আমি লিখতে পারিনা।

মোট কথা আমি লিখতে পারিনা। বাংলা লিখার চর্চা সেই ক্লাস টেন এর পর আর হয় নাই। মজা করে লিখার প্রশ্নই আসেনা, কারন ফাইজলামো ছোটবেলা থেকেই একটু কম করি। সাহিত্যিক ব্লগার ভাই বোনেরা আমার লিখা ক্ষমাসুন্দর চোখে দেখবেন, আপনাদের ফাটাফাটি সুন্দর লিখাগুলো পড়ে আমি এতদিন কিছু লিখার সাহস করি নাই।

আমাদের বাসায় জগাখিচুড়ি অবস্থা। বাসা বদলি হচ্ছে। আমার আম্মু খুব গোছালো টাইপের মানুষ, সে গত প্রায় তিন যুগ ধরে তাঁর তিন মেয়ের জমানো আবর্জনা স্বযত্নে গুছায়ে রাখসে। গতকালকে সেই বাক্সগুলো আমার রুমে জড় করা হইসে যেন আমি কিছু অপ্রয়োজনীয় আবর্জনা clear করি। সেই বাক্স ঘেটে অনেক বছর পর খুঁজে পেলাম আমার ক্যাডেট কলেজের পুরানো ডায়রি ।

ক্লাস সেভেন থেকেই আমি ক্যাডেট কলেজ দেখতে পারিনা। আমাকে বাসা থেকে অনেক ট্রিক্স করে পাঠানো হইসিলো। আমাকে বলা হইসিলো যে ক্যাডেটে চান্স পেয়ে দেখায়ে দিতে যে আমি মেধাবী, আর সেই ফাঁদে আমি বোকামি করে পা দিসিলাম। পুরা ক্লাস সেভেন-এইটে আমি আমার মা-বাবাকে রাজি করার চেষ্টা করসি আমাকে বাইরে নিয়ে আসার জন্য। কিন্তু সফল হই নাই। পরে ক্লাস নাইনের দিকে তারা নিজেরাই রাজি হইলেও আত্মসম্মান রক্ষার্থে শেষ পর্যন্ত আমি থেকে যাই এবং বেশ ভালভাবে মানিয়ে নিই। (ক্লাস ইলেভেনের 1st টার্মের পরে (২০০০ সাল) অবশ্য চলে যাই, কিন্তু সেটা অন্য কাহিনী।)

রাত জেগে ডায়রি পড়ে আমি আবিষ্কার করলাম সেই কিশোরী নিজেকে। ক্লাস এইট থেকে ক্লাস টেন পর্যন্ত time travel করার মত ব্যাপার। নিজে কত অন্যরকম ছিলাম, আর কতযে বদলে গেছি, আর কত সুখ-দুঃখের ঘটনা যে স্মৃতি থেকে হারিয়ে গেছে, তা এই ডায়রি না পড়লে মনে হয় খেয়ালেই আসতনা। তাই ঠিক করলাম ডায়রির কিছু কিছু ঘটনা ব্লগে লিখে রাখব। কারন ডায়রি যত সহজে হারিয়ে যাবে, সিসিবি মনে হয় তত সহজে হারাবে না।

(চলবে)

৫,৬১৪ বার দেখা হয়েছে

৭৪ টি মন্তব্য : “আমি লিখতে পারিনা।”

  1. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    ই মাআআআ... তুমি লিখতে পারো না!!! 😛

    শুভ লেখালেখি...


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  2. আত্নবিশ্বাস !!
    (পার্ট নিলাম আরকি...) 😛 😛

    আপু জটিল হইছে... এইটা যদি লিখতে না পারার নমুনা হয়...
    তাহলে আল্লাহকে ধন্যবাদ যে আপনি লিখতে পারেননা...

    চালায়া যান।

    :thumbup: :thumbup:

    জবাব দিন
  3. আমার ডায়েরীর দিকে তাকিয়ে আমার এইরকম কত শত কথা মনে হয় !!
    দুইটা সাড়ে তিনশ পৃষ্ঠার ডায়েরি প্রায় ভরে ফেলছিলাম লিখে...
    অথচ এখন বুঝি কতনা ভুল বুঝতাম সবকিছু... কতনা স্পর্শকাতর ছিলাম!!

    একটা প্রশ্ন আছে আমার... সেইটা হলো, যদি কলেজ লাইফের ডায়েরির কোন লিখা হুবহু তুলে দেই, সেইটা হয়ত সাহিত্যের কোন ভালো নমুনা হবেনা... কিন্তু সেই বাচ্চা টাইপ লেখা পড়ে কি পাঠক সকলের মুখ মলিন হয়ে যাবে?

