একজন গল্প বহনকারী মানুষের গল্প

তোয়ালে ছেড়ে দীপ্র যখন আন্ডারওয়্যার পড়ল তখন ঘড়িত ন’টা বেজে তিন। সদ্য সে গোসল সেরে বেরিয়েছে। এখনও চুল ভেজা।
তার আন্ডারওয়্যারটির রং কালো। অনকে বাছাই করে আলমিরায় অপেক্ষাকৃত কম ময়লা এটাকেই পেল সে। বেকারদের পরিচ্ছন্ন থাকা বাধ্যতামূলক নয়।
এই যে তার কালো আন্ডারওয়্যারটি তার জীবনের সাথে যুক্ত হয়েছে সেটা কিন্তু বেশি দিন আগে নয়। একমাস হতে এখনও তিন দিন বাকী। টিউশানী থেকে ফিরছিল সে। হঠাৎ যুব তাকে ফোন দেয়। যুব মানে যুবায়ের। বন্ধু। সে এলিফেন্ট রোডে আছে। খুব দ্রুত যেন সেখানে চলে আসে। কিছু জামা কাপড় কিনবে সে। দিপ্রর মত চাছাছোলা দরদাম সে করতে পারে না।
তা যুবর কিছুই কেনা হল না, তার হল। আগেরদিন টিউশানির টাকা পেয়েছে। পকেট গরম।কিছু একটা কেনার জন্য মন উসখুস করছিল। সামনের ফুটপাথে ছিল এসবের দোকান। সে যেন গেঞ্জি খুঁজছিল। আসলে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে তার চোখ ছিল মেয়েদের অন্তর্বাসের প্যাকেটের দিকেই। দারুণ ফিগারের সব মেয়ে। সেসব দেখতেই হঠাৎ এই আন্ডারয়্যারের প্যাকেটের দিকে চোখ যায়। খেয়াল হয়, তার আন্ডারয়্যারগুলি পুরোনো হয়ে গিয়েছে। একটা নতুন কিনলে মন্দ হয় না। জোকির একটা আন্ডারওয়্যার কিনল সে। কুড়ি টাকার জিনিসে একশ টাকা খসে গেল। তাতে কি? অনেকদিন থেকেই একটা ব্রান্ডের আন্ডারয়্যার কেনার শখ ছিল তার। তবে ঠিক ওই মুহূর্তে না হলেও চলত। তা বেকার মানুষ বলে একটু আধটু শখ তার থাকবে না, এ বা কেমন কথা।
অবশ্য গত পরশু সে আবিষ্কার করেছে এটা আসল জোকি নয়। কারণ ভেতরে একটা স্টীকার পেয়েছে অন্য কোম্পানীর। জোড়া তালির জিনিস। মনটাই খারাপ হযে গিয়েছিল তার।
তবু আজ সকালে সে এটাই পড়েছে কারণ অপেক্ষাকৃত এটাই কম ময়লা এবং দাম দিয়ে কেনা জিনিস পড়লে মনে স্ফুর্তি আসে।

আন্ডারওয়্যার পড়া হলে এবার সে অফ হোয়াইট প্যান্টটা টেনে নেয। এটি তার একমাত্র ফর্মাল প্যান্ট। বাইরের কাপড়। অবশ্য তার জন্য আসেনি। এসেছিল তার বড় ভাই রবির জন্য। ভাবির কোন মামা ইতালীতে স্যাটেলড। সেখান থেকেই পাঠানো।
দিপ্র একা মানুষ, তার ভাইয়ের সংসারে বাহুল্য স্বরূপ। তা তারই বা উপায় কি ছিল? ভার্সিটিতে মাস্টার্স শেষ করার পর হলে যে আর থাকা গেল না। বাইরে যে খরচ! একটা টিউশানীতে পোষানো যায় না। পরে অবশ্য বাবাই এই ব্যবস্থা করেছেন। মাসে মাসে গ্রাম থেকে দু হাজার করে টাকা পাঠাচ্ছেন থাকার বিনিময়ে। টিউশানীর টাকায় তার কোন মতে হাত খরচটা হয়ে যায়। ভাবীর অবশ্য তার এখানে থাকা পছন্দ নয়, এমনকি মাসে মাসে বাবা যে টাকা পাঠান সেটাও পছন্দ নয়। তার ধারণা, এগুলি তার ভাইকে পরিবারের প্রতি দায়বদ্ধ করার কৌশল মাত্র।
তা হোক, ভাইয়া তার চাকরীর আগ পর্যন্ত সময় চেয়ে নিয়েছেন। ভাবী তাই নিজের চাকরী না খুঁজে তার চাকরী খোঁজায় বেশি তৎপর হয়েছন। ভাইয়াই তখন পরামর্শ দেয় ওকে বিদেশ পাঠাবার। ভাবীর যে মামা ইতালী থাকেন তার কাছেই তদবির করা হয়। সে মামা ভিসা না পাঠিয়ে বরং জামাই হিসেবে রবির জন্য স্যুটের কাপড় পাঠায়। এ নিয়ে ভাইয়ার সাথে ভাবীর কম ঝগড়া হয়নি। অবশেষে ভাইয়াকেই বরাবরের মত হার মানতে হয়। আর স্বান্তনা স্বরূপ তার কাছে আসে স্যুটের কাপড়। ভাবী অবশ্য ভাব ধরেছিল তার মামা তার জন্যই পাঠিয়েছে। হাসি মুখে বলেছিল
– এখন ইতালীতে বাঙালীদের উপর খুব চাপ। আগের ভিসাই বাতিল হযে যেতে পারে। মামা তাই পাঠাতে পারল না। সুযোগ থাকলে অবশ্যই পাঠাতো। দেখ না তোমার শুধু নাম শুনেছে, আর অমনি স্যুটের কাপড় পাঠিয়ে দিয়েছে।
দীপ্র মনে মনে হেসেছিল খুব। সে তো কিছু বোঝে না! কচি খোকা! সে চুপিচুপি তাদের ঝগড়াও যেন শোনেনি!
তবু দিপ্র নিযেছিল। বেকারদের অভিমানও থাকতে নেই। দিপ্র নিজের টাকায় পরে নীলক্ষেত থেকে প্যান্ট বানিয়ে নিযেছে। বাকী কাপড় এখনও তার আলমিরায়।

