সাম্প্রতিক চলচ্চিত্র ভাবনা

১.
মাত্র দু’বছর আগেও এদেশের তরুণ প্রজন্মেরর একজন কবি লিটল ম্যাগ কিংবা দৈনিকে তার কবিতা ছাপা হবে কিনা এই চিন্তা নিয়ে ঘুমাতে যেতেন। এবং মোটামুটি একটা স্বপ্নমিশেল কাব্যবন্দী ঘুম হতো। এদেশের তরুণ প্রজম্ন এখনও ঘুমাতে যান। তবে আবহটা একটু ভিন্ন। এখন তাদের চোখের স্বপ্ন রূপালী, এখন তাদের ফ্রেমবন্দী ঘুম। দেশে একটি নিরব বিপ্লব ঘটে গেছে। সেলুলয়েড বিপ্লব।

যিনি গান লিখছেন, যিনি সুর দিচ্ছেন, যিনি গাচ্ছেন। যারা অল্প লিখতে জানেন, যারা মোটামুটি লিখতে জানেন, যারা বিস্তর লিখতে জানেন। যিনি ক্যামেরা করেন, যিনি আলো দেন, যিনি শব্দ নিয়ন্ত্রন করেন। যারা আইডিয়াবাজ, যারা আড্ডাবাজ, যারা স্বপ্নবিলাসি পাঠক। যিনি চিত্রশিল্পী, যিনি চলচ্চিত্র সংসদকর্মী, যিনি নাট্য নির্মাতা। কে পুরস্কার পাওয়ার মত একটা পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণের কথা ভাবছেন না?

২.
অনেকেই ইতিমধ্যে কাজে ঝাঁপিয়ে পরেছেন। ছোট ছোট চলচ্চিত্র বানিয়েছেন (ডিজিটাল ফিল্ম বিপ্লবের ক্ষুদ্র রূপ)। বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরামের কল্যানে তা জনসম্মুখে প্রদর্শীতও হচ্ছে দু’বছরে একবার। এদের কেউ আবার শুরুর খানিক, মৃনাল-মানিক, অন্তে সুভাষ ঘাই। অর্থাত বুকে মূলধারার চলচ্চিত্র ধারণ করে অর্থাভাবে আপাতত নাটক বা প্রামাণ্যচিত্র বানাচ্ছেন।
অনেকে কবে সিনেমা বানাবার সুযোগ আসবে সেই আশায় না থেকে নাটক বানানোয় হাত দিয়েছেন। ফলে ভাল সিনেমা হতে পারত এরকম অনেক গল্পই নাটকে রুপান্তরিত হচ্ছে। এদের বাস্তবতা জানা আছে আমার। কতগুলি চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য তৈরী করে রেখেছি, ছুটোছুটি করেছি বিস্তর কিন্তু কাজ হয়নি। তবু স্বপ্ন ছাড়িনি। যারা আপোষ করছেন তাদের দেখলেই আমার সুভাষ মুখপাধ্যায়ের কয়েকটি লাইন মনে পড়ে যায়-

আমার যে সকল বন্ধুরা
একদা পৃথিবী বদলের স্বপ্ন দেখেছিল
খুব ত্বরা সইতে না পেরে এখন
নিজেরাই নিজেদের বদলে নিয়েছে

৩.
এইটুকু লেখা পড়ে যে কেউ ভাবতে পারেন আমি বোধ হয় চলচ্চিত্রের এই প্রক্রিয়ায় বেশ হতাশ হয়ে লিখতে বসেছি। তা নয়। এতক্ষণ একজন চলচ্চিত্রপ্রেমীর সাধারণ চোখে সমসাময়ীক অবস্থা যতটুকু দেখা যায় তার একটা সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়ার চেষ্টা করেছি মাত্র। কিন্তু হতাশ নই। কারণ আমি জানি যে কোন আর্টফর্মকে দাঁড়াতে হলে তার পিছনে প্রচুর এক্সপেরিমেন্ট থাকতে হয়। বাংলাদেশে এখন সেই এক্সপেরিমেন্ট পর্ব চলছে। ষাটের দশক থেকে এদেশে সাহিত্য ও কবিতার এমনই এক্সপেরিমেন্ট এর ভিত তৈরী করেছে। আমরা পেয়েছি আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, শামসুর রাহমান, নির্মুলেন্দু গুণ, সৈয়দ শামসুল হক, আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ।
বছর দুয়েক আগে আজেবাজে অডিও এ্যালবামে বাজার ছেয়ে গিয়েছিল। এখন গানের সুদিন ফিরে আসায় সেটাকে এক্সপেরিমেন্ট হিসেবে ধরে নেয়া যায়। মোদ্দা কথা হচ্ছে ভাল চলচ্চিত্রের আশায় প্রচুর এক্সপেরিমেন্ট হচ্ছে। এবং দেশে চলচ্চিত্রেরও সুদিন আসছে।

