রাজশাহীর পুঠিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাসেবায় নতুনমাত্রা

এমন হতভাগা কেউ আছেন যার পা ভেঙ্গেছে ? প্লাষ্টার করার পর ডাক্তার যখন বলেন ঐ পায়ে ভর দেবেন না । সাথে যত বন্ধু বান্ধবই থাক কেমন লাগে ? তারা আপনাকে যথাসম্ভব উঁচু করে রাখলেও কিন্তু খুবই অসহায় লাগে । এ অবস্থায় একটি হুইল চেয়ার আপনার কষ্ট অনেকখানি কমিয়ে দিতে পারে। একজন চলৎশক্তিহীন প্রতিবন্ধী রিক্সা , ভ্যান বা অন্য কোন যানবাহনে হাসপাতাল পর্যন্ত পৌছালো । জরুরী বিভাগ বা অন্যকোন শাখায় সেবা নিতে সে যখন গড়িয়ে গড়িয়ে, হামাগুড়ি দিয়ে বা অন্যকোন ভাবে চলে তখন মনে হয় না যে একটা কিছু থাকলে ভালো হত।দুর্ঘটনায় আক্রান্ত রোগীও হাসপাতালে আসলে চলাচলে অনেক কষ্ট হয়। যদি হাসপাতালে হুইল চেয়ার থাকে তাহলে কিন্তু সেবা গ্রহণকালে চলাচলজনিত কষ্ট অনেকখানি কমতে পারে।পা ভাঙ্গার পর বিষয়টা মর্মে মর্মে অনুভব করেছি। সার্জারীর চিকিৎসককে বিষয়টি বললে তাচ্ছিল্যের সুরেই বলেন, ‘আপনার স্বামী তো সমাজসেবার লোক। এখানে একটু সেবা করেন দেখি । পারলে একটা হুইল চেয়ার কিনে দেন হাসপাতালে।’ আমার স্বামী বেচারা্রও একবার পা ভাঙ্গছিলো।সার্জন সাহেবের কথায় কষ্ট পেলেও ভাবছিল কিছু করা দরকার। সমাজসেবা অধিদফতরের সাবেক উপ পরিচালক মোজাম্মেল হক আমেরিকার ফ্রি হুইল চেয়ার মিশন থেকে মাঝে মাঝে হুইল চেয়ার এনে চলৎশক্তিহীন দরিদ্র প্রতিবন্ধীদের মাঝে বিতরণ করেন। মোস্তাফিজ  সেই স্যারের সাথে যোগাযোগ করে। স্যার প্রথমে রাজী হননি। তাঁরা প্রতিষ্ঠান নয় ব্যক্তিকে সহায়তা করেন। তখন বোঝাতে হয় এটি প্রতিষ্ঠানে হলেও  মানব সেবাতেই ব্যবহার হবে এবং দরিদ্ররাই বেশি উপকৃত হবে। ধনী লোকতো উপজেলা হাসপাতালে কমই যায়।পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে গরীব রোগীদের সাহায্য করার জন্য রোগীকল্যাণ সমিতি আছে। সমিতিটি সমাজসেবা অধিদফতর কর্তৃক নিবন্ধিত এবং সমাজবো অফিসার তার সম্পাদক।সেই সমিতির পক্ষ থেকে আবেদন করে PSWF হতে একটি হুইল চেয়ার সংগ্রহ করা হয় এবং তা  উপজেলা হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়। এটি নিশ্চয়ই বড় কোন কাজ নয়। একটি মাত্র হুইলচেয়ার এর মাধ্যমে হয়ত অল্প কিছু লোক উপকৃত হবে। এবং ব্যাপারটা আত্মপ্রচারও হয়ে যাচ্ছে তবু শেয়ার করলাম। অন্যেরা অনুপ্রাণিত হয়ে উদ্যোগ নিলে অনেক মানুষ উপকৃত হবে। সেই দৃষ্টিকোন থেকে খবরটি ফেসবুকেও শেয়ার করছিলাম।

“২২ মে ২০১৪ তারিখে উপজেলা হাসপাতালে রোগীদের  সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি হুইলচেয়ার সংযোজন করা হয়। রোগী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক এবং উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান Professional Social Workers’ Foundation, রাজশাহী হতে প্রাপ্ত হুইল চেয়ারটি  উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ গোপেন্দ্র নাথ আচার্যের নিকট হস্তান্তর করেন। এ সময় ডাঃ আচার্য বলেন , হুইল চেয়ারটি পুঠিয়া হাসপাতালে চিকিৎসা সেবায় নতুন মাত্রা যোগ করলো। সমাজসেবা কর্মকর্তা বলেন, ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের পার্শ্বে অবস্থিত এ হাসপাতালে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রোগীরা প্রায়ই চিকিৎসা সেবা নিতে আসে।আহত, চলৎশক্তিহীন বা শারিরীক প্রতিবন্ধী রোগীদের বিষয় বিবেচনা করে হুইল চেয়ারটি সংগ্রহ করা হয়েছে।”

১,১১৩ বার দেখা হয়েছে

১২ টি মন্তব্য : “রাজশাহীর পুঠিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাসেবায় নতুনমাত্রা”

  1. মোকাব্বির (৯৮-০৪)

    কামান গোলা দাগছে এরকম একটা স্মাইলি দরকার। ২১ বার তোপধ্বনীর মত।

    ::salute::


    \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
    অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : পারভেজ (৭৮-৮৪)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।