২০ জুলাই

সময়ঃ রাত ৩:২০

আমি জানি না কোনদিনও তুমি বুঝতে পারবে কিনা এই আমাকে। আর তাই বোঝানোর চেষ্টাও এখন আর করি না। গতকাল ফারজানা স্ট্যাটাস দিয়েছে,”কেউ যদি তোমাকে প্রতিনিয়ত বলে যায় সে তোমাকে সত্যি ভালোবাসে এবং তুমি তার বিশেষ একজন তবে বুঝে নিও সে তোমাকে ভালবাসে না। কারণ যে তোমাকে সত্যি ভালোবাসে তার ভালোবাসার কথাগুলো সবসময় বলা লাগেনা, তার নিরবতাই তোমাকে বুঝিয়ে দিবে সবকিছু।” আমার ও কেন জানি কথাগুলো সত্যি মনে হচ্ছে।

অনেকদিন হয়ে গেল, তোমাকে ভালোবাসার কথাগুলো আর বলি না। আসলে সময় করে বলা হয়ে উঠে না। আর বললেই কি লাভ বল? তুমি তো আমার নও। মাঝে মাঝে তোমার কথা যখন মনে পড়ে,তখন অনেক খারাপ লাগে। মনে পড়ে যায় সেইদিন গুলোর কথা। কোচিং চলাকালিন সময়ে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে রিক্সায় করে ঘুরে বেড়ানো, ধানমন্ডি ৩২ নাম্বারে সবার মাঝে থেকেও নিজেদের মাঝে হারিয়ে যাওয়া, বাদাম আর ঝালমুড়ি দিয়ে দুজনের লাঞ্চ করা। যতবারই সিগারেট ধরাতে চাইতাম ততবারই আমার মুখ থেকে তোমার সিগারেট নিয়ে ছুরে ফেলা, নিজেদের মাঝে ঝগড়া করা। একে অপরের রাগ ভাঙ্গানো, অতঃপর ভালোবাসার ভেলায় হারিয়ে যাওয়া।

এখনো যখন ভার্সিটির ক্লাস শেষ করে কলাভবন থেকে বের হয়ে টিএসসি তে আসি,তখন ও তোমার কথা মনে পরে। তোমার কি মনে আছে ১৩ জুলাই এর কথা? ওই যে সেদিন, যেদিন ডিপার্টমেন্টের একটা মেয়ের সাথে টিএসসি তে হেসে কথা বলাতে তুমি রাগ করেছিলে। তোমার রাগ ভাঙ্গাতে সেদিন আমাকে কত কাঠখড়ই না পোড়াতে হয়েছিল। টিএসসির এক নির্জন কোণ বেছে নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দেয়া, আর সেই মুহূর্ত গুলোকে ক্যামেরা বন্দি করা। এইতো ছিলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কর্মকান্ড। সেইদিনগুলো আজো স্মৃতির পাতায় অমলিন।

এখন মাঝে মাঝেই তোমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি। দেখি তোমাকে নিয়ে আব্বুর গাড়িতে করে লং ড্রাইভে গিয়েছি, হারিয়ে গিয়েছি লোকান্তরে। কিন্তু যখনই আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়, তখনই স্বপ্ন ভাঙ্গার বেদনায় নীল হয়ে যাই। নিজেকে মনে হয় ডানাবিহীন ইকারাস। খুঁজে বেরাই বেনসনের প্যাকেট আর লাইটার। বদ্ধ রুমটাকে আরো বদ্ধ মনে হয়। ২০ জুলাই এর পর থেকে আমি আর জানালা খুলি না। আলো আমাকে আর টানে না। আঁধার আজ আমার সঙ্গী।

“”ব্যস্ত শহর,পুরোনো দালান,সবুজ গালিচা,আমার ঘুম আসে না,আমার ঘুম আসে না। সাদা এশট্রে,৩ টা সিগারেটের নিরবতা, বেঈমান প্রেম, চলে যাওয়া ট্রেন, ফিরে আসে না,আমার ঘুম আসে না। মারিজুয়ানা,হুইস্কি ও ভদকা আর কিছুটা কোকেইন,দুঃখ হারিয়ে যায় না,দুঃখ হারিয়ে যায় না।””

১,১৯০ বার দেখা হয়েছে

৫২ টি মন্তব্য : “২০ জুলাই”