৪.
বিভিন্ন চ্যানেল তো ইতিমধ্যেই ছবি নির্মাণে হাত দিয়েছে। এ চলচ্চিত্রে যে অর্থলগ্নি কম থাকে তা এর শ্রী দেখলেই বোঝা যায়। ছবি তৈরির সর্বোচ্চ মূল্য পঁচিশ লক্ষ টাকা মাত্র যেখানে দেশে বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনই বানানো হয়েছে কোটি টাকায়। আবার সেই স্বল্প বাজেটের ছবি থেকে বিজ্ঞাপন বাবদ চ্যানেল গুলি যা কামাচ্ছে তার অর্ধেক টাকাও ওই ছবির পিছনে ব্যয় করলে মান বেড়ে যেত দ্বিগুন। এটা যত গুড় তত মিষ্টি প্রক্রিয়া। ছবিতে যত অর্থলগ্নি হবে তার মান তত বেড়ে যাবে। দেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে মাত্র দশ কোটি টাকার ফিল্ম নামুক, নায়িকাদের স্বাস্থ্য তার পরদিন থেকে স্লিম হতে শুরু করবে কিংবা স্লিম মেয়েদের নায়িকা হবার প্রবনতা বেড়ে যাবে।

৫.
ভাল চলচ্চিত্রের জন্যে এই সময়ই ইন্ডিপেন্ডেন্ট চলচ্চিত্র নির্মাতাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ভিতরে প্রবেশ দরকার(সত্যজিত রায় পেরেছিলেন)। কারণ আমি একটা কথা অনেক বেশি বিশ্বাস করি তা হলো সিস্টেমের বাইরে থেকে কখনও সিস্টেম পরিবর্তন করা যায় না।

আবার এই স্বাতন্ত্র চলচ্চিত্র বা বিকল্পধারার ছবিগুলির বিষয়বস্তুও গড়ে একই ধাচের। গতিহীন দু;খ কষ্টের ছড়াছড়ি, মধ্যবিত্ত টানাপোড়েন নয়ত ঈষr সংক্ষেপিত মুক্তিযুদ্ধ। একজন কর্মজীবি মানুষ সে যে শ্রেনীরই হোক না কেন দিন শেষে কর্মক্লান্তির পর দাম দিয়ে (টিকিট কেটে) দু;খ কষ্ট দেখতে কেন যাবে? তার জীবনে কি দুঃখ কষ্টের কমতি হচ্ছে?
এর মধ্যে তৌকির আহমেদের রুপকথার গল্প ছবিটিতে কিছুটা গল্পের ভিন্নতা পাওয়া গেলো আর পাওয়া গেল গতি।

৬.
এই বিকল্পধারার ছবি বা ইন্ডিপেন্ডেন্ট ছবিগুলির প্রধান যে সমস্যা তা হলো প্রদর্শনের। দেশে দুটি সিনেমা হল ছাড়া অন্য কোথাও এর প্রদর্শনের ব্যবস্থা নেই। এই ছবিগুলি প্রদর্শনের সবচেয়ে ভাল স্থান হল চলচ্চিত্র সংসদ আয়োজিত চলচ্চিত্র উৎসব। দর্শক ও নির্মাতা উভয়ই মুখিয়ে থাকেন এই চলচ্চিত্র উৎসবের জন্য। দর্শক দেখবেন আর নির্মাতা দেখাবেন। কি সহজ একটা ব্যাপার। কিন্তু সেই সহজ ব্যাপারটা কত কঠিন তা এই ছবিগুলির দর্শক জানেন, নির্মাতাও। সেই কবে একটা উৎসব হবে!

