আমি ছোটবেলা থেকে হুমায়ুন এবং জাফর বাদে হাতেগোনা কিছু বই পড়েছি । হুমায়ুনের বই অনেকের মতে ফাস্ট ফুড বা কোমল পানীয়ের মতো । তৃপ্তি আছে, তবে স্বাস্থ্যকর নয় । ব্যক্তিগতভাবে আমি কখনই সেই দলে ছিলাম না । আমি এখনও তার বইয়ের প্রতি প্রচন্ড আসক্তি অনুভব করি ।
বইটি প্রকাশিত হয়েছে হুমায়ুনের মৃত্যুর প্রায় সাত মাস পর । ভূমিকা লিখেছেন আনিসুজ্জামান । প্রকাশিত হওয়ার আগেই বইটি নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছিল । বিষয়টা আদালত পর্যন্ত গড়ানোর পর হাইকোর্টের পরামর্শ অনুযায়ী প্রথম প্রকাশিত রূপের পরিবর্তন সাধন হয়েছে । ‘দেয়াল’ সেই পরিবর্তিত রুপ । এটি যে বিতর্কের বাইরে যাবে না তা আগেই আনিসুজ্জামান স্বীকার করেছেন । এমনকি তথ্যগত ত্রুটি আর এক লাফে ছ বছর পেরিয়ে উপসংহারের কথাও আমি বইটি পড়ার আগেই জেনেছি ।
আমার ব্যক্তিগত মতামতের আগে হুমায়ুনের একটা লাইন না লিখে পারছি না ।
স্মৃতির উপর বিশ্বাস করতে নেই । স্মৃতি হচ্ছে প্রতারক । নানানভাবে সে মানুষকে প্রতারনা করে ।
স্মৃতির বাইরে বইটিতে যা লিখা হয়েছে আমার কাছে মোটামুটিভাবে তা বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়েছে । একটা দূর্বল সিগন্যাল দূরে পাঠাতে carrier wave ব্যবহার করা হয় । বইটির শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত পাঠককে নিতে লেখক carrier wave ব্যবহার করেছেন । আর সেটা হচ্ছে অবন্তি নামক চরিত্র । মেয়েটির রুপ এবং ব্যক্তিত্ব এমনভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, যে কেউ তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হবে । অবন্তীকে উপন্যাসের নায়িকা বলতে পারেন । ছোটবেলা যে কোনো ছিনেমা/নাটক দেখলে কিংবা বই পরলেই প্রথমে তার নায়ক/নায়িকা খুঁজে বের করতাম । গল্প উপন্যাসে একে বলে কেন্দ্রীয়/প্রধান চরিত্র । (মনে করি, বইটি একটা উপন্যাস । তা না হলে এই বইয়ে উল্লেখিত শেখ মুজিব, জিয়া, খালেদ মোশাররফের মত বলিষ্ঠ চরিত্র থেকে কাউকে প্রধান চরিত্র হিসেবে বেছে নিতে হতো ।) অবন্তির কি হলো তা জানার ইচ্ছাতেই বইটা শেষ হয়ে গেছে । আর বাকি যা কিছুই আছে সবই দূর্বল সিগন্যালের মতই ।
ইতিহাস আর উপন্যাস এক নয়, তা আমি জানি । আমার এও জানা আছে, উপন্যাসে ইতিহাস খুঁজতে হয় না । জীবনের শেষ সময়ে এসে লেখক হয়ত সুনীলের ‘সেই সময়’ কিংবা ‘পূর্ব-পশ্চিম’ টাইপ কিছু একটা সৃষ্টির প্রচেষ্ঠা করেছেন । কিছু একটা তো হয়েছে, কেমন হয়েছে সেটা ব্যক্তি বিশেষে ভিন্নতর অভিমত থাকতে পারে । যারা খিচুরি পছন্দ করেন তাদের জন্যও খুব উপাদেয় হবে বলে মনে হচ্ছে না । কারন এটা হয়েছে জগাখিচুরি । একটা উদাহরণ দিচ্ছি
সেনা অভ্যুত্থান ঘটানো এবং জিয়া হত্যার পেছনে প্রলয়ংকারী স্ত্রী বুদ্ধি কাজ করে থাকতে পারে ।