বেল্টটা কখনোই সে খুলে রাখে না। প্যান্টের সাথেই রাখে, যখন যেটা পরে। বারবার বেল্ট খুলতে ও পড়তে তার খুব আলস্য লাগে। আজ অবশ্য বেল্টটা বাইরেই। গতকাল নীল জিন্সটা ধুয়ে দিযেছে। আর পড়া যাচ্ছিল না ওটা। বেল্টটা তখনই খুলে রেখেছিল। বেল্টটা তার জীবনে যুক্ত হয়েছে দেড় বছর হবে। একটা ইন্টারভিউ ছিল জনতা ব্যাংকের। তা এত এত এমবিএ, বিবিএর এর ভীড়ে তার মত বাংলার ছেলে চান্স পায় কেমন করে?
এমনকি বেল্ট দিয়ে কোমর বেধে নামলেও নয়।
সাধারণ কাজের বাইরে একবারই সে বেল্টটাকে ব্যবহার করেছিল। হলের মারামারিতে। তার রুমমেট মেহেদী ভাই নির্দিষ্ট সময়ে রুম ছাড়ছিল না। আর সে না ছাড়লে পলিটিক্যাল একটা জুনিয়রকেও উঠানো যাচ্ছিল না। তাই সেকেন্ড ইয়ারের একছেলে তাকে এসে থ্রেট করে যায়, তার রুমেই। সে তখন মাস্টার্স ফাইনালে। পলিটিক্যাল বন্ধুদের সাথে পরামর্শ করে সেই ছেলেকে আচ্ছা ধোলাই দিল সে। এই কালো বেল্ট দিয়েই। তারপর দু গ্র“পে লেগে যায় ভীষণ। সিনিয়র হিসেবে তার পক্ষেই রায় যায়। কাজটা সে আরো এক উদ্দেশ্যে করেছিল। মেহেদী ভাই যাওয়ার পর তার রুমে আর কোন জুনিয়র ওঠেনি। সিঙ্গল রুমে একা বাদশাহী হালে কয়েকমাস কাটাতে পেরেছে। তবুও পলিটিক্যাল ব্যাকআপ নিয়ে আরো ক’বছর হলে কাটাতে পারত কিন্তু জল নিষেধ করেছে। শুধু শুধু গ্যাঞ্জাম করে লাভ কি?

বলতে না বলতেই জলের ফোন। সবে গেঞ্জিটা হাতে নিয়েছিল সে। আজকাল মোবাইলে বাহারী রিংটোন হযেছে। দীপ্রর এসব ভালো লাগে না। বরং ক্লাসিকাল টেলিফোনের আওয়াজ ভালো। সেই পুরোনো ক্রিং ক্রিং। ফোনটা ধরল ও
– হুম বল
– বের হইছ তুমি?
– এই তো সব রেডি, জাস্ট চুল আচড়াচ্ছিলাম
– আপনাকে চুল আচড়াতে হবে না। এলোমেলো চুলেই আপনাকে ভাল লাগে
– হুম এখন তাড়া আছে, তাই উল্টা সুর। অন্য সময় তো যখন তখন বল চুল আচড়াও, চুল আচড়াও
– হি হি। সে তো আমার আচড়ে দিতে ভাল লাগে, তাই বলি। খেয়াল কর তো একবারো তুমি আচড়াতে পেরেছ? আমিই তো দিয়েছি।
– হুম বহত খুব
– শোন আমি রওয়ানা দিয়েছি, তুমিও বের হও।
– আচ্ছা বাবা। একটা কিস
জল তার বন্ধু আবীরের কাজিন। প্রথম যখন পরিচয হয় তখন মেয়েটির সাদামাটা ভাব আর নামটা বেশি আকর্ষন করেছিল তাকে। কি সুন্দর নাম! জল। ও বলেওছিল
– তোমার বাবা মাকে একবার সালাম করতে চাই
জল তার কলো চোখে রাজ্যেও বিস্ময় এনে বলেছিল
– কেন?
– এত সুন্দর যারা মেয়ের নাম রাখতে পারেন তারা না জানি কত সুন্দর
শুনে কি দারুণ করে জল লজ্জা পেয়েছিল! দীপ্র এমন আর কখোনো দেখেনি। এক দেখাতেও যে প্রেমে পড়া যায় সেই প্রথম আবিষ্কার করে সে। আবীরের সহযোগিতায প্রেম হতে দেরী লাগেনি। জল বলল
– ঠিক টাইমে না আসলে কিস তো ভালো, কেমন করে ডিসমিস করতে হয় দেখাচ্ছি। রাখি।
সত্যি সত্যি ফোন রেখে দিল জল। ফোনের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে দীপ্র। এ মেয়েটার সব কিছুতেই আর্ট আছে।

