একটি তথাকথিত কবিতার পিছনের গল্প

২০১৪ সাল।এপ্রিল মাসের প্রথম পক্ষ ।আমার স্বামী বেচারা খুব অন্যমনষ্ক।ন্যাড়া মাথা বিমর্ষ মুখ।কী যেন ভাবে।মনে হয় ঘোরের মধ্যে আছে।জানালা দিয়ে মাঝে মাঝে রাস্তার দিকে তাকায়।বিশেষ কিছু খুজে।রাতে ঠিক মত ঘুমায় না।ছোট চার্জার লাইট জালিয়ে ডায়েরীতে কী সব লেখে।হঠাৎ করে তার খুব হাইকু লেখার বাতিক হয়েছে। বাস্তব জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য কয়েক দিন আগে হুমকি দিয়েছিলাম। ছন্দের আকারে-

হাইকু লেখলে হাত ভাঙ্গব
কলম আর কম্পিউটার
কবি হতে চাইলে ফের
বাড়ি খাবে ঝাঁটার।

বেচারা এখন রাত জেগে চুরি করে লেখে।মাঝে মাঝে মায়া হয়।ভালো অবস্থানে যেতে না পারায় ওর মনে প্রচন্ড রকমের দুঃখ আছে।লেখনীর মাধ্যমে যদি একটু স্বস্তি পায় মন্দ কী।বুঝতে দেই না জেগে আছি।যখন কয়েক জনকে জিজ্ঞেস করলো তারা কয়েক দিনের মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু দেখেছে কিনা।আমি খুব চিন্তায় পড়ে গেলাম।অলৌকিক কিংবা অস্বাভাবিক কিছু ঘটেনি আসলে। বেচারা পাগোল হয়ে যাচ্ছে না কি ? অনেক চেষ্টার পর ভাবুক তার মুখ খুললেন।ভরদুপুরে রাস্তার পাশে ঘুমিয়ে এক লোক।কোন নড়াচড়া নেই।লাশ মনে করে কেউ তাকে দেখেও দেখছেনা।চোরা চোখে দেখা গেছে দুই একটা মাছি তার নাকে মুখে বসছে।তবু নড়েনা সে।পিঁপড়ের সারি সেই দেহ অভিমুখী নয়। তাহলে সে বেঁচে আছে।কিংবা জীবন্মৃত জম্বি।দুই দিন পর লোকটি উপজেলা গেটে মহাসড়কের ডিভাইডারের পাশে ঘুমাচ্ছে । আগের মতই অদৃশ্য। আবার হঠাৎ রাস্তার পাশে ফেলে রাখা বাঁশ-এর উপর ঘুমাচ্ছে।আর কেউ যখন দেখতে পাচ্ছে না তাহলে সে কে ? সে কি মানুষ না মানবতা ? কবিতার আকারে এটাই উনি লেখেছেন এবং সিসিবিতে প্রকাশ করেছেন। এ রকম মানুষ অনেক আছে। হয়তো গ্রাম এলাকায় দেখা যায় না কিন্তু শহরে দেখা যায়।পাগলের কার্যকলাপ দেখে বিচলিত হবার কী আছে ?

১,৭৩৬ বার দেখা হয়েছে

১৯ টি মন্তব্য : “একটি তথাকথিত কবিতার পিছনের গল্প”

  1. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    সুমনের গানটা মনে পড়েঃ
    একমুখ দাড়িগোঁফ, অনেককালের কালো ছোপ ছোপ
    জটপড়া চুলে তার উকুনের পরিপাটি সংসার. . .

    পাগল নিয়ে ভাবিত হবার প্রয়োজন আছে কি না জানিনা, তবে আমাদের মতো তথাকথিত সুস্থ মানুষের সংগে পাগলের তফাত সামান্যই। একচুল হয়তোবা।

    জবাব দিন
  2. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    ভালো লেখা ভাবী।
    চালিয়ে যান দুজন মিলে।

    সফলতা-ব্যর্থতা এইগুলা মোটা দাগের জিনিস।

    আমি বুঝি সুখি কিনা>>>
    ঐ যে সুখি মানুষের জামা।

    অর্থ-বিত্ত দিয়ে কতোটা করা যায়?
    জানি অনেকটাই।
    কিন্তু সবটা নয়।

    মোস্তাফিজ ভাই কে কখনো দেখি নি।
    দেখার সম্ভাবনাও খুব একটা নেই।
    যেটুকু চেনা তা এই ব্লগেই।
    আর এই চেনাটাও কি আসল মানুষকে???
    জটিল প্রশ্ন-----

    তবে ব্লগের মানুষটি আসল মানুষের কাছাকাছি হলেও বলতে হয়, সফল মানুষকে জীবনে পেয়েছেন কিনা জানি না তবে সহজ-সরল মানুষকে পেয়েছেন।

    আজকালকার দিনে এতো বেশি ভেজাল যে আসল মানুষ পাওয়া দুষ্কর হয়ে দাড়িয়েছে।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  3. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    তবে কিনা বেশি কবিতা ভালো নয় -
    তাও যদি হয় বেশি রকম অর্থ বোধক।
    ভাই কে ফুল-ফলে-গাছ-প্রকৃতিতে ফেরত আনেন।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মোস্তাফিজ (১৯৮৩-১৯৮৯)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।