এটা বইয়ের শেষ লাইন । এই লাইনটি পড়লেই মনে হয় উপন্যাসটি ঐতিহাসিক । সাজানো গল্পের সাথে ইতিহাসের মিশ্রনটির মধ্যে কি জানি একটা গরমিল আছে । মনে হচ্ছে লেখক খিচুড়ীর মধ্যে মাছ ঢেলে দিয়েছেন। তবে এর মধ্যেও কিছু গোশত আছে । গোশতগুলির কিছু নমুনা ভূমিকাতেও দেয়া আছে । এই গোশতগুলি এপিগ্রাম নামে পরিচিত । বানী চিরন্তনীতে অতি শীঘ্রই এগুলো দেখা যেতে পারেঃ
- মানুষ আর পশু শুধু যে বন্ধু খোঁজে তা না, তারা প্রভুও খোঁজে ।
- এই পৃথিবীতে মূল্যবান শুধু মানুষের জীবন, আর সবই মূল্যহীন ।
- কিছু বিদ্যা মানুষের ভেতর থাকে, সে নিজেও তা জানে না ।
- যে লাঠি দিয়ে অন্ধ মানুষ পথ চলে, সেই লাঠি দিয়ে মানুষও খুন করা যায় ।
- মানবজাতির স্বভাব হচ্ছে সে সত্যের চেয়ে মিথ্যার আশ্রয়ে নিজেকে নিরাপদ মনে করে ।
- মূর্খদের সঙ্গে কখনো তর্ক করতে যাবে না । কারণ হলো মূর্খরা তোমাকে তাদের পর্যায়ে নামিয়ে নিয়ে এসে তর্কে হারিয়ে দিবে ।
পুরো উপন্যাস জুড়ে খালেদ মোশাররফ এবং কর্নেল তাহেরের প্রতি লেখকের শ্রদ্ধা প্রকাশ পেয়েছে । জিয়ার আর্থিক সততা এবং জনগনের শ্রদ্ধা অর্জনের সামর্থ্যের পাশাপাশি তাঁর ক্ষমতালোভের কথাও বলা হয়েছে । কৌশলগতভাবে মুজিবের শাসনামল স্কিপ করা হয়েছে ।
আমি মুগ্ধ হয়েছি একটা গোষ্ঠীকে চমৎকার ভাবে ছোট করার কৌশল দেখে । দুটো উদাহরণ না দিয়ে পারছি না ।
- ‘বলা হয়ে থাকে, সৈনিকের বুদ্ধি থাকে হাঁটুতে । এটা ঠিক না । তাদের বুদ্ধি থাকে বুটজুতায় । ’
- ‘ও আচ্ছা, তুমি আবার অতিরিক্ত জ্ঞানী । মেজরদের মতো ইন্টারমিডিয়েট পাশ না ।’
বইটির প্রচ্ছদ করেছেন মাছুম রহমান । জমাট রক্ত দিয়ে দেয়ালটি রাঙানো হয়েছে । অন্যপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত বইটির মূল্য লেখা আছে ৩৮০ টাকা / ১৯ মার্কিন ডলার । (মার্কিন ডলারে এতো পার্থক্যের কারন জানা নাই)
আমি হুমায়ুনকে উপন্যাসের ত্রুটির জন্য দোষ দিতে পারছি না । উনি বইটি কাঊকে উৎসর্গও করে যেতে পারেন নি । হয়ত উনার বানানো দেয়ালের রঙ লাল ছিলো না । প্লাস্টার করার আগে এর কিছু ইট বদলানো হয়েছে তা তো আগেই বলেছি । উপন্যাসের কিছু ঐতিহাসিক চরিত্রের সাথে লেখকের পারিবারিক সম্পর্ক ছিল । এই ব্যাপারটি উপন্যাসের চরিত্র ও ঘটনার উপস্থাপনে তাকে প্রভাবিত করেছে । উপন্যাসটিতে একটি গ্রন্থের কথা কয়েকবার বলা হয়েছে । গ্রন্থটি সম্পূর্ণ ঐতিহাসিক । যে কেউ ‘দেয়াল’ পড়ার আগে বইটি পড়তে পারেন । ইংরেজীতে পড়লে সত্যিকারের স্বাদ পাওয়া যাবে, তবে অনুবাদটিও খারাপ হয় নি।
Bangladesh: A Legacy Of Blood by Anthony Mascarenhas
অনুবাদঃ বাংলাদেশঃ রক্তের ঋণ, অ্যান্থনি মাস্কারেনহাস; হাক্কানী পাবলিশার্স ।
প্রথম
... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!