তার মতই তার মুঠো ফোনটাও জোড়া তালি দেয়া। পুরানো হয়ে যাওয়ায় যুবায়ের এটা তার ছোট ভাইকে দিয়ে দিতে চেযেছিল। অনেকটা জোর করেই অল্প টাকায় সে এটা যুবাযেরের কাছ থেকে কিনে নেয়। সিমটা অবশ্য জলের দেয়া।

ফোন রেখে ও স্যান্ডো গেঞ্জি পড়ে নেয়। আন্ডারয়ারটার সাথেই এটা কেনা হয়েছিল সেদিন। ওর ধারণা এটা অন্তত আসল ক্রোকোডাইল। সাধারণত ও গেঞ্জি পড়ে না। পড়তে ভালোও লাগে না। তবে আজ পড়ছে। কারণ আজ ইন করবে সে। গেঞ্জি পড়লে ইনটা পরফেক্ট হয়। আজ ওদের প্রেমের এক বছর। বিশেষ প্লান আছে আজ। আশুলিয়ায় সারাদিন নৌকায় বেড়াবে।

গেঞ্জির উপর কালো শার্ট চাপায় দীপ্র। সুতি। অফ হোয়াইট আর কালোর কম্বিনেশন ভালো। আর এমনিতেও নিচে হালকা রং পড়লে উপরে ডিপ পড়তে হয়। এই শার্টটাও জলের দেয়া। শার্ট পেয়ে ও বলেছিল
– আমার মত অপদার্থের সাথে প্রেম হবার শোকে এটা দিলা
জল হেসে বলেছিল
– হুম।
পরে একদিন অবশ্য বলেছিল
– আমি জানতাম কালো রঙে তোমাকে অদ্ভুত মানাবে
তা প্রিয় জিনিসেই চোট লাগে তাড়াতাড়ি। একদিন সিগারেট খেতে গিয়ে ঠিকই পুড়িযে ফেলল সে। ভাগ্যিস নিচের দিকটা পুড়েছিল। ইন করে পড়লে দেখা যায় না আর।

প্যান্টে দ্রুত শার্ট আর গেঞ্জি গুজে আয়নায় এক ঝলক দেখে নিল নিজেকে। তারপর আরো দ্রুত হাতে কালো সু টা পড়তে শুরু করল। মোজা পড়তে তার ভাল লাগে না। তার প্রচন্ড পা ঘামে। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা সব সময়ই তাই সে মোজা পরিহার করে চলে। শুধু জুতো পড়লে মাঝে মাঝে হয়ত পা বেরিয়ে যায় ঠিকই তবে তাতে তার বিশেষ খারাপ লাগে না। সে দেখেছে মোজা পড়লে পা বেশ ফর্সা লাগে কিন্তু শুধু সু তে পা আরো ময়লা হয়ে যায়। সে নিজে কখনও সু কেনেনি। তবে স্যান্ডেলটা কেনে সে দাম দিয়ে। ওটাই হয় তার একমাত্র জুতো। তা একবার ভাবীর দিককার কোন এক বিয়ের অনুষ্ঠানে ভদ্রস্থ হয়ে যেতে হবে বলে ভাইয়া এটা তাকে দিয়েছিল। পরে আর ফেরত দেয়া হয়নি।

জুতো পড়ে একটু সুগন্ধি মাখলো। সুগন্ধি বলতে ডেনিম আফটার শেভ। জল এক তরল মুহূর্তে তাকে বলেছিল আফটার শেভের গন্ধটা তার ভাল লাগে। তখনই বুদ্ধিটা আসে। আফটার শেভটা তাই একটু দাম দিয়ে কেনে। কোথাও বেরোবার আগে হাতের তালুতে ঢেলে জামায় ঘষে নেয়। তখন সুগন্ধির কাজ করে।

