পাপন চাচ্চু, হোয়াট দা …… ????

“পাড়ায় আজ যাত্রা হইবার কথা ছিল। দেখিবার বড় সাধ ছিল। কিন্তু সে আশা এখানেই মিটিল। আমি যাত্রার ছেলে আর উকিল বাবু অধিকারী। তিনি যাহা বলাইবেন , তাহাই বলিব। যাহা না বলাইবেন, তাহা বলিতে পারিব না।”

‘কমলাকান্তের জবানবন্দি’ তে বঙ্কিমচন্দ্র যা বলেছিলেন, আজ অবাক হয়ে আমাদের ক্রিকেট দুনিয়ায় দেখতে পাচ্ছি। ভারত মহাদয় হলেন অধিকারী, আর আমাদের পাপন বাবু হলেন যাত্রার ছেলে। নাহ! বেশি সম্মান করা হয়ে যাচ্ছে। তিনি হলেন চামচা। হ্যাঁ, ক্রিকেট না বোঝা এক রাজনীতিবিদ চামচা।

আচ্ছা, গালিগালাজ পরে আরও হবে। তার আগে চলুন একটু ইতিহাস দেখে আসি। ক্রিকেটের ইতিহাস, আর ওই জমিদারের বাচ্চা ভারতের ক্রিকেট ইতিহাস।

১৮৭৭ সালে টেস্ট ক্রিকেটের মাধ্যমে বিশ্বে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট এর সূচনা যার আদিপিতা ছিলেন বৃদ্ধাশ্রমের চির স্থায়ী বাসিন্দা মাজাভাঙ্গা জমিদারপুত্র ইংল্যান্ড আর আমাদের প্রতিভাধর নিশ্চিন্ত নির্ভেজাল অস্ট্রেলিয়া। হুম, চলছিল ভালই। ব্যাট আর বলের কি দারুন এক খেলা। রুপকথার মত সুন্দর সেই মজা :p

কিন্তু, এর পরই হল ভিলেন এর আগমন ।

১৯৩২ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পেল ভারত। কত পরে জানেন ? পাঁচ পাঁচটা দলের পরে। অর্থাৎ, ষষ্ঠ দেশ হিসেবে (ইশ!! শালারা সিনিয়রদের সম্মানও দিতে জানে না )… যাক সে কথা। উইকিপিডিয়ায় পড়তে গিয়ে হাসিই পেল বটে। তারা নাকি প্রথম টেস্ট জয় পেল টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার ২০ বছর পরে ১৯৫২ সালে। প্রথম ৫০ বছরে তারা ১৯৬ টেস্ট খেলে জিতল মাত্র ৩৫ টা। ৫০ বছর!!!!! ওরে বাবা, আমাদের সবচেয়ে সিনিয়র টাইগার রাজ্জাকের বাবারও মনে হয় ৫০ বছর হবে কিনা কে জানে! এর মধ্যে তারা কাদের সাথে জিতল জানেন ?? সদ্য সদ্য টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া সব দল … পাকিস্তান, শ্রীলংকা, জিম্বাবুয়ে… না, আমি বলছি না যে তারা ইংল্যান্ড, অস্ত্রেলিয়াকে হারায় নি।

ওদের সাত জন্মের ভাগ্য যে শচীন, গাভাস্কারের মত কিছু খেলোয়াড় পেয়েছিল। তাও প্রায় ৫০ বছর পর। এই লাইন টুকু একটু মনে রাখতে হবে সবাইকে। পরে কথা আছে এইটা নিয়ে।

এবার আসি আমাদের বিড়ালের দ্বারা পালিত টাইগারদের কথায়। ১৯৯৭ তে ICC পূর্ণ সদস্য হওয়ার চার বছরের মাথায় টেস্ট স্ট্যাটাস দিয়ে দেওয়া হল ২০০০ সালে। কেন? আমার প্রশ্ন সারা বিশ্বের কাছে। কেন সেদিন আমাদের স্ট্যাটাস দেওয়া হয়েছিল ? আমরা তো কিছু পারতাম না। কেন সেদিন তাহলে ভারত আমাদের স্ট্যাটাস দেওয়ার জন্য পূর্ণ সাপোর্ট দিয়েছিল? তাহলে কি ধরে দেব যে, আমাদের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে, আমাদের সাপোর্ট আদায় করে, আমাদের ঘাড়ে পা দিয়ে মাটিতে পুতে নিজেরা আকাশে ওঠার জন্যই সেদিন ভারত আমাদের টেস্ট দুনিয়ায় আনতে চেয়েছিল ???

