পথের পাঁচালীর পঞ্চাশ বছর-১

[ভাগ্য হয়েছিল কলকাতা আর বাংলাদেশের লেখা মিলিযে সত্যজিতের উপর একটি প্রকাশনা সম্পাদনা করার, ২০০৫ এ। তখনকার আমার একটি লেখা হুবহু তুলে দেয়ার চেষ্টা করছি।এটা প্রথম কিস্তি। যারা পথের পাঁচালী দেখেছেন আর দৃশ্যগুলো মনে আছে, আশা করি লেখাটি তাদের ভালো লাগবে। আর যারা দেখেননি তারা দয়া করে দেখে ফেলুন :dreamy: ]

১৯৫৫ সালের ২৬ আগস্ট। বিভূতিভূষণের কালজয়ী উপন্যাস `পথের পাঁচালী’র মুক্তি ঘটে নব রূপে, নব ধারায়, আধুনিক শিল্প মাধ্যমের মধ্য দিয়ে , সেলুলয়েডের ফিতেয়। সে হিসেবে ২০০৫ সালের আগস্টে চলচ্চিত্রটির বয়স পঞ্চাশ পেরিয়েছে। অথচ এত দীর্ঘ সময়েও বোদ্ধা দর্শকের কাছে এর আবেদন ক্ষয়ে যায়নি এতটুকু। কি অসাধারণ ধ্রুপদী গুণ থাকলে একটি চলচ্চিত্র সময়কে জয় করতে পারে!

পথের পাঁচালী চলচ্চিত্রটি এদেশের গ্রামীণ সমাজের খন্ডচিত্রের একটি সাধারণ সমাবেশ। একজন গ্রামের দর্শক দেখবেন এ তার পাশের বাড়ির কিংবা তার বাড়িরই কোন নিত্য ঘটনা। শহুরে বাবুটিরও মনে পড়ে যাবে অতীত জীবন কিংবা উচ্ছন্নে যাওয়া গ্রামকে বাঁচাতে ব্যবসায়িক স্বার্থে করা তার সাম্প্রতিক ট্যুরের কথা। মোদ্দাকথা একজন সাধারণ দর্শক পথের পাঁচালীতে পাবে চিরন্তন গ্রামীণ জীবনের চিত্র। কিন্তু জ্ঞানীদরে জন্য এতে রয়েছে গভীর চিন্তার বিষয়…….. :-B।

পথের পাঁচালীর কাজ শুরু হয় ১৯৫৩ সালে। তখনকার উপমহাদেশের চলচ্চিত্রের কথা নতুন করে বলার কিছু নেই।বর্তমান বাংলাদেশের মূলধারার ছি:নেমার মতই অবস্থা ছিল। তবে দুটো জিনিসের অভাব তখন ছিল। এক- চার রঙ। দুই- অশ্লীলতা। তখনও গল্পের গরু গাছে উঠে পড়ত। নচিকেতার ভাষায়- প্রগতির বুলি আছে..ঠাকুমার ঝুলি আছে। তখনকার চলচ্চিত্রের কথা কিছুটা আঁচ পাওয়া যায় যখন পথের পাঁচালী তৈরির জন্য প্রযোজক খোঁজা হলে জনৈক প্রযোজক বলেছিলেন- আপনার ছবিতে না আছে স্টার, না আছে গান এমনকি মারামারির দৃশ্যও নেই। তাহলে এত খরচ হবে কেন? ~x(

অবশ্য তখনও যে দুয়েকটি ভাল ছবি হয় নি, তা নয়। উদয়ের পথে(১৯৪৪), ধরতি কি লাল(১৯৪৬), ছিন্নমূল(১৯৫০), দো বিঘে জমিন ইত্যাদি ছবির কাজ অন্যান্য ছবির চেয়ে আলাদা ছিল। ঋত্বিকের নাগরিক তখনও মুক্তি পায়নি। সেরকম সময়ে নাচ-গান ছাড়া একটি ছবি তৈরির কথা ভাবাই যেত না। তবু পথের পাঁচালী তখনই তৈরি হয়েছিল এবং কিছু পরে ব্যবসায়িকভাবে সফলও হয়েছিল(বিদেশিদের দ্বারা প্রশংসিত হলে সেই ছবি হলেও হিট হওয়ার রেওয়াজ তখনও ছিল, এখনও আছে ;)) )।