    আপুর লেখার মন্তব্যের সাথে আমার এই প্রশ্নের উত্তর পেলে খুশি হতাম।

    ত্রিমিতা আপুকে বলছি,

    শুভ লেখালেখি
    জবাব দিন
  4. রবিন (৯৪-০০/ককক)
    ডায়রি যত সহজে হারিয়ে যাবে, সিসিবি মনে হয় তত সহজে হারাবে না।

    এই কথা যে বলতে পারে সে লিখতে পারে না এইটা কে বিশ্বাস করবে? :))

    আর চিন্তা করোনা। আমার মতো আলসে মানুষ খুব কম আছে। সিসিবি আমাকে যেখানে লেখক বানাতে পেরেছে, সো নো চিন্তা।
    আর সিসিবি এর পাঠক গুলাও সিরম। যাই লিখি গিলে ফেলে। 😀
    ইশ কি মনে করাইয়া দিলা? ডায়রী, আহ। এক কালে সিরম ডায়রী লিখতাম। কিন্তু আমার একটা ডায়রী কলেজে এডজুটেন্ট সিজ করার পর আর কখনো ডায়রী লিখি নাই, লিখবোও না।
    চালিয়ে যাও লেখা।

    জবাব দিন
  5. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    ত্রিমিতার এইটা প্রথম পোস্ট! তাইলে তো ১০টা :frontroll: শুরুর সময় হইয়া গেছে! দেখো কি কান্ড? অ্যাডজুটেন্ট ইউসুফ সাব কি আশেপাশে আছেন? নাকি যশোর গেছেন গিয়া। গুনাগুনতির কাজডা করবো কেডা?


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
  6. মইনুল (১৯৯২-১৯৯৮)

    এতো ছোট কেন ?? দুই কামড় আপেল খেতে খেতেই শেষ হয়ে গেলো। যতটুকু লিখেছো খুব ভালো লেগেছে। তবে একটু সময় নিয়ে হলেও, একটু বড় লেখা দিও আর নিয়মিত লিখো, ডজারদের দলে চলে যেওনা।

    জবাব দিন
  7. রকিব (০১-০৭)

    শুভ ব্লগিং আপু, আরেকটা নিয়ম হলো সানাউল ভাইয়ের ডিগবাজি কসরতের পর আমার টং-ঘরের চা। আজকাল যদিও নাজমুল, সাজিদ আর রাফি দোকান চালায়, তাও আপনার জন্য ইস্পিসাল আমিই দিলাম
    :teacup: ।


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  8. কামরুল হাসান (৯৪-০০)

    গুড। :thumbup:
    ত্রিমিতা'র ডেইলি সোপ কবে শুরু হচ্ছে তাহলে? B-)


    ---------------------------------------------------------------------------
    বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
    ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।

    জবাব দিন
  9. মেহবুবা (৯৯-০৫)

    ত্রিমিতা আপা,
    আপনাকে এইখানে দেখে খুব ভালো লাগলো। আপা লেখা সুন্দর হইসে।
    আপনা রে দেখে আমারো কেন জানি লিখতে ইচ্চা করসে।
    সাহসে কুলাচ্চেনা। আমিও লিখতে পারিনা।তাও যে কলেজ এ কিভাবে এত ডায়েরি লিখতাম জানিনা।
    😀

    জবাব দিন
  10. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    স্বাগতম ত্রিমিতা। শুরুটা বেশ ভালো লাগছিল। কিন্তু প্রথম ব্লগেই মাত্র কয়েক লাইন লিখেই 'ঝুলায়া দেওয়া'র জন্য ব্যাপক কষ্টিত হইছি।

    (শীঘ্রই পরের কিস্তি ছাড়ো, নইলে ব্যান চামু কিন্তু :grr: )


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
  11. রায়হান রশিদ (৮৬ - ৯০)

    ত্রিমিতা লিখিয়া প্রমাণ করিল সে লিখিতে পারে . . .
    মাত্রাতিরিক্ত বিনয় একেই বুঝি বলে! ক্লাস সেভেন থেকে নিজের কিসমতকে প্রতি মুহুর্তকে যারা অভিসম্পাত দিতো আমিও সেই অভাজনদের একজন। ভাল লাগলো জেনে যে এমন মানুষ আরও ছিল। স্বস্তি পেলাম জেনে যে সবার মনে পিটি, প্যারেড, এক্সট্রা ড্রিল, ফ্রন্ট রোল, লং আপ, বন্দী দশা - সুরঝন্কার তোলে না। পরের পর্বের অপেক্ষায়।

    জবাব দিন
  12. সামিয়া (৯৯-০৫)

    ত্রিমিতা আপা!! কেমন আসেন আপনি? আমাকে চিনবেন না বোধহয়, কিন্তু ইলেভেনের যেইদিন আপনি চলে যাচ্ছিলেন, তার আগের দিনের ডিনারে ইলেভেনের আপাদের কান্না...এখনো মনে পড়ে।
    আপনাকে দেখে খুশিতে দুইটা ডিগবাজি দিয়ে দিতে ইচ্ছা করতেসে। :frontroll: :frontroll:
    ময়মনসিংহের পোস্ট বাড়াইতে থাকেন আপা। আমাদের বিট দিতে হবে বরিশালকে :-B
    আহেম, ওদের ২৯৮, আমাদের ৪৪ 😡

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : ত্রিমিতা (১৯৯৬-২০০০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।