কিন্তু ভারত বোধ হয় ভাবতেও পারে নি, এই বাংলাদেশ মাত্র পাঁচ বছরেরও কম সময়ে তুলে নেবে তাদের প্রথম টেস্ট জয়, তারা মনে হয় কল্পনাও করে নি এই বাংলাদেশের কাছে জুতো খেয়ে একদিন (২০০৭) বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়তে হবে, এই বাংলাদেশই একদিন তাদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে এশিয়া কাপ (২০১২) থেকে ছিটকে ফেলে দিবে। তার চেয়ে বড় কথা শুধু এইটুকু ভেবেই নাকি তাদের মাথা ঘুরে পড়ার উপক্রম হয়েছিল মনে হয় যে, মাত্র ১০ বছরের মধ্যে সাকিব, তামিম, নাসির, মুশফিক,মাশরাফি, গাজীর মত কিছু এটম বোমা পেয়ে গেছে বাংলাদেশ। সেটার বিপক্ষেও কম পরিশ্রম করে নাই তারা। মাশরাফি, সাকিব, তামিম কে IPL এ ডেকে নিয়ে অপমান করার চেষ্টা করেছে না খেলিয়ে। পারে নি বেধে রাখতে। যে স্বল্প সুযোগ পেয়েছে, তাতেই সাকিব জাত চিনিয়ে এসেছে। আর এবার বাঘের বাচ্চা, বাঘ-সম্রাট মুশফিক যখন IPL এর মুখে জুতো ছুড়ে মেরে প্রত্যাখ্যান করেছে IPL কে, মনে হয় তার পর থেকে এখনো হজমলা খেয়ে যাচ্ছে ভারতবাসীরা। তার উপর সাকিব আল হাসান বিশ্বের এক নাম্বার অল-রাউন্দার হওয়ার পর থেকে যে কত কষ্ট করেছে। আমার সবচেয়ে হাসি পেল যখন শুনলাম মহামান্য শুওরমুখী আশ্বিনকে ১ নাম্বার টেস্ট অল-রাউন্দার বানাইল।

আচ্ছা, অনেক ফাউ বকেছি। এবার কাজের কথায় আসি।

ভারত কে সম্মানজনক ক্রিকেট খেলতে লেগেছিল ৫০ বছর। আর ১ নাম্বারে উঠতে প্রায় ৮০ বছর লেগেছে। আমার প্রশ্ন হল, কে জানে যে আগামী ৮০ বছর পরে বাংলাদেশ ১ নাম্বারে আর ভারত ১০ নাম্বারে থাকবে না? অবশ্য আমাদের পাপন চাচ্চু জানেন, যে আগামী কত বছর যেন; ৮ না কত বছরেও নাকি বাংলাদেশ ৮ নাম্বারেই উঠতে পারবে না।

আচ্ছা, থাক। একটু বেশিই হয়ে গেল বাংলাদেশ কে ১ নাম্বারে বলা। পাকিস্তান, শ্রীলংকা কিংবা ওয়েস্ট ইন্ডিজ কি পারে না? অন্তত ইন্ডিয়ার তো পতন হতেই পারে।

আর যে ৫৬ বছর পরে ভারত শচীন কে পেয়েছিল, কে জানে আজ হতে ৫৬ বছর পরে বাংলাদেশ বা জিম্বাবুয়ে থেকে শচীন এর দাদা বা পরদাদা পুনর্জন্ম নিবে না!