এরপর ঘড়ি। এটা সে নতুন পড়তে শুরু করেছে। গিফট। খালা এই বাসায় বেড়াতে এসে দিয়ে গেছেন। পড়ার পর তার এটাও মনে হচ্ছে যে, ঘড়ি জিনিসটা একবারে খারাপ না। এতদিন শুধুশুধুই পড়েনি সে। কেমন ব্রেসলেট ব্রেসলেট অনুভূতি হয়। সত্যিকারের ব্রেসলেট জল তাকে জীবনেও পড়তে দেবে না। তবে একটা সমস্যা তার হয়েছে। ইদানিং যখন তখন চোখ চলে যায় বাম হাতে। কেউ সময় না জিজ্ঞেস করলেও।

সকালে কিছু না খেয়েই বের হল সে। আগে জল, পরে খাবার। এ জন্যই বোধ হয় ‘জলখাবার’ শব্দটিতে জল আগে থাকে। বাসার নিচে নেমেই রিকশা পেয়ে যায়। ভাবী বাসায নেই। সম্ভবত বাজারে। তার বর্হিমুখী একমাত্র কাজ।
দীপ্রর গন্তব্য শুক্রাবাদ। জল এসে মেট্রোর সামনে অপেক্ষা করবে। সেখানে কেউ দেখে ফেললেও জলের কোন ভয় নেই। সামনেই তার ইউনিভার্সিটি।

দীপ্র রিকশায় উঠে পকেট থেকে কালো রঙের সস্তা হেড ফোন বের করে কানে পুরল। তবে হেডফোনের গোড়ার মালটা ফাটাফাটি। অ্যাপল আইপড। সাদা। কেমন চকলেটের মত। কম্পিউটার মেলার শেষ দিনে সবাই যখন নিজেদের দোকান গোছাতে ব্যস্ত, তখন ওরা ক বন্ধু মিলে সেখানে গিয়েছিল। তখন কেবল নামার এক্সিলেটরই চালু আছে। তারা তাতেই উল্টো বেয়ে উঠেছিল। বেশ মজা। যতটুকু ওঠে ঠিক ততটুকুই যেন নেমে যায়। তা তারা গিয়েই ছিল চুরির প্লান নিয়ে। একদল কোন কিছু দেখার ছলে ভীড় করবে, আর একজন এই ফাঁকে কাজ সারবে। সে সবচেয়ে সফল হয়েছিল। আইপড মেরে দেযা সহজ কথা নয়। তবে সাফল্যের মাশুল স্বরূপ বন্ধুদের পিছনে খরচ করতে হয়েছিল কিছু ।

মাঝপথে জলের মেসেজ, I am @metro. Come sharp
তা রিকশা কি আর সে চালাচ্ছে যে শার্প বললেই উড়ে যাবে।

মানিব্যাগের ভেতর সে চারখানা পাঁচশ টাকার নোট নিয়ে বেড়িয়েছে। জমিয়ে রেখেছিল এ দিনটির জন্যই। টাকাটা ভাঙানো দরকার।
তার মানিব্যাগটা চামরার। অরিজিনাল। রঙ কালো। দেখা যাচ্ছে দীপ্র কালোর খুবই ভক্ত। অথচ তার প্রিয় রং নীল। জলের চোখে মাঝে মাঝে সে রং খেলা করতে দেখেছে।
মিনিব্যাগের গল্পটা এমন।
তার এক পরিচিত বড় ভাই কর্পোরেটদের গিফট আইটেম সাপ্লাই দেয়। সে হিসেবেই বৃটিশ আমেরিকান টোবাকোর একটা চালান পেয়েছিল। দীপ্রকে পাঠিয়েছিল খোঁজ নিতে। তখন মিরপুরে সে একটা ভাল ফ্যাক্টরির খোঁজ পায়। দারুণ সব জিনিস। বেশিরভাগই বিদেশ যায়। দু’মাসের আগে ওদের কাছে অর্ডার দিতে হয়। সে রকম ভীড়। বড় ভাই স্যাম্পলের জন্য কিছু টাকা দিয়েছিলেন। সেই টাকায় একটা বাড়তি পাওয়া গেল। পকেটস্থ করতে আর দেরী করেনি ও। একবার সে এটা এক কফি শপে ফেলে এসেছিল। দুঃখে তার অন্তর ফেটে গিয়েছিল। কফিশপের লোকেরা ওটা নাকি পায়নি। তিনদিন পর জল হঠাৎ পার্স থেকে বের করে দেয়। সঙ্গে উপদেশ
– এরপর মানিব্যাগ হারালে মেযেদের পার্স কিনে দেব।যাতে ঝুলিয়ে রাখতে পার।
কফি শপে ও ফেলে আসার পর জলই তুলে এনেছিল।

এই মুহূর্তে এসবের বাইরে তার পকেটে একটা পার্কার কলম আছে। যথারীতি জলের দেয়া। কথা ছিল প্রতিদিন একটা করে চিঠি লিখতে হবে। কয়েকদিন দিয়েও ছিল। তারপর ভাটা পড়েছে। তবু পকেটে রাখে, কখন কোথায় লেগে যায় বলা তো যায় না। বিশেষত যখন ফোন নম্বর টুকে নেয় বা কেউ কলম জনিত সাহায্য চায়। তখন বেশ ভাবের সাথে সে এটা বের করে। ওপাশ থেকে তখন নিশ্চিত মন্তব্য আসে, বাহ কলমটা দারুণ তো।

