাকতে পারে। ওটাতো সব ভার্সিটিতেই থাকে। আমাদের সময় নাহয় কয়েকজনকে একসাথে পাওয়া গেছে। বর্তমানে এখানে শিবির আপনাদের সময়ের চেয়ে বেশী। তবে এদের প্রায় সবাই আগে থেকেই শিবির ছিল, আইইউটি-তে এসে হয়নি।
নির্বাচন নিয়ে বেশ তথ্যবহুল ও কার্যকর একটা ওয়েবসাইট পেলাম। আমার ব্লগ এর উদ্যোগে এটি করা হয়েছে। আমার ব্লগেরই একটি সাবডোমেইনের মাধ্যমে। এখানে সাম্প্রতিক তথ্য পাবেন। লিংকটা দিলাম:
- বাংলাদেশ ২০০৮ নির্বাচন - সর্বশেষ খবরাখবর, নির্বাচনী তত্থ্য ও আলোচনা: একটি আমারব্লগ ও ই-বাংলাদেশ পরিবেশনা
মুহাম্মদ,
সাবাশ, বেটা!
তোমরা আছো বলেই এখনো স্বপ্ন দেখতে সাহস পাই...
"আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"
ওয়েলডান, মুহাম্মদ।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে ইশতেহার গুলিকে ফাকা বুলি মনে করি, ভোট কামানোর ধান্দা ছাড়া আর কিছু না। কারন সবাই বলে করব করব, প্রতিশ্রুতি আর প্রতিশ্রুতি, কিন্তু কিভাবে করব তা বলেনা কেউ। কারন তাদের প্রজ্ঞা সেই পর্যন্ত যায় নাই মনে হয়।
তবে দল গুলো ইশতেহার ঘটা করে দিচ্ছে এইটা ভালো দিক। আলোচনা হচ্ছে এইটা আরো ভালো দিক।
আমার ব্যাসিক প্ল্যান রাজাকার-দৃর্নিতীবাজ কিভাবে তাড়ানো যায় এইটা। কামের মধ্যে করি শুধু ব্লগিং, কিভাবে যে একটা চেতনা ছড়ানো যায়...। আজকে শুরু করলে সব ভোটারে কাছে পৌছতে কয়দিন লাগবে?
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
মুহাম্মদ, খুবই ভালো কাজ হয়েছে। :hatsoff: । পুরো নির্বাচনের সময় আশা করি তোমার নেতৃত্বে সিসিবি জমজমাট থাকবে। যদিও আমি জানিনা ভোটের সময় সিসিবিতে নিজে কতোটা সময় দিতে পারবো। কারণ তখন ভোটের ফল নিয়ে আমাদের রেডিও কমপক্ষে ৪৮ ঘণ্টা থেকে ৭২ ঘণ্টা লাইভ থাকবে। সেই প্রস্তুতি নিয়ে এখন কিছুটা ব্যস্ত। তবে মাঝে-মধ্যে তোমার লেখা, মন্তব্য আর বিশ্লেষণ পড়ে যাব।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"