আজ ভারত একটা ভালো অবস্থানে আছে বলে যেটা করার চেষ্টা করছে, ঠিক সেই কাজটা যদি আজ থেকে ৬২ বছর আগে অস্ট্রেলিয়া ওদের সাথে করত, যখন ২০ বছর ধরে কোন ম্যাচ জিততে পারে নি ভারত? অস্ট্রেলিয়া করে নি, কারন তখন সাদা চামড়ায় মোড়া ওই মাথামোটাগুলোর মাথায় এই কুবুদ্ধি কেউ দিয়ে দেয় নি। এখন দিচ্ছে। আর তাইতো সাদা চামড়ার দুই জমিদার ভারতের কুচক্রের সাথে মিলে ক্রিকেট বিশ্বে একক রাজত্ব করতে চাইছে। আর যার ফলে বলির পাঠা হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ের মত মেরুদণ্ডহীনরা।

ভারত এমন করল, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড তাতে সাই দিল। এবং কোন এক অজানা কারনে নিউজিল্যান্ডও সাই দিল।

আমার রাগ হয়েছিল।

কিন্তু এই রাগের পাশাপাশি দুঃখ এবং হতাশা এসে মিশে ভিতরটাকে তছনচ করে দিচ্ছিল আমাদের BCB অধিপতির মন্তব্যে।

যেখানে পাকিস্তান, শ্রীলংকার রিস্ক কম থাকা সত্যেও তারা এর বিরোধিতা করছে। সেখানে আমরা???

কতদিন আর ভারতের পা চাটবেন পাপন চাচ্চু?

সিলেটের ভেন্যু নিয়ে কনফিউশন? খুলনা, বগুড়া বাদ দিয়ে তিনি ভারতের নাম আনেন।

এশিয়া কাপ নিয়ে সংশয়? আলোচনায় তিনি ভারতের নাম আনেন।

কি দিয়েছে ভারত তাকে?

কই? একটা সিরিজ খেলতে কি আনতে পেরেছেন তাদের?

নাকি পেরেছেন ভারতের মাটিতে একটা ম্যাচ খেলাতে।

তিনি ভারত, অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ড এর এই ষড়যন্ত্রে সাই দেবার আগে কি একবারও ভেবে দেখেছেন…??

আর কোনদিন বাঙ্গালিরা সাকিবের বিশ্বসেরা টেস্ট অল-রাউন্দার হওয়ার খবরের আনন্দে মাতোয়ারা হবে না।

আর কখনো lord’s এ সেঞ্চুরী করে অনার্স বোর্ডের দিকে নিজের পিঠ দেখিয়ে তামিম ইকবাল বলবে না, “আমার নাম লিখে রাখ। আমি বাংলাদেশি। আমিও পারি।“

আর কোনদিন মুশফিকের ব্যাট থেকে ২০০ রানের ঝলকানি উঠবে না। দেখব না আর ব্লেজার গায়ে টস করতে যাচ্ছে আমাদের ছোট্ট মুশি।

দেখব না আর সোহাগ গাজীর ১২৬ বছরের ইতিহাস তৈরির নজির। একি ম্যাচে সেঞ্চুরী আর হ্যাট্রিক করে সারা বিশ্বকে চমকে দিয়ে বলবে না, ‘ইতিহাস গড়া এই আমি বাংলাদেশি। হ্যাঁ, বাংলাদেশি।‘

********************************

মাননীয় BCB সভাপতি, জনাব, নাজমুল হাসান পাপন।

আমরা এদেশের মানুষ মমিনুলের ব্যাটে ঝড় দেখতে চাই। আমরা সাকিবের ঘূর্ণিযাদু দেখে মুগ্ধ হতে চাই।

আমরা ১০ নাম্বারে থাকি কি ১০০ নাম্বারে থাকি, সেটা দয়া করে আপনাকে দেখতে হবে না। আমাদের রাজ্জাক মাঝপিচে বল ফেলে ছয় খাবে, আমরাই গালি দিব। আবার উইকেট পেলে আমরাই আনন্দের জোয়ারে ভাসব। আপনাকে সেটা ভাবতে হবে না। আমরা শুধু দেখতে চাই, আজীবন সাদা জার্সি গায়ে ১১টি বাঘ মাঠে নামছে। আর তা দেখেই পেতে চাই অসহ্য সুখ।

 

আমি আজও বাংলাদেশের খেলা কবে ১মাস আগে থেকে সেই হিসাব করে আনন্দে নাচি। আর আমার এই আনন্দকে মাটি করতে নিশ্চয়ই আপনাকে সুযোগ দেওয়া হবে না।

********************************

আমি জানি, বাংলাদেশের তরুন, বৃদ্ধ, শিশু ক্রিকেট প্রেমীরা এই সিদ্ধান্ত কোনদিনই মেনে নেবে না।

হে বাঙালি, কোথায় তোমার গণ-জাগরণ মঞ্চ? রাজনীতি নামক অদৃষ্টের পিছনে ছুটে কত আন্দোলনই না করেছি আমরা। অথচ আমাদের প্রান-সঞ্জীবনীর উৎস, আমাদের ক্রিকেট এর জন্য কি আমাদের কিছুই করার নাই?