দীপ্র তখন শুনছিল স্টীং এর গান। ব্যক্তি স্টীংকে তার ভাল লাগে না। কারণ পোলিস ব্যান্ড এর এই ভোকাল একজন ঘোর আমেরিকাবাদী মানুষ। ওই দেশেরই একজন কবি এ্যালান গিন্সবার্গের সে ভীষণ ভক্ত। তার চমৎকার সাম্যের কথা ওর মনে দোলা দেয়।। তাই স্টীংকে পছন্দ করার কোন কারণ তার নেই। তবে স্টীংয়ের ‘ওয়াকিং অন দ্যা মুন’ এবং ‘রাশিয়ান’ গান দু’টো ওর দারুণ লাগে। এ মুহূর্তে ওয়াকিং অন দ্যা মুন শুনছিল। আর রিকশাওয়ালা মোড় ঘুরছিল ডানে। ঠিক তখনই এগার নম্বর বাসটা দিকহারা হয়ে তাদের চাপা দিয়ে দ্রুত অদৃশ্য হল। চারপাশে হঠাৎ হাহাকারের রব উঠল। কিন্তু ….কিন্তু..

জানলো না বাসটা, জানল না বাসের ড্রাইভার কিংবা এখনকার উৎসুক জনতা, একজন মানুষের সাথে তার কত গল্প যে চাপা পড়ে গেল।

রাস্তায় তখন ছড়িযে ছিটিয়ে দীপ্রর লাশ। ছড়িয়ে ছিটিয়ে তার ব্যবহার্য জিসিনপত্র। কেউ কেউ হয়ত তুলেও নেবে সেসব। শুরু হবে আবার নতুন গল্প, নতুন কোন মানুষের।
একটু দূরে কিছু ফুলও অবিন্যাস্ত ভাবে পড়ে আছে। এগুলি কিন্তু পড়েই থাকবে। এটার গল্প তার জীবনে মাত্রই যুক্ত হয়েছিল। এমনিতে তার ফুল কেনার অভ্যেস নেই। অনেকটা টাকা ভাংতির ছলেই সে ফুলগুলি কিনেছিল। ভেবেছিল, তার হাতে ফুল দেখে কি দারুণ চমকে যাবে জল! কি দারুণ করে অবাক হবে সে! পৃথিবীর আর কোন মেয়ে তারমত এমন সর্বর্শরীরে বিস্ময় প্রকাশ করতে পারে না। তারপর ফুলগুলি কেমন আদুরে ভঙ্গিতে লুফে নিবে। ঠোট ছোঁয়াবে। ফুলের ছোঁয়ায় ফুলগুলি আরো সুবাস ছড়াবে।
সুবাস এখনও ছড়াচ্ছে। তবে সে সুবাস মেট্রোতে পৌঁছে যাবার সম্ভাবনা ক্ষীণ।

৮,০৮৩ বার দেখা হয়েছে

৭৬ টি মন্তব্য : “একজন গল্প বহনকারী মানুষের গল্প”

  1. তানভীর (৯৪-০০)

    দোস্ত, লেখা তো সুন্দর আগাইতেসিল, হঠাৎ করে শেষ করে দিলি কেন? ধাক্কা খেয়েছি লেখাটা পড়ে।
    জানি তুই খুব ব্যস্ততার মধ্যে লিখিস, তারপরও বলি আরেকটু সময় দিয়ে লিখিস!

    লেখার ভঙ্গীটা চমৎকার। :clap: :clap:

    জবাব দিন
    • তানভীর (৯৪-০০)

      দোস্ত, প্রথম অংশের লেখাগুলা অনেক বর্ণনাত্ত্বক, বোরিং অর্থে না, ভালো অর্থে। লেখা পড়ে মনে হচ্ছিল আরো অনেক কাহিনী থাকবে, কিন্তু হঠাৎ করেই কাহিনীর প্লট ঘুরে গেল। এই জিনিসটা এত তাড়াতাড়ি হয়ে গেছে যে বেশ ধাক্কা খেতে হয়েছ। এইটা হয়ত আমার মনোযোগ দিয়ে না পড়ারই ফল, তাই আগের কমেন্টটা এরকম হয়েছে। মাইন্ড করিস না প্লিজ।
      এই গল্পের শেষ প্যারাটা অসাধারণ হয়েছে, ওইটা নিয়ে আমি আসলে কিছু বলিনাই। আমি শুধু দুর্ঘটনার অংশটুকুর কথা বলছিলাম।

      জবাব দিন
  2. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    আমার পুরোটাই খুব ভাল লেগেছে... :clap: :clap:

    কেউ কেউ হয়ত তুলেও নেবে সেসব। শুরু হবে আবার নতুন গল্প, নতুন কোন মানুষের।

    এই লাইনটা...
    জটিল...!!!!!! :salute:


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
  3. টিটো রহমান (৯৪-০০)

    @ জুনায়েদ

    জানলো না বাসটা, জানল না বাসের ড্রাইভার কিংবা এখনকার উৎসুক জনতা, একজন মানুষের সাথে তার কত গল্প যে চাপা পড়ে গেল।

    &
    কেউ কেউ হয়ত তুলেও নেবে সেসব। শুরু হবে আবার নতুন গল্প, নতুন কোন মানুষের।

    এই দুটো লাইন ই মূলত থিম।
    সত্যি আমরা প্রতিদিন অসংখ্য গল্প নিযে ঘুরছি না??