এই সাফল্যের নব্বই ভাগ কৃতিত্ব এর পরিচালক, রায় পরিবারের গৌরবধারক সত্যজিৎ রায়ের। বাকি দশ ভাগ কৃতিত্ব মোহাবিষ্ট সঙ্গীতের জন্য রবি শংকর, অসাধারণ সম্পাদনার জন্য দুলাল দত্ত, নিখুঁত সেট ডিজাইনের জন্য বংশী চন্দ্রগুপ্ত, ক্যামেরার জন্য সুব্রত মিত্র এবং আনাড়ি অভিনেতা অভিনেত্রীদের। বিশেষত বৃদ্ধা চুনিবালার কথা কি ভোলা যায়??
সেরকম সময়ে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বাইরে এসে সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী চলচ্চিত্র নির্মাণের সাহস করার জন্য সত্যজিৎ দশভাগ কৃতিত্ব তো পেতেই পারেন! আর দশভাগ একটি শক্তিশালী উপন্যাসকে ভেঙ্গে নতুন করে চলচ্চিত্র উপযোগি রূপ দেয়ার জন্য। দশভাগ সুচারু কলাকুশলী ও শিল্পী নির্বাচনের জন্য। দশভাগ তার যৌক্তিক ডিটেইল কাজের জন্য। দশভাগ পাশ্চাত্য ঘরানার শিল্পবোধ সত্ত্বেও ভারতীয় নিওরিয়ালিজম ব্যবহারের জন্য। দশভাগ চলচ্চিত্রের ব্যাকরণের শিল্পিত ভাষার অপূর্ব প্রয়োগের জন্য। দশভাগ তার শ্যুটিংকালিন তাৎক্ষণিক বুদ্ধির বহুল ব্যবহারের জন্য। দশভাগ তার সাংগঠনিক দক্ষতার জন্য। বাকি দশভাগ হাজারো সংকটে( অর্থ সংকট, শিল্পী সংকট, লোকেশন সংকট, চাকরির সমস্যা ইত্যাদি) হার না মানার জন্য। এতকিছুর সমন্বয়ই সত্যজিৎকে করেছিল পথের পাঁচালীর সার্থক পরিচালক।

সত্যজিৎ কখনওই ভাবেননি তিনি চলচ্চিত্র পরিচালক হবেন। আবাল্য তাঁর পাশ্চাত্য চলচ্চিত্রের প্রতি টান ও সেখানকার সঙ্গীতের প্রতি প্রগাঢ় অনুরাগ ছিল বটে তবে তিনি স্রেফ রস আস্বাদন করতে চেয়েছিলেন। চলচ্চিত্রের প্রতি তার টানের প্রমাণ মেলে লন্ডনে ছয় মাসে নব্বইটি সিনেমা দেখায়। কিন্তু পথের পাঁচালীর মত শক্তিশালী উপন্যাস তাকে স্বপ্নতাড়িত করেছিল যখন তিনি এই উপন্যাসের কিশোর সংস্করণ `আম আটির ভেঁপু’র কাজ ও ইলাস্ট্রেশন করেন।মূল গল্প অক্ষুণ্ণ রেখে একটি উপন্যাসকে কি করে সংক্ষিপ্ত করতে হয় সেটি তখনই তিনি শিখেছিলেন। পথের পাঁচালীর প্রাথমিক স্ক্রিপ্ট তখনই তার মাথায় আসে।
তখন বিভিন্ন সিনেমার খবর পেলেই তিনি বসে যেতেন নিজের মত স্ক্রিপ্ট তৈরিতে। ছবি মুক্তির পর নিজের স্ক্রিপ্টের সাথে মেলাতেন ঐসব স্ক্রিপ্ট। বেশিভাগ সময়ই তার নিজের স্ক্রিপটাই ভাল মনে হত।