আমরা বাংলাদেশে বসে আন্দোলন করব। ক্রিকেট বিশ্বের বাকি ৫টি দেশের মত আমরাও আমাদের ক্রিকেটকে বাঁচানোর লড়াইতে নামব। আদায় করব আমাদের উল্লাস করার অধিকার।

জাগো, বাঙালি জাগো।

তার আগে সবার জন্য একটা কাজ আবশ্যক। ESPN এই প্রপোজাল এর জন্য ভোট এর আয়োজন করেছে। সবাই এই লিংকে গিয়ে ‘Not good for cricket’ এ একটা ভোট দিয়ে দিবেন। প্লিজ…।

http://phone.espncricinfo.com/ci/content/poll/feature/container.html

১,০৩৪ বার দেখা হয়েছে

৮ টি মন্তব্য : “পাপন চাচ্চু, হোয়াট দা …… ????”

  1. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    সভা শুরু হওয়ার কথা বেলা ১১টায়। কিন্তু যাঁর সভাপতিত্বে সভা হবে, সেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান বিসিবি কার্যালয়ে এলেন নির্ধারিত সময়ের পৌনে তিন ঘণ্টা পর। সভায় কী হবে, সেটা অনুমান করতে পারছিলেন বলেই কি তাঁর এমন বিলম্বিত আগমন!
    তবে সভা শেষে সভার সিদ্ধান্ত গোপনই রাখতে চাইলেন বোর্ড সভাপতি। আইসিসিতে তোলা ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার ‘জমিদারি’র প্রস্তাবটির ব্যাপারে বিসিবির অবস্থান পরিষ্কার না করে সংবাদ সম্মেলনে বললেন, ‘যেহেতু বিষয়টা জটিল এবং এ-সংক্রান্ত অনেক প্রশ্নের উত্তরই আমাদের জানা দরকার, সে জন্য আমাদের যে মনোভাবই থাক না কেন, সেটা এখন প্রকাশ করতে চাচ্ছি না। এ ব্যাপারে অন্য দেশগুলোর অবস্থান জেনে আমরা আমাদের মতামত দেব।’ ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি দুবাইয়ে আইসিসির সভা বসবে। সে সভায় ‘ঝোপ বুঝে কোপ মারা’র নীতি নিয়েছে বিসিবি—এমনটাই বোঝাতে চাইলেন নাজমুল হাসান।
    সভাপতি চেপে যেতে চাইলেও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বিতর্কিত প্রস্তাবের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার বিস্ময়কর সিদ্ধান্তই হয়েছে কালকের বোর্ড সভায়। সভাপতিসহ উপস্থিত ২৩ পরিচালকের মধ্যে ২০ জনই এর পক্ষে মত দিয়েছেন। প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার দাবি ছিল শুধু আহমেদ সাজ্জাদুল আলম এবং নবীন দুই পরিচালক শওকত আজিজ ও তানজিল চৌধুরীর। সাজ্জাদুল আলম তো প্রতিবাদে ওয়াকআউটই করেছেন সভা থেকে। বোর্ড রুম থেকে বের হয়ে আসার আগে তিনি নাকি এমনও বলেছেন, বিসিবির চিন্তাভাবনায় সর্বাগ্রে থাকা উচিত ক্রিকেটের স্বার্থ। কিন্তু এই সভায় যা হচ্ছে, তাতে বাংলাদেশের ক্রিকেটের মৃত্যুদণ্ডের রায়ই লেখা হয়ে যাচ্ছে।
    এর আগে যেসব পরিচালক সভায় প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নেবেন বলে উচ্চকণ্ঠ ছিলেন, কাল তাঁরাও ডিগবাজি খেয়েছেন। আরও বিস্ময়কর, বর্তমান বোর্ডে পরিচালক হিসেবে থাকা জাতীয় দলের তিন সাবেক অধিনায়কও টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে ওঠার প্রস্তাবের বিপক্ষে দাঁড়াননি।