    থ্যাংকস জুনা


    আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই

    জবাব দিন
  4. একজন মানুষের সাথে তার কত গল্প যে চাপা পড়ে গেল।
    কেউ কেউ হয়ত তুলেও নেবে সেসব। শুরু হবে আবার নতুন গল্প, নতুন কোন মানুষের।

    গল্পটা ভালো লেগেছে তারচেয়ে বেশি ভালো এই থিমটা।

    জবাব দিন
  5. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    ফাটাফাটি।
    সাধে কি আর বলি আমার প্রিয় কথা সাহিত্যিকদের অন্যতম টিটো :boss: :boss:

    গল্পের থিমটা সেরকম। সবচে ভাল্লাগছে শিরোনামটা
    একজন গল্প বহনকারী মানুষের গল্প
    পুরো গল্পটাই মনে হয় বলে দিচ্ছে শিরোনামটা :thumbup: :thumbup:

    সাব্বাশ টিটো :salute: :salute:

    ইশ তোরে কেকের পুরা পিসটাই দিয়া দেয়া উচিৎ আছিলোরে 😉


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
  6. শহীদ (১৯৯৪-২০০০)

    আমার সবচে ভাল লেগেছে বর্ণনাভঙ্গিটা। এত সুন্দর, অসাধারণ আর সাবলীল। আর মাইনর ডিটেইলস গুলো দিয়ে একদম ভিতরে ঢুকে যাওয়াটাও চোখে পড়ার মত...
    সাবাস দোস্ত :clap:

    তবে, আমার খুব জানতে ইচ্ছে করছে - এর উল্টোটা কেমন লাগবে? মানে, ধীরে ধীরে খারাপ একটা পরিণতির দিকে এগিয়ে যেতে যেতে অপ্রত্যাশিত ভাবে অসাধারণ কিছু পাওয়া... টিটো সহ সকল খ্যাতিমান গল্পকার দের কাছে এরকম একটা গল্পর প্রত্যাশা রইল :-B

    জবাব দিন
    • তানভীর (৯৪-০০)
      তবে, আমার খুব জানতে ইচ্ছে করছে - এর উল্টোটা কেমন লাগবে? মানে, ধীরে ধীরে খারাপ একটা পরিণতির দিকে এগিয়ে যেতে যেতে অপ্রত্যাশিত ভাবে অসাধারণ কিছু পাওয়া… টিটো সহ সকল খ্যাতিমান গল্পকার দের কাছে এরকম একটা গল্পর প্রত্যাশা রইল

      শহীদ, আমিও তোর সাথে একমত! অনেকটা Serendipity ধরনের।

      জবাব দিন
  7. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    টিটো, তোমার গল্পের ভেতরের গল্পগুলো পড়তে পড়তে আমার এমন একটা আশঙ্কাই হচ্ছিল। দীপ্রর আন্ডারওয়ার, গেঞ্জি, প্যান্ট, শার্ট, মানিব্যাগ, কলম, ভাই-ভাবী তাদের মামা, এমনকি আফটার শেভটাও বাদ যায়নি। কতো গল্প! মানুষের জীবনটা আসলে গল্পেই ঠাসা। কতো বিস্তারিত কাজ! দারুণ লাগলো!! :hatsoff:


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
  8. মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

    মুক্তিযুদ্ধের গল্পটা পড়েই বলেছিলাম, ডিটেলের কাজে মুগ্ধ হয়েছি। এবারও প্রথম থেকে সব খুটিনাটির বর্ণনা ভাল লাগছিল। সাথে এটাও বুঝতে পারছিলাম যে, সামনে কিছু একটা অপেক্ষা করছে। নয়ত শুধু শুধু এক অতি সাধারণ মানুষের অতি সাধারণ কাজ কারবারের এত বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া হবে কেন? আরও ভাল লেগেছে এই দেখে যে, যখন অপ্রত্যাশিত কিছু একটা এসে পড়ার সন্দেহ করছিলাম তখনই এসে গেছে। মুক্তিযুদ্ধের গল্পটা একটু তাড়াহুড়োতে শেষ হয়েছে মনে হলেও এটাতে সেরকম কিছু মনে হয়নি। এ ধরণের গল্পে বোধহয় প্রথমে ঢিলেঢালা তারপর হঠাৎ করে সবকিছু এলোমেলো হয়ে যাওয়াটাই মানায়।
    তারেক (কনফু) ভাইয়ের একটা ধাক্কামূলক গল্পের স্টাইলও বোধহয় এরকম ছিল। ঐ যে, ইঁদুর মারা থেকে শুরু হয়ে একজন আপাদমস্তক মানুষের মৃত্যুতে গিয়ে যে গল্পটা শেষ হয়েছিল, নাম মনে আসছে না।