ঠিক এরকম এক সময়ে(১৯৪৯) ফরাসী পরিচালক জ্যঁ রেনোয়া কলকাতায় আসেন তার ছবি `দ্য রিভার’ এর লোকেশন ও চরিত্র বাছাই করতে। সত্যজিৎ এর সুযোগ ঘটে তার এই কাজে মাঝেমধ্যে সঙ্গী হওয়ার। পথের পাঁচালীর মূল প্রেরণা তার কাছ থেকেই আসে।
তবে আরও দুটো বিষয় পথের পাঁচালী নির্মাণে তাকে প্রভাবিত করেছিল।
প্রথমটি ডি সিকা পরিচালিত নিওরিয়ালজিম ধারার ছবি`বাইসাইকেল থিফ’। এই ছবিটি দেখেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন তিনি ছবি বানাবেন এবং এই ধারায় বানাবেন। এটি যুদ্ধোত্তর ইতালির কর্মময় ব্যস্ত নাগরিক জীবন নির্ভর ছবি। আর পথের পাঁচালীর গল্প নিশ্চিন্দিপুর নামে এক গ্রামের ধীর গতির জীবন-নির্ভর। দুটোর প্রেক্ষাপট আর বিষয়বস্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন। তবু দুটোর সমন্বয় তিনি করেছিলেন। আর সেটা পেরেছিলেন তার দ্বিতীয় প্রভাবক শিল্পী আচার্য নন্দলালের প্রভাবে। শান্তিনিকেতনে ইনিই সত্যজিৎকে শিখিয়েছিলেন ভারতীয়ত্ব, বাংলা প্রীতি, অঙ্কনরীতি। এমনকি শিল্পের ডিটেইল তৈরিতে প্রকৃতির উপাদানকে মূলধন করে ব্যবহার করা।

চলচ্চিত্র হিসেবে পথের পাঁচালী সার্থক হয়েছে চলচ্চিত্রের সুষম ভাষা প্রয়োগের জন্য। স্থাপত্য, চিত্রকলা, গল্প, সংগীত আলোকচিত্র, নাটক, অভিনয় ইত্যাদি কলার সমন্বয় ঘটে একটি চলচ্চিত্রে। টেকনোলজি এই সমন্বয় ঘটায়। পথের পাঁচালীতে এই সমন্বয়ের সুষম প্রয়োগ ঘটেছে।
এর এক একটি দৃশ্য ফটোগ্রাফির এক একটি চমৎকার সাবজেক্ট। এর সংলাপ যেন নিত্য দিনের কথন। এর মিউজিকের রিদম যেন এসেছে প্রকৃতি থেকে। যেমন- মিষ্টিওয়ালার কাঁধের ভাঁড়ারের সাথে তার হাঁটার ছন্দ, বহুদিন পর সর্বজয়ার কাছে তার স্বামী হরিহরের চিঠি আসলে জয়ার খুশ মিউজিকের তালে তালে প্রকৃতিতে ছড়িয়ে পড়া কিংবা দুর্গার মৃত্যুর পর কান্নার বদলে বিষাদকে প্রগাঢ় করা সানাইয়ের সুর দর্শকের কর্ণমূল রসপূর্ণ করে।

এবার দৃশ্যায়নের প্রসঙ্গে আসা যাক। পথের পাঁচালীতে অপুর স্কুলে যাওয়া কিংবা চড়ুইভাতিতে মেয়েদের লবণ বিষয়ক ঝগড়া একটি গ্রামের নিত্য দিনের দৃশ্য। এসব সাধারণ দৃশ্য আমাদের একটি গ্রামকে চিনতে সাহায্য করে। তবে দৃশ্যায়নে সত্যজিৎ কিছু মজাও রেখেছেন। যেমন-ইন্দির ঠাকুরণের তল্পি তল্পার পুটলি ফেলেছেন কিন্তু পড়বি তো পড় বিড়ালের উপরই! কিংবা বছরের প্রথম বৃষ্টির ফোটা টাক মাথার উপরই পড়তে হবে।
কিন্তু আগেই বলেছিলাম জ্ঞানীদের জন্য চিন্তার দৃশ্যও এতে রয়েছে। যেমন ধরা যাক-পুকুর ঘাটের দৃশ্যটি। বৃদ্ধ ইন্দির ঠাকুরণের সামনে জলভর্তি পুকুর, পিছনে পড়ে থাকা মরা গাছ লাফিয়ে শিশুদের আনন্দযাত্রা, ব্যাকগ্রাউন্ডে বেহালায় বাজে `হরি দিন যে গেল সন্ধ্যে হল পার কর আমারে”। চিন্তাশীল দর্শকদের মনে করিয়ে দেয় সুকান্তের ছাড়পত্র কবিতা, এসেছে নতুন শিশু ছেড়ে দিতে হবে স্থান। আর বৃদ্ধের সামনে তখন অপার জলধি।