৭.
ভাল চলচ্চিত্র প্রচার ও প্রসারের ক্ষেত্রে চলচ্চিত্র সংসদগুলি সবচেয়ে বেশি ভুমিকা পালন করতে পারে। এগুলি যত বেশি কার্যকরী হবে ততই এই স্বাতন্ত্র চলচ্চিত্রের(ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম এখন বিশ্ব জুড়েই সমাদৃত)কদর বেড়ে যাবে। কারণ বিজ্ঞাপণেরর ভাষায় প্রচারই প্রসার। এরাই হবে এই ভাল চলচ্চিত্রের প্রচারক। তাই দেশে চলচ্চিত্র সংসদ ষাটটিতে(পরিতাপের বিষয় এর মধ্যে তৎপর ও কার্যকরী মাত্র ৪ থেকে ৫ টি)থেমে থাকলে চলবে না। আরও আরও চলচ্চিত্র সংসদ চাই তবে অবশ্যই কার্যকরী।

৮.
চলচ্চিত্র সংসদ হলে যে যে লাভ আমাদের এবং চলচ্চিত্রের তা হল-
ক. নিয়মিত এরা সুস্থ্য ও রুচিশীল চলচ্চিত্র প্রদর্শন করবে
খ. চলচ্চিত্রের যে কোন বিপর্যয়ে এরা এগিয়ে আসবে
গ. ভাল চলচ্চিত্র দেখার প্রচুর দর্শক তৈরী করবে(খারাপ চলচ্চিত্র দর্শক হারাবে)
ঘ. সিনেমা হলের বাইরে চলচ্চিত্র প্রদর্শনের বিকিল্প অনেক ভেন্যু তৈরী হবে
ঙ. চর্চার মধ্য থেকে আনেক সম্ভাবনাময় নির্মাতা তৈরী হতে পারে

৯.
আর একজন চলচ্চিত্র সংসদকর্মী হলে যা লাভ
ক. সে সিনেমায় টাকা খাটালে ভাল সিনেমায় টাকা খাটাবেন
খ. অভিনেতা হলে ভাল চলচ্চিত্রের ভাল অভিনেতা হবেন
গ. নির্মাতা হলে সুস্থ্য ধারার চলচ্চিত্রের নির্মাতা হবেন
ঘ. ক্যামেরা করলে ভাল ভাল চলচ্চিত্রের ভাল ক্যামেরা করবেন
ঙ. জীবনের ক্যারিয়ারে চলচ্চিত্র না থাকলেও আজীবন ভাল চলচ্চিত্রের পৃষ্ঠপোষকতা ও রস আস্বাদন করে যাবেন

২,৩১১ বার দেখা হয়েছে

২০ টি মন্তব্য : “সাম্প্রতিক চলচ্চিত্র ভাবনা”

  1. সাইফ (৯৪-০০)

    টিটো,তোর সব কথাই সমর্থন করি।সেই সাথে আরেকটু যোগ করছি...............।চলচ্চিত্র সংসদ থাকার পাশাপাশি একটা ভালো ফীল্ম ইন্সটিটিঊট থাকা বেশি জরুরি।সংসদ গুলি চলচ্চিত্রগুলাকে প্রচার প্রসারে সামাজিক আন্দোলনে এগিয়ে নিয়ে সমাজে গতিশীলতা এনে দিবে,যেকোন কাজে পেশাদিরিত্ব আনতে হলে ভালভাবে সেটকে জানতে হবে.।।.।।..।..।...।আজকাল যেই অবস্থা একটু পয়সা হলেই সবাই মিডিয়ার দিকে ঝুক্তে চাই্,্‌্‌্‌্‌তার কিছু থাকুক বা নাই থাকুক।।টেলিকমগুলা মুক্তিযুদ্ধ আর সাধারণ মানুষের আবেগ বেচে ভাল ব্যবসা করবে কিন্তু তুই যদি কোন ভাল ছবি বানানোর প্রস্তাব দিস তাতে রাজি হবে.।.।....।.......।।...।।...।।...।।...আর আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল আমরা কেউ পরিশ্রম করে খেতে চাই না,চলচ্চিত্র সংসদ এ যারা আছে তাদের কয়জন মনে প্রাণে dedicated amar সন্দেহ আছে,যে দেশে ব্লাড ডোনেশন প্রগ্রাম এর নাম করে অনেকেই টাকা হাতিয়ে নেয়,কিংবা ছোটখাট কবিতা উতসবের নাম করেও পয়সা কামানোর ধান্ধা থাকে...।.........।সে দেশে পেশাদারিত্ব কিভাবে গড়ে উঠবে আমার বোধগম্য নয়।আমাদের চেতনা ও বোধশক্তিতে পরিবর্তন না আসলে কিছুই হবে না।