    সভার শুরুতে তিন ‘জমিদার’-এর প্রস্তাবটি পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে তুলে ধরা হলেও ২১ পৃষ্ঠার প্রস্তাবনার কপি সরবরাহ করা হয়নি পরিচালকদের। বিসিবি পরিচালক মাহবুবুল আনাম ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী ব্যাখ্যা করেছেন প্রস্তাব মেনে নেওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা। পরিচালকেরা সেটুকু দেখেই মতামত জানিয়েছেন এবং তাতে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত হয়েছে ‘হ্যাঁ’র পক্ষ। প্রস্তাবের পক্ষে অবস্থান নেওয়াদের যুক্তিগুলোও অদ্ভুত। তাঁদের বক্তব্য যে কাউকে ধন্দে ফেলে দেবে—ক্রিকেট বোর্ড ক্রিকেট খেলারই সংস্থা, নাকি টাকা কামানোর! প্রস্তাবটি মেনে নিলে বিসিবি আর্থিকভাবে লাভবান হবে, এটাই মূল যুক্তি তাঁদের। সর্বশেষ অর্থবছরে আইসিসি যেখানে ১.৫ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে, নতুন প্রস্তাব অনুমোদন হলে নাকি ভবিষ্যতে সেটি ৩.৫ বিলিয়নও ছাড়িয়ে যেতে পারে। তখন ভাগে বিসিবিও এখনকার চেয়ে বেশি টাকা পাবে। এ ছাড়া ভারতসহ ক্রিকেটের বড় তিন দেশের বিপক্ষে যাওয়ার ঝুঁকিটাকেও বড় করে দেখেছেন তাঁরা। পরিচালকদের শঙ্কা, বিসিবি এর বিপক্ষে অবস্থান নিলে ‘বড় ভাই’দের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটবে। তখন অন্যরাও ‘বড়’দের রোষানলে পড়ার ভয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে খেলা এড়িয়ে যাবে।
    বিসিবির অবস্থান না জানালেও প্রস্তাবের ব্যাপারে নাজমুল হাসানের মনোভাব বুঝতে অসুবিধা হয়নি। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে নানাভাবে এর পক্ষে থাকার যৌক্তিকতাই যেন তুলে ধরতে চাইলেন তিনি। একবার বললেন, ‘টেস্টে আমাদের রেটিং পয়েন্ট ১৮। আগামী ১০ বছর টেস্ট খেললেও হয়তো আমাদের ৮ নম্বরে ওঠা হবে না। কিন্তু এই পদ্ধতিতে ৮ নম্বরকে হারাতে পারলেই আমরা ৮-এ উঠে যাব। এখন তো নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েও লাভ হচ্ছে না।’ পরে আবার বলেছেন, ‘সার্বিকভাবে এই প্রস্তাব গ্রহণ করার পক্ষে কোনো যুক্তি নেই। এটা খারাপ মানছি। কিন্তু ভালোটা কোথায় হচ্ছে? র্যাঙ্কিংয়ের বর্তমান অবস্থান থেকে বের হওয়ারও তো কোনো সুযোগ পাচ্ছি না!’ নাজমুল হাসান অবশ্য এ-ও স্বীকার করেছেন, ‘এটা হয়ে গেলে আইসিসির ক্ষমতা বলে কিছু থাকছে না। ওরা বলছে, এখন আইসিসি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে, তখন সদস্যদেশগুলো তা করবে।’
    আইসিসির আগামী সভায় বিসিবির সম্ভাব্য অবস্থান সম্পর্কেও সরাসরি কিছু বলেননি বিসিবি সভাপতি, ‘আমরা ঝুঁকি নিতে পারব না। যদি দেখি আমরা হ্যাঁ বললে যা, না বললেও তা, তখন একরকম সিদ্ধান্ত নেব। আবার যদি দেখি, আমাদের অবজেকশনের ওপর প্রস্তাবের পাস-ফেল নির্ভর করবে তখন আরেক রকম।’ লিঙ্ক


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।