অপেক্ষা

সেই কবে তুই আসবি বলেছিলি
আজো তোর অপেক্ষায় অপেক্ষামান
বুড়োদের শ্যাওলাধরা এইদরদালান।

এই সেদিন আবারো বসন্ত ঘুরে গেলো
পাতাগুলো ঝরে পড়লো নিদিষ্ট একটি ইতিহাস নিয়ে।
সেই ন্যাড়াগাছগুলো আবার সবুজ হল
সবুজের মাঝে কতসব রঙ্গিন ফুল ফুটল
সেসব ফুলের খোঁজে কতো কতো মৌমাছি আসল-
ভাবলাম, তুইও হয়তো আসবি  
আসলি না

বৃদ্ধাশ্রমের এই রুমটির সংখ্যা২০৪   
অনেকটা পুরনো হয়ে গেছে
স্যাঁতসেঁতে মেঝে
দেয়ালের অনেক জায়গায়  কালো কালো দাগ
কোথাও পলেস্তারা খসে পড়েছে,
এমনি একটি রুমের সৌন্দর্য বলতে কিছুই নেই,
শুধু আছে দখিনেরএকটি জানালা।
সে জানালা দিয়ে যখন তাকাই
অল্প কিছু দূরেএকটি দীঘি  
সে দিঘীতে কিছুদিন আগ পর্যন্ত অল্প পানি ছিল
এখন পানিতে টইটুম্বুর
সাদা পদ্মও ফুটেছে এখানে সেখানে। 
কতো পরিবর্তন হচ্ছে প্রতিনিয়ত,  
তবুও তোর জন্য অপেক্ষার পরিবর্তন হয়নি আমার

আমার পাশের রুমের আসমা আপাকে
ছেলে, ছেলেবউ এসে নিয়েগেছে।
যাবার সময় আপা বিভুতি মায়ের মতো
বলল, আপা আসি,
ঠিকানা রেখে গেলাম, আসবেন।
আমি  জড়িয়ে ধরলাম,কিছুই বললাম না।
শুধু ভাবলাম  তুই কবে আসবি আর বলবি,
মা, মাগো আমি তোমাকে আর এখানে
রাখব না,তোমাকে আমার সাথে রেখে দিবো।

সেদিন আমার আকাশ অনেকক্ষণ কাঁদবে  
বৃষ্টিতে।বুকের ভিতরে শুকিয়ে যাওয়া ধলেশ্বরী 
জোয়ারের পানিতে আবারও খরস্রোতা হয়ে উঠবে।  

৭৩৬ বার দেখা হয়েছে

৮ টি মন্তব্য : “অপেক্ষা”

মওন্তব্য করুন : জিয়া হায়দার (৮৯-৯৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।