    জবাব দিন
  2. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)
    সিস্টেমের বাইরে থেকে কখনও সিস্টেম পরিবর্তন করা যায় না।

    শতভাগ সহমত।আমি চলচ্চিত্র বোদ্ধা নই, অতি সাধারণ একজন দর্শক মাত্র-কিন্তু একদিন "রং দে বাসন্তী"র মত ছবি আমাদের দেশে হবে(জানি আমার উদাহরণটা হয়তো বোদ্ধাদের কাছে বালখিল্যদের মত হয়ে গেল-কিন্তু মুভিটা আমার খুবই ভাল লেগেছে বলে বললাম)আর আমরা দল বেঁধে সেটা দেখতে যাব-এই আশা করাটা কি খুব বাড়াবাড়ি কিছু?আমার ছোটবোন আর কাজিন ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ে দেখে ওদেরকে আমাদের দেশীয় ইতিহাসের সাথে আরো ভালভাবে পরিচয় করাতে আম্মু আব্বু নিয়ে গিয়েছিল "অস্তিত্বে আমার দেশ"সিনেমাটি দেখাতে।মতিউরের আত্মত্যাগ দেখে হলের ভেতরে যেভাবে ঝর ঝর করে কেঁদেছে ওরা দুজন-এর পরে ওদের স্বদেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন করতে লজ্জা লাগছিল।এই যে এদের বয়েসি ছেলেমেগুলোকে আমরা ভাল সাংস্কৃতিক উপাদান(চলচ্চিত্র যার মধ্যে অন্যতম)সরবরাহ না করিয়ে সরাসরি ডিজুস প্রজন্ম হিসেবে হাসাহাসি করছি-এটা কি আমাদেরই এক ধরণের সীমাবদ্ধতা প্রকাশ করেনা?

    টিটো ভাইকে অনেক ধন্যবাদ এরকম এক্টি লেখার জন্যে যেখানে শুধু সমস্যা নয় বরং সমাধানের কথাও বলা আছে।আশায় বুক বেঁধে রইলাম এর বাস্তবায়নের প্রতীক্ষায়...

    জবাব দিন
  3. সায়েদ (১৯৯২-১৯৯৮)

    লেখাটা যথেষ্ট ওজনদার হয়েছে :clap: ।
    ভালো মুভি ভালো লাগে বলেই মনে হয় লেখাটা না থেমেই আগাগোড়া পড়ে ফেললাম।
    আমার একটা স্বপ্ন আছে : ১৯৭১ নিয়ে "সেভিং প্রাইভেট রায়ান" বা "ব্যান্ড অফ ব্রাদার্সে"র মতোন মুভি দেখব - আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের গল্প দেখব।

    টিটো, তোমার লেখাটায় আমার সেই স্বপ্ন পূরণের ইঙ্গিত পাচ্ছি।


    Life is Mad.

    জবাব দিন
  4. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    সায়েদ ভাই মাশা-আল্লাহ বেশ ফর্সা দেখতে তাই উনারে সেই ফিলিমে তরুন পাক আর্মি ক্যাপ্টেনের চরিত্রে দেওন যাইতে পারে যে কিনা মুক্তিযোদ্ধাদের "কজ" কে মনে মনে সমর্থন করবেন,আর সায়েদ মামী হবেন লাহোরে বসবাসকারী উনার স্ত্রী যাকে উনি ক্যাম্প থিকা চিঠি লিখবেন 😀

    অফ টপিক-আমারে সায়েদ ভাইয়ের হাত থিকা বাঁচাও সিসিবিবাসী নাইলে তোমাদের প্রিয় মাসরুফের এইখানেই তি এন্ড হয়া যাইবো :((

    জবাব দিন
  5. হাসনাইন (৯৯-০৫)

    এক্কেরে সব সত্যি।

    "ছবি তৈরির সর্বোচ্চ মূল্য পঁচিশ লক্ষ টাকা মাত্র যেখানে দেশে বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনই বানানো হয়েছে কোটি টাকায়। "
    -আমার ধারণা আরও কম ছিল।

    জবাব দিন
  6. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    টিটোর লেখাটা খুবই ভালো লাগছে। :boss:

    গতিহীন দু;খ কষ্টের ছড়াছড়ি, মধ্যবিত্ত টানাপোড়েন নয়ত ঈষr সংক্ষেপিত মুক্তিযুদ্ধ। একজন কর্মজীবি মানুষ সে যে শ্রেনীরই হোক না কেন দিন শেষে কর্মক্লান্তির পর দাম দিয়ে (টিকিট কেটে) দু;খ কষ্ট দেখতে কেন যাবে? তার জীবনে কি দুঃখ কষ্টের কমতি হচ্ছে?