অথবা দুর্গার চুরি করা মালা অপু পুকুরে ফেলে দিলে কচুরিপানা এসে সেই জায়গা ঢেকে দেয়। যেন একটি সংঘটিত অপরাধকে রাতারাতি ধামাচাপা দিয়ে দেয়া হল।
উদাহরণ হিসেবে ট্রেনের দৃশ্যটিও বর্ণনা করা যেতে পারে। অপু আর দুর্গা ট্রেন দেখতে গেলে দেখা যায় নিস্তরঙ্গ গ্রামকে ট্রেনের কালো ধোয়া ঢেকে দিয়ে যায় আর মনে করিয়ে দেয় একটি সম্ভাবনার কথা। তা হল- ধেয়ে আসছে নাগরিকতা এই সুদূর গ্রাম্য জীবনেও।
এই দৃশ্যগুলোই ইন্টেলেকচুয়াল মন্তাজ।

(চলবে)

২,৮১৯ বার দেখা হয়েছে

২৭ টি মন্তব্য : “পথের পাঁচালীর পঞ্চাশ বছর-১”

  1. জিহাদ (৯৯-০৫)

    সি সি বি তে দেখি এখন ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল চলতেসে 😀

    পথের পাঁচালী বেশ আগে দেখা। ভাবছি আরেকবার দেখে মনস্তাত্ত্বিক বিষয়গুলো আবার মিলিয়ে নেবো :-B :-B


    সাতেও নাই, পাঁচেও নাই

    জবাব দিন
  2. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    টিটো : প্রচুর ভুল বানানে বারবার হোঁচট খাচ্ছি। বিভূতিভুষণ এবং সত্যজিতের পথের পাঁচালী দুটোর স্বাধ দু'ধরণের। সত্যজিতের পথের পাঁচালী এখনো আমাকে চরম মুগ্ধতায় আচ্ছন্ন করে রাখে। তোমার লেখাটা পড়ে পুনঃভ্রমণের আনন্দ পাচ্ছি।


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
    • টিটো রহমান (৯৪-০০)

      হ্যা বস..খুবই বিশ্রী টাইপের ভুল ছিল। একটানা লিখে গেছি আর চেক করি নাই। 😕 :bash:

      সত্যজিতের পথের পাঁচালী এখনো আমাকে চরম মুগ্ধতায় আচ্ছন্ন করে রাখে।

      আপনার এই লাইনটার পর আব্দুল্লাহ আবু সাঈদের উপর করুনা হচ্ছে।
      থ্যাংকু ভাইয়া ..কষ্ট নিয়ে পড়ার জন্য।


      আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই

      জবাব দিন
  3. মহিব (৯৯-০৫)

    দূর্দান্ত একটা লেখা হয়েছে টিটো ভাই। ধারে এবং ভারে। পথের পাঁচালী নিয়ে বলার কিছু আসলে নাই। সত্যজিতের মুভির প্রশংসা করার ভাষা তো জানা নাই- আর আপনার লেখাটাও একেবারে খাপে খাপ। শুধু হালকা একটা কথা।

    এই সাফল্যের নব্বই ভাগ কৃতিত্ব এর পরিচালক, রায় পরিবারের গৌরবধারক সত্যজিৎ রায়ের। বাকি দশ ভাগ কৃতিত্ব মোহাবিষ্ট সঙগীতের জন্য রবি শংকর, অসাধারণ সম্পাদনার জন্য দুলাল দত্ত, নিখুঁত সেট ডিজাইনের জন্য বংশী চন্দ্রগুপ্ত, ক্যামেরর জন্য সুব্রত মিত্র এবং আনারি অভিনেতা অভিনেত্রীদের। বিশেষত বৃদ্ধা চুনিবালার কথা কি ভোলা যায়??