  1. সাবিহা জিতু (১৯৯৩-১৯৯৯)

    চইলা গেসে এই জন্য আলহামদুলিল্লাহ বল ছেলে। না গেলে কি কি সমস্যা হইত সেইগুলা দেখ আর স্বস্তির নিশ্বাস ফেলঃ
    ১। বেলায় বেলায় ফোন করে খবর নিতে না, দিতে হইত
    ক) "কোথায় আছ?"
    খ) "কি করছ?"
    গ) "কার সাথে আছ?"
    ঘ) "এতোক্ষন পর ফোন রিসিভ করলা কেন?"... ইত্যাদি
    ২। ফোনের বিল বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুন বা চতূর্গুন হইত।
    ৩। সারাক্ষন "তার" কথা ভেবে ভেবে অন্য অনেক কিছুর জন্য প্রডাক্টিভ সময় নষ্ট হইত।
    ৪। "প্রথম দেখার দিন", "প্রথম মন দেয়া নেয়ার দিন", "প্রথম হাত ধরার দিন"... ইত্যাদি সেলিব্রেট করায় প্রচুর অর্থ বিনহত হইত যা দিয়ে তুমি এখন শান্তি মত বেন্সন কিনতে পারবা।
    ৫। উপরুক্ত বেশেষ দিন গুলা কোন ক্রমে ভুলে গেলে যেই পরিমান মনকষ্ট বা ঝারি খাইতে হইত, তা একব্বার ভেবে দেখ।
    ৬। "আমার কাজিনের সাথে কেন দুই মিনিট কম কথা বল্লা?", "আমার বান্ধবীর দিকে কেন এম্নে তাকাইলা?"...এগুলো আর নতুন করে বলার কি আছে!
    ৭। ডেটিং এ টাকা খরচ হোয়ার কথা তো নতুন কিছু না!
    ৮। "তুমি এসেছিলে পরশু, কাল কেন আসনি...তবে কি আমায় বন্ধু কাল ভালবাসনি!!!" জাতীয় অনুযোগ তো থাকেই অহড়হ !
    এবাও বাছা পড়াশুনায় মন দাও দিকিনি, যাও!


    You cannot hangout with negative people and expect a positive life.

    জবাব দিন
  2. কিবরিয়া (২০০৩-২০০৯)

    ব্যাপার না দোস্ত...
    আসলে এইরকম'ই হয়।
    তোর কথাগুলো মন ছুয়ে গেল।।

    তবুও বলব বেন্সন-হুইস্কি-মারিজুয়ানা আর অদেখা ব্যাথাই আজো সামনে পথ চলতে সাহায্য করে, আর এইরকম না হইলে জীবনটা পুরাই পানসে হয়ে যেত।।


    যেমন রক্তের মধ্যে জন্ম নেয় সোনালি অসুখ-তারপর ফুটে ওঠে ত্বকে মাংসে বীভৎস ক্ষরতা।
    জাতির শরীরে আজ তেম্নি দ্যাখো দুরারোগ্য ব্যাধি - ধর্মান্ধ পিশাচ আর পরকাল ব্যবসায়ি রূপে
    - রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

    জবাব দিন
    • কিবরিয়া (২০০৩-২০০৯)

      না শেখার কি আছে, জীবনে চলতে গেলে কত কিছুইতো লাগে। :-B 😛


      যেমন রক্তের মধ্যে জন্ম নেয় সোনালি অসুখ-তারপর ফুটে ওঠে ত্বকে মাংসে বীভৎস ক্ষরতা।
      জাতির শরীরে আজ তেম্নি দ্যাখো দুরারোগ্য ব্যাধি - ধর্মান্ধ পিশাচ আর পরকাল ব্যবসায়ি রূপে
      - রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

      জবাব দিন
  3. মুহিব (৯৬-০২)

    তৌকির আর কয়েকদিন পরে এইগুলা নিয়া নিজে নিজেই হাসবা ১০০% নিশ্চয়তা দিয়া কইতাছি। তাই পরে যেন নিজের কাছে একটু কম লজ্জা পাইতে হয় সেইদিকে একটু খেয়াল দাও। :gulti: :gulti:

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : সাবিহা জিতু (১৯৯৩-১৯৯৯)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।