    এই অংশটার সাথে হালকা দ্বিমত আছে। নিজের মতামতটা দিচ্ছি একটু পরে। বাকি সবকিছুই যুক্তিযুক্ত এবং চিন্তাভাবনার খোরাকসমৃদ্ধ। :clap: :clap:

    আর আমাদের দেশের মতো দেশে ফিল্ম ইন্সটিটিউট সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা উচিৎ, কেননা বেসরকারি খাতে এটিও যথারীতি বাণিজ্যে পরিণত হয়েছে। আর সরকারী খাতের সবচেয়ে হতাশার কথা হলো, বর্তমানের গণমাধ্যম ইন্সটিটিউটকেই জাতীয় ফিল্ম ইন্সটিটিউট বানানোর প্রক্রিয়া চলছে। এই গণমাধ্যম ইন্সটিটিউট বা যেটি নিমকো বা এন আই এম সি নামে পরিচিত, এর স্টাফ এবং কর্তাদের সবার কোয়ালিফিকেশন দেখলেই বোঝা যাবে এটি কি হতে যাচ্ছে। [এটি নিয়ে আরো বিস্তারিত লেখার ইচ্ছা আছে] আর বেসরকারি পর্যায়ে হাতে গোণা দুয়েকটি জায়গায় স্বল্পমেয়াদী ডিপ্লোমাজাতীয় এ্যাপ্রিসিয়েশন টাইপের কিছু কোর্স আছে যেগুলো আসলে পর্যাপ্ত নয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে কেবলমাত্র একটিতে ফিল্মের উপর স্নাতক কোর্স চালু আছে, যেটি আসলে টাকার বিচারে অনেকেরই হাতের বাইরে। তারউপর এখানে ফিল্ম শেখার বদলে ক্লোজআপ মিডিয়াতে রাতারাতি নাম কামানোর ইচ্ছায় আগতদের সংখ্যাই বেশি। [যেহেতু আমাদের সিসিবি একটি পূর্ণাংগ ব্লগে পরিণত হচ্ছে তাই এবিষয়টি নিয়েও আরো বিস্তারিত লেখার ইচ্ছা আছে ;)] আগে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় পুনে কিংবা অন্যান্য নামকরা ফিল্ম স্কুলগুলোতে সেদেশিয় সরকারের বৃত্তি নিয়ে উচ্চশিক্ষার একটা সুযোগ ছিলো, সেটিও পরবর্তি সরকারগুলোর অবহেলায় বন্ধ হয়ে আছে। তবে আশাবাদী হতে হয় ডিজিটালে তরুণ মেকারদের চেষ্টাটা দেখলে। দেখা যাক।


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
  7. টিটো রহমান (৯৪-০০)

    @সাইফ
    ভালো একিট ফীল্ম ইন্সটিটিঊট গড়ে ওঠা সত্যিই অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার দোস্ত।আর্থিক বা টেকনিক্যাল বিষয় বাদ দিয়েই বলি যে এই সকল ইনিস্টিটিউটে ক্লাস নিবে কে?তা মো (তানভীর মোকাম্মেল,আমার দেখামতে সে ই সবচেয়ে ভাল ক্লাস নেয়)? সেও পড়ে আছে ৮৫ সালে ফিল্ম আর্কাইভ(তারেক মাসুদ, মোরশেদুল ইসলামও একই কোর্স করে ডিরেক্টর) যে কোর্স করাইছিল সেই আমলে। প্রতিটি ক্লাসে সে জোক পর্যন্ত কপি করে। একদম মুখস্থ বিদ্যা ঝারে।

    আর জানি দোস্ত ফিল্ম ইনিস্টিটিউটের বিকল্প নাই( ইস! কেন যে আমার ৪০০ কোটি টাকা নাই। একবার হিসাব করছিলাম) 😀


    আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রেজওয়ান (৯৯-০৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।