    বিভূতিভূষণ একটুও কৃতিত্বের ভাগ দিলেন না। এ কেমন বিচার? 🙂

    জবাব দিন
  4. মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

    খুব ভাল লিথেছেন টিটো ভাই। পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
    কাশবনের মধ্য দিয়ে যাওয়া ট্রেন লাইন বিষয়ে সত্যজিতের একটা কথা মনে পড়ে গেল। কাশ গরু খেয়ে ফেলায় তিনি পুরো এক বছর অপেক্ষা করেছিলেন কারণ, ট্রেনের কালো ধোঁয়া এবং কাশবনের শুভ্রতা মিলে যে আবহ তৈরী হবে সেটা তার থিম ফুটিয়ে তোলার জন্য আবশ্যক ছিল। সাদা-কালোর এই মিশ্রণ তো ফটোগ্রাফিতে বহুল ব্যবহৃত জিনিস। এই দৃশ্যটা এজন্যই বেশি ভাল লেগেছে।

    আমার বিশ্বাস "পথের পাঁচালী" যতবার দেখা হয় মুগ্ধতা ততই বেড়ে যায়। প্রথমবারের তুলনায় দ্বিতীয়বার দেখে আরও বেশি বাল লেগেছে। আরও কত বার যে দেখব তার কোন ঠিক-ঠিকানা নেই।

    উপমহাদেশে বোধহয় সাহিত্য এবং চলচ্চিত্রের ঠোকরা-ঠুকরি টা বেশি। যারা সাহিত্য বিশারদ তারা চলচ্চিত্র দেখে নাক সিঁটকান। চলচ্চিত্র বিশারদরা অবশ্য সাহিত্যের প্রতি এরকম মনোভাব পোষণ করতে পারেন না, কারণ সে সুযোগ নেই। আমার মনে হয় সাহিত্যের সাথে চলচ্চিত্রের এরকম তুলনার অবকাশ নেই। কিন্তু একাজটাই বেশি করা হয়। ভাবটা এমন যে, সাহিত্যকে ছবিতে ফুটিয়ে তোলাই চলচ্চিত্রের কাজ। কিন্তু চলচ্চিত্র একেবারেই ভিন্ন জিনিস। সত্যজিৎ বিভূতিভূষণকে প্রচণ্ড শ্রদ্ধা করতেন বলেই তার প্রথম সিনেমার জন্য বিভূতিকে বেছে নিয়েছেন। কিন্তু পথের পাঁচালী আগো গোড়াই সত্যজিতের, অনুপ্রেরণাটা কেবল বিভূতিভূষণের। দুটাকে দুই পাল্লায় রেখে ওজন হিসাব করার মত বড় ভ্রান্তি আর কিছু নেই।

    যেমন, ফ্রিডরিশ নিৎশের একটা অতি বিখ্যাত উপন্যাসের নাম "Thus Spoke Zarathustra". এই উপন্যাস থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ধ্রুপদী পশ্চিমা সুরকার রিচার্ড স্ট্রাউস "Thus Spake Zarathustra" নামে একটি অতি বিখ্যাত সুরেলা কাব্য সৃষ্টি করেছেন। এই দুয়ের মধ্যে কেউ কোনদিন তুলনা করে না। শেক্সপিয়ারের নাটকের সাথে কেউ কুরোসাওয়ার সিনেমার তুলনা করে না, যদিও শেক্সপিয়ারের অনেকগুলো নাটক থেকে তিনি সিনেমা বানিয়েছেন। বাঙালিরাই কেবল উপন্যাসের সাথে সিনেমার হাস্যকর তুলনা দিয়ে বেড়ায়। সিনেমার মধ্যে উপন্যাস খুঁজে।

    জবাব দিন
  5. আদনান (১৯৯৪-২০০০)

    দোস্ত চমতকার বিশ্লেষন করছিস । মুভিটা অনেক আগে দেখেছিলাম । দূর্গা মারা যাওয়াতে খুব খারাপ লেগেছিল, আর পাশের বাসার মেয়েটার বিয়ে, ইন্দিরা ঠাকরুন, ত্রেন দেখা সব ই মনে পরে যাচ্ছে । আরেকবার দেখতে হবে মুভিটা ভালভাবে বোঝার জন্য । :thumbup:

    জবাব দিন
  6. আদনান (১৯৯৪-২০০০)

    দোস্ত চমতকার বিশ্লেষন করছিস । মুভিটা অনেক আগে দেখেছিলাম । দূর্গা মারা যাওয়াতে খুব খারাপ লেগেছিল, আর পাশের বাসার মেয়েটার বিয়ে, ইন্দিরা ঠাকরুন, ত্রেন দেখা সব ই মনে পরে যাচ্ছে । আরেকবার দেখতে হবে মুভিটা ভালভাবে বোঝার জন্য ।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : আদনান (১৯৯৪-২০০০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।