ক্যাডেট কলেজে চান্স

আমরা তখন গাজিপুর থাকতাম। প্রথম ক্যাডেট কলেজের নাম শুনতে পাই অনিল স্যারের কাছ থেকে। উনি একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন এবং সেই স্কুল থেকে নাকি ক্যাডেট কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দেয়া যায়। আব্বু খুব শখ করে ওই স্কুলে ভর্তি করে দিল আর আমিও খুব শখ করে পড়াশুনা শুরু করলাম। লিখিত পরীক্ষার সময় চলে আসল। আমার সিট পরেছিল ঢাকা রমিজউদ্দিন স্কুলে। পরীক্ষার সময়ের একটা স্মৃতি খুব মনে পরে যে ইসরাইল হক স্যার গার্ড ছিলেন আর একটা ছেলেকে নকল করার সময় পাকড়াও করেছিলেন আর ছেলেটা স্যারের পায়ে ধরে কান্নাকাটি করছিল। রিয়াজ স্যারকেও(আমাদের ব্যাচের ফাহাদের বাবা) মনে পরে, উনি আমার খাতা সাইন করেছিলেন। আমি শিওর ছিলাম যে চান্স পাব না কারণ সবাই বলছিল ওদের পরীক্ষা ভাল হয়েছে কিন্তু আমার জেনারেল নলেজ পরীক্ষা খুবই খারাপ হয়েছিল। রেজাল্ট যেদিন দেয় সেদিন আব্বু পেপারে রেজাল্ট দেখে বলেছিল যে আমি চান্স পাইনি, আমি তাতে খুব অবাক্‌ হইনি। কিন্তু পরে যখন নিজে পেপারে আমার ইনটেক নম্বর দেখলাম আমি নিজেও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।

ভাইভা পরীক্ষার অনেক বড় স্মৃতি। আমি ভাইভা দিয়েছিলাম শহিদ আনোয়ার স্কুলে এবং ওইদিন ভাইভা থেকে আমরা যতদূর মনে পরে ৬ জন চান্স পেয়েছিলাম। আমাদের সান এবং হোসেন ওইদিন ভাইভা দিয়েছিল এবং মেডিক্যাল যেই রুমে হচ্ছিল ওই রুমের জানালা দিয়ে উঁকি দিচ্ছিল। তারপরে কাশি দান সকলকেই করতে হয়েছে। পরে যখন ভাইভার রেজাল্ট পেপারে দিয়েছে তখন আমি যথেষ্ট নিশ্চিত ছিলাম যে আমি চান্স পাব, কিন্তু আবার আমার সাথে সেই পুরানো খেল হল। আমার মা কখনই চায় নি যে আমি ক্যাডেট কলেজে চান্স পাই অথবা যাই তাই আম্মু পেপারে আমার নাম না খুঁজেই বলেছিল যে আমি চান্স পাইনি। আমি এতটাই হতাশ হয়ে পরেছিলাম যে আর পেপার তুলে দেখি নি। হঠাৎ বাসার টি এন্ড টি ফোনটা বেজে উঠল। মন তখন খারাপ তারপরেও ফোনটা ধরলাম, আর তখনই আমার আব্বু বলল Congratulations তুমি চান্স পেয়েছ। আমি দৌড়ে তখন পেপারের রেজাল্ট পড়তে গেলাম এবং আমার ইনটেক নম্বর খুঁজে পেলাম।

এই আমার ক্যাডেট কলেজে চান্স পাবার গল্প; বোরিং লাগলে ফ্লপ দিবেন/দিও/দিস মাথা পেতে নেব।

২,৮২৪ বার দেখা হয়েছে

২৫ টি মন্তব্য : “ক্যাডেট কলেজে চান্স”

  1. বোরিং লাগলে ফ্লপ দিয়েন/দিও/দিস মাথা পেতে নেব।

    বোরিং লাগে নাই। :clap: এইবার চান্স পাওয়ার পর থেকে ক্লাস টুয়েলভ পর্যন্ত ঘটনা একে একে লিখতে থাকো। :clap:

    জবাব দিন
  2. ব্লগে স্বাগতম, লিখতেই থাক লিখতেই থাক, লিখতে লিখতে তোমার হাত ব্যাথা হয়ে যাক, এই কামনা করি।

    কেউ না লিখলে বরং বোরিং লাগে। আজকে তো পুরা ঈদ, এক রাতেই দশটার মত পোষ্ট, পইড়া কুলাইতে পারতেছিনা। 😀

    জবাব দিন
  3. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    আজকেতো আসলেই জইমা গ্যাছে, বাইরে জরুরি কামে যাওয়াড় কথা আছে, কিন্তু পইড়া কমেন্টাইবার লোভ সামলাইতে পারতাছিনা ;))

    ফয়েজ ভাইয়ের কথাটাই তুইলা দেই

    ব্লগে স্বাগতম, লিখতেই থাক লিখতেই থাক, লিখতে লিখতে তোমার হাত ব্যাথা হয়ে যাক, এই কামনা করি।


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
  4. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)
    বোরিং লাগলে ফ্লপ দিয়েন/দিও/দিস মাথা পেতে নেব।

    এই অংশটুকু সুপার ফ্লপ!!! :khekz:

    তোমার তো রেজিমেন্টেশন করনের দরকার...এডু একটু দেইখেন 😉


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : বন্য

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।