ভাই এই লেখাটি মনে হয় ফেসবুকে পড়েছি কয়েকদিন আগে। আপনিই লিখেছিলেন নাকি???
দেয়াল পড়েছি বইমেলায় বের হবার সাথে সাথেই। অনেক কিছু আবছা ও ঝাপসা করে রেখেছেন লেখক। আবার কিছু কিছু অজানা তথ্যও পাওয়া গেছে। তবে সমাপ্তিটা খুব হঠাৎ করে হয়ে গেছে। আমার কাছে বইটা অসম্পূর্ণ মনে হয়েছে।
... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!
:thumbup:
The Bond Cadet
:boss: :boss: :boss:
অবন্তি'র প্রেমে আমিও পড়েছিলাম। চরিত্রের সাথে মিলিয়ে নানা ঐতিহাসিক চরিত্রের উপস্থিতি ভাল লাগছে। তবে তথ্যের বিভ্রান্তিটা মনে হয় "ঐতিহাসিক উপন্যাস" এর সংজ্ঞাকে ফুলফিল করে না। যেমন মেজর ফারুকের কথা বলেছেন যুদ্ধের সময় দুই দিন পানি না খেয়ে ছিলেন। তবে যতদূর জানি যে যুদ্ধের সময় ফারুক ডেপুটেশনে আবুধাবীতে ছিল। সম্ভবত ডিসেম্বরের ১২ তারিখ কলকাতায় রিপোর্ট করে।
ফারুক বৃষ্টিপ্রেমী, গরমের মধ্যে ঠান্ডা পানি পান না করা এসব দিয়ে উনি ফারুকের প্রতি মানুষের সহানূভুতি টানতে চেয়েছেন কিনা সেটাও ভেবে দেখার মত। পাকিস্তানী ক্যাপ্টেনের পানি পান করা নিয়ে অংশটুকুতে আমার নিজেরও মায়া লেগেছিল সেই ক্যাপ্টেনের প্রতি। এভাবে লিখে উনি কি কোন মেসেজ দিতে চেয়েছেন কিনা সেটা ভেবে দেখা যেতে পারে।
এই লাইন দ্বারা কি উনি শেখ হাসিনাকে বুঝিয়েছেন কিনা সেটাও বুঝতে পারি না।
সাধারণ উপন্যাস হিসেবে হুমায়ুন আহমেদের অন্য লেখার মতই অনুভূতি। তবে এটাকে ঐতিহাসিক উপন্যাস বলতে রাজি না।
হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি
দিবস লেখক কিন্তু এখানে একবার ও বলেন নাই যে উনি অবন্তির প্রেমে পরেছিলেন... সো শুধু শুধু বাকওয়াজ করিস না ( তুই পরসিলি সেইটা অবশ্য ঠিক ই বলছিস...তুই তো পরতেই পারিস...তাই না।।) :)) :)) :))
আমার শুধু মনে হয় ড্যান ব্রাউনের মতো বাংলাদেশে কোন লেখক থাকলে সত্তরের দশক নিয়ে একটা দারুণ থ্রিলার লিখতে পারতেন।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
অন্তত একজন মাইকেল ক্রাইটন হলেও চলতো।
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
:thumbup:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
রাতের অন্ধকারে পোস্ট দিয়া যায় আর প্রথম হইতে পারি না! তাও ভাল আগেই পড়সি এই লেখাটা! 😕
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
এই লিঙ্কটা দিলাম। পরে দেখো
ক্লিক করুন।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
প্রশ্ন : বাংলাদেশের বর্তমান সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে আপনি কোন্ দৃষ্টিতে দেখেন ?