    থিমটা খুব সুন্দর। নামের মাধ্যমেও সেটা খুব ভালভাবে প্রকাশ পেয়েছে।

    জবাব দিন
  9. টিটো ভাই,আমার বাসা মেট্রো থেকে খুব কাছে।সত্যি বলছি-এই গল্প পড়ার পর আমার চোখ এদিক ওদিক খুঁজবে-কোথায় দীপ্র??এই মাত্র আমাকে পাশ কাটিইয়ে যাওয়া ছেলেটি না তো?
    রাখ ঢাক না রেখে সত্যিটা বলেই ফেলি।
    আই এম ব্লাডি জেলাস অফ ইউ,টিটো ভাই!

    জবাব দিন
  10. এইবার আরেকটা কথা বলি-হৃদয়ের আবেগ চেপে রাখাটা আমার স্বভাব নয়।চারপাশে যখন নানা ক্ষুদ্রতা,স্বার্থপরতা আর অসঙ্গতি দেখি তখন মনটা বড্ড খারাপ হয়।আর তখন আমি ভাবি সিসিবিতে পরিচয় হওয়া অসাধারণ কিছু মানুষের কথা।মনে পড়ে আহসান ভাইয়ের কথা-আমার জন্মদিনের উপহার হিসেবে যিনি প্যারাসুটে ভাসমান অবস্থায় জীবন বাজি রেখে আকাশ থেকে এসএমএস পাঠান।মনে পড়ে আরো সবার কথা(প্রত্যেককে আলাদা প্যারা হিসেবে এ নিয়ে একটা ব্লগ লিখব খুব শিগগিরি-পাঠক তখন বুঝবেন আমি অকারণে কারো প্রশংসা করছিনা)।

    কখনো কখনো নিজেকে যখন কোন কারণে খুব অসহায়,হীনমন্য লাগে-আমি তখন এই সিসিবির মানুষগুলোর কথা ভাবি।মনে করি এই তো কামরুল ভাই ঝাড়ি দিয়ে বলবেন-মাস্ফুর বাচ্চা তোর এত বড় সাহস আমার সামনে মন খারাপ করিস!পাশ থেকে মনে করি কাইয়ুম ভাইয়ের ধমক-যা লং আপ হইয়া থাক-হাঁটুর আনন্দ মাথায় আইসা পড়ব।

    বাংলা লিখতে যখন ভয় লাগে-আমি তখন টিটো ভাইয়ের কথা ভাবি।

    টিটো ভাই,আপনাকে সেলাম!আগামী জন্মে যেন আপনার মত গল্প লিখতে পারি!

    জবাব দিন
    • সায়েদ (১৯৯২-১৯৯৮)
      মনে পড়ে আহসান ভাইয়ের কথা-আমার জন্মদিনের উপহার হিসেবে যিনি প্যারাসুটে ভাসমান অবস্থায় জীবন বাজি রেখে আকাশ থেকে এসএমএস পাঠান।

      কও কি 😮 😮 ?????


      Life is Mad.

      জবাব দিন
      • মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

        আরে হ মামা!!!!!!আমি আমার জীবনে বহু উপহার পাইছি,যাস্ট ফ্রেন্ডদের কিছু কিছু উপহার তো মাশাআল্লাহ......ইয়ে মানে থাক,লিজ্জা লাগে.........

        কিন্তু আহসান ভাইয়ের এই উপহার আমার পাওয়া সেরা উপহার।দুই,তিন নাম্বার না-এক্কেবারে সেরা।প্রতিটা জাম্প ভার্জিন জাম্প এই কথাটা জানি।একটা মানুষ তার জীবন মরণের সন্ধিক্ষণে থাইকাও যে অনাত্মীয়(রক্তের সম্পর্ক অর্থে),মাত্র একবার দেখা হওয়া কাউকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা পাঠাইতে পারে-এইটা কেউ গল্পে লিখলে তারে চাপাবাজ কইতাম।
        থাক আর কিছু কমু না।আহসান ভাই লজ্জা পাবেন।

        জবাব দিন
  11. রকিব (০১-০৭)

    আই এম ব্লাডি জেলাস অফ ইউ,টিটো ভাই!

