গন্তব্য বেইজিং

“জ্ঞান অর্জনের জন্য সূদুর চীন দেশেও যাও।” এই কথা মেনে চীন এ সরকারী একটা কোর্সে এসেছি ৫ মাসের জন্য। এই কোর্সের সময়ের ঘটনা নিয়ে লেখার ইচ্ছা অনেকদিন ধরে থাকলেও লিখব লিখব করে লেখা হয় নাই। যদিও আমার লেখা সুখপাঠ্য তো নয়ই এমনকি পাঠযোগ্য ও নয়। তারপরও আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।

কবীরকে যখন ফোন এবং মেইল এ চায়না আসার পর আমার অনুভূতি জানালাম; তখন ও বলল, “তুই এটা নিয়ে সিসিবিতে একটা সিরিজ লিখিস না কেন?” আমি যখন সিসিবিতে আপনাদের অসাধারণ মানের লেখার মাঝে আমার লেখা দিতে ঠিক স্বস্থিবোধ করছিলাম না, তখন কবীর বলল, “সিসিবিকে অন্য ব্লগ এর সাথে তুলনা করিস না, এখানে আমরা আমাদের অনুভূতি শেয়ার করি। লেখার মান নিয়ে অচো গিরি না করলেও চলবে।”

বেইজিং সফর নিয়েই প্রথমে লিখি। আমাদের কোর্সের শিক্ষাসফরের অংশ হিসাবে ১৭-২১ মে ২০১০ এই বেইজিং সফর ।

১৬ মে ২০১০- ১৭ মে ২০১০ (সকাল)

নানজিং এ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাত ১০ টার সময় রওয়ানা দেয়ার কথা থাকলেও কলেজের মতো কিছু লেট পার্টি থাকায়(আমি নিজেও লেট পার্টিতে ছিলাম !) সোয়া ১০ টার দিকে রওয়ানা দিলাম। গন্তব্য- নানজিং রেলওয়ে স্টেশন হয়ে বেইজিং। সাড়ে ১০ টার সময় নানজিং রেলওয়ে স্টেশনে সিকিউরিটি চেক এর জন্য গিয়ে আমাদের সাথের অন্য যাত্রীদের দেখে বেশ ভালই লাগল। কারণ, নানজিং এর তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রীর উপরে যাওয়ার সাথে সাথে এখানকার মানুষজন ওয়েস্টার্ন পোষাকের অনুকরণ করা শুরু করে দিয়েছে, দেখতে খারাপ লাগে না। :shy:

যা হোক, আমাদের ট্রেন সোয়া ১১ টার সময় স্টেশনে এসে পৌছাল। ট্রলি ব্যাগ টানতে টানতে কেবিনে এসে সরাসরি ঘুমানোর প্রস্তুতি নিয়ে ফেললাম। আমার পাশের কেবিনেই নেপালী আর শ্রীলংকান অফিসাররা ততক্ষনে বিয়ার আর গল্পের আসর জমিয়ে ফেলেছে। এদের সাথে চায়নীজ অফিসার- মিস গূ এসেও যোগ দিয়েছেন। এদের সবার হি হি হা হা এর জন্য আমার ঘুমের মোটামুটি ১২ টা বেজে গেল। অবশেষে রাত ৩ টার সময় টিম-২ এর লিডার যাকে সবাই হিটলার বলে ডাকে, তিনি এসে সবাইকে নিজ নিজ জায়গায় ফেরত পাঠালেন। আমি নিশ্চিন্তমনে ঘুমাতে গেলাম। কিন্তু, ১০ মিনিট পর দেখি আবার হি হি হা হা শুরু হয়েছে। আর সবাই মিলে মোটামুটি হিটলারের ১৪ গুষ্টি উদ্ধার করছে। ১০ মিনিট পর আবার হিটলার এসে সবাইকে শেষবারের মতো নিজ জায়গায় ফেরত পাঠালো।

ঘুম ভাঙলো সকাল ৮ টার দিকে। এর মাঝে সবাই উঠে নাস্তা খাওয়া শুরু করেছে। আমি ট্রেন থেকেই বাংলাদেশি টাকায় ১৫৫ টাকা দিয়ে ৪ টা কলা কিনে আর ট্রেন এর চিনি ছাড়া কফি দিয়ে নাস্তা শেষ করে ট্রেন এর জানালা দিয়ে চায়নার ক্রমবর্ধমান নগরায়ন দেখতে দেখতে সকাল ১১ টায় বেইজিং রেলওয়ে স্টেশনে পৌছালাম।

চায়নার মোট জনসংখ্যা যে ১২৪ কোটি এতদিন ঠিক বিশ্বাস না হলেও আজও অবিশ্বাস রয়েই গেল। রেলওয়ে স্টেশনে এত মানুষ দেখে মনে হলো গনণায় নিশ্চয় ভুল আছে, মোট জনসংখ্যা কমপক্ষে ২০০ কোটি না হয়েই যায় না! !

(চলবে???)

২,৬৯৫ বার দেখা হয়েছে

২৮ টি মন্তব্য : “গন্তব্য বেইজিং”

  1. মশিউর (২০০২-২০০৮)
    চায়নার মোট জনসংখ্যা যে ১২৪ কোটি এতদিন ঠিক বিশ্বাস না হলেও আজও অবিশ্বাস রয়েই গেল। রেলওয়ে স্টেশনে এত মানুষ দেখে মনে হলো গনণায় নিশ্চয় ভুল আছে, মোট জনসংখ্যা কমপক্ষে ২০০ কোটি না হয়েই যায় না! !

    চিনে দেখি বাংলাদেশের চেয়েও মানুষ বেশি । 😮

    জবাব দিন
  2. কিবরিয়া (২০০৩-২০০৯)
    নানজিং এর তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রীর উপরে যাওয়ার সাথে সাথে এখানকার মানুষজন ওয়েস্টার্ন পোষাকের অনুকরণ করা শুরু করে দিয়েছে, দেখতে খারাপ লাগে না

    মানে কি? কেমন ওয়েস্টার্ন পোষাক? জানতে মঞ্চায়? 🙂 🙂

    আমি ট্রেন থেকেই বাংলাদেশি টাকায় ১৫৫ টাকা দিয়ে ৪ টা কলা কিনে

    তাইলে একটা কলার দাম কত?? :-/
    পরের পর্ব বড় কইরেন। কবীর ভাইরে ধন্যবাদ।


    যেমন রক্তের মধ্যে জন্ম নেয় সোনালি অসুখ-তারপর ফুটে ওঠে ত্বকে মাংসে বীভৎস ক্ষরতা।
    জাতির শরীরে আজ তেম্নি দ্যাখো দুরারোগ্য ব্যাধি - ধর্মান্ধ পিশাচ আর পরকাল ব্যবসায়ি রূপে
    - রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

    জবাব দিন
  3. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    বউ এর ছোট ভাই, অবশেষে তুই লেখা শুরু করলি... 😀
    লেখার ফাঁকে ফাঁকে ছবি জুড়ে দিস, তাইলে পোষ্ট অনেক বড় মনে হবে... ;;;


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।