লেখকের উত্তর :আমি তাদের খুব ভাল দৃষ্টিতে দেখি। তারা খুব ভাল কাজ করছে।
প্রশ্ন : বাংলাদেশে জামায়াতের মৌলবাদী রাজনীতি বন্ধ করা উচিত। আপনি কী বলেন ?
লেখকের উত্তর : আমি কোন রাজনীতি বন্ধ করার পক্ষপাতী নই। সারভাইভ্যাল ফর দ্য ফিটেস্ট। যে ফিটেস্ট সে সারভাইভ করবে। যে আনফিট সে সারভাইভ করবে না।
বলা বাহুল্য লেখক হচ্ছেন হুমায়ুন আহমেদ
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
কোপের কথাই তো বললেন না রাজীব ভাই
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
:awesome:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
প্রফেসর আনিসুজ্জামানের বয়স হইছে। উনার উচিত হয় নাই এই জিনিসের ভুমিকা লেখা।
বিশেষ কইরা যেই বইতে আন্ধা পীর টাইপ ফাইজলামি দিয়া ভরা।
বাঙলাদেশের ইতিহাস কারো ফুটবল খেলার জিনিস না।
যে যেইটা ভালো পারে তার সেটাই করা উচিত।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
হুমায়ূন আহমেদের কাছ থেকে ইতিহাস শেখার কোন আগ্রহ নেই, তাই বইটা পড়া হয়নি।
Bangladesh: A Legacy Of Blood by Anthony Mascarenhas পড়ে যেকোন থ্রিলার পড়ার মতই উপভোগ করেছি, যদিও মাস্কারেনাস এর উপর কিছুটা পক্ষপাত দুষ্টতার অভিযোগ আছে।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
ফারুক নিজে পরে মাসের লেখা র অনেক কিছু আরোপিত বলছে।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
এবার অনেকদিন পর হুমায়ূন আহমেদের বই পড়লাম। ১৯৯৮ সাল মানে বিদেশ আসার পর থেকে হুমায়ূন পাঠ বন্ধ ছিল। মধ্যে দিয়ে দু'একটা বই পড়ে মনে হয়েছিল যে হুমায়ূন আহমেদ আসলেই লেখায় অমনোযোগী হয়ে গিয়েছিলেন। যাই হোক 'দেয়াল' আর 'মাতাল হাওয়া' পড়ে মনে হয়েছে উনি মাত্র শুরু করেছিলেন উনার ফর্ম ভাংগতে। আগে চাইতেন সবার মন যুগিয়ে কথা বলার। উচিত কথা যদি বলতেই হয় একটা পাগল টাইপের চরিত্র রাখতেন - তার মুখ থেকে কথা বলাতেন। পাঠক পাগলের প্রলাপ মনে করে তা অতো গুরুত্ব দিত না। সালমান রুশদীর 'স্যাটানিক ভার্সেস' নিয়ে হই-চই। যারা হই-চই করছে তারা সব মোল্লা টাইপের লোক এবং সে বইটা না পড়েই সব মিছিল বের করছে। একই ঘটনা ঘটল 'দেয়াল' নিয়ে। এবার দেখলাম এন্টি-মোল্লাদের হল্লা-কল্লা। তা যে যেই ফতুয়াই পড়ুক না কেন - স্বভাব আর কাজ-কারবার তো একই রকমের।
আমি মনে করি যে কোন অবস্থাতেই একজন লেখকের লেখার স্বাধীনতা থাকতে হবে। হুমায়ূন আহমেদকে আমি যতই নিচে নামাতে চাই না কেন - এটা তো অস্বীকার করার উপায় নেই যে উনার বই এদেশের কোটি কোটি মানুষ পড়েন। যে এখন খুব বেশি এন্টি-হুমায়ূন আহমেদ, সে যদি আসলেই মনে করে থাকেন যে হুমায়ূন আহমেদের থেকে সে বেশি বোঝে - তার কথা শুনলে সমাজের উপকার বেশি হবে, তাহলে সে কেন নিজেকে এমন উচ্চতায় নিতে পারে না যে তার লেখা কোটি না হোক অন্তত হাজার খানেক লোক পড়বে? মোল্লা আর এন্টি-মোল্লারা অনর্থক শুধু বুলিং করে নিজেদের ইমেজ খারাপ করছে।