    আমিও 🙂 🙂
    আপনি খুব স্বার্থক ভাবে পাঠককে গল্পের জগতে ঢুকিয়ে নেন, নিজের অজান্তেই কখন যে দীপ্র'র সাথে মিশে গিয়েছিলাম টেরও পাইনি।
    অসাধারণ :boss: :boss:


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  12. রহমান (৯২-৯৮)

    সবার মন্তব্য পড়ে ফেলাতে বিপদেই পড়ে গেলাম। কি মন্তব্য করব? আমি এখন যেটাই বলতে যাব সেটাই কমন পড়ে যাবে ~x( । আনকমন কি বলা যায়, তাই চিন্তা করছি :dreamy:

    তোয়ালে ছেড়ে আন্ডারওয়্যার (অন্তর্বাস) দিয়ে টিটো গল্পের শুরুটা যেভাবে করেছে আমিও একই ভাবে গল্পের অন্তর্বাসে (মানে গল্পের অনেক গভীরে, অন্যকিছু ভাববেন না :-B ) ঢুকে গিয়েছিলাম। খুটিনাটি বিষয়গুলো এত সুন্দর ভাবে কিভাবে ফুটিয়ে তোলে এই ছেলেটা? শেষের দিকে হিরোকে মেরে ফেলায় অবশ্য কষ্ট পেয়েছি 🙁 । কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, এভাবে ফিনিশিং দেয়াতেই গল্পটার আকর্ষন বেড়ে গিয়েছে। গল্পটার এত গভীরে টিটো যে আমাকে নিয়ে যেতে পারল, আমি মনে করি এখানেই লেখকের সবচেয়ে বড় সার্থকতা। :thumbup: :thumbup:

    ওয়েলডান টিটো :clap: :clap:

    জবাব দিন
  13. তৌফিক (৯৬-০২)

    আন্ডারওয়্যার নিয়া এতো কথা বলতেছেন দেইখা প্রথমে একটু টাসকিত হইছিলাম। পরে দেখি না, টিটো ভাই তার নাম অক্ষুন্ন রেখে সেই রকম একটা গল্প ছেড়েছেন। 🙂

    জবাব দিন
  14. সায়েদ (১৯৯২-১৯৯৮)

    সকালেই গল্পটা দেখছিলাম। কিন্তু মাশাল্লা সাইজ দেখে আর ভিতরে ঢুকি নাই - ঐ অস্কার পাওয়া মুভি দেখার মতোন ব্যাপার আর কি। এবং অবধারিতভাবে আমার ভুল হয়নি।

    গল্পের নায়ক এতকিছু সাথে নিয়ে বের হচ্ছে কেন ভেবে অবাক হচ্ছিলাম। পরে ভাবলাম যে আমি ঘর থেকে বের হবার সময়ও তো মানিব্যাগ, রুমাল, মোবাইল, আইডি কার্ড, নোটবুক, কলম, হাতঘড়ি, চাবির রিং ইত্যাদি নিয়ে বের হই।

    ফিনিশিংটা ভালো লাগছে।

    তার হাতে ফুল দেখে কি দারুণ চমকে যাবে জল! কি দারুণ করে অবাক হবে সে। পৃথিবীর আর কোন মেয়ে তারমত এমন সর্বর্শরীরে বিস্ময় প্রকাশ করতে পারে না। তারপর ফুলগুলি কেমন আদুরে ভঙ্গিতে লুফে নিবে। ঠোট ছোঁয়াবে। ফুলের ছোঁয়ায় ফুলগুলি আরো সুবাস ছড়াবে।
    সুবাস এখনও ছড়াচ্ছে। তবে সে সুবাস মেট্রোতে পৌঁছে যাবার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।

    আফসোস বেড়ে গেল এই লাইন ক'টাতে। দুনিয়াটা কেমন যেন, তাই না?????


    Life is Mad.

    জবাব দিন
  15. সাকেব (মকক) (৯৩-৯৯)

    টিটো,
    শিরোনাম থেকে শুরু করে গল্পের গাথুনি, ডিটেইলস, ফিনিশিং- সর্বোপরি থিম; সবকিছু অসাধারণ!
    স্পেশাল ডিনারের কাবাবটা তোমাকে প্রতীকি অর্থে উৎসর্গ করলাম :hatsoff:

    অফটপিকঃ খাদ্য, ক্ষুধা এবং তৃপ্তি বিষয়ক গল্প-১ এর পরের পর্ব কবে আসবে?


    "আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
    আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"

    জবাব দিন
  16. নতুন কৈরা আরেকবার আপনের পাংখা হইলা টিটো ভাই... বস... :salute:
    গল্পের ভিতরে ঢুকে গিয়েছিলাম এক্কেবারে।

    সুবাস এখনও ছড়াচ্ছে। তবে সে সুবাস মেট্রোতে পৌঁছে যাবার সম্ভাবনা ক্ষীণ।

    এই লাইনটা পড়ে বুকে ধাক্কা লাগল।

    জবাব দিন
  17. তাইফুর (৯২-৯৮)

    দীর্ঘ অনুপস্থিতিতে এইরকম আর কত যে অসাধারণ লেখা "মিসেস" হয়া গ্যাছে ... কে জানে।
    দেরীতে হইলেও পইড়া ৫ দাগায়া গেলাম।


    পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
    মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : সাকেব (মকক) (৯৩-৯৯)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।