হুমায়ূন আহমেদ তাঁর নিজস্ব চিন্তা-ভাবনার কারণেই হুমায়ূন আহমেদ হয়েছেন। এই কারণটি কী সেটি বিশ্লেষণ করে দেখি যে উনি আসলে সমতল থেকে কিছু দেখেন না, দেখেন কিছুটা উচ্চতা থেকে। এটি লেখকদের একটি মাস্ট বৈশিষ্ট। এখন উচ্চতা থেকে দেখলে দেখা যাবে যে দু'জন লোক মারামারি করছে। দু'জনের মধ্যে কে ডানপন্থী আর কে বামপন্থী সেটা কিন্তু নির্নয় করা যাবে না - এটা নিয়ে মাতামাতি করবে সমতল পরে থাকা লোকজন।
একজন যে সামনা-সামনি ৬৯, ৭১, ৭৫ দেখেছেন এবং তাঁর সে অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন - এই হিসেবে শেষের দিকে লেখা হুমায়ূন আহমেদের রাজনৈতিক উপন্যাসগুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ - আমি তাঁর সাথে একমত হই না হই। আগে হুমায়ূন আহমেদ আসলেই টাকার জন্য লিখতেন - তাই ইচ্ছে করেই বিতর্কিত বিষয়গুলো এড়িয়ে যেতেন। শেষের দিকে এসে মনে হচ্ছিল 'মানুষের মন যুগিয়ে চলতে হবে' সবে মাত্র এই ফর্ম ভাংগতে শুরু করছিলেন - আর তখনই দুম করে চলে গেলেন। একজন লেখকের জন্য ৬৪ বয়সটা আসলে তেমন কিছুই নয়।
আমিন তোমাকে ধন্যবাদ 'দেয়াল' নিয়ে আলোচনা করার জন্য। আমি বইটি পড়েছি। আলোচনা করতে চাইলে অনেক দীর্ঘ আলোচনা করা যায়। এমনিতেই অনেক কথা লিখে ফেলেছি। আমার একটা ব্যাপারে খটকা লেগেছে। বইটি নাকি ডঃ আনোয়ার হোসেনকে দিয়ে সংশোধন করানো হয়েছিল। আবার বইটির একটি জায়গায় লেখা আছে অনেকটা এরকম যে 'কর্নেল তাহেরের পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে জাতীয় সম্মান দেওয়া উচিত'। হুমায়ূন আহমেদ আর যাই হোক কখনও দেখিনি বেশি তোষামদী টাইপের বাক্য লিখতে। যাক শেষ করি মন্তব্য।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
দেয়াল অবশ্যই ফাইজলামি হইছে।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
ইন্টারমিডিয়েট-পরবর্তী সময়ে মুগ্ধতা নিয়ে হুমায়ুনের কিছু উপন্যাস পড়েছিলাম -- বেশির ভাগ মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে। পরে মুড়ি মুড়কির মতো বের হওয়া বইগুলোর কয়েকটি নেড়েচেড়ে দেখার পর হুমায়ুনে সেই যে বিবমিষা শুরু হলো আর গেলোনা।
'দেয়াল' ছুঁয়ে দেখার সাহস হয়নি অতএব।
তবে তিনি মারা যাবার পর অতি পুরনো কিছু ছোটগল্প খুঁজে পেলাম নেটে -- অসাধারণ সেসব গল্প।
উনার বেস্ট ক্রিয়েশন হলো ওই ছোট গল্প গুলো। :thumbup:
::salute:: ছোটগল্প রে ।
ছোটগল্পেই হু আহমেদ বেচে থাকবেন।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল